‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

পৃথিবীকে সমতল বলা লোকদের খণ্ডন - পর্ব ২

shafinchowdhury

Salafi

Salafi User
Threads
38
Comments
51
Reactions
651
Credits
237
পৃথিবীকে সমতল বলা লোকদের খণ্ডন - পর্ব ২।

যেসব মুফাসসির যারা দৈর্ঘ্য প্রস্থ এর বিষয়টি বলেছেন তারা এর স্বপক্ষে একটি বর্ণনা পেশ করেছেন। যেমন মুফাসসির ওয়াহিদী ইমাম হাকিম থেকে বর্ণনা করেছেন:

ইবন আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) বলেন,

যখন আল্লাহ সৃষ্টিকে সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, তখন তিনি পৃথিবীকে প্রসারিত করতে থাকলেন যতক্ষণ না তা আল্লাহর ইচ্ছা মোতাবেক দৈর্ঘ্য বা প্রস্থে পৌছাচ্ছে। ইবন আব্বাস বললেন: এভাবেই একে প্রসারিত করা হয়েছিল। (সংক্ষিপ্ত)

«التفسير الوسيط للواحدي» (4/ 412):

«- أخبرنا أبو بكر محمد بن علي الواعظ، أنا محمد بن عبد الله الحافظ، أنا محمد بن يعقوب الشيباني، نا حامد بن أبي حامد المقرئ، نا إسحاق بن سليمان، نا طلحة بن عمرو، عن عطاء، عن ابن عباس، قال: لما أراد الله أن يخلق الخلق ‌مد ‌الأرض حتى بلغت ما شاء الله من الطول والعرض، قال: وكانت هكذا تميد، وأراني ابن عباس بيده هكذا وهكذا قال: فجعل الله {والجبال أوتادا} [النبأ: 7] وكان أبو قبيس من أول جبل وضع على الأرض»

আত-তাফসিরুল ওয়াসিত্ব লিল ওয়াহিদী, ৪/৪১২.

এই বর্ণনার সনদে তালহা বিন আমর নামে এক মাতরুক পর্যায়ের এবং খুবই দুর্বল রাবী রয়েছে। মুহাদ্দিসগণ তার বর্ণনাকে পরিত্যাগ করেছেন। ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) ইমাম হাকিম (রাহিমাহুল্লাহ) এর মুস্তাদারাক আলা সহীহাইন কে সংক্ষেপায়ন করে সেখানের হাদিসগুলোর সনদের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন। ইমাম যাহাবী (রাহিমাহুল্লাহ) এই হাদিসটির সনদের ব্যাপারে মন্তব্য করতে যেয়ে বলেন,

তালহা বিন আমর দুর্বল।

«المستدرك على الصحيحين» (2/ 556):
[التعليق - من تلخيص الذهبي]3889 - طلحة بن عمرو ضعفوه

আল মুস্তাদারাক আলা সহীহাইন, ২/৫৫৬

এই বিষয়ে বর্তমান সময়ের আরেকজন মুহাক্কিক এর মন্তব্য পেশ করছি। অতঃপর জারাহ তাদীল এর আলোকে তালহা বিন আমর এর অবস্থা তুলে ধরছি:

মুহাক্কিক ড. আব্দুল্লাহ বিন হামাদ আল লুহাইদান এর সনদ সম্পর্কে মন্তব্য করে টীকায় লিখেছেন:

এই হাদিসটির সনদে আল হাকিমের সূত্রে তালহা বিন আমর বিন উছমান আল হাদ্বরামি আল মাক্কি রয়েছেন, তার অবস্থা সম্পর্কে পূর্বে ৩৩৭ নং হাদিসের অধীনে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে হয়েছে। তিনি মাতরুক পর্যায়ের রাবী। তাই এই সনদ মারেফত আসা হাদিসটি খুবই দুর্বল। আল্লাহ ভালো জানেন।

«مختصر تلخيص الذهبي لمستدرك الحاكم» (2/ 972):
«هذا الحديث في سنده عند الحاكم طلحة بن عمرو بن عثمان الحضرمي المكي، وقد سبق بيان حاله عند حديث رقم (337) وأنه متروك، فعليه يكون الحديث بهذا الِإسناد ضعيفاً جداً -والله أعلم-»

মুখতাসার তালখীসীয যাহাবী লিমুস্তাদারাকিল হাকিম, ২/৯৭২

এবার আমরা রাবী তালহা বিন আমর সম্পর্কে জারাহ-তাদীল এর ইমামদের মত দেখি:

ইমাম আহমাদ এর পুত্র আব্দুল্লাহ ইমাম আহমাদ হতে বর্ণনা করেন:

ইমাম আহমাদ বলেছেন,
তালহা বিন আমর মাতরুকুল হাদিস।

«الكامل في ضعفاء الرجال» (5/ 171):
طلحة بن عمرو لا شيء متروك الحديث»

আল কামিল ফি দ্বুয়াফাঈর রিজাল, ৫/১৭১

ইমাম বুখারী (রাহিমাহুল্লাহ) তার ব্যাপারে ব্য্যাপারে ইয়াহইয়া বিন মাঈন (রাহিমাহুল্লাহ) এর মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন,

«التاريخ الكبير للبخاري بحواشي محمود خليل» (4/ 350):
«‌‌3104- ‌طلحة ‌بن ‌عمرو، ‌الحضرمي.
عن بكير المكي، عن عطاء.
هو لين عندهم.
قال يحيى: ليس بشيء»

ইহাইয়া বিন মাঈন বলেছেন, লাইসা বিশাইয়্যুন।

আত তারিখুল কাবির লিল বুখারি, ৪/৩৫০; অন্য নুসখায় ৫/৬২০।

ইমাম উকাইলী ও এই জারাহ নকল করেছেন:

«الضعفاء الكبير للعقيلي» (2/ 224):
«سألت يحيى بن معين عن ‌طلحة ‌بن ‌عمرو ‌الحضرمي المكي، فقال: ليس بشيء»

আদ্ব দ্বুয়াফাউল কাবির লিল উকাইলি, ২/২২৪

ইমাম ইবন হিব্বান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

সে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত যারা ছিকাহ ব্যক্তিদের থেকে এমন সব হাদিস বর্ণনা করে, যেসব হাদিস তাদের দ্বারা বর্ণিত নয়। তার বর্ণিত হাদিস লিখে রাখা বা বর্ণনা করা জায়েজ নয়....

«المجروحين لابن حبان» (1/ 489):
«كان ممن يروي عن الثقات ما ليس من أحاديثهم، لا تحل كتابة حديثه ولا الرواية عنه

আল মাজরুহীন লি ইবন হিব্বান, ১/৪৮৯, মাক্তাবা শামেলা

ইমাম দারাকুতনি (রাহিমাহুল্লাহ) আল মাজরুহীন এর টীকায় বলেন,

তালহা বিন আমর আল হাদরামি আল মাক্কি হতে আতা বিন ইয়াসার এর সূত্রে বর্ণিত হাদিসগুলো মুনকার।

«تعليقات الدارقطني على المجروحين لابن حبان» (ص140):
«يقول إبراهيم بن أحمد: ‌طلحة ‌بن ‌عمرو ‌الحضرمي المكي، روى عن عطاء بن يسار أحاديث مناكير.

তা'আলিকাতুদ দারাকুত্বনি আলা মাজরুহীন লি ইবন হিব্বান, ১৪০ পৃষ্ঠা

অতএব, প্রমাণিত হলো তালহা বিন আমর একজন মাতরুক পর্যায়ের দ্বঈফ রাবি। আর তিনি সনদে থাকায় ইবন আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম) এর সূত্রে বর্ণিত তাফসিরটি গ্রহণযোগ্য নয়।
কাজেই দৈর্ঘ্য প্রস্থে প্রশস্ত করার বিষয়টা সাহাবীদের থেকে আসেনি। একে পরবর্তীকালে কিছু মুফাসসির উক্ত আয়াতের ব্যাখায় ব্যবহার করেছেন তবে দৈর্ঘ্য প্রস্থ দিয়ে তারা সমতল বুঝিয়েছেন কিনা তার স্পষ্ট প্রমাণ নেই, যেহেতু প্রাচীনকালে আরবরা দৈর্ঘ্য প্রস্থ গোলাকৃতি এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতো। যেটি আমি আগের পর্বে প্রমাণ করেছি।

লেখা: সাফিন চৌধুরী।
Facebook: Shafin Chowdhury

চলবে...
 

Attachments

  • 20240627_150904.webp
    114.1 KB · Views: 25

Share this page