মানুষের জন্য রমাযানের রোযাই প্রথম রোযা নয়। কারণ, রোযা হল এমন ইবাদত, যা আল্লাহ তাআলা মানুষ সৃষ্টির পর থেকেই নিজের বান্দার জন্য ফরয করেছেন। তিনি কুরআন মাজীদে বলেন,
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হল, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর ফরয করা হয়েছিল। যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৩)
এ থেকে বুঝা যায় যে, পূর্ববর্তী সকল উম্মতের জন্য রোযা ফরয ছিল। অবশ্য ইসলাম, খ্রিষ্টান ও ইয়াহুদী ধর্মের পূর্বের ধর্মাবলম্বী মানুষরা কিভাবে কোন্ পদ্ধতিতে রোযা পালন করত, তা নির্দিষ্টরূপে জানা যায় না। তবে ইয়াহুদ ও খ্রিষ্টানরা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জিনিস থেকে বিরত থেকে রোযা পালন করত। তাওরাত ও ইঞ্জীলের বর্তমান সংস্কারগুলো থেকেও জানা যায় যে, আল্লাহ তাআলা রোযাকে তাঁর পূর্ববর্তী বান্দাদের উপর ফরয করেছিলেন।
বুখারী-মুসলিমের একটি হাদীসে পাওয়া যায় যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদ্বীনায় এলেন, তখন দেখলেন, ইয়াহুদীরা আশূরার দিনে রোযা পালন করছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘এটা কি এমন দিন যে, তোমরা এ দিনে রোযা রাখছ?’’ ইয়াহুদীরা বলল, ‘এ এক মহান দিন। এ দিনে আল্লাহ মূসা ও তাঁর কওমকে পরিত্রাণ দিয়েছিলেন এবং ফিরআঊন ও তার কওমকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস করেছিলেন। তাই মূসা এরই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে এই দিনে রোযা পালন করেছিলেন। আর সেই জন্যই আমরাও এ দিনে রোযা রেখে থাকি।’
এ কথা শুনে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘মূসার স্মৃতি পালন করার ব্যাপারে তোমাদের চাইতে আমরা অধিক হকদার।’’ সুতরাং তিনি ঐ দিনে রোযা রাখলেন এবং সকলকে রোযা রাখতে আদেশ দিলেন।[1]
অবশ্য আহলে কিতাব (ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান) ও মুসলিমদের রোযার মাঝে একটি পার্থক্য এই যে, আহলে কিতাবরা সেহরী ([2]) খায় না। কিন্তু মুসলিমরা খায়।[3]
তদনুরূপ আহলে কিতাবরা ইফতার করতে দেরী করে। পক্ষান্তরে মুসলিমরা সূর্য ডোবামাত্র তড়িঘড়ি ইফতার করে থাকে।[4]
ইনসাইক্লোপেডিয়া বৃটানিকাতে বলা হয়েছে যে, জল, বায়ু, জাতি, ধর্ম ও পারিপার্শ্বিকতা ভেদে রোজার নিয়ম-পদ্ধতি বিভিন্ন হইলেও এমন কোন ধর্মের নাম উল্লেখ করা কঠিন যাহার ধর্মীয় বিধানে রোযার আবশ্যকতা স্বীকার করা হয় নাই।[5]
যাই হোক না কেন, এই খবরের মাঝে মুসলিমদের জন্য রয়েছে সান্ত্বনা ও আশ্বাস। কারণ, শুধু উম্মতে মুহাম্মাদীর উপরেই নয়; বরং পূর্ববর্তী সকল উম্মতের উপরেই রোযা ফরয ছিল। আর সে মনে করেই মুসলিমদের উপরেও রোযার ভার অনেক হাল্কা হয়ে যায়। কারণ, মুসলিম যখন জানতে পারে যে, এই রোযা রাখার পথ হল পূর্ববর্তী আম্বিয়া ও তাঁদের অনুগামী নেক লোকদের, তখন সে এই পথ অবলম্বন করে আনন্দবোধ করে এবং রোযার কোন কষ্টকেই সে নিজের জন্য ভারী মনে করে না।[6]
(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ)
অর্থাৎ, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হল, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর ফরয করা হয়েছিল। যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৩)
এ থেকে বুঝা যায় যে, পূর্ববর্তী সকল উম্মতের জন্য রোযা ফরয ছিল। অবশ্য ইসলাম, খ্রিষ্টান ও ইয়াহুদী ধর্মের পূর্বের ধর্মাবলম্বী মানুষরা কিভাবে কোন্ পদ্ধতিতে রোযা পালন করত, তা নির্দিষ্টরূপে জানা যায় না। তবে ইয়াহুদ ও খ্রিষ্টানরা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জিনিস থেকে বিরত থেকে রোযা পালন করত। তাওরাত ও ইঞ্জীলের বর্তমান সংস্কারগুলো থেকেও জানা যায় যে, আল্লাহ তাআলা রোযাকে তাঁর পূর্ববর্তী বান্দাদের উপর ফরয করেছিলেন।
বুখারী-মুসলিমের একটি হাদীসে পাওয়া যায় যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদ্বীনায় এলেন, তখন দেখলেন, ইয়াহুদীরা আশূরার দিনে রোযা পালন করছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘এটা কি এমন দিন যে, তোমরা এ দিনে রোযা রাখছ?’’ ইয়াহুদীরা বলল, ‘এ এক মহান দিন। এ দিনে আল্লাহ মূসা ও তাঁর কওমকে পরিত্রাণ দিয়েছিলেন এবং ফিরআঊন ও তার কওমকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস করেছিলেন। তাই মূসা এরই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে এই দিনে রোযা পালন করেছিলেন। আর সেই জন্যই আমরাও এ দিনে রোযা রেখে থাকি।’
এ কথা শুনে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘মূসার স্মৃতি পালন করার ব্যাপারে তোমাদের চাইতে আমরা অধিক হকদার।’’ সুতরাং তিনি ঐ দিনে রোযা রাখলেন এবং সকলকে রোযা রাখতে আদেশ দিলেন।[1]
অবশ্য আহলে কিতাব (ইয়াহুদী-খ্রিষ্টান) ও মুসলিমদের রোযার মাঝে একটি পার্থক্য এই যে, আহলে কিতাবরা সেহরী ([2]) খায় না। কিন্তু মুসলিমরা খায়।[3]
তদনুরূপ আহলে কিতাবরা ইফতার করতে দেরী করে। পক্ষান্তরে মুসলিমরা সূর্য ডোবামাত্র তড়িঘড়ি ইফতার করে থাকে।[4]
ইনসাইক্লোপেডিয়া বৃটানিকাতে বলা হয়েছে যে, জল, বায়ু, জাতি, ধর্ম ও পারিপার্শ্বিকতা ভেদে রোজার নিয়ম-পদ্ধতি বিভিন্ন হইলেও এমন কোন ধর্মের নাম উল্লেখ করা কঠিন যাহার ধর্মীয় বিধানে রোযার আবশ্যকতা স্বীকার করা হয় নাই।[5]
যাই হোক না কেন, এই খবরের মাঝে মুসলিমদের জন্য রয়েছে সান্ত্বনা ও আশ্বাস। কারণ, শুধু উম্মতে মুহাম্মাদীর উপরেই নয়; বরং পূর্ববর্তী সকল উম্মতের উপরেই রোযা ফরয ছিল। আর সে মনে করেই মুসলিমদের উপরেও রোযার ভার অনেক হাল্কা হয়ে যায়। কারণ, মুসলিম যখন জানতে পারে যে, এই রোযা রাখার পথ হল পূর্ববর্তী আম্বিয়া ও তাঁদের অনুগামী নেক লোকদের, তখন সে এই পথ অবলম্বন করে আনন্দবোধ করে এবং রোযার কোন কষ্টকেই সে নিজের জন্য ভারী মনে করে না।[6]
[1] (বুখারী ২০০৪, মুসলিম ১১৩০নং)
[2] সেহরী কথাটি সাহারীর অপভ্রংশ। এটি شاذ في القياس وفصيح في الاستعمال । সেহরী শব্দটি উর্দু অভিধানে পাওয়া যায়, কিন্তু সাহারী শব্দটি কোন অভিধানে পাওয়া যায় না।
[3] (মুসলিম ১০৯৬নং)
[4] (আবূ দাঊদ, হাকেম, মুস্তাদ্রাক, ইবনে হিববান, সহীহ, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ৭৬৮৯নং)
[5] (বাংলা মিশকাত, এমদাদিয়া লাইব্রেরী ছাপা ৪/২৬৪ দ্রঃ)
[6] (দুরুসু রামাযান অকাফাত লিস্-সায়েমীন ৫পৃঃ)
রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী