‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

সিয়াম পবিত্র রামাযান : আল্লাহর সান্নিধ্যে ফিরে আসার মাস

Mahmud ibn Shahidullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Q&A Master
Salafi User
Threads
520
Comments
533
Reactions
5,445
Credits
2,602
পবিত্র রামাযান সর্বশ্রেষ্ঠ মাস :

আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে পৌঁছাতে বান্দাকে অবশ্যই তাঁর সন্তুষ্টির জন্য সংগ্রাম করতে হয়। বান্দা যখন সচেতন হৃদয়ে শরী‘আত সম্মত পদ্ধতিতে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করে তখন এ কাজটা সহজসাধ্য হয়। বছরের অন্য সময় অনেকের পক্ষে এটা সহজ হয় না। কিন্তু পবিত্র রামাযান মাসে সকলের জন্যই এই কঠিন কাজ সহজ হয়ে যায়। তাই মাহে রামাযান মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত ও মাগফিরাত লাভ এবং আধ্যাত্মিকভাবে উজ্জীবিত হওয়ার মাস। অবিশ্বাসের অন্ধকারে নিমজ্জিত মানব সম্প্রদায়ের কাছে তাওহীদের শ্রেষ্ঠত্ব উদ্ভাসিত হয় পবিত্র রামাযান মাসে। এজন্যই পবিত্র রামাযান বছরের শ্রেষ্ঠ মাস। এই মাসে আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাযিল করে মানবজাতিকে অবিশ্বাসের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে বিশ্বাসের আলোতে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন। এ কুরআনের সংস্পর্শে এসে মানুষ সত্যের আলোতে তাওহীদের শ্রেষ্ঠত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধের উৎকৃষ্টতা দেখে হেদায়াত প্রাপ্ত হয় এবং সরল পথ অনুসরণে আল্লাহর সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পায়।

আল-কুরআন সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি- যাতে তুমি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আন। পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য প্রতিপালকের নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে’ (ইব্রাহীম ১৪/১)

আল্লাহ তা‘আলা রামাযানে ছিয়াম পালনের আদেশ দিয়েছেন যাতে আত্মভোলা উদাসীন বান্দারা সচেতন হয়ে আধ্যাত্মিকভাবে উজ্জীবিত হ’তে পারে। আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে মুত্তাক্বীর বৈশিষ্ট্য অর্জনের সুযোগ পায়। এটাই হচ্ছে রামাযানের মূল উদ্দেশ্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার’ (বাক্বারাহ ২/১৮৩)

রামাযানে আল্লাহর সান্নিধ্যে আসার বহুবিধ সহজ রাস্তা রয়েছে। রামাযানে যে সমস্ত নফল ইবাদত পালন করা হয়ে থাকে, সেগুলো পরহেযগারী অর্জনের উল্লেখ্যযোগ্য মাধ্যম। সারা বছর অনেকেই এই ইবাদত থেকে দূরে থাকে, যথার্থভাবে পালনে অবহেলা করে বা উদাসীনতায় সময় ব্যয় করে। পবিত্র রামাযানে তারা আবার মুত্তাক্বীর বৈশিষ্ট্য অর্জন করার সুযোগ পায়, বিধায় আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করতে পারে। নিঃসন্দেহে বলা যায় এটা মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল্লাহর সীমাহীন দয়ার অন্যতম নিদর্শন।

আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় :

সকল বান্দাই আল্লাহর দয়া, রহমত ও অনুগ্রহের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। তাঁর সাথে বান্দার সম্পর্ক চিরস্থায়ী। তবে বান্দার উদাসীনতা, অবহেলা, উদ্ধত প্রকৃতি এবং অজ্ঞতার কারণে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মুসলিম উম্মাহ ব্যতিরেকে অন্যদের সাথে সম্পর্ক বরাবরই দূরত্বে থাকে। আল্লাহর সাথে বান্দার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মান সারা বছর উঠা-নামা করে। তবে প্রতিবছর পবিত্র রামাযানে মুমিন বান্দারা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পায়। এজন্যই পবিত্র রামাযান রহমতের মাস, আল্লাহর সান্নিধ্যে ফিরে আসার মাস। মুসলিম উম্মাহর ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহের নিদর্শন পবিত্র রামাযান। আত্মসংযমে ধৈর্যসহ ছিয়াম রাখায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। এ কারণেই ছিয়াম রাখতে বান্দার যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য মুসলমানদের প্রতি সহজ বিধান দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না’ (বাক্বারাহ ২/১৮৫)

ছিয়াম পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে মুসলিম উম্মাহ সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ বলেন,

الصَّوْمُ لِى وَأَنَا أَجْزِى بِهِ يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَأَكْلَهُ وَشُرْبَهُ مِنْ أَجْلِى​

‘ছিয়াম আমার জন্য। আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দিব। কেননা আমার কারণেই সে জৈবিক চাহিদা ও পানাহার পরিত্যাগ করে’।[1]

তওবার গুরুত্ব স্পষ্ট হয় : ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর তুলনায় পরকালের ব্যাপ্তি ও গুরুত্ব অধিক। পরকালের ব্যাপ্তি বুঝানোর জন্য রাসূল (ﷺ) বাস্তব উপমা দিয়ে বলেছেন, পরকালের তুলনায় ইহকালের দৃষ্টান্ত হ’ল এরূপ যে, তোমাদের কেউ তার কোন একটি আঙ্গুল সমুদ্রে ডুবিয়ে রেখে দেখুক কতটুকু সাথে নিয়ে আসে [আঙ্গুলের অগ্রভাগে সমুদ্রের পানির যে অংশ লেগে থাকে, সমুদ্রের তুলনায় এটা যেরূপ কিছুই নয়, তেমনি আখেরাতের তুলনায় দুনিয়াটা কিছুই নয়]।[2]

এই দুইজগতের সৃষ্টি ও তার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছতে সাহায্য করে থাকে। বান্দার কাছে পরকালের স্থায়িত্ব ও গুরুত্ব যখন সুস্পষ্ট হয় তখন সে চিরস্থায়ী সুখময় জীবন লাভের প্রত্যাশায় তওবা করতে উদ্বুদ্ধ হয়। উপরন্তু গোলাম যখন মালিকের সীমাহীন দয়া, অনুগ্রহ, ক্ষমাশীলতা, উদারতা, ভালোবাসা সম্পর্কে সম্যক অবগত হয়, তখন মালিকের প্রতি তার হৃদয়ে জাগ্রত হয় ভালোবাসা, সবকাজে নির্ভরশীল থাকা ও সচেতন হওয়ার শক্তি। তাতে সে স্বীয় ভুল-ভ্রান্তির অবাধ্যতার জন্য অনুতপ্ত হৃদয়ে ক্ষমাপ্রার্থী হ’তে উদ্যোগী হয়। কারণ সে জানে তার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, তিনি বান্দাকে ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। স্বীয় ভুল-ভ্রান্তি ও কৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হৃদয়ে বান্দা যখন প্রতিপালকের কাছে ফিরে আসে অর্থাৎ তওবা করে তখন আল্লাহর তার দিকে ফিরে আসেন।

এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, আমার প্রতি বানদার ধারণানুরূপ আমি তার সাথে ব্যবহার করি। সে যেখানেই আমাকে স্মরণ করে আমি তার সঙ্গে থাকি। মরু প্রান্তরে তোমাদের কেউ তার হারানো পশু ফিরে পেলে যেরূপ খুশি হয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার তওবা করলে তার উপর তদপেক্ষাও বেশি খুশি হন। যদি কেউ এক বিঘত পরিমাণ আমার দিকে এগিয়ে আসে আমি তার দিকে এক হাত পরিমাণ অগ্রসর হই। যদি কেউ এক হাত পরিমাণ আমার দিকে এগিয়ে আসে, তবে আমি তার দিকে দু’হাত পরিমাণ অগ্রসর হই। যদি কেউ আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌঁড়ে যাই [অর্থাৎ তওবা যত তাড়াতাড়ি করা হবে, আল্লাহর ক্ষমাও অতিসত্বর পাওয়া যাবে]।[3]

রমাযান মাসে মুসলিম উম্মাহ সত্যনিষ্ঠ অন্তরে বিনয়ী চিত্তে প্রতিপালকের সাথে তাদের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। তাই সচেতন অন্তরে তওবা করতে বা ক্ষমা প্রার্থনায় তারা উজ্জীবিত হয়ে থাকে। আর আল্লাহ বান্দার তওবা কবুল করেন। এ রকম দৃঢ়বিশ্বাস নিয়েই তওবা করতে হয়। বান্দাকে ক্ষমা করতে অন্য কারও ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর আল্লাহকে নির্ভর করতে হয় না। এরূপেই মহিমান্বিত প্রতিপালকের উপর দৃঢ় আস্থা রেখে তওবার মাধ্যমে পাপ মুক্ত হয়ে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করা যায়। স্মর্তব্য যে, আদম সন্তান ভুল করবে, অন্যায় করবে, এটাতো মনুষ্য প্রকৃতি। আদম (আঃ) আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা ভুলে গিয়েছিলেন। অতঃপর অনুতপ্ত হওয়ায় আল্লাহ ক্ষমা করেছিলেন। অপরদিকে শয়তান উদ্ধত আচরণ ও অবাধ্যতার জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি বিধায় অভিশপ্ত হয়েছে। গোনাহের কাজে জড়িত হওয়ার পর ক্ষমা প্রার্থনা বা তওবার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) এরশাদ করেছেন, ‘যে সত্তার করতলে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ করে বলছি, ‘যদি তোমরা গোনাহ না করতে তবে আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে শেষ করে এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করতেন, যারা গোনাহ করে ক্ষমা প্রার্থনা করত এবং তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিতেন’।[4] একনিষ্ঠভাবে তওবার মাধ্যমে ছোট-বড় সবরকম গোনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রামাযানে এ কাজটি সহজ হয়, এজন্যই রামাযান মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছার এবং তওবা কবুল হওয়ার অন্যতম মাস হচ্ছে রামাযান।

প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সহজ হয় : প্রবৃত্তি সর্বদাই মানুষকে আরাম-আয়েশি জীবন, অধিক খাদ্যের প্রতি আকৃষ্ট করা, যৌনতা, অশ্লীলতা, ধন-সম্পদের প্রতি অতিশয় লোভ, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা, পরচর্চা, অপ্রয়োজনীয় কথা বলা, মিথ্যা বলা, স্বেচ্ছাচারিতা, আল্লাহর বিধি-বিধান সম্পর্কে উদাসীনতা, সালাত থেকে দূরে থাকায় অনুপ্রেরণা দিয়ে থাকে। এ রকম প্রকৃতি গ্রহণে মানুষের অদৃশ্য শত্রু শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় এবং মানুষকে আল্লাহর অবাধ্য হ’তে প্রভাবিত করে। পবিত্র রামাযানে আল্লাহ শয়তানকে শিকলবন্দী করে দেন, যাতে বান্দারা উপরোক্ত নিন্দনীয় প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি পরিত্যাগ করে পরকালমুখী হ’তে পারে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘রামাযান মাস আসলে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে শৃংখলিত করা হয়’।[5]

আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য প্রবৃত্তির অবৈধ চাহিদার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা আবশ্যক। এই সংগ্রামে জয় লাভ করে আল্লাহর ভালোবাসা যারা পায় তাদের সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ যখন তাঁর কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিব্রীল (আঃ)-কে ডেকে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিব্রীল (আঃ)ও তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) আসমানবাসীদের (সকল ফিরিশতার) মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন। তোমরাও তাকে ভালোবাস। তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে থাকে। তারপর পৃথিবীবাসীর অন্তরেও তাকে বরণীয় করে রাখা হয়’।[6] পবিত্র রামাযানে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা যায়। ভালোবাসা সারাবছর অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রাখা অপরিহার্য। সত্যনিষ্ঠ অন্তরে চেষ্টা করলে প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার অনুপ্রেরণা ও শক্তি সারাবছর অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব।

ঔদার্য ও যিকরের মাধ্যমে তাক্বওয়া অর্জনের সুযোগ : রামাযানে অর্জিত আত্মসংযম সমাজের অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শনে মুসলিম উম্মাহকে উদ্বুদ্ধ করে। সম্পদের প্রতি অতি লোভ ও ভালোবাসা হ্রাস পায়। আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং সান্নিধ্য লাভে উম্মতের ধনী ব্যক্তিরা উদার হস্তে দান-খয়রাত করে। উপরন্তু ধন-সম্পদ অর্জনে এবং ব্যয়ের অবৈধ অসৎ পথ হয়ে যায় সংকীর্ণ। কারণ শয়তান পাপ কাজে অনুপ্রেরণা ও কুমন্ত্রণা দিতে পারে না। তাতে সমাজের সর্বত্র ভ্রাতৃত্ব বন্ধন, সহনশীলতা ও ধৈর্যধারণের শিক্ষণীয় উদাহরণ মুসলমানদের জন্য উন্মুক্ত হয়। উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোর তাৎপর্য বুঝে ইবাদত করার বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে তাক্বওয়ার বৈশিষ্ট্য। রামাযানে অপ্রয়োজনীয় কথা কম বলে তাসবীহ-তাহলীল এবং যিকরে সময় ব্যয় করা উত্তম। রাস্তায় হাঁটতে, বাসে বা গাড়ীতে ভ্রমণে, হাতের কাজে ব্যস্ত থাকার সময় অনায়াসে যিকর করা যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যিকরের জন্য কতগুলো সহজ ব্যবস্থা দিয়েছেন, যার মাধ্যমে উম্মত অশেষ ফযীলত লাভ করতে পারে।

রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘দু’টি বাক্য যবানে হালকা, দাড়িপাল্লায় ভারী এবং আল্লাহর নিকটে পসন্দনীয়। ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী ওয়া সুবহানাল্লাহিল আযীম’।[7] ‘আল্লাহর ইবাদত করার জন্যই মানুষ ও জিন জাতিকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)

আর যিকর আল্লাহর অন্যতম ইবাদত, যা আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছতে সাহায্য করে। যিকর সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বলে ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়’।[8]

রাসূল (ﷺ) আরো বলেন, ‘তাহারাত বা পবিত্রতা অর্জন ঈমানের অর্ধেক আর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বাক্যটি মীযান (দাঁড়িপাল্লা) ভরে দেয় এবং ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহ’ এই বাক্য দু’টি ভরে দেয় আকাশ ও পৃথিবীর মাঝখানের সবটুকু’।[9]
অতএব নিঃসন্দেহে বলা যায়, পবিত্র রামাযান মাসে এবং বছরের অন্যান্য সময় নিয়মিতভাবে যিকর-আযকার করার অভ্যাস করতে পারলে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করা যায় ও অশেষ ছওয়াবের ভাগীদার হওয়া যায়।

লায়লাতুল কদরের মাহাত্ম্য :
লায়লাতুল কদর মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অতুলনীয় নে‘মত। এজন্যই এই মহান রাতে কৃত ইবাদতের মাহাত্ম্য হাযার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ এবং এ রাত আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সুবর্ণ সুযোগ। সারাবছর পার্থিব জীবনে কৃত পাপ থেকে এই রাতে ক্ষমা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা হচ্ছে আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। এই মহিমান্বিত রাতের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমরা একে নাযিল করেছি ক্বদরের রাত্রিতে। তুমি কি জানো ক্বদরের রাত্রি কি? ক্বদরের রাত্রি হাযার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ রাতে অবতরণ করে ফেরেশতাগণ এবং রূহ, তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে বিভিন্ন নির্দেশনা সহকারে। এ রাতে কেবলই শান্তি বর্ষণ। যা চলতে থাকে ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত’ (ক্বদর ৯৭/১-৫)
এই মহিমান্বিত রাতে কৃত ইবাদত ৮৪ বছরে কৃত ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। মুসলমানদের অধিকাংশই এই বয়সে উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই পরকালে চলে যায়। তদুপরি সারাজীবন একভাবে কেউ ইবাদত করতে পারে না। কাজেই লায়লাতুল কদর আল্লাহর সীমাহীন দয়া-অনুগ্রহ এবং ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন। লায়লাতুল কদরের তাৎপর্য সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্বদরের রাত্রিতে ঈমানের সাথে ছওয়াবের আশায় রাত্রি জাগরণ (ইবাদত) করে তার অতীতের গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়’।[10]
রামাযান মাসে মসজিদে জামা‘আতে তারাবীহর সালাত আদায় করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ। কাজেই আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় লায়লাতুল ক্বদরের মহাসুযোগ অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে।

মূলতঃ আল্লাহর রহমত ব্যতিরেকে কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না।
রাসূল (ﷺ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ তার আমলের দ্বারা নাজাত পাবে না। লোকেরা বলল, আপনিও না? তিনি বললেন, আমিও না। তবে আল্লাহ তাঁর রহমত দিয়ে আমাকে ঢেকে রেখেছেন। সুতরাং সঠিক এবং কর্তব্যনিষ্ঠভাবে কাজ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন কর, সকাল-বিকাল এবং রাতের শেষাংশে আল্লাহর ইবাদত কর। মধ্যম পন্থা অবলম্বন কর, মধ্যম পন্থাই তোমাদেরকে লক্ষ্যে পৌঁছাবে’।[11]
প্রার্থনা কবুল হওয়া এবং হেদায়াতে প্রতিষ্ঠিত থাকার শক্তিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য, যা এই কদরের রাতে অর্জন করা সম্ভব হয়।

রামাযানে বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনার গুরুত্ব : ক্ষমা প্রার্থনা করতে বান্দা তখনই উদ্বুদ্ধ হয় যখন স্বীয় অপরাধ ও পাপের কারণে অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর শাস্তির ভয় করে। ক্ষমা প্রার্থনার প্রথম ধাপ হচ্ছে সত্যনিষ্ঠভাবে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করা। রামাযানে বান্দারা আধ্যাত্মিকভাবে উজ্জীবিত হওয়ায় এ কাজ সহজ হয়। রামাযানের পবিত্রতায় একনিষ্ঠ হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ফিরে আসলে, আল্লাহ অনুতপ্ত বান্দাকে ক্ষমা করেন। রামাযানে রাত জেগে তারাবীহর নফল সালাত আদায় করা হয়ে থাকে, তাতে দীর্ঘক্ষণ কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। সারাদিন ছিয়াম রেখে রাতে সালাত ও যিকর আল্লাহর পসন্দনীয় কাজ। এতে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
এ সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘মহান ও কল্যাণময় আমাদের রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার (নিকটবর্তী) আসমানে অবতরণ করে বলতে থাকেন, কে আছ, যে আমাকে ডাকতে চাও? (ডাক) আমি তার ডাকে সাড়া দিব, কে এমন আছ, যে আমার নিকটে প্রার্থনা করবে? (প্রার্থনা কর) আমি তার প্রার্থনা কবুল করব এবং কে এমন আছ, যে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে? (ক্ষমা প্রার্থনা কর) আমি তাকে ক্ষমা করে দেব’।[12]

এখানে তাহাজ্জুদ সালাতের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। তবে রামাযানে এই বিষয়টা আরও বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকে। একমাস খাদ্য, জৈবিক চাহিদা, লোভ-লালসা, অবাধ্য জীবনের প্রতি আকর্ষণের বিপরীতে সংযমী আত্মা আল্লাহর কৃপা লাভের যোগ্যতা অর্জন করে। রামাযানে আল্লাহ শয়তানকে আটকিয়ে রাখেন, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেন এবং শাস্তির আধার জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেন। রামাযানে অর্জিত তাক্বওয়ার মাধ্যমে আল্লাহকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয়। এতে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশায় ইবাদতে আত্মনিয়োগ করে। সাথে সাথে নিজেকে সকল প্রকার অন্যায়, অশ্লীল কর্ম থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। তাই বলা যায়, ছিয়াম বান্দার জন্য গোনাহ থেকে রক্ষাকবয। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘ছিয়াম ঢালস্বরূপ’ [গোনাহ থেকে আত্মরক্ষার]। সুতরাং ছায়েম অশ্লীল কথা বলবে না বা জাহেলী আচরণ করবে না। কোন লোক তার সাথে ঝগড়া করতে উদ্যত হ’লে অথবা গাল-মন্দ করলে সে তাকে বলবে, ‘আমি ছিয়াম রেখেছি’। কথাটি দু’বার বলবে’।[13]
রাসূল (ﷺ) আরো বলেছেন, ‘ছিয়াম রেখেও কেউ যদি মিথ্যা বলা ও তদনুযায়ী কাজ করা পরিত্যাগ না করে তবে তার শুধু খাদ্য ও পানীয় পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই’।[14]
তাই ছিয়াম রেখে বেশি কথা বলা, অশ্লীল ছবি, দৃশ্য ও নাটক-সিনেমা দেখা, আড্ডা দেয়া এবং পরচর্চা করা, স্বীয় দৃষ্টিকে সংযত না করা, ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেয়া, পরস্পরে হিংসা করা, অন্যের প্রতি বিদ্বেষ ভাব রাখা, অন্যায়-অবিচারে লিপ্ত হওয়া, কাউকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা সবসময়ের জন্যই। তবে ছিয়াম রাখা অবস্থা এগুলো জড়িত হ’লে বা থাকলে ছিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।

উপরোল্লিখিত অনৈতিক বিষয়গুলো পরিহার করে অন্যান্য নির্ধারিত ইবাদত যথার্থভাবে পালন করে রামাযানে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, দয়াময় আল্লাহ সে প্রার্থনা অবশ্যই কবুল করবেন। এ নিশ্চয়তা দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার সম্পর্কে- বস্ত্তত আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নিই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার আদেশ মান্য কর এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য। যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে’ (বাক্বারাহ ২/১৮৬)। আত্মসংযমী, বান্দার প্রার্থনা বা দো‘আ আল্লাহ কবুল করে থাকেন, এ রকম ধারণা নিয়ে একনিষ্ঠ অন্তরে দো‘আ করলে দু’দিন আগে বা পরে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই বান্দার দো‘আ কবুল করবেন। দো‘আ কবুলের জন্য তাড়াহুড়া করা উচিত নয় এবং দো‘আ কবুলে দেরী হ’লে অভিযোগ করার কোন হেতু নেই। ধৈর্যধারণই সবকিছুতে সাফল্য আনে।

শেষ দশদিনে ইবাদত : রামাযানের শেষ দশদিনের যেকোন রাতেই লায়লাতুল কদর হ’তে পারে তবে বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ প্রসংগে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা লায়লাতুল কদরকে রামাযানের শেষ দশদিনে খোঁজ কর। লায়লাতুল কদর এসব রাত্রিতে আছে। যখন [রমাযানের] ৯, ৭ কিংবা ৫ রাত বাকী থেকে যায় (২১, ২৩ ও ২৫ তারিখে)।[15]

রাসূল (ﷺ) আরও বলেছেন, তা (লায়লাতুল কদর) শেষ দশদিনে আছে। যখন নয় রাত অতীত হয়ে যায় কিংবা সাত রাত বাকী থাকে বা পাঁচ রাত বাকী থাকে (২৯ কিংবা ২৭ বা ২৫ তারিখে)।[16]
আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূল (ﷺ) রামাযানের শেষ দশদিনে ই‘তেকাফ করতেন এবং বলতেন তোমরা লায়লাতুল কদরকে রামাযানের শেষ দশ দিনে তালাশ কর।[17]
কাজেই লায়লাতুল কদরের মাহাত্ম্য থেকে যাতে বঞ্চিত হ’তে না হয়, সেজন্য উত্তম কাজ হবে শেষ দশদিনের প্রতিরাতেই ইবাদত করা। কারণ শেষ দশদিনে রাসূল (ﷺ) ইবাদতের প্রতি বেশী সচেষ্ট হ’তেন। তিনি শেষ দশকে ই’তেকাফ করতেন, রাত

জেগে ইবাদত করতেন। এ সম্পর্কে আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, ‘রাসূল (সাঃ) রামাযানের শেষ দশদিন ই’তেকাফ করতেন। রামাযানের শেষ দশক শুরু হওয়া মাত্রই রাসূল (ﷺ) রাতভর বিনিদ্র থাকতেন এবং নিজ পরিবার-পরিজনকে নিদ্রা হ’তে জাগ্রত করতেন। আর তিনি নিজেও ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়ে যেতেন’।[18] অতএব উম্মতের জন্যও এইভাবে ইবাদত করার জন্য তাকীদ করা হয়েছে। লায়লাতুল কদরের দো‘আ সম্পর্কে আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! যদি আমি এই রাত্রি পাই তাহ’লে আমি কিভাবে দো‘আ করব, রাসূল (ﷺ) বললেন, বল,اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى ‘হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাকারী, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাস, আমাকে ক্ষমা কর’।[19]

ছাদাক্বাতুল ফিৎর : ছাদাকাতুল ফিৎর ঈদের সালাতে যাওয়ার পূর্বে আদায় করতে হবে। ইবনে ওমর (রাঃ) বলেছেন, রাসূল (ﷺ) লোকদের সালাতে গমনের পূর্বেই ছাদাকাতুল ফিৎর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।[20] ছাদাকাতুল ফিৎর ১ ছা‘ পরিমাণ দিতে হবে। যা খাদ্য দ্রব্য দ্বারা আদায় করতে হয়।[21]
প্রসংগত উল্লেখ্য, ঈদের পর শাওয়াল মাসে ছয়দিন নফল ছিয়াম করার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘রামাযান মাসের ছিয়াম রাখার পর শাওয়াল মাসের ছয়দিন ছিয়াম রাখা হচ্ছে সারা বছর ছিয়াম রাখার ন্যায়’।[22]
রামাযানের ৩০ ছিয়াম ও শাওয়ালের ছয় ছিয়াম মিলে হয় ৩৬ ছিয়াম। প্রতি ছিয়ামর জন্য কমপক্ষে দশগুণ ছওয়াব দেয়া হবে। অর্থাৎ ৩৬ দিনের জন্য ৩৬০ দিনের ছওয়াব পাওয়া যাবে। চাঁদের বছর হয় ৩৬০ দিনে। ছওয়াবের পরিমাণ সম্পর্কে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘বান্দার প্রত্যেক আমল দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়’।[23]

অতএব আমরা মানসিকভাবে প্রস্ত্ততি নিয়ে ছিয়াম পালনে সচেষ্ট হই। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে ছিয়াম পালনের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের তাওফীক দান কারুন-আমীন!



[1]. বুখারী হা/৭৪৯২
[2]. মুসলিম, হা/২৮৫৮
[3]. মুসলিম হা/২৬৭৫।
[4]. মুসলিম, হা/২৭৪৯।
[5]. বুখারী, হা/৩২৭৭।
[6]. বুখারী, হা/৭৪৮৫; মুসলিম হা/২৬৩৭; মিশকাত হা/৫০০৫।
[7]. বুখারী হা/৬৬৮২, ৭৫৬৩; মুসলিম হা/২৬৯৪; মিশকাত হা/২২৯৮।
[8]. তিরমিযী, হা/৩৪৬৫; মিশকাত হা/২৩০৪, সনদ সহীহ।
[9]. মুসলিম, হা/২২৩; মিশকাত হা/২৮১।
[10]. বুখারী, হা/১৯০১।
[11]. বুখারী, হা/৬৪৬৩।
[12]. বুখারী, হা/১১৪৫; মুসলিম হা/৭৪৫।
[13]. বুখারী হা/১৮৯৪; মুসলিম হা/১১৫১
[14]. বুখারী, হা/১৯০৩; মিশকাত হা/১৯৯৯।
[15]. বুখারী হা/২০২১
[16]. মুসলিম হা/১১৬৭
[17]. মুসলিম হা/১১৭২
[18]. মুসলিম হা/১১৭২
[19]. আহমাদ, ইবনু মাজাহ হা/৩৮৫০; মিশকাত হা/২০৯১, সনদ সহীহ।
[20]. বুখারী হা/১৫০৩।
[21]. বুখারী হা/১৫০৬।
[22]. মুসলিম হা/১১৬৪।
[23].
বুখারী হা/৪২, ৭৫০১; মুসলিম হা/১১৫৯।


সূত্র: আত-তাহরীক।​
 
Last edited:

Share this page