- Views: 556
- Replies: 2
যুহ্দ-১ : একাধারে তিনশ’ বছর কান্না
১. ওয়াহহাব ইবনুল ওয়ারদ আল-হাযরামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
‘আল্লাহ তা‘আলা নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর পুত্রের ব্যাপারে তিরস্কার করে অহী নাযিল করে বললেন, ‘আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, তুমি যেন মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হও’ (সূরা হূদ : ৪৬)। (এই কারণে) নূহ (আলাইহিস সালাম) তিনশ’ বছর কেঁদেছিলেন। আর এ কান্নার ফলে তার দু’চোখে পানির নালার ন্যায় দাগ পড়ে যায়।[১]
যুহ্দ-২ : অত্যাচারিত হওয়ার পরেও জাতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা
২. উবাইদ ইবনু উমাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর জাতির লোকেরা তাঁকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলত। জ্ঞান ফিরে আসলে তিনি বলতেন,
‘নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর জাতির লোকেরা তাঁকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলত। অতঃপর যখন জ্ঞান ফিরে আসত, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমার জাতিকে ক্ষমা করুন। কেননা তারা অজ্ঞ’।[২]
যুহ্দ-৩ : সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা
৩. মুহাম্মাদ ইবনু কা‘ব আল-কুরাযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
‘নূহ (আলাইহিস সালাম) খাওয়া শেষে বলতেন, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য), পান শেষে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, পোশাক পরিধান করে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ এবং বাহনে আরোহণ করে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে عَبۡدًا شَکُوۡرًا ‘কৃতজ্ঞ বান্দা’ নামে অভিহিত করেছেন’।[৩]
যুহ্দ-৪ : সন্তানের প্রতি পিতার উপদেশ
৪. মূসা ইবনু আলী ইবনু রবাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর পুত্র সাম-কে বলেছেন,
‘হে প্রিয় বৎস! অন্তরে বিন্দুমাত্র আল্লাহর সাথে শিরক করে কবরে যেও না। কেননা যে মুশরিক অবস্থায় আল্লাহর নিকট আসবে তার কোন দলীল থাকবে না। হে প্রিয় বৎস! অন্তরে বিন্দুমাত্র অহঙ্কার নিয়ে কবরে যেও না; কারণ অহঙ্কার হল আল্লাহর চাদর। আর যে আল্লাহর চাদর নিয়ে টানাটানি করে, আল্লাহ তার উপর অভিসম্পাত বর্ষণ করেন। হে আমার প্রিয় ছেলে! অন্তরে বিন্দুমাত্র হতাশা নিয়েও কবরে যেও না; কারণ কেবল পথহারা লোকেরাই আল্লাহর করুণা থেকে হতাশ হয়’।[৪]
যুহদ-৫ : জাতির জন্য বদ দু‘আ
৫. হাসান (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর জাতির জন্য নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল না হওয়া পর্যন্ত বদ-দু‘আ করেননি।
‘আর নূহ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর নিকট এ মর্মে অহী নাযিল করা হল- তোমার জাতির মধ্যে যারা ইতোমধ্যে ঈমান এনেছে তাদের ব্যতীত আর কেউ ঈমান আনবে না। সুতরাং তাদের কর্মকা-ের জন্য দুঃখ করো না’ (সূরা হূদ : ৩৬)। তখন তার জাতির (হিদায়াতের) ব্যাপারে তার আশা কেটে যায় এবং তিনি তাদের জন্য বদ দু‘আ করেন’।[৫]
তথ্যসূত্র :
[১]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৪৪; সনদ ছহীহ, মারবিয়্যাতুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল ফিত তাফসীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৮৯।
[২]. ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল, কিতাবুয যুহদ (বৈরূত : দারুল নাহযাতিল আরাবিয়্যাহ, ১৯৮১ খ্রি.), পৃ. ৯১।
[৩]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৪৪৭৩।
[৪]. কিতাবুয যুহদ, পৃ. ৯১-৯২।
[৫]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ১/১০৯; বাহরুল ঊলূম, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৪৮।
১. ওয়াহহাব ইবনুল ওয়ারদ আল-হাযরামী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন,
لَمَّا عَاتَبَ اللهُ تَعَالَى نُوْحًا فِي ابْنِهِ فَأَنْزَلَ عَلَيْهِ { اِنِّیۡۤ اَعِظُکَ اَنۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡجٰہِلِیۡنَ } بَكَى ثَلَاثَمِائَةِ عَامٍ حَتَّى صَارَ تَحْتَ عَيْنَيْهِ مِثْلُ الْجَدْوَلِ مِنَ الْبُكَاءِ.
‘আল্লাহ তা‘আলা নূহ (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর পুত্রের ব্যাপারে তিরস্কার করে অহী নাযিল করে বললেন, ‘আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, তুমি যেন মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হও’ (সূরা হূদ : ৪৬)। (এই কারণে) নূহ (আলাইহিস সালাম) তিনশ’ বছর কেঁদেছিলেন। আর এ কান্নার ফলে তার দু’চোখে পানির নালার ন্যায় দাগ পড়ে যায়।[১]
যুহ্দ-২ : অত্যাচারিত হওয়ার পরেও জাতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা
২. উবাইদ ইবনু উমাইর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর জাতির লোকেরা তাঁকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলত। জ্ঞান ফিরে আসলে তিনি বলতেন,
كَانَ قَوْمُ نُوْحُ يَضْرِبُوْنَهُ حَتَّى يُغْشَى عَلَيْهِ فَإِذَا أَفَاقَ قَالَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِقَوْمِىْ فَإِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ
‘নূহ (আলাইহিস সালাম)-এর জাতির লোকেরা তাঁকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলত। অতঃপর যখন জ্ঞান ফিরে আসত, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আমার জাতিকে ক্ষমা করুন। কেননা তারা অজ্ঞ’।[২]
যুহ্দ-৩ : সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করা
৩. মুহাম্মাদ ইবনু কা‘ব আল-কুরাযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
كَانَ نُوْحٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ إِذَا أَكَلَ قَالَ الْحَمْدُ لِلهِ وَإِذَا شَرِبَ قَالَ الْحَمْدُ لِلهِ وَإِذَا لَبِسَ قَالَ الْحَمْدُ لِلهِ وَإِذَا رَكِبَ قَالَ الْحَمْدُ لِلهِ فَسَمَّاهُ اللهُ عَبۡدًا شَکُوۡرًا
‘নূহ (আলাইহিস সালাম) খাওয়া শেষে বলতেন, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য), পান শেষে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, পোশাক পরিধান করে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ এবং বাহনে আরোহণ করে বলতেন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে عَبۡدًا شَکُوۡرًا ‘কৃতজ্ঞ বান্দা’ নামে অভিহিত করেছেন’।[৩]
যুহ্দ-৪ : সন্তানের প্রতি পিতার উপদেশ
৪. মূসা ইবনু আলী ইবনু রবাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর পুত্র সাম-কে বলেছেন,
يَا بُنَيَّ لَا تَدْخُلُنَّ الْقَبْرَ وَفِيْ قَلْبِكَ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِّنَ الشِّرْكِ بِاللهِ فَإِنَّهُ مِنْ يَأْتِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مُشْرِكًا فَلَا حُجَّةَ لَهُ. وَيَا بُنَيَّ لَا تَدْخُلُ الْقَبْرَ وَفِيْ قَلْبِكَ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِّنَ الْكِبْرِ فَإِنَّ الْكِبْرَ رِدَاءُ اللهِ فَمَن يُّنَازِعُ اللهَ رِدَاءَهُ يَغْضَبُ اللِه عَلَيْهِ وَيَا بُنَيَّ لَا تَدْخُلُنَّ الْقَبْرَ وَفِيْ قَلْبِكَ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِّنَ الْقُنُوْطِ فَإِنَّهُ لَا يَقْنُطُ مِنْ رَحْمَةِ اللهِ إِلَّا ضَالٌّ
‘হে প্রিয় বৎস! অন্তরে বিন্দুমাত্র আল্লাহর সাথে শিরক করে কবরে যেও না। কেননা যে মুশরিক অবস্থায় আল্লাহর নিকট আসবে তার কোন দলীল থাকবে না। হে প্রিয় বৎস! অন্তরে বিন্দুমাত্র অহঙ্কার নিয়ে কবরে যেও না; কারণ অহঙ্কার হল আল্লাহর চাদর। আর যে আল্লাহর চাদর নিয়ে টানাটানি করে, আল্লাহ তার উপর অভিসম্পাত বর্ষণ করেন। হে আমার প্রিয় ছেলে! অন্তরে বিন্দুমাত্র হতাশা নিয়েও কবরে যেও না; কারণ কেবল পথহারা লোকেরাই আল্লাহর করুণা থেকে হতাশ হয়’।[৪]
যুহদ-৫ : জাতির জন্য বদ দু‘আ
৫. হাসান (রাহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত, নূহ (আলাইহিস সালাম) তাঁর জাতির জন্য নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল না হওয়া পর্যন্ত বদ-দু‘আ করেননি।
وَ اُوۡحِیَ اِلٰی نُوۡحٍ اَنَّہٗ لَنۡ یُّؤۡمِنَ مِنۡ قَوۡمِکَ اِلَّا مَنۡ قَدۡ اٰمَنَ فَلَا تَبۡتَئِسۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ
‘আর নূহ (রাহিমাহুল্লাহ)-এর নিকট এ মর্মে অহী নাযিল করা হল- তোমার জাতির মধ্যে যারা ইতোমধ্যে ঈমান এনেছে তাদের ব্যতীত আর কেউ ঈমান আনবে না। সুতরাং তাদের কর্মকা-ের জন্য দুঃখ করো না’ (সূরা হূদ : ৩৬)। তখন তার জাতির (হিদায়াতের) ব্যাপারে তার আশা কেটে যায় এবং তিনি তাদের জন্য বদ দু‘আ করেন’।[৫]
তথ্যসূত্র :
[১]. হিলইয়াতুল আওলিয়া, ৮ম খণ্ড, পৃ. ১৪৪; সনদ ছহীহ, মারবিয়্যাতুল ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল ফিত তাফসীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৮৯।
[২]. ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল, কিতাবুয যুহদ (বৈরূত : দারুল নাহযাতিল আরাবিয়্যাহ, ১৯৮১ খ্রি.), পৃ. ৯১।
[৩]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান, হা/৪৪৭৩।
[৪]. কিতাবুয যুহদ, পৃ. ৯১-৯২।
[৫]. আল-বিদায়াহ ওয়ান-নিহায়াহ, ১/১০৯; বাহরুল ঊলূম, ২য় খণ্ড, পৃ. ১৪৮।