Habib Bin Tofajjal
If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 690
- Comments
- 1,218
- Solutions
- 17
- Reactions
- 7,106
- Thread Author
- #1
Religion should not be allowed to come into politics. It is merely a matter between man and god. ‘ধর্মকে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশাধিকার দেওয়া উচিত নয়। এটি মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যকার একটি (আধ্যাত্মিক) বিষয় মাত্র’।
Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল কথাটি উপরোক্ত দু’টি বাক্যের মধ্যে নিহিত। দীর্ঘ প্রায় দু’শত বছরের গোলামীর যুগে বৃটিশ বেনিয়া দার্শনিকদের শিখানো ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামক এই মতবাদটি সাফল্যজনকভাবে চালু করার ফলেই সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা সদ্য রাজ্যহারা মুসলিম শক্তিকে নিরুৎসাহিত করতে এবং সুদীর্ঘকাল যাবৎ ভারত উপমহাদেশ শাসন করতে সক্ষম হয়েছিল। বর্তমানে উপমহাদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি স্বাধীন দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলি চালু না থাকার অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল বৃটিশের রেখে যাওয়া উপরোক্ত মতবাদ। ফলে মুসলিম দেশে বাস করেও আমরা অমুসলিম দেশ সমূহের গৃহীত আইন অনুযায়ী শাসিত হচ্ছি। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি দেশ তাদের জনগণের লালিত কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মোতাবেক রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবস্থা গড়ে তুলে ও সেই অনুযায়ী দেশ শাসন করে থাকে।
কম্যুনিষ্ট দেশগুলি তাদের অধিকাংশ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কম্যুনিষ্ট পার্টির গৃহীত আইনের লৌহ কঠিন শৃংখলে শাসিত হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য মুসলিম দেশগুলির জন্য যে, এই দেশগুলির শাসন ব্যবস্থায় তাদের নিজস্ব তাহযীব ও তামাদ্দুনের প্রতিফলন নেই। বরং দেশের সংবিধানে অনৈসলামী শাসন দর্শনের গোলামীর চেহারা প্রকটভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তথাকথিত উদারতাবাদের দোহাই পেড়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামক উক্ত মতবাদটির প্রচলন ঘটানো হয়েছে। যার মূল কথাই হ’ল রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ধর্মের অর্থাৎ ইসলামের কোন বিধান চলবে না।
বরং জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত পার্লামেন্টের গুটিকয়েক গুণী ও নির্গুণ সদস্য কিংবা সামরিক ডিক্টেটর প্রেসিডেন্ট নিজের খেয়াল-খুশীমত যা আইন করে দিবেন, সেটাই দেশের আইন বলে সকলকে মেনে নিতে হবে। পৃথিবীতে ইসলাম ব্যতীত অন্য যতগুলি ধর্ম আছে, কারো নিকট আল্লাহ প্রেরিত অভ্রান্ত রাষ্ট্রীয় বা অর্থনৈতিক দর্শন বা হেদায়াত মওজূদ নেই।
তাই একথা নির্বিবাদে বলা যায় যে, ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামে সৃষ্ট উক্ত মতবাদটি কেবলমাত্র ইসলামকেই মুসলমানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবন থেকে বের করে দেবার জন্য ইহুদী-নাছারা বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে।
বস্ত্তত:পক্ষে ঊনবিংশ শতকে আবিষ্কৃত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের এই আধুনিক মতবাদটি অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হ’লেও বিশ্ব ইতিহাসের অতুলনীয় রাজনৈতিক দলীল ‘মদীনার সনদ’-এর রচয়িতা ও ঐতিহাসিক ‘হোদায়বিয়ার সন্ধি’তে স্বাক্ষরদানকারী কুশাগ্রবুদ্ধি রাজনীতিবিশারদ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)-এর প্রচারিত ও আল্লাহ প্রেরিত পূর্ণাঙ্গ শরী‘আত ইসলামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং অন্যান্য ধর্মের বিপরীতে ইসলামী শরী‘আতে মানুষের আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক উভয় জীবনের জন্য চিরন্তন হেদায়াত সমূহ মওজূদ রয়েছে। যা যথাযথভাবে মেনে নেওয়ার মধ্যেই মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তি নির্ভর করে।
২. এই দর্শনের ফলে মুসলমানরা ইসলামকে অপূর্ণ ও বিকলাঙ্গ ভাবতে শুরু করেছে। ফলে চৌদ্দশ’ বছরের পুরনো ইসলাম এ যুগে অচল বলতেও মুসলিম শিক্ষিত সন্তানের জিহবা আড়ষ্ট হয় না। বরং উল্টা অপবাদ ছড়ানো হয় যে, ইসলামী আইন ব্যবস্থায় অমুসলিমদের জন্য কোন বিধান নেই।
৩. এই দর্শনের মারাত্মক কুফল হিসাবে মুসলমান তার আধ্যাত্মিক জীবনে আল্লাহর আইন ও বৈষয়িক জীবনে নিজের জ্ঞান বা প্রবৃত্তিকে ইলাহ-এর আসনে বসিয়েছে। আল্লাহ বলেন,
৪. এই দর্শনের বাস্তব ফলশ্রুতি হিসাবে আমাদের নেতারা রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে সোচ্চার গলায় শিরকী কালাম উচ্চারণ করে বলেন, ‘জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’। একই কারণে সূদভিত্তিক হারামী অর্থনীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু করতে এবং দেশবাসীকে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ‘হারামখোর’ বানাতেও আমাদের মুসলিম নেতাদের অন্তর আল্লাহর গযবের ভয়ে প্রকম্পিত হয় না। স্বীয় পদমর্যাদার অপব্যবহার করে লাখ লাখ ঘুষের টাকা পকেটে ভরতেও এদের হাত কাঁপে না। ডাক্তারের চেয়ারে বসে অসহায় রোগীর পকেট ডাকাতি করতেও এদের বিবেকে বাধে না। মাল মওজূদ করে ইচ্ছাকৃতভাবে কৃত্রিম খাদ্যসংকট সৃষ্টি করতেও এরা জাহান্নামের ভয়ে ভীত হয় না।
জুয়া-লটারী আর স্মাগলিংয়ের হারামী পয়সায় খাবার কিনে নিষ্পাপ কচি মা‘ছূম বাচ্চার মুখে তুলে দিতেও এদের পাষাণ পিতৃহৃদয় ভয়ে আঁৎকে ওঠে না। কারণ তার বিশ্বাস অনুযায়ী এ সবই হ’ল বৈষয়িক ব্যাপার। এখানে আবার জান্নাত-জাহান্নাম কি? তাই একজন লোক মসজিদে পাক্কা মুছল্লী এবং ‘আলহাজ্জ’ লকব নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেও বৈষয়িক ব্যাপারে তার কোনই প্রভাব পড়বে না, যদি নাকি ঐ ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী হয়। তার দ্বীন তার দুনিয়ার উপরে কোন প্রভাব বিস্তার করবে না। ঐ ব্যক্তি হবে তখন পুরা দুনিয়াদার।
দুনিয়াবী লাভ-লোকসানই হবে তার সকল কাজের নৈতিক মানদন্ড। যাঁরা দেশের রাজনৈতিক ও বৈষয়িক ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামান না বরং আলীশান খানক্বাহে বসে মা‘রেফাতের সবক দেন কিংবা বার্ষিক ওরস- ঈছালে ছওয়াব ও প্রাত্যহিক নযর-নেয়াযের দৈনিক ব্যালান্স হিসাব করায় সদা ব্যস্ত থাকেন, তারাই এদেশে ‘দ্বীনদার’ বলে খ্যাত। জানি না ইসলামের মহান নবী (ﷺ) ও তাঁর চারজন খলীফাকে এরা দ্বীনদার বলবেন, না ‘দুনিয়াদার’ বিশেষণে বিশেষিত করবেন।
আমরা যারা কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী সমাজ গঠনের শপথ নিয়েছি, নির্ভেজাল ইসলামী আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসাবে আহলেহাদীস আন্দোলনের প্রত্যেক কর্মীকে উপরোক্ত জাহেলী মতবাদটি সম্পর্কে সর্বদা হুঁশিয়ার থাকতে হবে এবং নিজেকে ও নিজের পরিবার ও সমাজকে এই ইসলাম ধ্বংসকারী খৃষ্টানী মতবাদ হ’তে এবং এই মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের জান, মাল, সময় ও শ্রম ব্যয় করা হ’তে বিরত থাকতে হবে।
Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল কথাটি উপরোক্ত দু’টি বাক্যের মধ্যে নিহিত। দীর্ঘ প্রায় দু’শত বছরের গোলামীর যুগে বৃটিশ বেনিয়া দার্শনিকদের শিখানো ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামক এই মতবাদটি সাফল্যজনকভাবে চালু করার ফলেই সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা সদ্য রাজ্যহারা মুসলিম শক্তিকে নিরুৎসাহিত করতে এবং সুদীর্ঘকাল যাবৎ ভারত উপমহাদেশ শাসন করতে সক্ষম হয়েছিল। বর্তমানে উপমহাদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি স্বাধীন দেশ হওয়া সত্ত্বেও সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিকগুলি চালু না থাকার অন্যতম প্রধান কারণ হ’ল বৃটিশের রেখে যাওয়া উপরোক্ত মতবাদ। ফলে মুসলিম দেশে বাস করেও আমরা অমুসলিম দেশ সমূহের গৃহীত আইন অনুযায়ী শাসিত হচ্ছি। পৃথিবীতে প্রত্যেকটি দেশ তাদের জনগণের লালিত কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মোতাবেক রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবস্থা গড়ে তুলে ও সেই অনুযায়ী দেশ শাসন করে থাকে।
কম্যুনিষ্ট দেশগুলি তাদের অধিকাংশ জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কম্যুনিষ্ট পার্টির গৃহীত আইনের লৌহ কঠিন শৃংখলে শাসিত হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য মুসলিম দেশগুলির জন্য যে, এই দেশগুলির শাসন ব্যবস্থায় তাদের নিজস্ব তাহযীব ও তামাদ্দুনের প্রতিফলন নেই। বরং দেশের সংবিধানে অনৈসলামী শাসন দর্শনের গোলামীর চেহারা প্রকটভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তথাকথিত উদারতাবাদের দোহাই পেড়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামক উক্ত মতবাদটির প্রচলন ঘটানো হয়েছে। যার মূল কথাই হ’ল রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ধর্মের অর্থাৎ ইসলামের কোন বিধান চলবে না।
বরং জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত পার্লামেন্টের গুটিকয়েক গুণী ও নির্গুণ সদস্য কিংবা সামরিক ডিক্টেটর প্রেসিডেন্ট নিজের খেয়াল-খুশীমত যা আইন করে দিবেন, সেটাই দেশের আইন বলে সকলকে মেনে নিতে হবে। পৃথিবীতে ইসলাম ব্যতীত অন্য যতগুলি ধর্ম আছে, কারো নিকট আল্লাহ প্রেরিত অভ্রান্ত রাষ্ট্রীয় বা অর্থনৈতিক দর্শন বা হেদায়াত মওজূদ নেই।
তাই একথা নির্বিবাদে বলা যায় যে, ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ নামে সৃষ্ট উক্ত মতবাদটি কেবলমাত্র ইসলামকেই মুসলমানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবন থেকে বের করে দেবার জন্য ইহুদী-নাছারা বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে।
বস্ত্তত:পক্ষে ঊনবিংশ শতকে আবিষ্কৃত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের এই আধুনিক মতবাদটি অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হ’লেও বিশ্ব ইতিহাসের অতুলনীয় রাজনৈতিক দলীল ‘মদীনার সনদ’-এর রচয়িতা ও ঐতিহাসিক ‘হোদায়বিয়ার সন্ধি’তে স্বাক্ষরদানকারী কুশাগ্রবুদ্ধি রাজনীতিবিশারদ নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)-এর প্রচারিত ও আল্লাহ প্রেরিত পূর্ণাঙ্গ শরী‘আত ইসলামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বরং অন্যান্য ধর্মের বিপরীতে ইসলামী শরী‘আতে মানুষের আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক উভয় জীবনের জন্য চিরন্তন হেদায়াত সমূহ মওজূদ রয়েছে। যা যথাযথভাবে মেনে নেওয়ার মধ্যেই মানুষের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তি নির্ভর করে।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের কুফল
১. ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’-এর প্রধান লক্ষ্য হ’ল ইসলামকে মানুষের বৈষয়িক জীবন থেকে বিতাড়িত করে আধ্যাত্মিক জীবনে বন্দী করে ফেলা। অতঃপর সেখান থেকেও ক্রমে ক্রমে বিদায় করে দিয়ে মানুষকে পুরা নাস্তিক ও বস্ত্তবাদী করে তোলা। এই লক্ষ্যের প্রথম স্তরে তারা অত্যন্ত দ্রুত সফলতা লাভ করেছে এবং মুসলিম বিশ্বের প্রায় সর্বত্র বর্তমানে এই দর্শন নামে-বেনামে রাষ্ট্রীয়ভাবেই চালু হয়ে গেছে। চূড়ান্ত স্তরের মহড়াও প্রায় সব দেশেই কিছু কিছু চলছে সে সব দেশের কম্যুনিষ্ট ও সমাজতন্ত্রী দলগুলির মাধ্যমে ও তাদের প্রচারিত সাহিত্য-সাময়িকী, বই ও পত্র-পত্রিকা তথা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সমূহের মাধ্যমে।২. এই দর্শনের ফলে মুসলমানরা ইসলামকে অপূর্ণ ও বিকলাঙ্গ ভাবতে শুরু করেছে। ফলে চৌদ্দশ’ বছরের পুরনো ইসলাম এ যুগে অচল বলতেও মুসলিম শিক্ষিত সন্তানের জিহবা আড়ষ্ট হয় না। বরং উল্টা অপবাদ ছড়ানো হয় যে, ইসলামী আইন ব্যবস্থায় অমুসলিমদের জন্য কোন বিধান নেই।
৩. এই দর্শনের মারাত্মক কুফল হিসাবে মুসলমান তার আধ্যাত্মিক জীবনে আল্লাহর আইন ও বৈষয়িক জীবনে নিজের জ্ঞান বা প্রবৃত্তিকে ইলাহ-এর আসনে বসিয়েছে। আল্লাহ বলেন,
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنْتَ تَكُوْنُ عَلَيْهِ وَكِيْلاً- أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُوْنَ أَوْ يَعْقِلُوْنَ إِنْ هُمْ إِلاَّ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيْلاً-
‘(হে নবী!) আপনি কি দেখেছেন ঐ ব্যক্তিকে, যে স্বীয় প্রবৃত্তিকে ইলাহ গণ্য করেছে? আপনি কি ঐ লোকটির কোন দায়িত্ব নিবেন? আপনি কি মনে করেন ওদের অধিকাংশ লোক শুনে বা বুঝে? ওরা তো চতুষ্পদ জন্তুর মত বরং তার চেয়েও অধম’ (ফুরক্বান ২৫/৪৩, ৪৪)।৪. এই দর্শনের বাস্তব ফলশ্রুতি হিসাবে আমাদের নেতারা রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে সোচ্চার গলায় শিরকী কালাম উচ্চারণ করে বলেন, ‘জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’। একই কারণে সূদভিত্তিক হারামী অর্থনীতি রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু করতে এবং দেশবাসীকে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় ‘হারামখোর’ বানাতেও আমাদের মুসলিম নেতাদের অন্তর আল্লাহর গযবের ভয়ে প্রকম্পিত হয় না। স্বীয় পদমর্যাদার অপব্যবহার করে লাখ লাখ ঘুষের টাকা পকেটে ভরতেও এদের হাত কাঁপে না। ডাক্তারের চেয়ারে বসে অসহায় রোগীর পকেট ডাকাতি করতেও এদের বিবেকে বাধে না। মাল মওজূদ করে ইচ্ছাকৃতভাবে কৃত্রিম খাদ্যসংকট সৃষ্টি করতেও এরা জাহান্নামের ভয়ে ভীত হয় না।
জুয়া-লটারী আর স্মাগলিংয়ের হারামী পয়সায় খাবার কিনে নিষ্পাপ কচি মা‘ছূম বাচ্চার মুখে তুলে দিতেও এদের পাষাণ পিতৃহৃদয় ভয়ে আঁৎকে ওঠে না। কারণ তার বিশ্বাস অনুযায়ী এ সবই হ’ল বৈষয়িক ব্যাপার। এখানে আবার জান্নাত-জাহান্নাম কি? তাই একজন লোক মসজিদে পাক্কা মুছল্লী এবং ‘আলহাজ্জ’ লকব নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেও বৈষয়িক ব্যাপারে তার কোনই প্রভাব পড়বে না, যদি নাকি ঐ ব্যক্তি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদে বিশ্বাসী হয়। তার দ্বীন তার দুনিয়ার উপরে কোন প্রভাব বিস্তার করবে না। ঐ ব্যক্তি হবে তখন পুরা দুনিয়াদার।
দুনিয়াবী লাভ-লোকসানই হবে তার সকল কাজের নৈতিক মানদন্ড। যাঁরা দেশের রাজনৈতিক ও বৈষয়িক ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামান না বরং আলীশান খানক্বাহে বসে মা‘রেফাতের সবক দেন কিংবা বার্ষিক ওরস- ঈছালে ছওয়াব ও প্রাত্যহিক নযর-নেয়াযের দৈনিক ব্যালান্স হিসাব করায় সদা ব্যস্ত থাকেন, তারাই এদেশে ‘দ্বীনদার’ বলে খ্যাত। জানি না ইসলামের মহান নবী (ﷺ) ও তাঁর চারজন খলীফাকে এরা দ্বীনদার বলবেন, না ‘দুনিয়াদার’ বিশেষণে বিশেষিত করবেন।
আমরা যারা কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী সমাজ গঠনের শপথ নিয়েছি, নির্ভেজাল ইসলামী আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসাবে আহলেহাদীস আন্দোলনের প্রত্যেক কর্মীকে উপরোক্ত জাহেলী মতবাদটি সম্পর্কে সর্বদা হুঁশিয়ার থাকতে হবে এবং নিজেকে ও নিজের পরিবার ও সমাজকে এই ইসলাম ধ্বংসকারী খৃষ্টানী মতবাদ হ’তে এবং এই মতবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের জান, মাল, সময় ও শ্রম ব্যয় করা হ’তে বিরত থাকতে হবে।
প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব