সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

সিয়াম গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলার রোযার বিধান

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
10,180
Credits
6,269
গর্ভবতী অথবা দুগ্ধদাত্রী মহিলা রোযা রাখার দরুন যদি নিজেদের কষ্ট হয় অথবা তাদের শিশুর ক্ষতির আশঙ্কা করে, তাহলে উভয়ের জন্য রোযা না রেখে যখন সহজ হবে অথবা ক্ষতির আশঙ্কা দূর হবে তখন রোযা কাযা করে নেওয়া বৈধ।[1]

বলা বাহুল্য, (কিছু উলামার নিকট) গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলাকে রোগীর উপর কিয়াস করাই সঠিক। সুতরাং রোগীর মত তাদের জন্য রোযা না রাখা বৈধ এবং তাদের জন্য সময় মত কাযা ছাড়া অন্য কিছু ওয়াজেব নয়। এতে তারা নিজেদের ক্ষতির আশঙ্কা করুক অথবা তাদের শিশুদের। যেহেতু মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘‘আল্লাহ মুসাফিরের উপর থেকে (যথাসময়ে) রোযা এবং অর্ধেক নামায, আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলার উপর থেকে (যথাসময়ে) রোযা লাঘব করেছেন।’’[2]

উপরোক্ত হাদীসের উদ্দেশ্য এই যে, তারা রমাযানে রোযা না রেখে সময় মত কাযা করতে পারে। রোযা একেবারেই মাফ নয়।[3]

পক্ষান্তরে যাঁরা তাদের জন্য কাযা করার সাথে সাথে মিসকীনকে খাদ্যদানেরও কথা বলে থাকেন, তাঁদের কথার উপর কিতাব ও সুন্নাহর কোন দলীল নেই। আর মূল হল দায়িত্বে কিছু না থাকা, যতক্ষণ না দায়িত্ব আসার সপক্ষে কোন দলীল কায়েম হয়েছে।[4]

কোন কোন আহলে ইল্ম এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন যে, গর্ভবতী ও দুগ্ধদাত্রী মহিলার জন্য (চিররোগা ও অক্ষম বৃদ্ধের মত) কেবল খাদ্যদানই ওয়াজেব; কাযা ওয়াজেব নয়। এ মত পোষণ করেছেন ইবনে আববাস, ইবনে উমার ও সাঈদ বিন জুবাইর। ইবনে আববাস এ ব্যাপারে স্পষ্ট বলেন, ‘ওরা প্রত্যেক দিনের বিনিময়ে একটি করে মিসকীন খাওয়াবে; রোযা কাযা করবে না।’

অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, একদা তিনি তাঁর ক্রীতদাসী স্ত্রীকে গর্ভ বা দুধ দান করা অবস্থায় দেখে বললেন, ‘তুমি অক্ষম ব্যক্তির মত। তোমার জন্য প্রত্যেক রোযার বিনিময়ে একটি করে মিসকীন খাওয়ানো ওয়াজেব। তোমার জন্য কাযা ওয়াজেব নয়।’[5]

তিনিই মহান আল্লাহর এই বাণী ‘‘যারা রোযা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোযা রাখতে চায় না, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করবে। (কুরআনুল কারীম ২/১৮৪) এর তফসীরে বলেছেন, ‘আর গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মহিলা রোযা রাখতে ভয় করলে রোযা না রেখে প্রত্যেক দিনের পরিবর্তে একটি করে মিসকীন খাওয়াবে।’ সুতরাং স্পষ্ট উক্তির বর্তমানে কিয়াসের কোন প্রয়োজন নেই।

অবশ্য ইবনে আববাসের এই মত সেই মহিলার জন্য প্রযোজ্য, যে মহিলা প্রত্যেক দুই-আড়াই বছর পর পর সন্তান ধারণ করে। কারণ, এই শ্রেণীর মহিলা কাযা করার ফুরসতই পাবে না। যে কোন সময়ে হয় সে গর্ভবতী থাকবে, নচেৎ দুগ্ধদায়িনী। আর গর্ভ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তার রোযা রাখার সুযোগই হয়ে উঠবে না। অতএব সে মিসকীনকে খানা খাইয়ে দেবে এবং তার জন্য রোযা মাফ। আর আল্লাহই ভালো জানেন।


[1] (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ ৫৯পৃঃ)
[2] (আহমাদ, মুসনাদ ৪/৩৪৭, আবূ দাঊদ ২৪০৮, তিরমিযী ৭১৫, নাসাঈ ২২৭৬, ইবনে মাজাহ ১৬৬৭, সহীহুল জামেইস সাগীর, আলবানী ১৮৩৫নং)
[3] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৩৬২)
[4] (ইবনে উষাইমীন, ফাসিঃ মুসনিদ ৬৬পৃঃ)
[5] (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ৪/১৭-২৫ দ্রঃ)


রমাযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল
শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী​
 
COMMENTS ARE BELOW
Top