‼️ পোস্টটি সুন্দরভাবে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।‼️

কাফের রাষ্ট্রে বসবাস নিয়ে একটি চমৎকার গল্প II শাইখ আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া

Threads
4
Comments
5
Reactions
39
Credits
21
মাসজিদে নববীতে এক ভদ্রলোকের সাথে দেখা হলো। কেতাদুরস্ত মাশাআল্লাহ। পরিচয় হলো, সাথে ছিল মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রফেসর ও একাধিক মেধাবী ছাত্র। তো ভদ্রলোক বললেন, তিনি আমেরিকায় সেটেল্ড। উমরা করেন, হজ করেন, নিজের পরিবারের সকলেই আমেরিকান।

আমি বললাম, আপনি কি বর্তমান অবস্থায় আমেরিকার জীবনযাত্রাকে সঠিক মনে করছেন?
তিনি বললেন, জী। এ ব্যাপারে আমার মাঝে কোনো দ্বিধা নেই।

আমি বললাম, যেসব কারণে কাফেরের দেশে থাকা কিংবা নাগরিকত্ব নেয়া নিষেধ তা জানেন কী না?? আলেমগণ সর্বসম্মত কিছু শর্ত দিয়েছেন সেগুলো জানেন কি?
তিনি খুব ক্ষেপে গেলেন, আপনারা অকারণে কথা বাড়ান। আমরা না গেলে দাওয়াত দিবে কে?

আমি বললাম, আপনি কি দাওয়াতের জন্য গিয়েছেন? নাকি আপনার ছেলেরা দাওয়াতের জন্য গিয়েছেন??
তিনি বললেন, আমার ছেলেরা তো জ্ঞান অর্জন করতে এসেছে??

আমি বললাম, এমন কোন জ্ঞানের জন্য তারা কাফেরের দেশে হিজরত করলেন?
তিনি বললেন, ফার্মাসিষ্ট হওয়ার জন্য।

আমি বললাম, প্রথমত এ জ্ঞান আমাদের দেশে এভেইলেবল, দ্বিতীয়ত এটার জন্য নাগরিকত্ব না নিলেও পারতেন।
তিনি বললেন, আমাদের তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না, আপনার সমস্যা কোথায়??

আমি বললাম, আপনি মনে হয় সমস্যা আঁচ করতে পারছেন না। দেখুন,

হিজরত কাফেরদের দেশে হওয়া বুখারী শরীফের প্রথম হাদীস বিরোধী।​
কাফিরদের মাঝে অবস্থানকারী মুমিন থেকে রাসূল দায়মুক্ত ঘোষণা করেছেন।​
কাফিরদের আর ঈমানদারদের রান্না ও বসবাসের আগুন একসাথে উপরে উঠবে না বলে রাসূল ঘোষণা করেছেন।​
কাফিরের দেশের নাগরিকত্ব থাকলে আপনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করতে বাধ্য​
কাফিরদের দেশে আপনার সন্তান গাইরাতে ঈমানিয়্যাহ হারাবে। তার কাছে দেশের মায়া ঈমানের উপর স্থান পাবে।​
কাফিরদের দেশে অবস্থান করার পর এ প্রজন্ম যদি বাদও যায় পরবর্তী প্রজন্ম নিঃসন্দেহে দীন ও ঈমানের অনেক শাখা কাটতে আরম্ভ করবে। এমনকি নাস্তিকও হয়ে যেতে পারে।​
কাফিরদের রীতি অনুযায়ী তারা চলবে।​
সমকামী হয়ে যাবে​
লিভ টুগেদার নামে ব্যভিচার করবে।​
আপনার মেয়ে কাউকে জড়িয়ে ধরে ঘরে চলে আসবে, আপনি কিছু বলতে পারবেন না। বললে আপনাকেই হাজতবাস করতে হবে।​
আপনার ছেলে কোনো মেয়ে বা ছেলেকে নিয়ে ঘরে চলে আসবে, আপনি চেয়ে চেয়ে দেখবেন কিন্তু করার কিছুই থাকবে না।​
আপনার মেয়ে রাতে বাইরে থাকবে আপনি কিছু বলা তো দূরের কথা উপদেশ দেয়ার ক্ষমতাও হারাবেন।​
আপনার স্ত্রী আপনার সাথে রাগ হলেই ভিন্ন চিন্তা করতে পারবে, আপনার সম্পত্তির অর্ধেক নিয়ে চলে যাবে।​
আপনি মারা যাওয়ার পরে আপনার সম্পত্তি ইসলামী শরীআতের নিয়মে বণ্টিত হওয়ার সুযোগ নেই।​

তিনি এতক্ষণে উত্তর দিলেন, কেন? আমরা তো উইল করে যেতে পারি।

আমি বললাম, আমার নবী বলেছেন, “ওয়ারিসের জন্য কোনো উইল হবে না” আর আপনি ওয়ারিসের জন্য উইল করতে চাচ্ছেন, আপনি কি চিন্তা করে দেখেছেন, সেসব দেশে থাকার জন্য আপনি রাসূলের আদেশের বিপক্ষে যেতেও কুণ্ঠিত হচ্ছেন না।!

আমি তাকে বললাম, কাফিরের দেশে আছেন, টাকা রোজগার করছেন করেন, কিন্তু আপনার ও আপনার পরিবারের শেষ সেটেল্ড কোনো মুসলিম দেশে হওয়ার চেষ্টা করবেন। যেখানে মারা গেলে আপনাকে ক্রেন দিয়ে কবরে নামানো হবে না, যেখানে আপনি ঈমানদারদের কাঁধ পাবেন সে চেষ্টা অন্তত করবেন, এ আশাবাদ আপনার কাছে থাকলো।

ভদ্রলোক খুব ক্ষেপে গেলেন, বললেন, আপনার থেকে এসব আমি শুনবো না। এসব ফতোয়া নিতে আমি বাধ্য নই। আমরা ভালো আছি, আপনার বক্তব্য আমার দরকার নেই।

আমি বললাম, আমি তো পৌঁছানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত মাত্র। নেয়া বা না নেয়ার আপনার ঈমানের দাবী অনুযায়ী হবে।

আমি বলি, এভাবেই আমরা ধোঁকাগ্রস্ত হই। শয়তান ধোকা দেয়, দুনিয়া ধোঁকা দেয়, সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা ধোঁকা দেয়। নাফসে আম্মারা ধোঁকা দেয়।

তাই আমি আমার দীনদার ভাইদের বলি,
পাশ্চাত্যে পা গাড়লেন যারা, ঈমানের বিপরীতে চললেন তারা। প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যবিদদের শিষ্য হয়ে নতুন এক ইসলাম প্রবর্তন করলেন তারা। ঈমানী গাইরত তাদের কাছে চাওয়া বৃথা। কিছু বললেই “মাআযীর” খোঁজে তারা।

আল্লাহ বলেন,
بل الإنسان على نفسه بصيرة ولو ألقى معاذيره​

“মানুষ নিজের ব্যাপারে খুব ভালো জানে, যদিও সে সেসব অপরাধের পক্ষে ওযর পেশ করতে কখনো পিছপা হয় না।” - সূরা আল-কিয়ামাহঃ ১৫।



প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া।
Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria
 
Last edited by a moderator:

Share this page