ইলমে বরকত পাওয়ার কিছু টিপস
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন: "যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব, কত মন্দই না সে আবাস!" (সূরা নিসা:১১৫)১) কুরআন, সুন্নাহ ও সালাফে ছালেহীনের আছারের অনুসরণ বাধ্যতামূলকভাবে করা।
এজন্যই সালাফগণ আছহাবুর রায়কে নিন্দা করেছেন এবং এ রায়কে ইলম চলে যাওয়ার একটি কারণ হিসেবে গণ্য করেছেন।
আবূ উমার ইবনে আব্দুল বার্র রহিমাহুল্লাহ তার জামি'উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী (১/৫৩০)-তে বলেন: "ইলমে বরকতের অন্যতম দিক হলো, ন্যায়পরায়ণতা বজায় রাখা। আর যে এই ইনসাফ ঠিক রাখে না, সে বুঝতে পারে না।২) ইলমী আমানত, রেফারেন্স, কথা যাচাই-বাছাই এবং ইনছাফ বজায় রাখা।
কেউ কেউ বলেছেন: আমার জ্ঞান নেই বটে; তবে আমি এটা ভালোভাবেই জানি যে, আমি সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী নই।"
আবূ উবায়দ কাসিম বিন সাল্লাম রহিমাহুল্লাহ বলেন: "ইলমের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অন্যতম দিক হলো, তুমি কারো সাথে বসে এমন কথা বলতে শুনলে যা আগে জানতে না এবং সেটা শিখে নিলে। এরপর অন্য কোথাও কারো সাথে উক্ত বিষয়ে আলোচনা উঠলে তুমি বলবে: আমি এ সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। অমুক লোকের কাছ থেকে শুনেই জেনেছি।
তুমি যদি এরকম করতে পার, তবেই ইলমের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে।" -(المزهر في علوم اللغة , ২/৩১৯; طبقات المفسرين للداودي , ৩/৪১)
আবূ উমার ইবনে আব্দুল বার্র রহিমাহুল্লাহ বলেন: "... কেননা, বলা হয় ইলমে বরকত পেতে চাইলে কথকের কথা কথকের দিকেই সম্পৃক্ত করা।" -(জামি'উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী, ২/৯২২)
হাফেয আবুত তাহের আস-সালাফী (মৃত্যু: ৫৭৬ হি:) বলেছেন: "ইলমে বরকত পাওয়ার ও এর শুকরিয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো, ইলমকে আলেমের দিকে নিসবত করে দেয়া।
আমি আবুল হাসান আস-সায়রাফী রহিমাহুল্লাহকে বলতে শুনেছি, (তিনি বলেন:) আমি আবূ আব্দুল্লাহ আস-সূরীকে বলতে শুনেছি, আমাকে আব্দুল গনী বিন সাঈদ বলেছেন: যখন আমার কিতাব আবূ আব্দুল্লাহ (ইমাম) হাকেম রহিমাহুল্লাহর কাছে পৌছল, তখন তিনি আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন: তিনি এটা মানুষকে পড়িয়ে শুনিয়েছেন। এবং তিনি এর উপকারিতার কথা উল্লেখ করে আমার কাছে পাঠালেন। আর তিনি এটা যখনই বলতেন, আমার নাম বলতেন।"
সুয়ূতী রহিমাহুল্লাহ এই কথার প্রেক্ষিতে বলেন: "এজন্যই আমার লেখনীতে সব কথাই দেখবেন কথকের দিকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি কোথায় উল্লেখ করেছেন তা-ও বলে দিয়েছি।" -(المزهر في علوم اللغة, ২/৩১৯)
৩) ভুলভাল মাসয়ালা থেকে বিরত থাকা এবং শরয়ী দলীল (না বুঝেই) বোঝার ভান করা থেকে দূরে থাকা।
আওযা'য়ী রহিমাহুল্লাহ বলেন: "আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ইলমের বরকত থেকে মাহরুম করতে চান, তখন তার মুখে ভুলভাল (কথা, মাসয়ালা) বিস্তার করান।"
হাসান বাসরী রহিমাহুল্লাহ বলেন: "আল্লাহর নিকৃষ্ট বান্দা তো ওরাই যারা নিকৃষ্ট (উল্টাপাল্টা ও ভুলভাল) মাসয়ালা নিয়ে এসে আল্লাহর বান্দাদের (আলেমদের) গালমন্দ করে।" -(জামি'উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী, ২/১০৭৩)
(শায়খ محمد بن عمر بازمول হাফিযাহুল্লাহর পেজ থেকে)
--আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ
--আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ