সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

আপনার আনন্দ যেন কারও কষ্টের কারণ না হয়

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Threads
690
Comments
1,222
Solutions
17
Reactions
7,059
Credits
5,691
মহান আল্লাহ বলেন,
وَٱلَّذِينَ يُؤۡذُونَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِ بِغَيۡرِ مَا ٱكۡتَسَبُواْ فَقَدِ ٱحۡتَمَلُواْ بُهۡتَٰنٗا وَإِثۡمٗا مُّبِينٗا [الاحزاب : ٥٨]
আর যারা ঈমানদার নারী-পুরুষদেরকে তাদের কোনো অপরাধ ব্যতীত কষ্ট দেয় তারা অবশ্যই বড় অপবাদ ও প্রকাশ্য গোনাহে লিপ্ত হলো। [সূরা আল-আহযাব: ৫৮]

অনেক সময় দেখা যায় মানুষ এমন কিছু কাজ করে যা অপরের জন্য বিপদের কারণ হয়ে যায়। যেমন ধরুন কেউ রাস্তায় বিজয় মিছিল বের করলো, আর তার জন্য এমন ট্রাফিক জ্যাম হলো যে মানুষের কষ্ট চরমে চলে যায়। অথবা রাস্তা বন্ধ করে কেউ তার রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল চালিয়ে গেলেন ফলে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলো, বা অনেক মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হলো। অথবা বড় বড় ক্ষমতাধররা নিজেদের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তা বন্ধ করে জনগণের ভোগান্তির কারণ হলেন, এসবই কিন্তু ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে হারাম কাজ। এ জাতীয় কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকা প্রয়োজন।

আবার অনেক সময় দেখা যায় মানুষ নিজের আনন্দের জন্য অপরের ঘুম হারাম করে দেন। ধরুন, আপনি বাসে উঠেছেন, যা একটি পাবলিক প্লেস, এখানে এমন জিনিস বাজানো কখনো উচিত নয় যা কারো কষ্টের কারণ হবে। যেমন আপনি সেখানে গান চালু করে দিলেন, অথচ এ গাড়িতেই এমন কেউ থাকতে পারে যিনি সারাক্ষণ কষ্ট করে গাড়িতে উঠেছেন, তার বিশ্রাম দরকার, তিনি শ্রান্তি ও ক্লান্তিতে দু চোখ বুজে থাকতে চান কিন্তু আপনার তথাকথিত আনন্দের জন্য তার কষ্ট হচ্ছে। আবার এমনও অনেক থাকতে পারেন যিনি তার পাঠ্যবই কিংবা ধর্মীয় পড়া পড়তে চান, আপনার কারণে তার সে ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হলো।

আবার এমনও হতে পারে কেউ শব্দ দুষণ জনিত সমস্যা সহ্য করতে পারেন না, কিন্তু আপনি তাকে কষ্ট দিলেন। কখনও কখনও দেখা যায় তারা আবার সেটাকে অধিকার বলে চালিয়ে দিতে চান। কিন্তু একজনের অধিকার বাস্তবায়ণ তো তখনই করা যাবে যখন অপরের অধিকারের সাথে তা বিরোধমুখী হবে না। কারণ সবাই একথা স্বীকার করবেন যে সবাই যদি তার অধিকার সব জায়গায় দেখাতে যায় তাহলে প্রশাসন ও নিয়মকানুন বলে কিছু থাকবে না, উপরন্তু মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা তৈরী হবে।

আপনি গাড়িতে উঠেছেন বা কোনো চায়ের স্টলে আড্ডা দিতে বসেছেন, আপনি চাচ্ছেন স্বচ্চ শ্বাস গ্রহণ করবেন, দেখা গেলো কেউ বিড়ি কিংবা সিগারেট ধরিয়ে নিল, আপনাকে পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করলো, অথচ এ ক্ষতিগ্রস্ত করার অধিকার তিনি রাখেন না।

বস্তুত এ সবই হারাম কাজ। আমাদেরকে নিজের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি অপরের অধিকারের ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখবেন, সকল মানুষই আল্লাহর পরিবারভুক্ত। সকলের অধিকারের খেয়াল আমাদের রাখতে হবে। বিশেষ করে যদি ঈমানদার কেউ তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। কারণ ঈমানদার মানেই আল্লাহর ওলী বা বন্ধু। তার ঈমান ও আমল অনুসারে তিনি কম-বেশ আল্লাহর বন্ধু।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা হাদীসে কুদসীতে বলেন,
من عادى لي ولياً فقد آذنته بالحرب
“যে কেউ আমার বন্ধুর সাথে শত্রুতায় নামবে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম।”

সুতরাং আমাদের উচিত বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করা এবং অন্যকে কথা, কাজ কিংবা ব্যবহার দ্বারা কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা।


লিখেছেন: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া।​
 
Top