সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Abu Abdullah

আকিদা আকীদার উৎসগ্রন্থ এবং আকীদা বিষয়ক জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী আলিমগণের নীতি

Abu Abdullah

Knowledge Sharer

ilm Seeker
Uploader
Salafi User
Threads
745
Comments
997
Solutions
19
Reactions
9,837
Credits
6,003
আকীদার জ্ঞান ওহী নির্ভর। সুতরাং শরী‘আত প্রণেতার পক্ষ থেকে কোনো দলীল বা প্রমাণ ছাড়া কোনো আকীদা সাব্যস্ত করা যাবে না। আকীদার ক্ষেত্রে নিজস্ব রায়, অভিমত ও ইজতিহাদের কোনো অবকাশ নেই। সুতরাং আকীদার উৎস শুধুমাত্র আল-কুরআন ও সুন্নায় যে তথ্য এসেছে তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কেননা আল্লাহ সম্পর্কে এবং আল্লাহর জন্য কি হওয়া সঙ্গত এবং কোন কোন বস্তু থেকে তিনি মুক্ত ও পবিত্র তা তাঁর চেয়ে বেশি আর কেউই জানে না। আর আল্লাহর পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে আল্লাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞান আর কেউই রাখে না। এজন্যই আকীদা অর্জনের ক্ষেত্রে সালাফে সালেহ তথা পূর্ববর্তী বিজ্ঞ সৎ আলিমদের ও তাদের অনুসারীদের নীতি ছিল আল-কিতাব তথা আল-কুরআন ও আস-সুন্নাহ’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা।

অতএব, আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহ যে প্রমাণ বহন করছে তার প্রতি তারা ঈমান এনেছেন, সেভাবেই আকীদাকে সাজিয়ে নিয়েছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করেছেন। আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ দ্বারা যা প্রমাণিত হয় নি আল্লাহ তা‘আলার ব্যাপারে তা তারা অস্বীকার করেছেন এবং প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ কারণেই আকীদার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে কোনো মতভেদ হয় নি, বরং তাদের সকলের আকীদা ছিল এক ও অভিন্ন এবং তাদের জামায়াত বা দলও ছিল একটি। এর কারণ হলো, যারা আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের এক কালেমায় ঐক্যবদ্ধ থাকার এবং সঠিক আকীদা ও এক নীতির অনুসারী হওয়ার গ্যারান্টি দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَٱعۡتَصِمُواْ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِيعٗا وَلَا تَفَرَّقُواْۚ ﴾ [ال عمران: ١٠٣]​

“আর তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:

﴿فَإِمَّا يَأۡتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدٗى فَمَنِ ٱتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشۡقَىٰ ١٢٣﴾ [طه: ١٢٣]​

“তোমাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে হিদায়াত এসে গেলে যে ব্যক্তি আমার হিদায়াত অনুসরণ করবে সে ভ্রষ্ট হবে না এবং হতভাগ্যও হবে না।” [সূরা ত্ব-হা, আয়াত: ২৩]

এ জন্যই এদেরকে অভিহিত করা হয়েছে “আল-ফিরকাহ আন-নাজিয়াহ” অর্থাৎ বিজয়ী দল অথবা মুক্তিপ্রাপ্ত দল নামে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের পক্ষে নাজাতের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যখন উম্মত ৭৩টি দলে বিভক্ত হবে বলে তিনি খবর দিয়েছেন, যে দলগুলোর একটি ছাড়া বাকী সবগুলো দল জাহান্নামী হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। আর যখন এ একটি দল সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তখন তিনি বলেছিলেন, “আমি ও আমার সাহাবীগণ আজ যে আদর্শের ওপর রয়েছি যারা সে আদর্শের ওপর থাকবে তারাই সে মুক্তিপ্রাপ্ত বা নাজাতপ্রাপ্ত দল।”[1]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সংবাদ দিয়েছিলেন বর্তমানে তার সত্যতা বাস্তবে প্রতিফলিত হয়েছে। যখন কিছু লোক আল-কুরআন ও সুন্নাহ ছাড়া অন্য বিষয় যেমন ইলমুল কালাম ও গ্রীকদর্শন থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত মানতেক তথা তর্কশাস্ত্রের নীতিমালার ওপর তাদের আকীদার ভিত্তি স্থাপন করেছে, তখন তাদের আকীদায় বক্রতা ও অনৈক্য দেখা দিয়েছে, যার ফলে তাদের কথা ও বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে বিভক্তি, দেখা দিয়েছে মুসলিম জামায়াতের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা এবং চূর্ণ- বিচূর্ণ হয়ে গেছে ইসলামী সমাজের ভিত্তি ।

[1] হাদীসটি ইমাম আহমদ মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।


তাওহীদ পরিচিতি
ড. সালিহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
অনুবাদ: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া​
 
COMMENTS ARE BELOW
Top