সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

হাদিস ও হাদিসের ব্যাখ্যা অহী নাযিলের সময় আসমানবাসীর অবস্থার বিবরণ

Abdul fattah

Active member

Threads
36
Comments
38
Reactions
253
Credits
436
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, যখন আল্লাহ তা’আলা আকাশের কোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন ফিরিশতারা তার কথা শোনার জন্য অতি বিনয়ের সাথে নিজ নিজ পালক ঝাড়তে থাকে মসৃণ পাথরের উপর জিঞ্জীরের শব্দের মতো। আলি ইবনুল মাদীনী বলেন, صَفْوَان এর মধ্যে ফা বর্ণ সাকিন যুক্ত এবং অন্যরা বলেন, ফাতাহ যুক্ত। এভাবে আল্লাহ তা‘আলা তার বাণী ফিরিশতাদের পৌঁছান। যখন ফিরিশতাদের অন্তর থেকে ভয় দূরীভূত হয় তখন তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করে, তোমাদের প্রভু কী বলেছেন? তখন তারা বলেন, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন এবং তিনি সর্বোচ্চ ও সুমহান”। চুরি করে কান লাগিয়ে (শয়তানরা) তা শুনে নেয়। শোনার জন্য শয়তানগুলো একের ওপর এক এভাবে থাকে। সুফিয়ান ডান হাতের আঙ্গুলের উপর অন্য আঙ্গুল রেখে হাতের ইশারায় ব্যপারটা প্রকাশ করলেন। তারপর কখনো আগুনের ফুলকি শ্রবণকারীকে তার সাথীর কাছে এ কথাটি পৌঁছানোর আগেই আঘাত করে এবং তাকে জ্বালিয়ে দেয়। আবার কখনও সে ফুলকি প্রথম শ্রবণকারী শয়তান পর্যন্ত পোঁছার পূর্বেই সে তার নিচের সাথীকে খবরটি জানিয়ে দেয়। এমনি করে এ কথা পৃথিবী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। কখনও সুফিয়ান বলেছেন, এমনি করে পৃথিবী পর্যন্ত পোঁছে যায়। তারপর তা জাদুকরের মুখে ঢেলে দেওয়া হয় এবং সে তার সাথে শত মিথ্যা মিলিয়ে প্রচার করে। তাই তার কথা সত্য হয়ে যায়। তখন লোকেরা বলতে থাকে যে, দেখ এ জাদুকর আমাদের কাছে অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কথা বলেছিল, আমরা তা সঠিক পেয়েছি। বস্তুত আসমান থেকে শোনা কথার কারণেই তা সত্যে পরিণত হয়েছে”।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِذَا قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ فِي السَّمَاءِ، ضَرَبَتِ المَلاَئِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ، كَالسِّلْسِلَةِ عَلَى صَفْوَانٍ - قَالَ عَلِيٌّ: وَقَالَ غَيْرُهُ: صَفْوَانٍ يَنْفُذُهُمْ ذَلِكَ - فَإِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ، قَالُوا: مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ، قَالُوا لِلَّذِي قَالَ: الحَقَّ، وَهُوَ العَلِيُّ الكَبِيرُ، فَيَسْمَعُهَا مُسْتَرِقُو السَّمْعِ، وَمُسْتَرِقُو السَّمْعِ هَكَذَا وَاحِدٌ فَوْقَ آخَرَ - وَوَصَفَ سُفْيَانُ بِيَدِهِ، وَفَرَّجَ بَيْنَ أَصَابِعِ يَدِهِ اليُمْنَى، نَصَبَهَا بَعْضَهَا فَوْقَ بَعْضٍ - فَرُبَّمَا أَدْرَكَ الشِّهَابُ المُسْتَمِعَ قَبْلَ أَنْ يَرْمِيَ بِهَا إِلَى صَاحِبِهِ فَيُحْرِقَهُ، وَرُبَّمَا لَمْ يُدْرِكْهُ حَتَّى يَرْمِيَ بِهَا إِلَى الَّذِي يَلِيهِ، إِلَى الَّذِي هُوَ أَسْفَلَ مِنْهُ، حَتَّى يُلْقُوهَا إِلَى الأَرْضِ - وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ: حَتَّى تَنْتَهِيَ إِلَى الأَرْضِ - فَتُلْقَى عَلَى فَمِ السَّاحِرِ، فَيَكْذِبُ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ، فَيُصَدَّقُ فَيَقُولُونَ: أَلَمْ يُخْبِرْنَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا، يَكُونُ كَذَا وَكَذَا، فَوَجَدْنَاهُ حَقًّا؟ لِلْكَلِمَةِ الَّتِي سُمِعَتْ مِنَ السَّمَاءِ " حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: «إِذَا قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ»، وَزَادَ «وَالكَاهِنِ»، وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، فَقَالَ: قَالَ عَمْرٌو: سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ: «إِذَا قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ»، وَقَالَ: «عَلَى فَمِ السَّاحِرِ» قُلْتُ لِسُفْيَانَ: أَأَنْتَ سَمِعْتَ عَمْرًا؟ قَالَ: سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ لِسُفْيَانَ: إِنَّ إِنْسَانًا رَوَى عَنْكَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَيَرْفَعُهُ أَنَّهُ قَرَأَ: «فُرِّغَ»، قَالَ سُفْيَانُ: هَكَذَا قَرَأَ عَمْرٌو، فَلاَ أَدْرِي سَمِعَهُ هَكَذَا أَمْ لاَ، قَالَ سُفْيَانُ: وَهِيَ قِرَاءَتُنَا.​


আলী ইবন আব্দুল্লাহ থেকে, তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি ‘আমর থেকে, তিনি ইকরিমা থেকে এবং তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, “যখন আল্লাহ তা‘আলা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন”, এ বর্ণনায় জ্যোতির্বিদ «الكَاهِنِ» কথাটি অতিরিক্ত। আর আলী ইবন আব্দুল্লাহ সুফিয়ান থেকে, তিনি ‘আমর থেকে, তিনি ইকরিমা থেকে এবং তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, এতে “যখন আল্লাহ তা‘আলা কোনো ব্যপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ বর্ণনায় «عَلَى فَمِ السَّاحِرِ» জাদুকরের মুখের উপর উল্লেখ করেছেন। আলী ইবন আব্দুল্লাহ বলেন, আমি সুফিয়ানকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি ‘আমর থেকে শুনেছেন? তিনি বলেছেন, আমি ইকরিমা থেকে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে শুনেছি। আমি (আলী ইবন আব্দুল্লাহ) সুফিয়ান রহ. কে বললাম, কেউ কেউ আপনার থেকে, আপনি ‘আমর থেকে, তিনি ইকরিমা থেকে, তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে এবং তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণনা করেন এবং এতে «فُرِّغَ» শব্দ রয়েছে। সুফিয়ান রহ. বলেন, ‘আমর রহ. এভাবেই পড়েছেন। তিনি এভাবেই শুনেছেন কী না আমি জানি না। সুফিয়ান রহ. বলেন, এটি আমাদের কিরাআত।

সহীহ, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৭০১।

আব্দুল্লাহ ইবন মাস‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন আল্লাহ তা‘আলা অহী প্রেরণের জন্য কথা বলেন, তখন এক আসমানের অধিবাসী আসমান থেকে এরূপ শব্দ শোনে যে, যেমন পরিষ্কার পাথরের উপর লোহার শিকল টানলে শব্দ হয়। যা শুনে তারা সবাই বেহুশ হয়ে পড়ে এবং জিবরীল আলাইহিস সালাম তাদের কাছে না আসা পর্যন্ত তারা এ অবস্থায় থাকে। এরপর জিবরীল আলাইহিস সালাম যখন তাদের কাছে আসে, তখন তারা জ্ঞানপ্রাপ্ত হয়ে বলে, হে জিবরীল! আপনার রব কী বলেছেন? তিনি বলেন, তিনি সত্য বলেছেন। একথা শুনে সকল ফিরিশতা বলতে থাকে, সত্য বলেছেন, সত্য বলেছেন”।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا تَكَلَّمَ اللَّهُ بِالْوَحْيِ، سَمِعَ أَهْلُ السَّمَاءِ لِلسَّمَاءِ صَلْصَلَةً كَجَرِّ السِّلْسِلَةِ عَلَى الصَّفَا، فَيُصْعَقُونَ، فَلَا يَزَالُونَ كَذَلِكَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ جِبْرِيلُ، حَتَّى إِذَا جَاءَهُمْ جِبْرِيلُ فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ» قَالَ: " فَيَقُولُونَ: يَا جِبْرِيلُ مَاذَا قَالَ رَبُّكَ؟ فَيَقُولُ: الْحَقَّ، فَيَقُولُونَ: الْحَقَّ، الْحَقَّ «.​

সহীহ, আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৭৩৮; ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ২৮০; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৩৭।
 
Top