- Awards
- 9
- Credit
- 66
- Thread starter
- #1
মাসআলাটির পূর্ণরূপ উপস্থাপন
ওযুর ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে সরাসরি চারটি বিষয় করতে বলা হয়েছে। সেখানে নিয়্যত করতে হবে এমন কোন কথা উল্লেখ নেই। তবে তাঁরা অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়্যতের শর্তারোপ করার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
কেননা, আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:
“তাদেরকে কেবল একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদতের আদেশ করা হয়েছে।(১)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, الاعمال بالنيات সমস্ত কাজ-কর্ম নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল ।(২)
সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে সত্য যে, নিয়্যত বা দৃঢ় সংকল্প হলে ওযু বিশুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি কেউ নিয়্যত ব্যতীতই ওযুর কর্মকাণ্ড যথা মুখ, হাত, মাথা ও পা ধোয়ার কাজ করে। তারপর সালাতের সময় বলে যে, আমি তো এ কাজগুলো করেছি তবে সে সময় ওযু করার কথা চিন্তা করে সেটা করিনি। এমতাবস্থায় তার সে কাজটি ওযু বলে ধর্তব্য হবে কিনা? আর হলে সেটা দ্বারা সে সালাত ও অন্যান্য যে সমস্ত কাজে ওযু দরকার তা পালন করতে পারবে কি না?
প্রত্যেক ইমামের পক্ষের মতামত তাদের গ্রন্থ থেকে উপস্থাপন:
ওযুর বিশুদ্ধতার ক্ষেত্রে নিয়্যতের শর্তারোপ করার বিষয়ে আলিমগণ মতানৈক্য করেছেন।
১. কতিপয় আলিম বলেন, নিয়ত শর্ত। যা ইমাম শাফেয়ী, মালিক ও আহমদ রাহেমাহুল্লাহ-এর মাযহাব।(৩)
২. আরেক শ্রেণীর আলিম বলেন, নিয়ত শর্ত নয়। এটা ইমাম আবূ হানিফা ওসাওরী রাহেমাহুল্লাহ-এর মাযহাব।(৪)
মতবিরোধের কারণ নির্ধারণ:
ইমামগণের উপরোক্ত মতানৈক্যের কারণ হলো, ওযুর ক্ষেত্রে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। প্রথমটি হলো, এটা কেবলমাত্র একটি ইবাদত, যার অর্থ বোধগম্য নয়। সালাত ইত্যাদির ন্যায় এর দ্বারা উদ্দেশ্য কেবল নৈকট্য লাভ করা। দ্বিতীয়টি হলো, এটা একটি ইবাদত যার অর্থ বোধগম্য। যেমন নাপাকি ধুয়ে ফেলা। ইমামগণ এ বিষয়ে একমত যে, নিরেট ইবাদতের জন্য নিয়্যত প্রয়োজন হয়। উপরোক্ত দু'ধরনের ইবাদতের সাথেই ওযুর সাদৃশ্য রয়েছে। সুতরাং এটা স্পষ্ট হলো যে, ওযু দু'টি বিষয় সমন্বয় করে। ইবাদত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ফিকহ হলো, এ বিষয়ে গভীর দৃষ্টি দেয়া যে, ওযুর সাদৃশ্য কোনটির সাথে সবচেয়ে সুদৃঢ়। সে অনুযায়ী এটার ব্যাপারে বিধান প্রণয়ন করা হবে।(৫)
দলীল-প্রমাণাদি উপস্থাপন ও প্রত্যেক পক্ষের প্রমাণাদি খণ্ডন:
প্রথম শ্রেণী যারা নিয়্যতকে শর্তারোপ করেছেন তাদের দলীল-
১. অন্যান্য ইবাদতের ন্যায় ওযু একটি ইবাদত, এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভ করা যায়, এর কারণে আল্লাহ তা'আলা অপরাধ মার্জনা করেন এবং ওযুকারীকে প্রতিদান দেন। এ বিষয়ে অনেক প্রমাণ রয়েছে। যেমন-
ক. আবূ মালিক আল-আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে মারফু হাদীসে এসেছে, الطهور شطر الإيمان পবিত্রতা ঈমানের অংশ' ৩০ ঈমান হলো ইবাদত। তার অংশ ওযুও একটি ইবাদত।(৬)
খ. উসমান রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত একখানা হাদীসে এসেছে,
“যে ব্যক্তি ওযু করবে এবং তা ভাল ও সুন্দরভাবে করবে, তার শরীরের সমস্ত অপরাধ নখের নিচ দিয়ে ঝরে পড়ে যাবে।(৭)
গ. উসমান রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদীসে এসেছে : "যে ব্যক্তি এভাবে ওযু করবে, তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ মাফ হয়ে যাবে, আর নামায ও মসজিদ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া নফল বা অতিরিক্ত ইবাদত হবে।(৮)
২. পক্ষান্তরে ওযু একটি অর্থে অবোধগম্য ইবাদত। কেননা, অন্যান্য অঙ্গ ব্যতীত নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গকে বিশেষিত করার যৌক্তিক কোন কারণ নেই।
৩. তারা আরো দলীল দেন, নিয়্যত ব্যতীত তায়াম্মুম সহীহ নয়, এটি সর্বসম্মত মাসআলা, তায়াম্মুম হলো ওযুর বিকল্প, আর বিকল্পের বিধান মূলের বিধান অনুযায়ী হয়। সুতরাং তায়াম্মুমের মতই ওযুতে নিয়্যত লাগবে।
দ্বিতীয় শ্রেণী যারা নিয়্যতকে শর্ত বলেন না তাদের দলীল
১. আল্লাহর বাণী :
“হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযে দাঁড়ানোর ইচ্ছা করবে, তখন তোমরা তোমাদের চেহারা ধৌত করবে। এ আয়াতে নিয়্যতের কোন আলোচনা নেই। সুতরাং ওযুতে নিয়্যত ওয়াজিব করা হলো নসের উপর বৃদ্ধিকরণ, যেমনিভাবে তা হলো সাধারণ আয়াতে শর্তারোপ করা। এ দু'টি বিষয়ই হলো নসখ বা রহিতকরণ, আর খবরে ওয়াহিদ দিয়ে নসখ বৈধ নয় (অর্থাৎ হানাফী মাযহাব অনুসারে)।
২. তারা আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর ব্যাপকতা দিয়ে দলীল দেন : ماء طهورا مِنَ السَّمَاء“আমরা আকাশ থেকে পবিত্রতাদানকারী পানি বর্ষণ করেছি।(আল-ফুরকান :৪৮)
এবং আল্লাহর বাণী : وَيَنْزِلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِبَطَهِّرَكُمْ بِهِ “তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, তা দিয়ে তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য।" (আল-আনফাল : ১১)
তাঁরা বলেন, এ আয়াতসমূহ প্রমাণ বহন করে যে, পানি নিজেই ব্যবহারকারীকে পবিত্রতা দানকারী। সুতরাং নিয়্যতের শর্তারোপ করা হলো তাকে সীমাবদ্ধ করা। আর তা হলো এক ধরনের নসখ।
৩. সালাতে ভুলকারী ব্যক্তির হাদীস দিয়েও তারা দলীল দেন, তাতে এসেছে,"তুমি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী শুযু করবে।(৯)
৪. ওযু শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে হাদীসসহ অন্য কোন হাদীসে নিয়্যতের আলোচনা নেই, যদি নিয়্যত শর্ত কিংবা ওয়াজিব হতো তাহলে তা অবশ্যই উল্লেখ থাকতো ।
৫. তাঁরা আরও বলেন, ওযু হলো পানির মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন। সুতরাং তার জন্য নিয়্যত ওয়াজিব নয়, যেমন নাপাকি দূরীকরণের ক্ষেত্রে নিয়্যত ওয়াজিব নয় ।
প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত পেশ ও প্রাধান্য দেয়ার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ:
উপরোক্ত দলীল-প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রত্যেক পক্ষেরই শক্তিশালী দলীল রয়েছে। তবে ওযুর নিয়্যত ফরয করে এমন কোন সরাসরি 'নস' পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে ইহতিয়াত বা যতটুকু সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত বিধায় ওযুতে নিয়্যত থাকাই বাঞ্ছনীয়।
১) সূরা আল-বাইয়্যেনাহ, ৫।
২) বুখারী, হাদীস নং ১, মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৭।
৩) নাওয়াবী, আল-মাজমু', ১/২৩২; ইবনে জুয়াই, কাওয়ানিনুল আহকামিশ শারইয়্যাহ, পৃ. ২২: ইবনে কুদামাহ, আল-মুগনী ১/১১০; ইবনে হাযম আয-যাহেরী, আল-মুহাল্লা, ১/৯৫।
৪) আস-সামারকান্দী, তুহফাতুল ফুকাহা, ১/১৩।
৫) ইবনে রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ, ১/৩০।
৬) মুসলিম, হাদীস নং ২২৩ ।
৭) মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫।
৮) মুসলিম, হাদীস নং ২২৯ ।
৯) আবূ দাউদ, হাদীস নং ৮৬১।
বিদ্র: আমি এইগুলো (ফিকহুল মাকরিন) কিতাব থেকে লেখেছি।
ওযুর ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে সরাসরি চারটি বিষয় করতে বলা হয়েছে। সেখানে নিয়্যত করতে হবে এমন কোন কথা উল্লেখ নেই। তবে তাঁরা অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে নিয়্যতের শর্তারোপ করার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
কেননা, আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:
وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوا اللّٰهَ مُخۡلِصِیۡنَ لَهُ الدِّیۡنَ
“তাদেরকে কেবল একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদতের আদেশ করা হয়েছে।(১)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, الاعمال بالنيات সমস্ত কাজ-কর্ম নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল ।(২)
সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে সত্য যে, নিয়্যত বা দৃঢ় সংকল্প হলে ওযু বিশুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি কেউ নিয়্যত ব্যতীতই ওযুর কর্মকাণ্ড যথা মুখ, হাত, মাথা ও পা ধোয়ার কাজ করে। তারপর সালাতের সময় বলে যে, আমি তো এ কাজগুলো করেছি তবে সে সময় ওযু করার কথা চিন্তা করে সেটা করিনি। এমতাবস্থায় তার সে কাজটি ওযু বলে ধর্তব্য হবে কিনা? আর হলে সেটা দ্বারা সে সালাত ও অন্যান্য যে সমস্ত কাজে ওযু দরকার তা পালন করতে পারবে কি না?
প্রত্যেক ইমামের পক্ষের মতামত তাদের গ্রন্থ থেকে উপস্থাপন:
ওযুর বিশুদ্ধতার ক্ষেত্রে নিয়্যতের শর্তারোপ করার বিষয়ে আলিমগণ মতানৈক্য করেছেন।
১. কতিপয় আলিম বলেন, নিয়ত শর্ত। যা ইমাম শাফেয়ী, মালিক ও আহমদ রাহেমাহুল্লাহ-এর মাযহাব।(৩)
২. আরেক শ্রেণীর আলিম বলেন, নিয়ত শর্ত নয়। এটা ইমাম আবূ হানিফা ওসাওরী রাহেমাহুল্লাহ-এর মাযহাব।(৪)
মতবিরোধের কারণ নির্ধারণ:
ইমামগণের উপরোক্ত মতানৈক্যের কারণ হলো, ওযুর ক্ষেত্রে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। প্রথমটি হলো, এটা কেবলমাত্র একটি ইবাদত, যার অর্থ বোধগম্য নয়। সালাত ইত্যাদির ন্যায় এর দ্বারা উদ্দেশ্য কেবল নৈকট্য লাভ করা। দ্বিতীয়টি হলো, এটা একটি ইবাদত যার অর্থ বোধগম্য। যেমন নাপাকি ধুয়ে ফেলা। ইমামগণ এ বিষয়ে একমত যে, নিরেট ইবাদতের জন্য নিয়্যত প্রয়োজন হয়। উপরোক্ত দু'ধরনের ইবাদতের সাথেই ওযুর সাদৃশ্য রয়েছে। সুতরাং এটা স্পষ্ট হলো যে, ওযু দু'টি বিষয় সমন্বয় করে। ইবাদত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। ফিকহ হলো, এ বিষয়ে গভীর দৃষ্টি দেয়া যে, ওযুর সাদৃশ্য কোনটির সাথে সবচেয়ে সুদৃঢ়। সে অনুযায়ী এটার ব্যাপারে বিধান প্রণয়ন করা হবে।(৫)
দলীল-প্রমাণাদি উপস্থাপন ও প্রত্যেক পক্ষের প্রমাণাদি খণ্ডন:
প্রথম শ্রেণী যারা নিয়্যতকে শর্তারোপ করেছেন তাদের দলীল-
১. অন্যান্য ইবাদতের ন্যায় ওযু একটি ইবাদত, এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভ করা যায়, এর কারণে আল্লাহ তা'আলা অপরাধ মার্জনা করেন এবং ওযুকারীকে প্রতিদান দেন। এ বিষয়ে অনেক প্রমাণ রয়েছে। যেমন-
ক. আবূ মালিক আল-আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে মারফু হাদীসে এসেছে, الطهور شطر الإيمان পবিত্রতা ঈমানের অংশ' ৩০ ঈমান হলো ইবাদত। তার অংশ ওযুও একটি ইবাদত।(৬)
খ. উসমান রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত একখানা হাদীসে এসেছে,
من توضَّأ فَأَحْسَن الوُضُوءَ، خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُج مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِه
“যে ব্যক্তি ওযু করবে এবং তা ভাল ও সুন্দরভাবে করবে, তার শরীরের সমস্ত অপরাধ নখের নিচ দিয়ে ঝরে পড়ে যাবে।(৭)
গ. উসমান রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদীসে এসেছে : "যে ব্যক্তি এভাবে ওযু করবে, তার পূর্বের সমস্ত গোনাহ মাফ হয়ে যাবে, আর নামায ও মসজিদ পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া নফল বা অতিরিক্ত ইবাদত হবে।(৮)
২. পক্ষান্তরে ওযু একটি অর্থে অবোধগম্য ইবাদত। কেননা, অন্যান্য অঙ্গ ব্যতীত নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গকে বিশেষিত করার যৌক্তিক কোন কারণ নেই।
৩. তারা আরো দলীল দেন, নিয়্যত ব্যতীত তায়াম্মুম সহীহ নয়, এটি সর্বসম্মত মাসআলা, তায়াম্মুম হলো ওযুর বিকল্প, আর বিকল্পের বিধান মূলের বিধান অনুযায়ী হয়। সুতরাং তায়াম্মুমের মতই ওযুতে নিয়্যত লাগবে।
দ্বিতীয় শ্রেণী যারা নিয়্যতকে শর্ত বলেন না তাদের দলীল
১. আল্লাহর বাণী :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ
“হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযে দাঁড়ানোর ইচ্ছা করবে, তখন তোমরা তোমাদের চেহারা ধৌত করবে। এ আয়াতে নিয়্যতের কোন আলোচনা নেই। সুতরাং ওযুতে নিয়্যত ওয়াজিব করা হলো নসের উপর বৃদ্ধিকরণ, যেমনিভাবে তা হলো সাধারণ আয়াতে শর্তারোপ করা। এ দু'টি বিষয়ই হলো নসখ বা রহিতকরণ, আর খবরে ওয়াহিদ দিয়ে নসখ বৈধ নয় (অর্থাৎ হানাফী মাযহাব অনুসারে)।
২. তারা আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর ব্যাপকতা দিয়ে দলীল দেন : ماء طهورا مِنَ السَّمَاء“আমরা আকাশ থেকে পবিত্রতাদানকারী পানি বর্ষণ করেছি।(আল-ফুরকান :৪৮)
এবং আল্লাহর বাণী : وَيَنْزِلُ عَلَيْكُمْ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِبَطَهِّرَكُمْ بِهِ “তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, তা দিয়ে তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য।" (আল-আনফাল : ১১)
তাঁরা বলেন, এ আয়াতসমূহ প্রমাণ বহন করে যে, পানি নিজেই ব্যবহারকারীকে পবিত্রতা দানকারী। সুতরাং নিয়্যতের শর্তারোপ করা হলো তাকে সীমাবদ্ধ করা। আর তা হলো এক ধরনের নসখ।
৩. সালাতে ভুলকারী ব্যক্তির হাদীস দিয়েও তারা দলীল দেন, তাতে এসেছে,"তুমি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী শুযু করবে।(৯)
৪. ওযু শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে হাদীসসহ অন্য কোন হাদীসে নিয়্যতের আলোচনা নেই, যদি নিয়্যত শর্ত কিংবা ওয়াজিব হতো তাহলে তা অবশ্যই উল্লেখ থাকতো ।
৫. তাঁরা আরও বলেন, ওযু হলো পানির মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন। সুতরাং তার জন্য নিয়্যত ওয়াজিব নয়, যেমন নাপাকি দূরীকরণের ক্ষেত্রে নিয়্যত ওয়াজিব নয় ।
প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত পেশ ও প্রাধান্য দেয়ার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ:
উপরোক্ত দলীল-প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, প্রত্যেক পক্ষেরই শক্তিশালী দলীল রয়েছে। তবে ওযুর নিয়্যত ফরয করে এমন কোন সরাসরি 'নস' পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু ইবাদতের ক্ষেত্রে ইহতিয়াত বা যতটুকু সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত বিধায় ওযুতে নিয়্যত থাকাই বাঞ্ছনীয়।
১) সূরা আল-বাইয়্যেনাহ, ৫।
২) বুখারী, হাদীস নং ১, মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৭।
৩) নাওয়াবী, আল-মাজমু', ১/২৩২; ইবনে জুয়াই, কাওয়ানিনুল আহকামিশ শারইয়্যাহ, পৃ. ২২: ইবনে কুদামাহ, আল-মুগনী ১/১১০; ইবনে হাযম আয-যাহেরী, আল-মুহাল্লা, ১/৯৫।
৪) আস-সামারকান্দী, তুহফাতুল ফুকাহা, ১/১৩।
৫) ইবনে রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ, ১/৩০।
৬) মুসলিম, হাদীস নং ২২৩ ।
৭) মুসলিম, হাদীস নং ২৪৫।
৮) মুসলিম, হাদীস নং ২২৯ ।
৯) আবূ দাউদ, হাদীস নং ৮৬১।
বিদ্র: আমি এইগুলো (ফিকহুল মাকরিন) কিতাব থেকে লেখেছি।