সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Abdullah Rakib

মানহাজ অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ্ এবং [তাকে] তাক্বফীর করার ব্যাপারে শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস শায়খ যুবাঈ’র আলী যা’ঈ [رحمه الله]-এর আক্বীদাহ্

Abdullah Rakib

Susceptible

Exposer
Salafi User
LV
3
 
Awards
12
Credit
126
ক]
.
শায়খ যুবাঈর আলী যা’ঈ [رحمه الله] ইমাম মালেকের আল-মুয়াত্তার ব্যাখ্যাগ্রন্হ—ইছাফুল বাসিম তাহক্বীক ওয়া শারহ মুয়াত্তা ইমাম মালিক—রেওয়ায়েত ইবনু ক্বাসিমের ৫৪৩ পৃষ্ঠায় বলেছেন,

হাদীস নং: ৫০৫—

উবাদাহ্ ইবনু সামিত [رضي الله عنه] থেকে বর্ণিত হাদীসে, যিনি বলেছেন রাসূল ﷺ সাহাবাদের শাসকের আনুগত্য করতে বলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যের সময় ও কাঠিন্যের সময়, [শাসকের যেকোন বিষয়] তাদের পছন্দ হউক বা অপছন্দ হউক [তবুও] এবং তিনি তাদের শাসকের সাথে লড়াই করতে নিষেধ করেছেন।

শায়খ [رحمه الله] বলেছেন,

“তোমাকে সত্যের উপর দৃঢ় থাকতে হবে এমনকি যদি পুরো বিশ্বের লোকেরা তোমার বিরোধীতা করে [তবুও], মুসলিমগণ এবং আহলে ঈ’মাণগণ তাদের শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ্ করে না এবং এইসব বিষয়গুলিতে জড়ান না৷

তোমার মনে রাখা উচিত, রাসূল ﷺ বলেছেন যে অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলাই হল শ্রেষ্ঠ জি’হাদ।”

[মুসনাদে আহমাদ, ৫/২৫৬; সনদ হাসান লি-যাতিহী]
.

[খ]
.
আদ্বওয়াবুল-মাসাবীহ্ ফী-তাহক্বীক মীশকাতুল মাসাবীহ্ ১/২৪৮, হাদীস নং: ১৮৫।

শায়খ [رحمه الله] শাসকের বিরুদ্ধে খুরুজ করার জন্য জামা’য়াহ্ থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনেক বর্ণনা উল্লেখ করেন৷

তিনি রাসূল ﷺ-এর হাদীসটি উল্লেখ করেন:

مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ قِيدَ شِبْرٍ فَقَدْ خَلَعَ رِبْقَةَ الإِسْلاَمِ مِنْ عُنُقِهِ‘

“যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণও জামা’আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল সে তার গলা থেকে ইসলামের বেড়ী খুলে ফেলে দিল- যতক্ষণ না সে আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে এসেছে। [অর্থাৎ সে নিজেকে বিজয়ী দল তথা আহলুস সুন্নাহ্' থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে]

احمد (۵/ ۱۸۰ ح ۲۱۸۹۴) و ابوداؤد (۴۷۵۸) و ابن ابی عاصم فی السنہ (۱۰۵۳) و الحاکم (۱/ ۱۱۷) و الترمذی (۲۸۶۳)

শায়খ [رحمه الله] এই হাদীসের ফিক্বহ উল্লেখ করেছেন অর্থাৎ এর ব্যাখ্যা করেছেন:

২ নং পয়েন্টে:

’خلیفہ اور مسلمان حکمرانوں کے خلاف بغاوت کر نا جائز نہیں بلکہ کبیرہ گناہ ہے الا یہ کہ فریقین یا ایک فریق کسی اجتبادی خطاء میں مبتلا ہوتو وہ معذور ہے۔

“মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা নাজায়েয কারণ আদতে এটি কাবীরাহ্ গুনাহ। যদি না কোন দল ইজতিহাদি খতায় পড়ে তবে তাকে ক্ষমা করা হবে।” [শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ক্ষেত্রে তাঁর ইজতিহাদে সে ভুলের মধ্যে পতিত হয়েছে, অতএব কাবীরাহ্ গুনাহ থেকে সে অব্যাহতিপ্রাপ্ত—যেমনটা কতিপয় সালাফদের দৃষ্টান্ত থেকে পাওয়া যায়।]
.

[গ]
.
উল্লেখিত বইয়ের একই পৃষ্ঠায় শায়খ যুবাঈর ‘আলী যা’ঈ [১/২৪৮] উম্মাহ্’র পথভ্রষ্ট হওয়ার কারণগুলি সম্পর্কে লিখেছেন— শায়খ [رحمه الله] পথভ্রষ্টতার ৪ টি মূল কারণ উল্লেখ করেছন৷

’قرآن وحدیث اورا جماع کا انکار (مثلا تکفیری خوارج معتزلہ اور منکرین حدیث وغیره)‘

১. ‘যে ব্যক্তি কুর’আন ও সুন্নাহ্ এবং ইজমা অস্বীকার করে’— শায়খ তারপরে ব্র্যাকেটে লিখেছেন: [উদাহরণস্বরুপ, তাক্বফিরী খাওয়ারিজ, মু’তাযিলাহ্ এবং হাদীস অস্বীকারকারী]

’سلف صالحین کے متفقفہم سے فرار (مثلا جمیہ ،مرجیہ، روافض اور قدری وغیرہ)‘

২. যে-কেহ সালাফুছ-ছালেহীনের বুঝের বিরোধীতা করে’— ব্র্যাকেটে শায়খ লিখেছেন: [জাহমিয়্যাহ্, মূর্জিয়াহ্, রাওয়াফিদ্ব, এবং কাদারিয়্যাহ্ ইত্যাদি]

’تاویلات باطلہ اور مر دو دروایات سے پیار (مثلا اہل بدعت اور اہل شرک کے تمام گروہوں کا طر زیمل)‘

৩. যে ‘মিথ্যা ব্যাখ্যা [তাওয়ীল] করে এবং বাতিল রেওয়ায়েত গ্রহণ করে’— [আহলুল বিদ’য়াহ্ এবং আহলুল শিরক্, এরা সকলেই এ পথের উপর প্রতিষ্ঠিত]

’علماۓ حق اور اہل حق سے برسر پیکار (مثلا تکفیری اور تنفیری خوارج وغیرہ)‘

৪. হক্বের উপর থাকা উলামাদের পরিত্যাগ করা’— শায়খ তারপরে ব্র্যাকেটে লিখেছন: [উদাহরণস্বরূপ: তাক্বফিরী এবং তানফিরী খাওয়ারিজ]
.
[ঘ]

মহান মুহাদ্দিস, শায়খ যুবাঈর ‘আলী যা'ঈ [رحمه الله] তার বই আল-মাক্বালাতে [২/২০] আহলুস সুন্নাহ্' ওয়াল জামা’য়াহ্’র আক্বীদাহ্ আলোচনা করার সময় লেখেন:

১৯ নং পয়েন্টে:

ونقيم فرض الجهاد والحج مع أئمة المسلمين في كل دهر وزمان . ہر زمانے.‘

“প্রত্যেক যুগের এবং প্রত্যেক জায়গার মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে মুসলিম শাসকের অধীনে জি’হাদ করা এবং তার অধীনে হজ্জ্ব করা ফরয।”

২০ নং পয়েন্টে:

ولا نرى الخروج على الأئمة ولا القتال في الفتنة.‘

“আমরা মুসলিমরা শাসকের বিরুদ্ধে খুরুজ [বিদ্রোহ] করতে এবং মুসলিমদের মাঝে ফিতনাহ্’র সময় একে অপরকে হত্যা করতে বিশ্বাসী না৷”
.

[ঙ]
.
শায়খ যুবাঈর আলী যা’ঈ [رحمه الله] আল-মাক্বালাতের ২/৫৬ তে বলেন:

’ہم مسلمان حکمرانوں کے خلاف خروج نہیں کر تے اگر چہ وہ باہم لڑائیاں کر میں، جوخص امت پر خروج کا قائل ہے چاہے کوئی بھی ہو، ہم اس سے بری ہیں ۔

“আমরা মুসলিমরা মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে খুরুজ [বিদ্রোহ্] করা জায়েয মনে করি না এমনকি যদি তারা আমাদের উপর অত্যাচার করে [তবুও], এই উম্মাহ্’র যে বিশ্বাস করে যে ‘তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা জায়েয, সে যেই হোক না কেন, আমরা তার থেকে মুক্ত।”
.
[চ]
.

আল-মাক্বালাতের ৫ম খন্ডের ১৪০ পৃষ্ঠায়,
শায়খ [رحمه الله] আল-ইমাম ইবনু বাত্তাল [رحمه الله]-এর [সহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যাকার] একটি ক্বওল এনেছেন:

“আমাদের অবশ্যই জামা’য়াহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে এবং শাসক অত্যাচারী হলেও তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা যাবে না’—এটি বলতে আলেমগণ, ফুক্বাহা ও ইমামগণ বর্ণনাটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন৷”
[ইবনু বাত্তালের শারহ সহীহ আল-বুখারী: ১০/৩৩]

শায়খ [رحمه الله] এটি উল্লেখ করেছেন এবং এই দৃষ্টিভঙ্গিকে/মতকে সমালোচনা বা প্রত্যাখ্যান করেননি এবং এটি স্পষ্ট যে এটিই শায়খের আক্বীদাহ্ এবং মানহাজও, ওয়াল-হামদু-লিল্লাহ্।

অনুবাদক: আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ রাকিব খান
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
12,909Threads
Total Messages
16,410Comments
Total Members
3,339Members
Latest Messages
fahad ahmedLatest member
Top