Habib Bin Tofajjal

সাহাবার গুরুত্ব

যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বা প্রতিষ্ঠানের প্রকাশ ও বিকাশ লাভের । জন্য জরুরী বিশ্বস্ত শিশ্য ও কর্মচারীর।

আল্লাহর পক্ষ থেকে রসূল হয়ে এলেন মুহাম্মাদ (ﷺ)। তাঁকে স্বীকার কারে নেওয়ার মতো বিশ্বাসীর দরকার ছিল। সাহাবায়ে কিরাম কট গণ ছিলেন সেই বিশ্বাসী।

তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করার মতো, তার কথা মেনে নেওয়ার মতো নিষ্ঠাবান ভক্তবৃন্দের প্রয়োজন ছিল। সাহাবায়ে কিরাম (রা:) গণ ছিলেন সেই ভক্তবৃন্দ।

নবুঅতের প্রচারক ও সংবাদ-বাহকের দরকার ছিল। সাহাবায়ে কিরাম (রা:) গণ ছিলেন সেই সংবাদ-বাহক।

প্রয়োজন ছিল নবুঅতের পতাকাধারী নির্ভিক বীর সেনাবাহিনীর। সাহাবায়ে কিরাম গণ ছিলেন সেই পতাকাধারী বীর সেনাবাহিনী মহানবী (ﷺ)-এর শত্রু ছিল, তাঁকে ইসলাম প্রচারে বাধা দিয়েছিল, তাঁকে কত শত কষ্ট দিয়েছিল। তা প্রতিহত করার জন্য শক্তিশালী সঙ্গীর দরকার ছিল। সাহাবায়ে কিরাম (রা:) গণ ছিলেন সেই সঙ্গী।

বিপদের পথে শোকে-দুঃখে সান্তনা দেওয়ার মতো সফর-সাধীর প্রয়োজন ছিল, সাহাবায়ে কিরাম (রা:) গণ ছিলেন সেই সফর-সাথী।

যে খবর তিনি বলেন, তা বিশ্বাস ক'রে তাঁকে সমর্থন করার মতো মানুষের দরকার ছিল। সাহাবায়ে কিরাম (রা:) গণ ছিলেন সেই সমর্থক মানুষ।

অবিশ্বাসের অন্ধকারে বিশ্বাসের আলো জ্বালতে দরকার ছিল খুন ও অর্থের জ্বালানীর। সাহাবায়ে কিরাম (রা:) ছিলেন খুন ও অর্থ দিয়ে সেই আলো জ্বালাতে সাহায্যকারী মানুষ ।

মহান আল্লাহ নিজ নবীকে একাকী সফলতা দেননি। তার সাফল্যের জন্য অসীলা করেছিলেন কিছু নিবেদিত প্রাণ মানুষকে। সাহাবায়ে কিরাম গণ (রা:) ছিলেন সেই নিবেদিত প্রাণ মানুষ ।

মহান আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করার জন্য নবীর সহযোগী ও মদদগার মানুষের প্রয়োজন ছিল। সাহাবায়ে কিরামগণ (রা:) ছিলেন সেই দ্বীনের সহযোগী ও মদদগার মানুষ।

নবুঅতের বাণী দিকে দিকে প্রচার করার জন্য প্রচুর মুবাল্লিগ ও প্রচারকের দরকার ছিল। সাহাবায়ে কিরামগণ ছিলেন সেই মুবাল্লিগ ও প্রচারক।

সুখে-দুঃখে, আরামে ও কষ্টে এবং নিজেদের উপর (অন্যদেরকে) প্রাধান্য দেওয়ার অবস্থায় তাঁর পূর্ণ আনুগত্য করবে-এমন ধৈর্যশীল সম্প্রদায়ের প্রয়োজন ছিল। সাহাবায়ে কিরামগণ ছিলেন সেই ধৈর্যশীল মানুষ, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্যে ধৈর্যের পরিপূর্ণ নমুনা প্রদর্শন ক’রে গেছেন।

দ্বীনের প্রতিষ্ঠা, লালন ও রক্ষণাবেক্ষণ-সকল ক্ষেত্রেই প্রয়োজন শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষকের দরকার ছিল, সাহাবায়ে কিরামগণ ছিলেন সেই পৃষ্ঠপোষক মানুষ।
মহানবী (ﷺ) বলেছেন,
مَا مِنْ نَبِيٍّ بَعَثَهُ اللهُ فِي أُمَّةٍ قَبْلِى إِلا كَانَ لَهُ مِنْ أُمَّتِهِ حَوَارِيُّونَ وَأَصْحَابٌ
অর্থাৎ, আমার পূর্বে আল্লাহ যে কোন নবীকে যে কোন উম্মতের মাঝে পাঠিয়েছেন তাদের মধ্যে তাঁর (কিছু) সহযোগী ও সঙ্গী হতো। তারা তাঁর সুন্নতের উপর আমল করত এবং তাঁর আদেশের অনুসরণ করত। (মুসলিম ১৮৮ নং)

অন্য এক বর্ণনায় আছে,
مَا كَانَ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَقَدْ كَانَ لَهُ حَوَارِيُّونَ يَهْتَدُونَ بِهَدْيِهِ وَيَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِهِ ».
অর্থাৎ, প্রত্যেক নবীরই (কিছু) সহযোগী ছিল। তারা তাঁর পথনির্দেশ অনুযায়ী পথ চলত এবং তাঁর আদর্শে আদর্শবান হত। (মুসলিম ১৮৯নং)

তাঁরা ছিলেন মহান সৃষ্টিকর্তার নির্বাচিত, মহানবী (ﷺ) -এর বিশ্বস্ত ও প্রিয়পাত্র। তাঁরা সারা মুসলিম জাহানের শ্রদ্ধার পাত্র। 'রাম্বিয়াল্লাহু আনহুম।”

- শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী।

আরও পড়ুন: সাহাবায়ে কিরাম
 
Last edited:

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
12,915Threads
Total Messages
16,416Comments
Total Members
3,345Members
Top