সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Habib Bin Tofajjal

প্রবন্ধ সালাফী হওয়া কিংবা সালাফী মানহাজ অনুসরণের বিধান কী?

Habib Bin Tofajjal

If you're in doubt ask الله.

Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
Q&A Master
Salafi User
LV
17
 
Awards
33
Credit
15,475
সালাফী হওয়া কিংবা সালাফী মানহাজ অনুসরণ করা কি আবশ্যক? কেউ এটা অনুসরণ না করলে সে গুনাহগার হবে, পথভ্রষ্ট বলে গণ্য হবে?

নাকি ঐচ্ছিক কোনো উত্তম গুণ? কেউ এটা মেনে নিলে সে পরিপূর্ণতার অধিকারী হবে ঠিকই কিন্তু না মানলে সে পথভ্রষ্ট বলে গণ্য হবে না?

নাকি এটা একটা বিদআত, দ্বীনের নামে নতুন আবিষ্কার? ফলে, কেউ এই মানহাজ প্রকাশ করলে, এটা মেনে চললে, এর দিকে আহ্বান করলে সে বিদআতকারী হবে, বিদআতের দিকে আহ্বানকারী হবে?

এর উত্তর হলো : এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, সালাফী মানহাজের অনুসরণ দ্বীনের একটি আবশ্যকীয় বিষয়, এবং যে এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে সে অবশ্যই পথভ্রষ্ট। আর এই উম্মতের জন্য সালাফে সালেহীনের মানহাজ ছাড়া অন্য কোথাও কোনো কল্যাণ বিদ্যমান নেই। ইবনে কুদামাহ্ রহিমাহুল্লাহ বলেন, “কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার মাধ্যমে সালাফদের অনুসরণের উজ্জ্ববিয়্যাত বা আবশ্যকীয়তা সাব্যস্ত হয়েছে।”

যেমন :

১) আল্লাহ্ তাআলা বলেন :

(تولى ما توله المؤمنين سييل غير ويتبع الهدى له تبين ما بعدِ مِن الرَّسُولَ يُشاقِقِ وَمَن (قصيرًا وَسَاءَتْ جَهَنَّمُ وَنُصْلِهِ​

“আর কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না মন্দ আবাস।[১]

লক্ষ্য করুন, আল্লাহ তাআলা মুমিনদের পথের বিরোধিতাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধাচরণের সমপর্যায়ের করেছেন, এবং উভয়ের পরিণাম একই বলেছেন। সুতরাং, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরুদ্ধাচরণ যেমন জঘন্য একটি হারাম, তেমনিভাবে মুমিনদের পথের বিরোধিতা করাও হারাম। আর এরূপ যে করবে তার ব্যাপারে আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন: “তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমরা ফিরিয়ে দেব" অর্থাৎ, সে বিচ্ছিন্নতা ও ভ্রান্ত ফিরকার অনুসরণে আক্রান্ত হবে।

আর মু'মিনীন বলতে এখানে সাহাবায়ে কেরামকে বুঝানো হয়েছে। যাঁরা হলেন সর্বপ্রথম ইসলামের অনুসারী এবং ইসলামী শিক্ষার পরিপূর্ণ নমুনা। এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ হওয়ার সময় তাঁরা ব্যতীত অন্য কোনো মু'মিনীন বিদ্যমানও ছিলেন না যে তাঁরা উদ্দেশ্য হতে পারেন। কাজেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরোধিতা এবং সাহাবায়ে কেরামের পথ ত্যাগ করে অন্য পথের অনুসরণ করা দুটোই প্রকৃতপক্ষে একই জিনিসের নাম। এই জন্য সাহাবায়ে কেরামের পথ থেকে বিচ্যুতি স্পষ্ট ভ্রষ্টতা, বিচ্ছেদের কারণ এবং এমন পাপ যার পাপী. জাহান্নামের উপযুক্ত হয়।[২]

সুতরাং, মুসলিমদের মাঝে বিভেদ হতে রক্ষার উপায় হলো : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের পথ অনুসরণ।

আর বিচ্ছেদ ও ভ্রান্ত ফিরকার জালে বন্দী হওয়ার কারণ হলো : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবীদের পথের বিরোধিতা করা এবং তাদের পথের বিরোধীদের ব্যাপারে তিনি দুনিয়া ও আখেরাতের শাস্তির ভয় দেখিয়েছেন।

২) অপর আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলেন:

واتبع سبيل من أناب إلي​

“এবং তার পথ অবলম্বন কর, যে আমার অভিমুখী হয়েছে”[৩]

এই আয়াত উল্লেখ করে ইমাম ইবনুল কয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, “ প্রত্যেক সাহাবীই আল্লাহ্ অভিমুখী, সুতরাং তাদের পথের অনুসরণ করা আবশ্যক। তাদের বক্তব্য ও আকীদা-বিশ্বাস তাদের বৃহত্তর পথেরই অন্তর্ভূক্ত। আর তারা যে আল্লাহ্ অভিমুখী এর প্রমাণ হলো, আল্লাহ্ তাআলা তাদেরকে হিদায়াত করেছেন। আর আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন, “তিনি তাদেরকে হিদায়াত দেন যারা তার অভিমুখী হয়”।[৪]

৩) এছাড়াও যারা নিষ্ঠার সাথে সাহাবায়ে কেরামের অনুসরণ করে, আল্লাহ তাআলা তাদের প্রশংসা করেছেন :

(عَلَهُ وَرَضُوا عَنهُمْ اللَّهُ رَضى بإحسن اتبعوهم والذين والأنصار المهجرين من الأولون والسيقون (العظيم الفورُ ذَلِكَ أَبَداً فيها خلدين الأنهر تحتها تجرى جَنَّتِ لَهُمْ وَأَعَد​

“আর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তিনি তাদের জন্য তৈরী করেছেন জান্নাত, যার নিচে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। এ তো মহাসাফল্য।'[৫]

৪) অপরদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলিম উম্মাহর মতভেদ ও বিচ্ছিন্নতার সময়ে তাঁর সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাহ আঁকড়ে ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন:

فسيرى بعدي مِنْكُمْ يَعِش مَنْ فَإنّهُ حَبَشيا عَبْدًا وإن والطاعة، والسَّمْعِ اللَّهِ يَتَقَوَى أَوصِيكُمْ ) علَيْها وعضوا يها تمسكوا الراشدين المهديين الْخُلَفَاءِ وَسنّة يسنّتِي فَعَلَيْكُمْ كَثِيرًا، اختلافا ) ضلالة يدعة وكل بدعة، مُحدثة كُلِّ فإن الأمور، ومُحْدَثَات وَإِيَّاكُمْ بِالنَّواحِدَ​

“আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং (আমীরের কথা) শ্রবণ ও আনুগত্যের উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে (আমীর) একজন হাবশী গোলাম হয়। কারণ তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে তারা অচিরেই প্রচুর মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাত এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাহগণের সুন্নাত অনুসরণ করবে, তা দাঁত দিয়ে কামড়ে আঁকড়ে থাকবে। সাবধান! (দ্বীনের নামে) প্রতিটি নব আবিষ্কার সম্পর্কে! কারণ প্রতিটি নব আবিষ্কার হলো বিদ'আত এবং প্রতিটি বিদ'আত হলো ভ্রষ্টতা।"[৬]

এখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, উম্মতের মাঝে প্রচুর মতবিরোধ ঘটবে, সাথে সাথে সেই সময় আমাদের অনুসরণীয় পথ কোনটি সেটাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, আর সেটা হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত এবং হিদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাহগণের সুন্নাত। এখান থেকেই বুঝা যায় যে, এই পথের ব্যতিক্রম বাকি পথগুলো হলো বিদআত ও গোমরাহী।

৫) এছাড়াও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, পূর্ববর্তী জাতিদের বিভক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আমাদেরকে সতর্ক করেছেন :

كلُّهُمْ مِلَّةٌ وسبعين ثلاث عَلَى أُمِّتِي وَتَفْتَرقُ مِلَّةٌ وَسَبْعِين ثنتين على تفرقت إسرائيلَ بَنِي إِنَّ ) وأَصْحَابِي عَلَيْهِ أَنَا مَا قَالَ اللَّهِ رَسُولَ يَا هي وَمَنْ قَالُوا وَاحِدَةٌ مِلَّهُ الدِّ النَّار في​

“বানী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেনঃ আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।"[৭]

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু “আমি যার উপর প্রতিষ্ঠিত” এতটুকু বলেই থেমে যান নি, বরং তিনি বলেছেন : “আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।” এখান থেকে বুঝা যায়, কেউ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত কিনা এটা বুঝা যাবে সাহাবীদের মাধ্যমে, যদি কেউ তাদের মানহাজের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তাহলেই সে এই নাজাতপ্রাপ্ত দলের উপরে আছে। আর কেউ যদি সেই মানহাজকে পরিত্যাগ করে তাহলে সে ভ্রান্ত ৭২ দলের অন্তর্ভুক্ত, আর এটাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বক্তব্যের মর্ম।

অন্যান্য ভ্রান্ত ফিরকা জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত, এটা আমাদের কথা নয়, বরং এটা হাদীসেরই কথা। তবে এর মানে তাদেরকে কাফের বলা হচ্ছে তাও নয়, কেননা তাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই উম্মতের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে তাদের কাজে তারা জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত হয়েছে, তাদের বিষয়টি কবিরা গুনাহকারীর মত, তাদের শাস্তির বিষয় আল্লাহর ইচ্ছাধীন, তবে যদি তাদের ভ্রষ্টতা বড়ো কুফরীর পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাহলে ভিন্ন কথা ।

আর জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত কোনো ফিরকার অনুসরণ কোনো রূপে বৈধ নয়, বরং সেখান থেকে মানুষকে সতর্ক করাটাই কর্তব্য।

অপর এক হাদীসে তিনি সাহাবীদেরকে এই উম্মতের জন্য নিরাপত্তা বলে আখ্যা দিয়েছেন, হাদীসে এসেছে:

وأنا أمنة لأصحابي فإذا ذهَبْتُ أتى أصْحَابي ما يُوعَدُونَ وأَصْحَابِي أَمَنَةٌ لِأمْتِي، فَإِذَا ذَهَبَ أصحابي أَنَّى أُمِّتِي مَا يُوعَدُونَ​

“আমি আমার সাহাবীদের জন্য নিরাপত্তা স্বরূপ। আমি যখন বিদায় নিব তখন আমার সাহাবীদের উপর ওয়াদাকৃত সময় এসে সমুপস্থিত হয়ে যাবে। আর আমার সাহাবীগণ সকল উম্মাতের জন্য নিরাপত্তা স্বরূপ। আমার সাহাবীগণ যখন বিদায় হয়ে যাবে তখন আমার উম্মাতের উপর ওয়াদাকৃত বিষয় উপস্থিত হবে।'[৮]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য কল্যাণের চাবিকাঠি, অকল্যাণের পথ রুদ্ধকারী। তিনি তার সমকালীন ও পরবর্তী সকলের জন্য অকল্যাণ থেকে নিরাপত্তা স্বরূপ। সুতরাং তার পরবর্তী যে কেউ তার সুন্নত আঁকড়ে ধরবে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে সে অকল্যাণ থেকে নিরাপদ থাকবে। আর এটাই হলো সালাফে সালেহীনের মূলভিত্তি: কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা।

আর এই কুরআন-সুন্নাহকে তারা বুঝেন সাহাবীদের বুঝ অনুপাতে। কেননা সাহাবীগণ হলেন এই উম্মতের অকল্যাণ, ফিনা ও ভ্রষ্টতা থেকে নিরাপত্তা স্বরূপ। এখান থেকে স্পষ্ট যে, সাহাবীদের পথের অনুসরণই ভ্রষ্টতা থেকে নিরাপত্তা আর সাহাবীদের পথ বর্জন করাই হলো ভ্রষ্টতা এবং উম্মতের মাঝে ফিতনা ও বিচ্ছিন্নতা। মুসলিমের উপর আবশ্যক ভ্রষ্টতা থেকে সতর্ক হয়ে তা থেকে বেচেঁ থাকা।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একটি উক্তি বর্ণিত হয়েছে যে, “আল্লাহ তাআলা বান্দাদের অন্তরসমূহে দৃষ্টিপাত করলেন, তাতে তিনি মুহাম্মাদের অন্তরকে বান্দাগণের অন্তরসমূহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পেলেন। সুতরাং তিনি তাঁকে নিজের জন্য নির্বাচন করলেন এবং তাঁর বার্তা দিয়ে প্রেরণ করলেন। অতঃপর তিনি মুহাম্মাদ ছাড়া অন্য সকল বান্দাগণের অন্তরসমূহে দৃষ্টিপাত করলেন, তাতে তিনি মুহাম্মাদের সাহাবীদের অন্তরসমূহকে বান্দাগণের অন্তরসমূহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পেলেন। সুতরাং তিনি তাঁদেরকে তাঁর নিজ নবীর মন্ত্রী বানালেন, যাঁরা তাঁর দ্বীনের জন্য সংগ্রাম করবেন। সুতরাং মুসলিমগণ (সাহাবীগণ) যেটাকে ভালো মনে করেন, সেটা আল্লাহর নিকট ভালো। আর তাঁরা যেটা মন্দ মনে করেন, সেটা আল্লাহর নিকট মন্দ।[৯]

তিনি আরো বলেছেন, "যে ব্যক্তি কাউকে অনুসরণ করতে চায়, সে যেন মৃতদের অনুসরণ করে। আর সেই মৃতরা হলেন: রাসূলের সাহাবীগণ। কেননা তারা উম্মতের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তিবর্গ, নিষ্কলুষ হৃদয়ের অধিকারী, গভীর জ্ঞানী, যাবতীয় কৃত্রিমতা মুক্ত। তারা এমন লোক, যাদেরকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাঁর নবীর সুহবতের জন্য, দ্বীন বহন করার জন্য বাছাই করেছেন। তো তারা তাদের আচরণ ও চলাচলে রাসূলের সাদৃশ্য অবলম্বন করতেন। তারাই মূলত হিদায়াত ও সিরাতে মুস্তাকীমের উপর ছিলেন।[১০]

এছাড়াও কুরআন ও সুন্নাহর অনেক বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, সাহাবীদের মানহাজ অনুসরণ আবশ্যক এবং এর বিরোধিতা স্পষ্ট ভ্রষ্টতা।

একারণে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহু) তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ উসূলুস সুন্নাহ'তে (২৫ পৃ.) বলেছেন, “আমাদের নিকট সুন্নাহর মৌলিক নীতি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাগণ যে বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, তা সুদৃঢ়ভাবে ধারণ করা এবং তাদের অনুগমন করা।

যুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকেও এর আবশ্যকীয়তা বোঝা যায়। কিভাবে? যদি কেউ বলে, সালাফী মানহাজ মানা আবশ্যক নয়।

আমরা তাকে বলব: সাহাবীরা হকের উপর ছিলেন না বাতিলের উপর?

যদি বলে: হকের উপর ছিলেন। তাহলে তো হকের অনুসরণ আবশ্যক। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন, "হকের পরে ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কি আছে?[১১]

আর যদি বলে: তারা বাতিলের উপর ছিলেন। তাহলে তো এই ব্যক্তির ভ্রষ্টতা সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহই রইল না।




১। আন নিসা: ১১৫
২। আহসানুল বায়ান দ্রঃ
৩। লুকমান: ১৫
৪। এ ই'লামুল মুয়াজিয়ীন ৫/৫৬৭
৫। আত তাওবাহ ১০০
৬। আবু দাউদ : ৪৬০৭
৭। তিরমিযী : ২৬৪১
৮। সহীহ মুসলিম: ২৫৩১
৯। আহমদ : ৩৬০০
১০। শরহুস সুন্নাহ, বাগাভী, ১/২১৪
১১। সূরা ইউনুস, ৩২
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
12,902Threads
Total Messages
16,403Comments
Total Members
3,337Members
Latest Messages
Emon11Latest member
Top