সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

নারীর মাসিক কখন শুরু ও শেষ হয়? শরীয়াহ্ ঋতুস্রাবের [হায়য] বিধানকে সংজ্ঞায়িত করে যা সন্দেহ ও অস্পষ্টতা দূর করে দেয়—

Abdullah Rakib

Susceptible
Exposer
Salafi User
LV
3
 
Awards
12
Credit
126
মাসিক [ঋতুস্রাব] শুরু হওয়ার আগে যদি কোন মহিলা হলুদ বা বাদামী/মেটে স্রাব দেখতে পায়, তাহলে তার ছালাত বন্ধ করা উচিত নয়। যখন সে দেখবে যে তার মাসিকের রক্ত শুরু হয়েছে [যা স্পষ্টতই রক্ত, এবং সাধারণত গাঢ়, তবে নারী ভেদে ভিন্ন হতে পারে], তাকে অবশ্যই ছালাত পড়া, ছাওম রাখা এবং স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক বন্ধ করতে হবে। এবং সে এই অবস্থায় থাকা বন্ধ করে না যতক্ষণ না সে তার মাসিক থেকে পবিত্র হয়। মাসিক থেকে তার পবিত্রতা দুটি লক্ষণের একটি থেকে জানা যায়: (১.) তার যোনিতে শুষ্কতা, তাই সে একটি সাদা টিস্যু [বা তুলা] প্রবেশ করায় এবং এটি রক্ত, বা হলুদ বা মেটে রঙের স্রাব ছাড়াই সাদা হয়ে বেরিয়ে আসে। (২.) যে সে সাদা স্রাব দেখতে পায় যা তার মাসিকের স্থান থেকে বেরিয়ে যায়। যতক্ষণ এই দুটি লক্ষণের মধ্যে একটি দেখা না যায়, ততক্ষণ তাকে ঋতুস্রাব [হায়য] অবস্থায় ধরা হয়। এই দুটি লক্ষণের মধ্যে একটি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত একজন মহিলার নিজেকে ঋতুস্রাব থেকে মুক্ত হয়েছে বলে সাব্যস্ত করতে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়।

একইভাবে, তার নিজেকে ঋতুমতী মনে করা উচিত নয় যতক্ষণ না তার প্রকৃতপক্ষে রক্তপাত হয় যা যথার্থ রক্তের প্রকাশ দ্বারা জানা যায়। পেটে ব্যথা বা পেটের খিঁচুনি [যেমন, পিরিয়ডের ব্যথা], বা মেটে বা হলুদ স্রাবের ভিত্তিতে মহিলার ঋতুস্রাব হচ্ছে কিনা তা সাব্যস্ত করা জায়েয নয়। মাসিকের শুরু এবং শেষ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

পবিত্র হওয়ার পরে হলুদ বা মেটে স্রাব পুনরায় আসার বিষয়ে, শাইখ ইবনু ‘বায বলেছেন: “যদি তার ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হওয়ার পরে কিছু হলুদ বা মেটে স্রাব হয়, তবে এটি তার ঋতুস্রাব থেকে পবিত্রতাকে আছর [প্রভাবিত] করে না, অর্থাৎ সে এখনো পবিত্র। আর এই স্রাবের হুকুম প্রস্রাবের মত [এটি পরিষ্কার করতে হবে]।

তবে, যদি স্রাব পরিষ্কারভাবে মাসিকের রক্ত হয়, তাহলে সে আবার মাসিকের অবস্থায় ফিরে আসে। তাই যখন সে আবার পবিত্র হবে [যা অল্প সময়ের মধ্যে হতে পারে], তখন তাকে গোসল করতে হবে। এটি ছাহাবীয়া উম্মু আতিয়া [রাযিয়াল্লাহু আনহা] থেকে
ছাবিত হওয়ার কারণে হয়েছে যিনি বলেছেন: ‘আমরা মাসিক থেকে পবিত্র হওয়ার পরে হলুদ এবং মেটে স্রাবকে হায়যের মধ্যে গণ্য করতাম না।” [দেখুন আল-জামি ফি ফিক্বহ আল-‘আল্লামাহ ইবনু বায, ৯৯ পৃষ্ঠা] তাই নিয়ম হল যে মাসিক চক্রের সময় হলুদ বা মেটে স্রাব তার মাসিকের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু যদি এই স্রাব পবিত্রতার দুটি লক্ষণের একটির পরে আসে তবে তার প্রতি কোন নজর দেওয়া হয় না এবং এর বিধান প্রস্রাবের মত [এটি পরিষ্কার করা উচিত]।

এবং যদি একজন মহিলার মাসিকের শুরুতে অল্প পরিমাণে রক্ত আসে— যদি তা স্পষ্টভাবে রক্ত হয় [এবং প্রতিটি মহিলা তার মাসিকের রক্ত জানে]— তাহলে সে তার স্বামীর সাথে ছালাত, ছাওম এবং যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে। এর কারণ হল ঋতুস্রাব রক্তের পরিমাণের সাথে যুক্ত নয় কারণ এটি জানা [বিষয়] যে মহিলাদের রক্তপাত ভিন্নভাবে হয়— কেউ কেউ অল্প পরিমাণে রক্তপাতের সাথে শুরু করে এবং তারপরে এটি বন্ধ হওয়ার কয়েক দিন আগে এটি আরও বেড়ে যায়, কারো কারো শুরু থেকেই প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত হয় এবং তারপরে এটি বেশ কয়েক দিনের মধ্যে হ্রাস পায়, তবে অন্যান্যদের নির্দিষ্ট দিনে রক্তপাত হয় এবং বন্ধ হয়।

যে মহিলার রক্তস্রাব শুরু হয় তার উচিত ছালাত পড়া, ও ছাওম বন্ধ রাখা এবং রক্তপাতের সময় যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা যতক্ষণ পর্যন্ত না সে পবিত্র হয়, যতক্ষণ না তার রক্তপাত শুরু হওয়ার ১৫ দিনের বেশি না হয় [এই রক্তপাত মাসিকের]। এটাই জমহুর [অধিকাংশ] আলিমদের অবস্থান। যদি তার রক্তপাত ১৫ দিনের বেশি চলতে থাকে, তাহলে এখন এটি অস্বাভাবিক [ইস্তেহাযা] বলে বিবেচিত হয়।

সুতরাং, একজন মহিলার ঋতুস্রাব শুরু হয় যখন সে নিশ্চিত হয় যে সেখানে রক্ত বা রক্তের প্রবাহ আছে, এবং তাই সে নিজেকে চেক করে যখন সে অনুভব করে যে সেখানে কিছু ঘটছে। সেই সময়ে, তার মাসিক শুরু হয়— এবং এটি রক্তের দাগ দিয়ে শুরু হতে পারে।

এই স্পষ্টতা মহিলাদের জন্য স্বস্তির কারণ হওয়া উচিত যারা কখনও কখনও অনিশ্চয়তা, দ্বিধা বা অস্পষ্টতায় ভোগেন। একবার একজন মহিলা শরীয়াহ্’র এই স্পষ্ট সীমাগুলি জেনে গেলে, সে সন্দেহগুলিকে তাকে জ্বলাতন করতে এবং তার অস্বস্তি বা উদ্বেগের কারণ হতে দেয় না।

তার সম্পূর্ণভাবে সন্দেহ এবং অস্পষ্টতা উপেক্ষা করা উচিত এবং এই স্পষ্ট আহকামগুলিকে আঁকড়ে ধরে থাকা উচিত। দ্বীনকে জানা এবং বিনা দ্বিধায় তার উপর আমল করা শয়তানের প্রভাবকে প্রতিহত করবে। আর সফলতা আল্লাহ্’র হাতে।❞

উস্তায আবু খাদীজা আব্দুল ওয়াহীদ
বঙ্গানুবাদ: আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ রাকিব খান।

সোর্স:
 

Create an account or login to comment

You must be a member in order to leave a comment

Create account

Create an account on our community. It's easy!

Log in

Already have an account? Log in here.

Total Threads
13,357Threads
Total Messages
17,248Comments
Total Members
3,685Members
Latest Messages
Md. OheduzzamanLatest member
Top