Habib Bin Tofajjal
If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 690
- Comments
- 1,228
- Solutions
- 17
- Reactions
- 7,152
- Thread Author
- #1
প্রশ্ন-১: মাননীয় শায়েখ! আমরা একটি ছোট পুস্তিকায় একটি হাদীস পাঠ করেছি। যেখানে বলা হয়েছে, خُذْ مِنَ الْقُرْآنِ مَا شِئْتَ لِمَا شِئْتَ ‘তুমি কুরআন থেকে নাও যা তুমি চাও, যেজন্য চাও’। এ হাদীসটা কি ছহীহ? আমাদেরকে বুঝিয়ে বলুন! আল্লাহ আপনাকে উত্তম পুরস্কারে ভূষিত করুন!
উত্তর: হাদীসটি কিছু লোকের মধ্যে বহুল প্রচারিত। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় যে হাদীস শাস্ত্রে এর কোন ভিত্তি নেই।[1] অতএব এটা বর্ণনা করা এবং একে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে সম্বন্ধ করা জায়েয নয়। অতঃপর হাদীসটির বিস্তৃত অর্থ যা কিছুকে শামিল করে তা বিশুদ্ধ নয় এবং ইসলামী শরী‘আতে তা আদৌ প্রমাণিত হয় না। যেমন ধরুন, আমি যদি আমার ঘরের আঙিনায় বসে থাকি এবং রূযির জন্য কোনরূপ কাজ না করি এবং আমি যদি আমার প্রভুর নিকটে খাদ্য প্রার্থনা করি যেন তিনি আমার উপরে আসমান থেকে তা নাযিল করেন। কেননা আমি কুরআন থেকে এটা নিয়েছি।-একথা কি কেউ বলবে?
এটি বাতিল কথা মাত্র। সম্ভবতঃ এটা কোন কর্মবিমুখ অলস ছূফীর তৈরী করা কথা হবে। যারা তাদের হুজরায় বসে থাকায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে এবং একে তারা ‘রিবাত্বাত’ (الرِّباطات) বলে অভিহিত করে (বাংলাদেশে ‘মোরাকাবা’ বলে)। তারা সেখানে বসে থাকে আর আল্লাহর পাঠানো রূযির অপেক্ষা করতে থাকে, যা কোন লোক তার জন্য নিয়ে আসবে। অথচ এটি কোন মুসলিম ব্যক্তির স্বভাব হ’তে পারে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুসলমানদের গড়ে তুলেছিলেন উঁচু হিম্মত ও আত্মসম্মান বোধের উপরে। তিনি বলেছেন,
কিছু কিছু দুনিয়াত্যাগী ও ছূফী ব্যক্তির বিস্ময়কর কেচ্ছা-কাহিনী আমরা শুনতে পাই। আমরা আলোচনা দীর্ঘ না করে উদাহরণ স্বরূপ একটা ঘটনা পেশ করতে চাই।
ছূফীদের ধারণা মতে তাদের একজন ব্যক্তি পৃথিবী ভ্রমণে বের হয় পাথেয়শূন্য অবস্থায়। কিন্তু খেতে না পেয়ে সে মরার উপক্রম হয়। এমতাবস্থায় সে দূরে একটি গ্রাম দেখতে পেল। অতঃপর সেখানে গেল। ঐদিন ছিল জুম‘আর দিন। সে তার ধারণা অনুযায়ী যেহেতু আল্লাহর উপরে ভরসা করে সে সফরে বের হয়েছে এবং এই ভরসায় যাতে কোনরূপ কমতি দেখা না দেয়, সেজন্য সে নিজেকে লোকচক্ষুর আড়াল করে মিম্বরের নীচে লুকিয়ে রইল। তার অন্তর একথা বলছিল, যেন কেউ না কেউ তাকে বুঝে ফেলে। কিছু পরে খতীব খুৎবা দিলেন। কিন্তু ঐ ছূফী জামা‘আতে ছালাত আদায় করল না। ইতিমধ্যে খতীব খুৎবা ও ছালাত শেষ করেছেন এবং মুছল্লী সবাই একে একে বের হ’তে শুরু করেছেন। লোকটি বুঝতে পারল যে, সম্ভবতঃ মসজিদ খালি হয়ে গেল। সত্বর দরজা সমূহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং সে একাকী মসজিদে খানাপিনা ছাড়াই পড়ে থাকবে। তখন উপায়ান্তর না দেখে বেচারা ছূফী কাশি দিতে থাকলো। যাতে লোকেরা তার উপস্থিতি টের পায়। তার কাশির আওয়ায শুনে মুছল্লীদের দৃষ্টি পড়ল। দেখা গেল যে, সে ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় হাড্ডিসার অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তারা তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেল ও খানাপিনার ব্যবস্থা করল। লোকেরা তাকে বলল, হে অমুক! তুমি কে? ছূফী বলল, أَنَا زَاهِدٌ مُتَوَكِّلٌ عَلَى اللهِ ‘আমি একজন দুনিয়াত্যাগী, আল্লাহর উপরে ভরসাকারী’। লোকেরা বলল, তুমি কিভাবে বলছ আল্লাহর উপরে ভরসাকারী? অথচ তুমি মরতে বসেছিলে? যদি তুমি আল্লাহর উপরে ভরসাকারী হ’তে, তাহ’লে কারু কাছে চাইতে না। আর তোমার উপস্থিতি জানাবার জন্য কাশতে না। এভাবেই তোমার পাপে তুমি মরে যেতে’।
এটাই হ’ল দৃষ্টান্ত, যা এইসব জাল হাদীসের পরিণাম হিসাবে পরিদৃষ্ট হয়। মোট কথা এই হাদীসের কোন ভিত্তি নেই।[3]
[1]. (لا أصل له فيما أعلم) সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৫৭।
[2]. বুখারী, হা/১৪২৯; মুসলিম হা/১০৩৩; মিশকাত হা/১৮৪৩ ‘যাকাত’ অধ্যায় ৪ অনুচ্ছেদ।
[3]. প্রিয় পাঠক! বাংলাদেশে প্রচলিত তাবীযের বইগুলি দেখুন। কুরআনের আয়াত ও সূরায় ভরা মাদুলীগুলো দেখুন। তাছাড়া মকছূদোল মুমেনীন, নেয়ামুল কোরআন প্রভৃতি বইগুলি দেখুন। কুরআনকে এরা ঔষধের কিতাব বানিয়ে ছেড়েছে। যা বিক্রি করে এরা দু’পয়সা রোজগার করছে। আর ঈমান হরণ করছে দৈনিক হাযার হাযার মুসলমানের। ইহুদী-নাছারা আলেম ও দরবেশরা তাওরাত-ইনজীলের শব্দ ও অর্থ বিকৃত করে জনগণের কাছে পেশ করত এবং তার বিনিময়ে দু’পয়সা রোজগার করত (বাক্বারাহ ২/৭৯)। যা আজও তারা করে যাচ্ছে। এযুগে আমাদের অবস্থা ইহুদী-নাছারা আলেম-দরবেশদের থেকে খুব বেশী ব্যতিক্রম নয়। পার্থক্য এই যে, কুরআন ও ছহীহ হাদীস শাব্দিকভাবে অবিকৃত রয়েছে। কারণ আল্লাহ স্বয়ং এর হেফাযতের দায়িত্ব নিয়েছেন (হিজর ৯;ক্বিয়ামাহ ১৬-১৯)। -অনুবাদক।
উত্তর: হাদীসটি কিছু লোকের মধ্যে বহুল প্রচারিত। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় যে হাদীস শাস্ত্রে এর কোন ভিত্তি নেই।[1] অতএব এটা বর্ণনা করা এবং একে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর দিকে সম্বন্ধ করা জায়েয নয়। অতঃপর হাদীসটির বিস্তৃত অর্থ যা কিছুকে শামিল করে তা বিশুদ্ধ নয় এবং ইসলামী শরী‘আতে তা আদৌ প্রমাণিত হয় না। যেমন ধরুন, আমি যদি আমার ঘরের আঙিনায় বসে থাকি এবং রূযির জন্য কোনরূপ কাজ না করি এবং আমি যদি আমার প্রভুর নিকটে খাদ্য প্রার্থনা করি যেন তিনি আমার উপরে আসমান থেকে তা নাযিল করেন। কেননা আমি কুরআন থেকে এটা নিয়েছি।-একথা কি কেউ বলবে?
এটি বাতিল কথা মাত্র। সম্ভবতঃ এটা কোন কর্মবিমুখ অলস ছূফীর তৈরী করা কথা হবে। যারা তাদের হুজরায় বসে থাকায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে এবং একে তারা ‘রিবাত্বাত’ (الرِّباطات) বলে অভিহিত করে (বাংলাদেশে ‘মোরাকাবা’ বলে)। তারা সেখানে বসে থাকে আর আল্লাহর পাঠানো রূযির অপেক্ষা করতে থাকে, যা কোন লোক তার জন্য নিয়ে আসবে। অথচ এটি কোন মুসলিম ব্যক্তির স্বভাব হ’তে পারে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুসলমানদের গড়ে তুলেছিলেন উঁচু হিম্মত ও আত্মসম্মান বোধের উপরে। তিনি বলেছেন,
اَلَْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ من اليَدِ السُّفْلَى، فاليد العليا هى الْمُنْفِقَةُ واليد السفلى هى السَّائِلَةُ
‘উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে উত্তম। উপরের হাত হ’ল ব্যয়কারী এবং নীচের হাত হ’ল সওয়ালকারী’।[2]কিছু কিছু দুনিয়াত্যাগী ও ছূফী ব্যক্তির বিস্ময়কর কেচ্ছা-কাহিনী আমরা শুনতে পাই। আমরা আলোচনা দীর্ঘ না করে উদাহরণ স্বরূপ একটা ঘটনা পেশ করতে চাই।
ছূফীদের ধারণা মতে তাদের একজন ব্যক্তি পৃথিবী ভ্রমণে বের হয় পাথেয়শূন্য অবস্থায়। কিন্তু খেতে না পেয়ে সে মরার উপক্রম হয়। এমতাবস্থায় সে দূরে একটি গ্রাম দেখতে পেল। অতঃপর সেখানে গেল। ঐদিন ছিল জুম‘আর দিন। সে তার ধারণা অনুযায়ী যেহেতু আল্লাহর উপরে ভরসা করে সে সফরে বের হয়েছে এবং এই ভরসায় যাতে কোনরূপ কমতি দেখা না দেয়, সেজন্য সে নিজেকে লোকচক্ষুর আড়াল করে মিম্বরের নীচে লুকিয়ে রইল। তার অন্তর একথা বলছিল, যেন কেউ না কেউ তাকে বুঝে ফেলে। কিছু পরে খতীব খুৎবা দিলেন। কিন্তু ঐ ছূফী জামা‘আতে ছালাত আদায় করল না। ইতিমধ্যে খতীব খুৎবা ও ছালাত শেষ করেছেন এবং মুছল্লী সবাই একে একে বের হ’তে শুরু করেছেন। লোকটি বুঝতে পারল যে, সম্ভবতঃ মসজিদ খালি হয়ে গেল। সত্বর দরজা সমূহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং সে একাকী মসজিদে খানাপিনা ছাড়াই পড়ে থাকবে। তখন উপায়ান্তর না দেখে বেচারা ছূফী কাশি দিতে থাকলো। যাতে লোকেরা তার উপস্থিতি টের পায়। তার কাশির আওয়ায শুনে মুছল্লীদের দৃষ্টি পড়ল। দেখা গেল যে, সে ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় হাড্ডিসার অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তারা তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেল ও খানাপিনার ব্যবস্থা করল। লোকেরা তাকে বলল, হে অমুক! তুমি কে? ছূফী বলল, أَنَا زَاهِدٌ مُتَوَكِّلٌ عَلَى اللهِ ‘আমি একজন দুনিয়াত্যাগী, আল্লাহর উপরে ভরসাকারী’। লোকেরা বলল, তুমি কিভাবে বলছ আল্লাহর উপরে ভরসাকারী? অথচ তুমি মরতে বসেছিলে? যদি তুমি আল্লাহর উপরে ভরসাকারী হ’তে, তাহ’লে কারু কাছে চাইতে না। আর তোমার উপস্থিতি জানাবার জন্য কাশতে না। এভাবেই তোমার পাপে তুমি মরে যেতে’।
এটাই হ’ল দৃষ্টান্ত, যা এইসব জাল হাদীসের পরিণাম হিসাবে পরিদৃষ্ট হয়। মোট কথা এই হাদীসের কোন ভিত্তি নেই।[3]
নয়টি প্রশ্নের উত্তর
মূল: মুহাম্মাদ নাছেরুদ্দীন আলবানী (রাহি.)
অনুবাদ: মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
মূল: মুহাম্মাদ নাছেরুদ্দীন আলবানী (রাহি.)
অনুবাদ: মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
[1]. (لا أصل له فيما أعلم) সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৫৭।
[2]. বুখারী, হা/১৪২৯; মুসলিম হা/১০৩৩; মিশকাত হা/১৮৪৩ ‘যাকাত’ অধ্যায় ৪ অনুচ্ছেদ।
[3]. প্রিয় পাঠক! বাংলাদেশে প্রচলিত তাবীযের বইগুলি দেখুন। কুরআনের আয়াত ও সূরায় ভরা মাদুলীগুলো দেখুন। তাছাড়া মকছূদোল মুমেনীন, নেয়ামুল কোরআন প্রভৃতি বইগুলি দেখুন। কুরআনকে এরা ঔষধের কিতাব বানিয়ে ছেড়েছে। যা বিক্রি করে এরা দু’পয়সা রোজগার করছে। আর ঈমান হরণ করছে দৈনিক হাযার হাযার মুসলমানের। ইহুদী-নাছারা আলেম ও দরবেশরা তাওরাত-ইনজীলের শব্দ ও অর্থ বিকৃত করে জনগণের কাছে পেশ করত এবং তার বিনিময়ে দু’পয়সা রোজগার করত (বাক্বারাহ ২/৭৯)। যা আজও তারা করে যাচ্ছে। এযুগে আমাদের অবস্থা ইহুদী-নাছারা আলেম-দরবেশদের থেকে খুব বেশী ব্যতিক্রম নয়। পার্থক্য এই যে, কুরআন ও ছহীহ হাদীস শাব্দিকভাবে অবিকৃত রয়েছে। কারণ আল্লাহ স্বয়ং এর হেফাযতের দায়িত্ব নিয়েছেন (হিজর ৯;ক্বিয়ামাহ ১৬-১৯)। -অনুবাদক।