প্রশ্নোত্তর ৮৬: ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয়সমূহ কয়টি এবং কি কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,854
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
62,886
ইসলাম বিনষ্টকারী বিষয় ১০টি, সেগুলি হচ্ছেঃ

১. আল্লাহ্‌র ইবাদতের ক্ষেত্রে অন্যকে শরীক করা। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢ ﴾ [المائ‍دة: ٧٢]

“যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শির্ক করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন। আর তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। বস্তুতঃ অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই” (মায়েদাহ ৭২)

অন্য আয়াতে এসেছে,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ﴾ [النساء: ١١٦]

“নিঃসন্দেহে আল্লাহ শির্কের গোনাহ ক্ষমা করেন না। তিনি শির্ক ব্যতীত অন্য যে কোনো গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন” (নিসা ১১৬)

শির্কের উদাহরণ হচ্ছে, মৃত ব্যক্তির নিকট প্রার্থনা করা, তার কাছে সাহায্য চাওয়া, তার জন্য নযর মানা, তার উদ্দেশ্যে কুরবানী করা ইত্যাদি।

২. যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং আল্লাহ্‌র মাঝে অসীলা গ্রহণ করতঃ তাদের সুপারিশ চায় এবং তাদের উপর ভরসা করে, সর্বসম্মতিক্রমে সে কাফের। আল্লাহ বলেন,

﴿ قُلۡ إِنَّمَآ أَدۡعُواْ رَبِّي وَلَآ أُشۡرِكُ بِهِۦٓ أَحَدٗا ٢٠ ﴾ [الجن: ٢٠]

“বলুন, আমি তো কেবল আমার পালনকর্তাকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না”। (জিন ২০)

৩. যে ব্যক্তি মুশরিকদেরকে কাফের ভাবে না বা তাদের কুফরীতে সন্দেহ পোষণ করে অথবা তাদের মতবাদকে সঠিক মনে করে, সে কাফের হয়ে যায়। কেননা কুফরীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকাও কুফরী।

৪. যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিধান ব্যতীত অন্য কারো বিধান অধিক পরিপূর্ণ অথবা তাঁর ফায়ছালা ব্যতীত অন্য কারো ফায়ছালা অধিক উত্তম, সে সর্বসম্মতিক্রমে কাফের। যেমন, আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ফায়ছালার উপর তাগূতের ফায়ছালাকে প্রাধান্য দেওয়া।

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন, তার কোনো কিছুকে যে ব্যক্তি ঘৃণা করবে, সে ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে- যদিও সে ঐ বিষয়ের উপর আমল করে। এরশাদ হচ্ছে,

﴿ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَرِهُواْ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأَحۡبَطَ أَعۡمَٰلَهُمۡ ٩ ﴾ [محمد: ٩]

“এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা অপছন্দ করেছে। অতএব, আল্লাহ তাদের আমল নষ্ট করে দিয়েছেন” (মুহাম্মাদ ৯)

৬. যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বীনের কোনো বিষয় নিয়ে অথবা আখেরাতের সুখ বা শাস্তির কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে, সে কাফের হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ﴾ [التوبة: ٦٥، ٦٦]

“আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্‌র সাথে, তাঁর আয়াতের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করতে? ওযর পেশ করো না, নিশ্চয় তোমরা ঈমান আনায়নের পর কাফের হয়ে গেছ” (তাওবাহ ৬৫-৬৬)

৭. জাদু করা। যে ব্যক্তি জাদু করবে বা এর প্রতি খুশী থাকবে, সে কাফের হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন,

﴿ وَٱتَّبَعُواْ مَا تَتۡلُواْ ٱلشَّيَٰطِينُ عَلَىٰ مُلۡكِ سُلَيۡمَٰنَۖ وَمَا كَفَرَ سُلَيۡمَٰنُ وَلَٰكِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ كَفَرُواْ يُعَلِّمُونَ ٱلنَّاسَ ٱلسِّحۡرَ﴾ [البقرة: ١٠٢]

“তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলাইমানের রাজত্বকালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলাইমান কুফরী করেন নি; বরং শয়তানরাই কুফরী করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা শিক্ষা দিত” (বাক্বারাহ ১০২)

৮. মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। এরশাদ হচ্ছে,

﴿وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ٥١ ﴾ [المائ‍دة: ٥١]

“তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না” (মায়েদাহ ৫১)

৯. যে ব্যক্তি বিশ্বাস করবে যে, কারও পক্ষে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরী‘আত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে, যেমনিভাবে খিযির আলাইহিস সালাম মূসা আলাইহিস সালাম-এর শরী‘আতের বাইরে ছিলেন, সে কাফের হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন,

﴿ وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥ ﴾ [ال عمران: ٨٥]

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” (আলে ইমরান ৮৫)

১০. আল্লাহ্‌র দ্বীনকে উপেক্ষা করে চলা, দ্বীন না শেখা এবং তদনুযায়ী আমলও না করা। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿وَمَنۡ أَظۡلَمُ مِمَّن ذُكِّرَ بِ‍َٔايَٰتِ رَبِّهِۦ ثُمَّ أَعۡرَضَ عَنۡهَآۚ إِنَّا مِنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَ مُنتَقِمُونَ ٢٢ ﴾ [السجدة: ٢٢]

“ঐ ব্যক্তির চেয়ে বড় যালেম আর কে হতে পারে, যাকে তার প্রভুর আয়াতসমূহের মাধ্যমে উপদেশ দান করা হয়, অথচ সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? নিশ্চয়ই আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব” (সাজদাহ ২২)

সূত্র: প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা। লেখক: আব্দুল আলীম ইবনে কাওসার।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top