প্রশ্নোত্তর ১০৩. কী কী কারণে গোসল ফরয হয়? – [যেসব কারণে গোসল ফরয হয়]

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,874
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
62,401
নিম্ন বর্ণিত যেকোন এক বা একাধিক কারণে গোসল ফরয হয়:
১. স্ত্রী সহবাস
পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ (খাতনার স্থান পর্যন্ত অংশ- এতটুকু পরিমাণও) যদি স্ত্রী লিঙ্গে প্রবেশ করে তবে পুরুষ-মহিলা দু’জনেরই গোসল ফরয হয়ে যাবে। এমনকি উত্তেজনা ছাড়া বা বীর্যপাত না হলেও। হাদীসে এও আছে যে, পুরুসের লিঙ্গ স্ত্রীলিঙ্গের সাথে একত্রিত হলেই গোসল ফরয হয়ে যায়। আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, “যখন কোন পুরুষ তার (স্ত্রীর) দুই পা ও দুই রানের মাঝে বসবে এবং একের লজ্জাস্থান অপরের লজ্জাস্থানের সাথে লেগে যাবে তখন (দু’জনেরই) গোসল ফরয হয়ে যাবে।” (মুসলিম: ৩৪৯)

আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, “কোন ব্যক্তি যদি তার (স্ত্রীর) দুই পা ও দুই রানের মাঝে বসে (বীর্যপাতের) চেষ্টা করে তাহলেও তার উপর গোসল ফরয হয়ে যাবে।” (বুখারী: ২৯১)

২. স্বপ্নদোষ
স্বপ্নযোগে যদি কোন নারী-পুরুষের সহবাস হয় বা এ জাতীয় ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত হয় তবে এটাকে স্বপ্নদোষ বলা হয়। জাগ্রত হওয়ার পর যদি কাপড়ে মনি দেখতে পায় অর্থাৎ কাপড় ভেজা মনে হয় তাহলে গোসল ফরয হয়ে যায়। আর মনি পাওয়া না গেলে গোসল ফরয হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে একই বিধান। কেননা তাদেরও স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে। এক আনসারী মহিলা সাহাবী এসে রাসূলুল্লাহ (স)-কে প্রশ্ন করলেন,

হে আল্লাহর রাসূল! “স্বপ্নদোষ হলে কি মেয়েদের উপরও গোসল ফরয হয়? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, যদি পানি (অর্থাৎ বীর্য) দেখতে পাওয়া যায় তাহলে গোসল ফরয হবে (অন্যথায় নয়)।” (বুখারী: ২৮২) আর যদি এমন হয় যে স্বপ্নের কথা মনে নেই, কিন্তু কাপড় ভেজা লাগছে তাহলেও গোসল ফরয হবে।

৩. মনি নির্গত হওয়া
যেকোন কারণেই হোক যদি বীর্যপাত হয় তাহলে গোসল ফরয হবে । আর তা বৈধ-অবৈধ যেকোন পন্থায়ই হোক। আর যদি কারো সাদা গাঢ় পানি বের হয়, কিন্তু উত্তেজনার সাথে নয়, আর সে সাবালেগও নয় তাহলে ধরা হবে এটি একটি রোগ। এ জন্য গোসল ফরয হবে । তখন লিঙ্গের মাথা ধৌত করে শুধু ওযু করে ফেললেই হবে।

রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, “যদি (লজ্জাস্থানের অগ্রভাগে) মযী দেখতে পাও তাহলে তোমার লিঙ্গ ধুয়ে নাও এবং সালাতের ওযূর মতো ওযু করে ফেল । আর যদি সজোরে প্রবাহিত হয়ে মনি বের হয়ে আসে তাহলে গোসল কর।” (আবু দাউদ: ২০৬)

৪. হায়েয-নিফাসের রক্ত বন্ধ হওয়া
হায়েয ও নিফাসের রক্ত একই । হায়েয হলো মেয়েদের মাসিক রক্তস্রাব, আর নিফাস হলো সন্তান প্রসবের পর প্রবাহিত রক্ত। উভয় রক্ত প্রবাহ যখন বন্ধ হবে তখনই গোসল ফরয হয়ে যায় । আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স) ফাতেমা বিনতে আবু ইবাইসকে আদেশ করেন, “হায়েয শুরু হলে সালাত ছেড়ে দাও । আর হায়েয শেষ হলে গোসল কর এবং নামায পড়তে শুরু কর।” (বুখারী: ৩২০, আধুনিক: ৩০৯, ইফা: ৩১৪)

৫. গোসল ফরয হওয়ার পঞ্চম কারণ 'মৃত্যু'
কোন মুসলমান ব্যক্তি মারা গেলে তাকে গোসল দেওয়া জীবিতদের উপর ফরয। রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, ‘তাকে বরই পাতামিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও। (বুখারী: ১২৬৬)। তবে যারা যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হয় তাদের জন্য গোসল ফরয নয়।

সূত্র: প্রশ্নোত্তরে ফিকহুল ইবাদাত লেখক: অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম
 
Similar threads Most view View more
Back
Top