হাদীছ অস্বিকারকারীদের সংশয় নিরসন - PDF

বাংলা বই হাদীছ অস্বিকারকারীদের সংশয় নিরসন - PDF ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব

Joined
Jan 12, 2023
Threads
827
Comments
1,075
Solutions
19
Reactions
11,930
হাদীছ অস্বিকারকারীদের সংশয় নিরসন - PDF - ডাউনলোড করুন হাদীছ অস্বিকারকারীদের সংশয় নিরসন বইয়ের পিডিএফ

ইসলামী শরী'আত ও জীবনব্যবস্থার বুনিয়াদী দুই উৎস হ'ল পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ, যা অহী হিসাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছে। এ দু'টি উৎসের মাধ্যমে আল্লাহ মানবজাতিকে পথপ্রদর্শন করেছেন, যা ক্বিয়ামত অবধি অব্যাহত থাকবে। এই উৎসদ্বয়ের মধ্যে প্রথম উৎস তথা পবিত্র কুরআন ইসলামী শরী'আতের সাধারণ মূলনীতিসমূহ নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা মানবজাতির জন্য চিরন্তন হেদায়াতবাণী।

আর সুন্নাহ হল কুরআনের এই মূলনীতিসমূহের ব্যাখ্যা, যা রাসূলুল্লাহ (ছা.) কর্তৃক বর্ণিত এবং তাঁর কর্ম ও স্বীকৃতি দ্বারা...

Read more about this resource...
 
বর্তমান যুগে অগণিত ফেতনার অন্যতম একটি হলো, হাদিস অস্বীকার করার ফেতনা। এই হাদিস অস্বীকারকারীর দল নিজেদের নোঙরা নখর বের করে সরাসরি রাসূল সা:-এর সত্তা এবং হাদিসে রাসূল সা:-এর ওপর কঠিনভাবে আক্রমণ শুরু করেছে। কারণ হাদিস থেকে মুসলমানদেরকে দূরে সরাতে পারলে মানুষকে ইসলাম থেকে দূরে সরানো পানির মতোই সহজ।
এই জন্য তারা ফেসবুক, ওয়েবসাইট, ইউটিউব, ওয়াজ মাহফিল, সভা, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের এ জঘন্য অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপব্যাখ্যা সংবলিত বই-পুস্তক রচনা করেও তারা মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে। মানুষকে তারা হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে সন্দিহান করে তুলছে। হাদিসের অপব্যাখ্যা করে তার মানহানি করছে। হাদিসকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে। তারা বলতে চায়, ‘কুরআন হচ্ছে একমাত্র সম্পূর্ণ, পরিপূর্ণ গাইডলাইন ও জীবনবিধান। রাসূল সা:-এর সময়েই তা নাজিল হয়েছে এবং তার সম্পূর্ণের ব্যাপারে আল্লাহ সনদ দিয়েছেন। এর বাইরে আর কোনো বিধান কুরআনের সাথে সমান্তরাল মানার বিষয়ে আল্লাহ বলেননি। কুরআনে নেই এমন কোনো বিষয়ে ১০০টি সহিহ হাদিস থাকলেও তার কোনো মূল্য নেই। কেননা তা আল্লাহর বাণী নয়।’ এই বলে তারা হাদিস বা সুন্নাহ শব্দটি শুনতে চায় না। যার কারণে এরা নিজেদেরকে নাম দিয়েছে ‘আহলে কুরআন বা কুরআনের অনুসারী।’ মূলত এরা ‘আহলে কুরআন’ নাম ব্যবহার করে রাসূল সা:-এর হাদিস বা সুন্নাহকে অস্বীকার করছে। তাই এদের পরিচয় ‘হাদিস অস্বীকারকারী’ হওয়ায় অধিক যুক্তিযুক্ত।

রাসূল সা:-এর করা ভবিষ্যদ্বাণী কতই না চমৎকারভাবে সত্য হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে আজ। তিনি বলেছেন, ‘জেনে রাখো! আমাকে কিতাব (কুরআন) এবং তার সঙ্গে অনুরূপ আরেকটি জিনিস (তা হচ্ছে হাদিস) দেয়া হয়েছে। অচিরেই দেখা যাবে! এমন একসময় আসবে যখন কোনো প্রাচুর্যবান লোক তার আসনে বসে বলবে, তোমরা শুধু এ কুরআনকেই গ্রহণ করো, এতে যা হালাল হিসেবে পাবে তা হালাল এবং যা হারাম হিসেবে পাবে তা হারাম মেনে নিবে’ (আবু দাউদ-৪৬০৪)।


আবু দাউদের এই হাদিসটি রাসূল সা:-এর নবুওয়তের সত্যতার প্রমাণ বহন করে। কারণ নবুওয়তের যুগ পার হওয়ার পরপরই শিয়া ও খারেজি সম্প্রদায়ের হাত ধরে বিভিন্ন দল তৈরি হয়। তারা হাদিসের ওপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বলে, ‘কুরআনই যথেষ্ট’ আর হাদিস ও সুন্নাহকে প্রত্যাখ্যান করো। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে নতুন করে এই ভ্রান্ত মতবাদের উৎপত্তি হয়। তার পর তা পাকিস্তানে স্থান করে নেয়। এরপর ক্রমান্বয়ে তা আরো বিভিন্ন মুসলিম দেশে সংক্রমিত হতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশেও তাদের জমজমাট কার্যক্রম রয়েছে। এ মতের অনুসারীদের কেউ কেউ ইউরোপ-আমেরিকায় বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের এই বিষাক্ত মতবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। ফেসবুকে গড়ে তুলছে বড় একটি দল।


হাদিসে রাসূল সা:, কুরআন সমর্থিত : রাসূল সা: ৪০ বছর বয়সের আগে জাতির সাধারণ মানুষদের মতোই জীবনযাপন করতেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নির্বাচিত করে পথভ্রষ্ট পুরো মানবজাতিকে সঠিক পথে আহ্বানের জন্য রাসূল হিসেবে পাঠালেন। শিক্ষা দিলেন কুরআন ও ঈমান। তার পর দায়িত্ব দিলেন সে পথে মানুষকে আহ্বানের। ইরশাদ হচ্ছে- ‘এভাবে আমি আপনার প্রতি ওহি করেছি রূহ (কুরআন) বা আমার নির্দেশে; আপনি তো জানতেন না কিতাব ও ঈমান কী? পক্ষান্তরে আমি একে করেছি আলো। যা দিয়ে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা হেদায়াত করে দিই। আর আপনি অবশ্যই সরল সঠিক পথে মানুষকে আহ্বান করতেই থাকবেন’ (সূরা শুরা, আয়াত-৫২)।

আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা:-কে আদেশ করলেন মানুষকে হেদায়াত করার। আর মানুষকে আদেশ করলেন তিনি যা বলেন, তা গ্রহণ করার। রাসূল সা: যা দিয়েছেন, তা-ই হাদিস। ইরশাদ হচ্ছে- ‘রাসূল তোমাদের যা দিয়েছেন, তা তোমরা গ্রহণ করো। আর তিনি যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাকো’ (সূরা হাশর, আয়াত-৭)।এই রাসূল আমাদেরকে যেমন কুরআন দিয়েছেন, সেই সাথে কুরআনকে কিভাবে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে, তাও আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক শিখিয়েছেন। আর বাস্তব জীবনের ওই প্রয়োগটিই হচ্ছে বিদগ্ধ বিদ্বানদের ভাষায় হাদিস। কুরআনে যা নিষেধ করা হয়েছে, তার মূলনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাসূল সা:-ও কিছু বিষয় নিষেধ করেছেন, যা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন। রাসূল সা:-এর আদেশ-নিষেধের কোনো দরকার না থাকলে আল্লাহ তায়ালা তাঁর কথা উল্লেখ করতেন না। বলতেন, ‘এই কুরআনে যা আছে, তোমরা তা মেনে নাও; যা নিষেধ করা হয়েছে, তা থেকে দূরে থাকো।’ অথচ কুরআনকে মেনে নেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বহু জায়গায় নির্দেশ দিয়েছেন। এ স্থানে বিশেষভাবে রাসূল সা:-এর প্রদান এবং নিষেধের কথা উল্লেখ করায় বোঝা যায়, তিনিও আদেশ করেন এবং নিষেধ করেন। তবে অবশ্যই তা আল্লাহর অনুমতিক্রমে হয়ে থাকে। আর তাঁর এই আদেশ-নিষেধই হচ্ছে হাদিস।

মতভেদ হলে আল্লাহর কুরআন এবং রাসূল সা:-এর হাদিস থেকে সমাধান নিতে হবে। আল কুরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহর কথা মেনে নেয়ার সাথে সাথে রাসূল সা:-এর কথাকেও মানতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো’ (সূরা ইমরান-৩১, ৩২, ১৩২; সূরা নিসা-৫৯, ৬৫; সূরা মায়িদাহ-৯২; সূরা আনফাল-১, ২০, ৪৬; সূরা নূর-৫৪, ৫৬; সূরা মুহাম্মাদ-৩৩; সূরা মুজাদালাহ-১৩; সূরা তাগাবুন-১২)।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top