বিবাহ ও দাম্পত্য স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকার হচ্ছে, স্ত্রীকে শিক্ষা দেওয়া

Habib Bin TofajjalVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
690
Comments
1,228
Solutions
17
Reactions
7,152
হে মুসলিম নারী! জেনে রাখুন, স্বামীর ওপর স্ত্রীর অন্যতম অধিকার হচ্ছে, স্ত্রী অতীব প্রয়োজনীয় যেসব বিষয় জানে না, তা তাকে জানানো এবং তাকে শিক্ষা দেওয়া।

আবূ মূসা আশআরী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
ثَلَاثَةٌ لَهُمْ أَجْرَانِ الْعَبْدُ الْمَمْلُوكُ إِذَا أَدَّى حَقَّ اللهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ وَرَجُلٌ كَانَتْ عِنْدَهُ أَمَةٌ فَأَدَّبَهَا فَأَحْسَنَ تَأْدِيبَهَا وَعَلَّمَهَا فَأَحْسَنَ تَعْلِيمَهَا ثُمَّ أَعْتَقَهَا فَتَزَوَّجَهَا فَلَهُ أَجْرَانِ وَرَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ بِنَبِيِّهِ وَآمَنَ بِمُحَمَّدٍ
তিন ব্যক্তির জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব রয়েছে। যে দাস আল্লাহ ও তার মনিবের হক সঠিকভাবে আদায় করে তার সাওয়াব দ্বিগুণ। যে লোকের একজন সুন্দরী দাসী ছিল, সে তাকে উত্তম আচরণ ও আদব কায়দা শিখিয়েছে এবং তাকে পরবর্তীতে মুক্ত করে বিয়ে করেছে, তার সাওয়াব দ্বিগুণ। আহলে কিতাবের যে-ব্যক্তি তার নবীর প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ঈমান এনেছে, তাকেও দ্বিগুণ প্রতিদান দেওয়া হবে।’[1]

ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ তার সহীহুল বুখারীতে এ ব্যাপারে একটি অধ্যায় রচনা করেছেন। তা হলো-
بَابُ تَعْلِيمِ الرَّجُلِ أَمَتَهُ وَأَهْلَهُ
অনুচ্ছেদ: ব্যক্তির নিজের দাসী ও পরিবার-পরিজনকে শিক্ষা প্রদান করা।[2]

হাফিয ইবন হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘উল্লিখিত হাদীসটি দাসী সংক্রান্ত। তবে সাদৃশ্য বিবেচনায় হাদীসটি পরিবার-পরিজনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কারণ, আল্লাহর ফরয বিধানসমূহ ও রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাতসমূহ স্বাধীন পরিবার-পরিজনকে শিক্ষা দেওয়া দাসীকে শিক্ষা দেওয়ার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’[3]

আবদুল্লাহ ইবন উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
أَلاَ كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ فَالأَمِيرُ الَّذِى عَلَى النَّاسِ رَاعٍ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِهِ وَهِىَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ وَالَعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ
জেনে রেখো, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল। তোমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। যিনিজনগণের নেতা তাকে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হবে। ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের ওপর দায়িত্বশীল। সে সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসারের দায়িত্বশীলা। তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। গোলাম তার মনিবের সম্পদের দায়িত্বশীল। তাকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হবে। অতএব, সাবধান, তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের সকলকে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।’[4]

পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে ব্যক্তির দায়িত্বপালন কেবল অন্ন, পানীয় ও বস্ত্রের যোগান দেওয়ার মাঝেই শেষ হয়ে যায় না। বরং তাদেরকে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়াদি জানানোও ব্যক্তির দায়িত্ব। কেননা দুনিয়াবি কোনো কর্ম সংশোধনের চেয়ে ধর্মীয় কর্ম সংশোধন করাই প্রাধান্যযোগ্য।

স্বামী যদি স্ত্রীকে শিক্ষাদানের যোগ্য না হয় কিংবা স্ত্রী স্বামীর কাছে ধর্মের যে বিষয় সম্পর্কে জানতে চায় সে ব্যাপারে তার জানা না থাকে, তাহলে স্বামী স্ত্রীর পক্ষ থেকে গিয়ে কোনো আলিমের কাছে জিজ্ঞেস করে নেবে। এটাই যথেষ্ট হবে। আর যদি স্বামী এমনটা না করে তাহলে জিজ্ঞেস করা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য স্ত্রীকে বহির্গমনের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত অবকাশ দেওয়া তার একান্ত কর্তব্য। স্বামীর জন্য কোনোক্রমেই উচিত হবে না ফরয জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে বহির্গমনে বাধা প্রদান করা। বাধা দিলে স্বামীর পাপ হবে। স্ত্রী যদি এমন কাউকে না পায় যে তার পক্ষ থেকে কাউকে জিজ্ঞেস করবে, তাহলে স্ত্রীর জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বহির্গমন করবে।
মুসলিম নারীর পূর্ণাঙ্গ মাসাইল
• মূল: আল্লামা মুহাদ্দিস আমর আবদুল মুনঈম সালিম
• অনুবাদ ও সম্পাদনা : উস্তায আব্দুল্লাহ মাহমুদ

[1] সহীহুল বুখারী, ৯৭; সুনানুত তিরমিযী, ১১১৬; সুনানু ইবনি মাজাহ, ১৯৫৬
[2] সহীহুল বুখারী ৯৭ নম্বর হাদীসের পূর্বে
[3] ফাতহুল বারী, ১/২২৯
[4] সহীহ মুসলিম, ১৮২৯; সুনানুত তিরমিযী, ১৭০৫; সুনানু আবী দাউদ, ২৬০০
 
Similar threads Most view View more
Back
Top