সালাফী আকিদা ও মানহাজে - Salafi Forum

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।
Joynal Bin Tofajjal

সুন্নাহতে বর্ণিত রুকিয়াহ সমূহ

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Threads
344
Comments
479
Solutions
1
Reactions
4,780
Credits
3,266
ভূমিকা

বিশুদ্ধ সুন্নাহ-তে বর্ণিত কিছু দোয়া এবং আয়াত রয়েছে। যেমন:
أَعُوذُ بِاللَّهِ السَّمِيْعِ الْعَلِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ مِنْ هَمْزِهِ وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ
উচ্চারণঃ আ‘ঊযু বিল্লা-হিস্‌ সামি‘ইল-‘আলীমি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম মিন হামঝিহি ওয়া নাফখিহি ওয়া নাফছিহ

অর্থঃ অভিশপ্ত শয়তান এবং তার কুমন্ত্রণা, ঝাড়ফুঁক ও যাদুমন্ত্র হতে আমি সর্বশ্রোতা ও সর্বময় জ্ঞানের অধিকারী আল্লাহ্‌ তা’আলার নিকটে আশ্রয় চাই। [হাদীসটি সহীহ। আবু দাউদঃ ৭৭৫, ৭৬৪; সুনান আত-তিরমিযীঃ ২৪২]

৩ বার বলবে,
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِيْ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লা-হিল লাযী লা- ইয়াদুর্‌রু মা‘আসমিহী শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা- ফিস সামা-ই, ওয়াহুআস সামীউল ‘আলীম।

অর্থঃ আল্লাহ্‌র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।” [আবূ দাউদ, ৪/৩২৩, নং ৫০৮৮; তিরমিযী, ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৮]
اَللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَأْسَ اِشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِيْ لَا شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স, আয্‌হিবিল বা-'স, ইশ্‌ফি, ওয়া আনতাশ শা-ফী, লা- শিফা- আ ইল্লা- শিফা-উকা, শিফা-আন লা- ইউগা-দিরু সাক্বমা।

অর্থঃ হে আল্লাহ, হে মানুষের প্রতিপালক, অসুবিধা দূর করুন, সুস্থতা দান করুন, আপনিই শিফা বা সুস্থতা দানকারী, আপনার শিফা (সুস্থতা প্রদান বা রোগ নিরাময়) ছাড়া আর কোনো শিফা নেই, এমনভাবে শিফা দান করুন যার পরে আর কোনো অসুস্থতা-রোগব্যাধি অবশিষ্ট থাকবে না। [বুখারীঃ ৫৭৪৩]

৭ বার বলবে,
أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ
উচ্চারণঃ আসআলুল্লা-হাল ‘আযীম, রব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম, আঁই ইয়াশফিয়াক

অর্থঃ আমি মহান আল্লাহ্‌র কাছে চাচ্ছি, যিনি মহান আরশের রব, তিনি যেন আপনাকে রোগমুক্তি প্রদান করেন। [তিরমিযী, নং ২০৮৩; আবূ দাউদ, নং ৩১০৬]

সূরা ফাতিহা, সূরা ফালাক, সূরা নাস প্রভৃতি।

হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর দোয়া-
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উচ্চারণঃ আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁ ওয়া হা-ম্মাহ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লা-ম্মাহ।

অর্থঃ আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যসমূহের, সকল শয়তান থেকে, সকল ক্ষতিকারক পোকামাকড় ও প্রাণী থেকে এবং সকল ক্ষতিকারক দৃষ্টি থেকে। [বুখারীঃ ৩৩৭১]

রোগীর আক্রান্ত অঙ্গে হাত রেখে রুকিয়াহ করা

“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমার শরীরের যে জায়গায় ব্যথা হয়, তার ওপর তোমার হাত রেখে

৩ বার বলবে,
بِسْمِ اللّٰهِ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লা-হ

অর্থঃ আল্লাহর নামে

তারপর ৭ বার বলবে,
أَعُوْذُ بِاللّٰهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
উচ্চারণঃ আ’ঊযু বিল্লা-হি ওয়া ক্বুদরাতিহী মিন শার্‌রি মা- আজিদু ওয়া উ’হা-যির

অর্থঃ আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর ও তার ক্ষমতার, যা আমি অনুভব করছি এবং ভয় পাচ্ছি তা থেকে। [মুসলিমঃ ২২২, তিরমিযীঃ ৩৫৮৮]

তিলাওয়াত করার পর ফুঁঁ দেওয়া

ইয়াযীদ ইবনু আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি সালামাহ (রাঃ) এর পায়ের গোছায় একটি ক্ষতচিহ্ন দেখে বললাম, এটা কি? তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধে এখানে আঘাত পেয়েছিলাম। লোকেরা বলতে লাগলো যে, সালামাহ আহত হয়েছেন। অতঃপর নবী (ﷺ)-কে আমার নিকট আনা হলে তিনি আমার ক্ষতস্থানে তিনবার ফুঁ দিলেন। ফলে আজ পর্যন্ত আমি তাতে কোন ব্যথা অনুভব করি না। [সুনানে আবি দাউদ (সহিহ): ৩৮৯৪]

সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করে ফুঁ দেয়া

“রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-এর একদল সাহাবী একবার এক সফরে গমন করেন। অবশেষে তারা আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে এক গোত্রের নিকট এসে গোত্রের কাছে মেহমান হতে চান। কিন্তু সে গোত্র তাঁদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করে। ঘটনাক্রমে সে গোত্রের সর্দারকে সাপে দংশন করে। তারা তাকে সুস্থ করার জন্য সবরকম চেষ্টা করে, কিন্তু কোন ফল হয় না। তখন তাদের কেউ বললোঃ তোমরা যদি ঐ দলের কাছে যেতে যারা তোমাদের মাঝে এসেছিল। হয়তো তাদের কারও কাছে কোন তদবীর থাকতে পারে।

তখন তারা সে দলের কাছে এসে বলল হে দলের লোকেরা! আমাদের সর্দারকে সাপে দংশন করেছে। আমরা তার জন্য সবরকমের চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন ফল হয়নি। তোমাদের কারও নিকট কি কোন তদবীর আছে? একজন বললেন হ্যাঁ। আল্লাহর কসম আমি ঝাড়ফুঁক জানি। তবে আল্লাহর কসম! আমরা তোমাদের নিকট মেহমান হতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমরা আমাদের মেহমানদারী করনি। তাই আমি ততক্ষন পর্যন্ত ঝাড়-ফুঁক করবো না যতক্ষন না তোমরা আমাদের জন্য মজুরী নির্ধারণ করবে।

তখন তারা তাদের একপাল বকরী দিতে সম্মত হল। তারপর সে সাহাবী সেখানে গেলেন এবং আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে ফুঁক দিতে থাকলেন। অবশেষে সে ব্যাক্তি এমন সুস্থ হল যেন বন্ধন থেকে মুক্তি পেল। সে চলাফেরা করতে লাগলো, যেন তার কোন রোগই নেই। রাবী বলেনঃ তখন তারা যে মজুরী ঠিক করেছিল, তা পরিশোধ করলাম। এরপর সাহাবীদের মধ্যে একজন বললেনঃ এগুলো বন্টন করে দাও। এতে যিনি ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তিনি বললেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট যেয়ে যতক্ষন না এসব ঘটনা ব্যক্ত করবো এবং তিনি আমাদের কি নির্দেশ দেন তা প্রত্যক্ষ করব, ততক্ষন তোমরা তা বণ্টন করো না।

তারপর তাঁরা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট এসে ঘটনা ব্যক্ত করলেন। তিনি বললেন তুমি কি করে জানলে যে এর দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা যায়? তোমরা সঠিকই করেছ। তোমরা এগুলো বণ্টন করে নাও এবং সে সঙ্গে আমার জন্য এক ভাগ নির্ধারণ কর।” [সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন): ৫৩৩৮]

মাটিতে আঙ্গুল লাগিয়ে দোয়া পড়া, এরপর সেটা আক্রান্ত জায়গায় লাগানো

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কোন মানুষ তার দেহের কোন অংশে ব্যথা পেলে অথবা কোথাও ফোড়া কিংবা বাঘী উঠলে বা আহত হলে আল্লাহর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ স্থানে তাঁর আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে বলতেন,
بِاسْمِ اللَّهِ تُرْبَةُ أَرْضِنَا بِرِيقَةِ بَعْضِنَا لِيُشْفَىِ سَقِيمُنَا بِإِذْنِ رَبِّنَا
উচ্চারণঃ বিসমিল্লা-হ। তুরবাতু আরদ্বিনা, বিরীক্বতি বা’অদ্বিনা, লি- ইউশফা সাক্বীমুনা, বিইযনি রাব্বিনা-

অর্থঃ আল্লাহর নামে, আমাদের জমিনের মাটি আমাদের কারও লালার সাথে (মিলিয়ে) আমাদের প্রতিপালকের হুকুমে তা দিয়ে আমাদের রোগীর আরোগ্য প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে (মালিশ করছি)” [মিশকাতুল মাসাবীহ (সহীহ): ১৫৩১]

সোর্সঃ দুআরুকইয়াহ.কম
 
Top