মানহাজ সালাফগণ যে কারণে তাকফীর থেকে দূরে থাকতেন

Joynal Bin Tofajjal

Student Of Knowledge

Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
343
Comments
474
Reactions
5,701
যেসব কারণে সালাফগণ তাকফীর থেকে দূরে থাকতেন:


সালাফগণ সকল গুনাহকেই কাফির হওয়ার কারণ মনে করতেন না। এ ব্যাপারে যারা সালাফদের বিরোধিতা করে তারা হচ্ছে খারিজি, রাফিজি ও মুতাযিলা সম্প্রদায়। কারণ তাদের নিকট কবীরা গুনাহকারী কাফির হয়ে যায়।

পক্ষান্তরে সালাফগণ সকল কবীরা গুনাহ দ্বারা কাউকে কাফির বলেন না। তাদের কাছে এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের গুনাহ শির্ক, কুফর ও নিফাকে কেউ পতিত হলেই তাকে কাফির বলা যাবে।

২- সালাফগণ নির্দিষ্ট তাকফীর এবং অনির্দিষ্ট তাকফীরের মধ্যে পার্থক্য করেন।

৩- নির্দিষ্ট তাকফীরের ক্ষেত্রে শর্ত পূরণ ও বাঁধা দূরীকরণ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কাফির বলেন না।

৪- সালাফগণ নির্দিষ্ট কাউকে তাকফীর করলেও সেখানে তার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য কাজের মধ্যে পার্থক্য করেন। অপ্রকাশ্য কাজ দিয়ে কাউকে তাকফীর করেন না।

অনির্দিষ্টভাবে তাকফীর:

সালাফগণ অনির্দিষ্টভাবে কোন কোন আকীদাহ, আমল বা কথার মাধ্যমে কাফির হয় তা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যেমন,

১- অন্তর থেকে আসা যেসব কথা কাফির বানিয়ে দেয়:

মুখে ঈমান আনতে অস্বীকার করা।​
দীনের মধ্যে যা হারাম তা হালাল বলা বা যা হালাল তা হারাম বলা।​
আল্লাহর কোনো বিধানে কিংবা কোনো সংবাদে সন্দেহ প্রকাশ করা।​
নবি (ﷺ)-এর অনুসরণ করা লাগবে না বলা।​

তাওহীদ বিষয়ে মুখের যেসব কথায় কাফির হয়ে যায়:

১-
তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ অস্বীকার করলে।
২- তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত অস্বীকার করলে।
৩- তাওহীদুল ইবাদাত অস্বীকার করলে।


নবুওয়াত বিষয়ে যা মুখে অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যায়:

১-
নবিদের মানতে অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে।
২- আমাদের নবিকে মানতে অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে।
৩- নবুওয়াতের দাবি করলে কাফির হয়ে যাবে।


অন্যান্য গায়িবি বিষয়ে যা মুখে অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যায়:

১-
আল্লাহর কিতাবসমূহ ও তাঁর বাণী অস্বীকার করা।
২- ফিরিশতাদের অস্বীকার করা।
৩- জিনদের অস্বীকার করা।
৪- আখিরাতের সাব্যস্ত কোনো বিষয় অস্বীকার করা।


মুখে তাকদীর অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে।

অন্তর থেকে হওয়া কাজসমূহ যা কাউকে কাফির বানিয়ে দেয়:

আল্লাহর দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা, তা না শিক্ষা দেওয়া আর না তা শিক্ষা নেওয়া।

আকীদাগত মুনাফিকি। আর তার অধিকাংশই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। [ইবন তাইমিয়্যাহ, আল-ঈমানুল আওসাত, পৃ. ১৮১, আল-ঈমান ২৮৫] আর সেটা বিভিন্নভাবে হতে পারে:

১- রাসূলের ওপর মিথ্যারোপ।

২- রাসূল যা নিয়ে এসেছেন তার কিছুর ওপর মিথ্যারোপ।

৩- রাসূলের সঙ্গে শত্রুতা করা।

৪- রাসূল যা নিয়ে এসেছেন তার সঙ্গে শত্রুতা করা।

৫- রাসূলের দীনের পতনে খুশি হওয়া ও রাসূলের দীনের উন্নতি অপছন্দ হওয়া।

৬- রাসূল যা কিছুর সংবাদ দিয়েছেন সেটার সত্যায়ন করতে হবে বলে বিশ্বাস না করা।

৭- রাসূল যা নির্দেশ দিয়েছেন তা পালন করতে হবে বলে বিশ্বাস না করা।

৮- রাসূল যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত হওয়া লাগবে না বলে বিশ্বাস করা।

৯- রাসূলের আনীত শরীআত মানতে বাধ্য নয় বলে বিশ্বাস করা বা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা।

১০- রাসূলকে কষ্ট দেওয়া ও দোষত্রুটি বের করা, অপমান করা।

১১- রাসূলের দীনের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে সাহায্য করা।

১২- রাসূলের অনুসারীদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা। [দেখুন, ইবন তাইমিয়্যাহ, মাজমূ ফাতাওয়া (২৮/৪৩৪); মুহাম্মাদ ইবন আবদুল ওয়াহহাব, মাজমুআতুত তাওহীদ, পৃ. ৭]

অন্তর থেকে অস্বীকার, অহংকার ও অমান্য করা।

অন্তরের আমলের বড়ো শির্কসমূহ। যেমন,

১- আল্লাহর ভালোবাসায় শির্ক।
২- নিয়্যত, ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যে শির্ক।
৩- ভয়, আশা, তাওয়াক্কুল ইত্যাদিতে শির্ক।

৪- কর্মের মাধ্যমে কাফির হওয়া। এর বহু সুরত রয়েছে। যেমন,
  • ইবাদাতে শির্ক করা।
  • আল্লাহর বিধান ব্যতীত ফয়সালা করা ও ফয়সালা গ্রহণ করা।
  • আল্লাহর দীন থেকে কার্যত মুখ ফিরিয়ে থাকা।
  • কাফিরদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সাহায্য করা।



এটা সালাফগণের মানহাজ নয়!
অনুবাদ: হাবিব বিন তোফাজ্জল
সম্পাদনা: শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া​
 
Back
Top