ফাযায়েলে আমল লাইলাতুল কদরের বিস্ময়কর ফজিলত ও ৫ টি আমল যার মাধ্যমে সারারাত সালাত আদায়ের সওয়াব হয়।

Joined
Mar 15, 2025
Threads
15
Comments
16
Reactions
157
নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল ক্বাদরে। তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী? ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত। ∞ সূরা আল ক্বাদর (১-৫)

আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রমজান মাস শুরু হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের নিকট এ মাস সমুপস্থিত। এতে রয়েছে এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো সে সমস্ত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। কেবল বঞ্চিত ব্যক্তিরাই তা থেকে বঞ্চিত হয়। - সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৪৪, হাদিসের মান: হাসান সহিহ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল ক্বদ্‌রের অনুসন্ধান কর। - সহিহ বুখারী-২০১৭, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেনঃ তোমরা রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। - সহিহ বুখারী-২০২০, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।
  • ২১ তম রাত কদরের রাত পাওয়ার দলীল। (বুখারী হা: ২০১৮)
  • ২৩ তম রাত কদরের রাত পাওয়ার দলীল। (মুসলিম হা: ২৬৬৫)
  • ইবনু ‘আব্বাস (রা.) বলেন: ২৪ তম রাতে তালাশ কর। (বুখারী হা: ২০২২)
  • ২৭ তম রাতে কদরের রাত পাওয়ার দলীল (মুসলিম হা: ২৬৬৭)

লাইলাতুল কদরের রাতে করণীয় আমলসমূহ:​

রাতে দীর্ঘ সময় সালাত আদায় করা : আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় সাওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদ্‌রে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। - সহিহ বুখারী-২০১৪, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।

সালাতে ১০০০ আয়াত তিলাওয়াত করা: আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতের সলাতে দশটি আয়াত তিলাওয়াত করবে, তার নাম গাফিলদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হবে না। আর যে ব্যক্তি (রাতের) সলাতে এক শত আয়াত পাঠ করবে, তার নাম অনুগত বান্দাদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হবে। যে ব্যক্তি সলাতে দাঁড়িয়ে এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করবে, তাকে অফুরন্ত পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হবে। - মুস্তাদারাক হাকিম-২০৪১ ও ২০৪২, ইবনু খুযাইমাহ -১১৪৪, সুনানে আবু দাউদ-১৩৯৮, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।

এমন ৫টি আমল যা করলে সারারাত সালাত আদায়ের সওয়াব হয়।

এশা ও ফজরের সালাত জামাআতে আদায় করা।
উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি জামাআতের সাথে এশার নামায আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত কিয়াম (ইবাদত) করল । আর যে ফজরের নামায জামাতসহ আদায় করল, সে যেন সারা রাত নামায পড়ল ।” - মুসলিম ৬৫৬, তিরমিযী ২২১, আবূ দাঊদ ৫৫৫, আহমাদ ৪১০, ৪৯৩, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৭,রিয়াদুস সলেহিন-১০৭৮, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।

সম্পূর্ণ তারাবি ইমামের সাথে আদায় করা।
আবু যর গিফারি ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে রমযানে সিয়াম রাখলাম, সাত দিন বাকি থাকার আগে মাসের কোথাও তিনি আমাদের নিয়ে কিয়াম করেননি। তিনি আমাদের নিয়ে কিয়াম করলেন যে, রাতের এক তৃতীয়াংশ সমাপ্ত হল। ষষ্ঠ রাতে আমাদের নিয়ে কিয়াম করেননি, যখন পঞ্চম রাত বাকি তিনি আমাদের নিয়ে কিয়াম করলেন যে, রাতের অর্ধেক শেষ হল। আমি বললাম: হে আল্লাহর রাসূল যদি অবশিষ্ট রাতও আমাদের নিয়ে কিয়াম করতেন! আবু যর বলেন: অতঃপর তিনি বললেন: “নিশ্চয় ব্যক্তি যখন ইমামের সাথে সালাত আদায় করে তার চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত, তার জন্য পূর্ণ রাত কিয়াম করা গণ্য করা হয়”। - আহমদ ফি ‘ফাতহুর রাব্বানি’: (৫/১১), আবু দাউদ: (১৩৭৫), তিরমিযি: (৮০৬), নাসায়ি: (১৩৬৪), ইব্‌ন মাজাহ: (১৩২৭), আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন। দেখুন: সহিহ আল-জামে: (১৬১৫)

রাতে সূরা বাকারার শেষ দু’আয়াত তিলাওয়াত করা।

আবু মাসউদ ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম‎ বলেছেন:

(مَنْ قَرَأَ بِالآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ).​

“যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দু’আয়াত তিলাওয়াত করল, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে”। - আহমদ ফি ‘ফাতহুর রাব্বানি’: (১৮/৯৯), বুখারি: (৫০১০), মুসলিম: (৮০৭), তিরমিযি: (২৮৮১), আবু দাউদ: (১৩৯৭), ইব্‌ন মাজাহ: (১৩৬৯), দারামি: (১৪৮৭)

রাতে এক শো আয়াত পাঠ করা।

তামিমে দারি ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম‎ বলেছেন:

(مَنْ قَرَأَ بِمِئَةِ آيَةٍ فِي لَيْلَةٍ كُتِبَ لَهُ قُنُوتُ لَيْلَةٍ) .​

“যে ব্যক্তি রাতে এক শো আয়াত পাঠ করল, তার জন্য পূর্ণ রাতের কিয়াম লিখা হবে”। - আহমদ ফি ‘ফাতহুর রাব্বানি’: (১৮/১১), দারামি: (৩৪৫০), আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন, দেখুন: সহিহ আল-জামে: (৬৪৬৮)

ঘুমের পূর্বে কিয়ামুল লাইলের নিয়ত করা।

আবু দারদা ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি ‘মরফূ’ হাদিস বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম‎ বলেছেন:

(مَنْ أَتَى فِرَاشَهُ وَهُوَ يَنْوِي أَنْ يَقُومَ يُصَلِّي مِنْ اللَّيْلِ ، فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ حَتَّى أَصْبَحَ ، كُتِبَ لَهُ مَا نَوَى ، وَكَانَ نَوْمُهُ صَدَقَةً عَلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ).​

“যে ব্যক্তি তার বিছানায় আগমন করল এ নিয়তে যে রাতে উঠে সালাত আদায় করবে, কিন্তু তার চোখে ঘুম চেপে থাকল ভোর পর্যন্ত, তার নিয়ত অনুসারে তার জন্য লিখা হবে, আর তার ঘুম হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য সদকা”। - নাসায়ি: (১৭৮৭), ইব্‌ন মাজাহ: (১৩৪৪), আল-বানি হাদিসটি হাসান বলেছেন, দেখুন: সহিহ আল-জামে: (৫৮৪১)

কদরের রাতের দোয়া:

আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! যদি আমি “লাইলাতুল কদর’’ জানতে পারি তাহলে সে রাতে কি বলব? তিনি বললেনঃ তুমি বল

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي​

আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়ুন কারিমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'আফু আন্নি।

হে আল্লাহ! তুমি সম্মানিত ক্ষমাকারী, তুমি মাফ করতেই পছন্দ কর, অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও”। - সহীহ : ইবনু মাজাহ (হা : ৩৮৫০)। জামে' আত-তিরমিজি-৩৫১৩, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।



কপি ও শেয়ার করুন:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ভাল কাজের পথ দেখাবে, সে তার প্রতি আমলকারীর সমান নেকী পাবে।’’ ( সহীহ মুসলিম ৪৭৯৩, তিরমিযী ২৬৭১, আবূ দাউদ ৫১২৯ মান: সহীহ)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। (সহীহ মুসলিম-৬৬৯৭,তিরমিযী ২৬৭৪, আবূ দাঊদ ৪৬০৯, দারিমী ৫১৩। ইবনে মাজাহ-২০৬ মান: সহীহ)
 

Attachments

  • AddText_03-19-05.41.11.jpg
    AddText_03-19-05.41.11.jpg
    379.3 KB · Views: 88
Last edited by a moderator:
@Rajib Reza জাযাকাল্লাহু খাইরান।
ভাইয়া পোস্টে সকল ধরণের সিম্বল ⛔ 🔹 ▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬ ◐◯◑ 🛑 💠 ❂ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।
@Rajib Reza
 
Similar threads Most view View more
Back
Top