রুকাইয়া বিনতে মুহাম্মদ (রাঃ) ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কন্যা এবং ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান ইবন আফফান (রাঃ)-এর স্ত্রী। তাঁর জীবন ছিল ত্যাগ, ধৈর্য ও ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
যুদ্ধের সময়ই রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তেকাল করেন। যখন বদর যুদ্ধের বিজয়ের সংবাদ মদিনায় পৌঁছায়, তখনই নবী (সাঃ) তাঁর কন্যার মৃত্যু সংবাদও পান। এতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন।
সুতরাং, রুকাইয়া বিনতে মুহাম্মদ (রাঃ)-এর জীবন ইসলামের জন্য ত্যাগ ও ধৈর্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি শুধু নবী (সাঃ)-এর কন্যা ছিলেন না, বরং এক আদর্শ মুসলিম নারীও ছিলেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়, ঈমানের জন্য ত্যাগ স্বীকার করাই প্রকৃত সফলতা।
বিয়ে ও ইসলামের জন্য ত্যাগ
প্রথমে রুকাইয়া (রাঃ)-এর বিয়ে কুরাইশ নেতা আবু লাহাবের পুত্র উতবা-এর সঙ্গে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু ইসলাম প্রচার শুরু হলে, আবু লাহাব ও তার স্ত্রী উম্মে জামীল নবী (সাঃ)-এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে এবং তাদের পুত্রকে রুকাইয়া (রাঃ)-কে তালাক দিতে বাধ্য করে। এরপর নবী (সাঃ) তাঁর কন্যাকে উসমান ইবন আফফান (রাঃ)-এর সঙ্গে বিয়ে দেন। উসমান (রাঃ) ছিলেন সৌন্দর্য, উত্তম চরিত্র ও ঈমানের জন্য প্রসিদ্ধ। এই দম্পতি একসঙ্গে ইসলামের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।প্রথম হিজরত ও কষ্টকর দিনগুলি
মক্কায় মুসলমানদের ওপর যখন অত্যাচার চরমে পৌঁছায়, তখন রুকাইয়া (রাঃ) ও উসমান (রাঃ) ইসলামের প্রথম হিজরতে আবিসিনিয়ায় (বর্তমান ইথিওপিয়া) চলে যান। নবী (সাঃ) তাঁদের এ হিজরতের প্রশংসা করে বলেছিলেন, "উসমান আমার উম্মতের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি, যিনি আল্লাহর পথে হিজরত করেছেন লুত (আঃ)-এর পরে।" কিন্তু কিছুদিন পর ভুল তথ্য পেয়ে তাঁরা মক্কায় ফিরে আসেন এবং আবারও কষ্টের মুখোমুখি হন। পরে দ্বিতীয় হিজরতে তাঁরা মদিনায় চলে যান।বদর যুদ্ধ ও রুকাইয়া (রাঃ)-এর ইন্তেকাল
হিজরতের পর রুকাইয়া (রাঃ) কঠিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঠিক তখনই বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। নবী (সাঃ) উসমান (রাঃ)-কে তাঁর অসুস্থ স্ত্রীর সেবায় নিয়োজিত থাকার নির্দেশ দেন।যুদ্ধের সময়ই রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তেকাল করেন। যখন বদর যুদ্ধের বিজয়ের সংবাদ মদিনায় পৌঁছায়, তখনই নবী (সাঃ) তাঁর কন্যার মৃত্যু সংবাদও পান। এতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন।
উসমান (রাঃ)-এর জন্য বিশেষ উপাধি
রুকাইয়া (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর নবী (সাঃ) তাঁর আরেক কন্যা উম্মে কুলসুম (রাঃ)-কে উসমান (রাঃ)-এর সাথে বিবাহ দেন। এজন্য উসমান (রাঃ) পেয়েছিলেন "যুন নূরাইন" (দুই নূরের অধিকারী) উপাধি।সুতরাং, রুকাইয়া বিনতে মুহাম্মদ (রাঃ)-এর জীবন ইসলামের জন্য ত্যাগ ও ধৈর্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি শুধু নবী (সাঃ)-এর কন্যা ছিলেন না, বরং এক আদর্শ মুসলিম নারীও ছিলেন। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়, ঈমানের জন্য ত্যাগ স্বীকার করাই প্রকৃত সফলতা।