রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের ৩৯ টি উপকারিতাঃ
ইমাম ইবনুল কয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেছেনঃ
১) আল্লাহর নির্দেশ পালন।
২) রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর দরূদের সাথে মিল রাখা। যদিও দূটোর মাঝে বিস্তর ফারাক। কেননা, আমাদের দরূদ মানে: দোয়া ও (তাঁর মর্যাদা) চাওয়া; আর আল্লাহর দরূদ মানে: প্রশংসা ও মর্যাদা বর্ণনা।
৩) দরূদ পাঠের মাধ্যমে ফেরেশতাদের সাথে মিল রাখা।
৪) একবার দরূদ পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে দশ বার রহমত লাভ।
৫) এর মাধ্যমে দশটি মর্যাদা উন্নীত হয়।
৬) দশটি সওয়াব লাভ হয়।
৭) দশটি গুনাহ মাফ হয়।
৮) দোয়ার পূর্বে পড়লে সেই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কেননা, এই দরূদই দোয়াকে আল্লাহ বরাবর উঠিয়ে নিয়ে যায়।
৯) রাসূলের সুপারিশ লাভের মাধ্যম। এটার সাথে ওয়াসীলাহ (রাসূলের জন্য নির্ধারিত স্হান/মর্যাদা) চাইলেও (তো ভালোই) হলো, না হলে শুধু দরূদ পড়লেও হবে।
১০) গুনাহ মাফের মাধ্যম।
১১) দরূদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার চিন্তার ভার নিয়ে নেন।
১২) কিয়ামতের দিন রাসূলের কাছে থাকার অন্যতম কারণ এই দরূদ পাঠ।
১৩) অস্বচ্ছলদের জন্য সাদাকার সওয়াবও হবে।
১৪) বান্দার অভাব/চাহিদা পূরণের মাধ্যম।
১৫) এর মাধ্যমে দরূদ পাঠকারীর উপর আল্লাহ পক্ষ থেকে রহমত ও ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে রহমতের দোয়া লাভ হয়।
১৬) দরূদ পাঠকারীর জন্য যাকাত ও পবিত্রতা স্বরূপ।
১৭) মৃত্যুর পূর্বেই জান্নাতের সুসংবাদ লাভের মাধ্যম।
১৮) কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির উপায়।
১৯) যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর দরূদ ও শান্তি পাঠায়, তাদের উত্তর দেন স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২০) বান্দার ভুলে যাওয়া বিষয় স্মরনে আসে এই দরূদ পাঠ করলে।
২১) কোনো মজলিস বা বৈঠককে সৌন্দর্য মন্ডিত এবং বৈঠককারীদের আফসোসের কারণ না হওয়ার মাধ্যম।
২২) দারিদ্রতা দূরীকরণের মাধ্যম।
২৩) রাসূলের নামোল্লেখের সময় দরূদ পাঠকারীদেরকে কৃপণতা থেকে মুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
২৪) দরূদ পাঠকারীদেরকে জান্নাতের পথে চালিত করে, আর যারা পাঠ করে না- তাদেরকে এই পথ থেকে বিচ্যুতি ঘটায়।
২৫) যে মজলিসে আল্লাহ ও রাসূলের স্মরণ ও প্রশংসা জ্ঞাপন হয় না, যেখানে রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ হয় না; সেই বৈঠকের পঙ্কিলতা (ও বোঝা) থেকে মুক্তি দান করে।
২৬) যে-ই বক্তব্য ও কথা আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়, সেটাকে সুন্দর সমাপ্তি ঘটায়।
২৭) পুলসিরাত পার হওয়ার সময় বান্দার আলোর ব্যবস্থা করবে এই দরূদ।
২৮) মানুষের কঠোর স্বভাবকে দূর করে দেয়।
২৯) এর মাধ্যমেই আসমান যমিনের মাঝে দরূদ পাঠকারীর প্রশংসা ধ্বনিত হয়।
৩০) দরূদ পাঠকারীর স্বত্ত্বা, কাজকর্ম, বয়স, জীবনের চাহিদা ইত্যাদিতে বরকত লাভের এক মহা মাধ্যম এটি। কেননা, দরূদ পাঠকারী মূলত এর মাধ্যমে রাসূলে ও তাঁর পরিবারের প্রতি বরকত নাযিলের দোয়া করে। আর এই দোয়া তো নিশ্চিত কবুল হয়। সুতরাং, ফলাফলটাও অনুরূপ পেয়ে যায়।
৩১) আল্লাহর রহমত লাভের মাধ্যম।
৩২) রাসূলের মহব্বত বৃদ্ধি, স্হায়ীত্ব ও ক্রমান্বয়ে উন্নতির মাধ্যম।
৩৩) দরূদ পাঠের মাধ্যমে রাসূলের ভালোবাসা অর্জন।
৩৪) মানুষের হিদায়াত লাভ ও অন্তর সঞ্জীবিত হওয়ার মাধ্যম।
৩৫) এর মাধ্যমে বান্দার নামোল্লেখ করা হয় রাসূলের কাছে। যেমনটি তিনি বলেছেন: "তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।"
৩৬) পুলসিরাতে পায়ে অবিচলতা ও পার হতে সহায়ক হবে এই দরূদ।
৩৭) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা রাসূলের মাধ্যমে আমাদের প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছেন, সেই নিয়ামতের সামান্যতম শুকরিয়া আদায় করা হয় এই দরূদ পাঠের মাধ্যমে। পাশাপাশি, রাসূলেরও সামান্যতম হক আদায় করতে পারি এর মাধ্যমে।
৩৮) দরূদ পাঠের মাঝে একাধারে আল্লাহর যিকর, তাঁর শুকরিয়া ও রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে আমাদের প্রতি নিয়ামতের স্বীকৃতি দিয়ে থাকি।
৩৯) রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ মানেই (বান্দার নিজের জন্যও) দোয়া করা। এই দোয়া দুইভাবে হয়ঃ
ক) বান্দার নিজের প্রয়োজন, চাহিদা ইত্যাদি সরাসরি চাওয়া। অর্থাৎ, নিজের চাওয়াকেই প্রাধান্য দেয়া। সুতরাং, এটা দোয়া এবং চাওয়া।
খ) আল্লাহর কাছে তাঁর প্রিয় নবীর প্রশংসা করা এবং রাসূলের মর্যাদা ও সম্মান বুলন্দ করার জন্য দোয়া করা। অর্থাৎ, রাসূলের হককেই প্রাধান্য দেয়া। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তদ্বীয় রাসূল এটাই ভালোবাসেন।
--(জালাউল আফহাম, ৪৪৫-৪৫৪ পৃষ্ঠা; ঈষৎ পরিমার্জিত)