প্রশ্নোত্তর যে ব্যক্তির কিডনি বিকল হয়ে গেছে সে কিভাবে রোযা রাখবে

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,860
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
66,726
প্রশ্ন: যে ব্যক্তির কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে এবং প্রতিদিন তার ডায়ালেসিস করতে হয় সে কিভাবে রোযা রাখবে?


উত্তরঃ আলহামদুলিল্লাহ।


ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল (১০/১৯০): কোন ব্যক্তি রোযা-রাখা অবস্থায় তার ডায়ালাইসিস করা হলে রোযার কি কোন ক্ষতি হবে?


জবাবে তাঁরা বলেন: ডায়ালাইসিস কিভাবে করা হয়, ডায়ালাইসিস এর সাথে অন্য কোন ধরণের ক্যামিকেল মেশানো হয় এবং এ ডায়ালাইসিস এর মধ্যে কি কোন খাদ্যদ্রব্য আছে, এ বিষয়গুলো জানানোর জন্য রিয়াদস্থ কিং ফয়সাল স্পেশাল হাসপাতাল ও সামরিক হাসপাতালে পত্র দেয়া হয়েছে,? উত্তরে তারা জানান যে, ডায়ালাইসিস বলতে বুঝায় রোগীর শরীরের সব রক্ত বের করে একটি যন্ত্রে (কৃত্রিম কিডনী) প্রবেশ করানো এবং রক্তকে শোধন করা এরপর পুনরায় দেহে প্রবেশ করানো। কিছু কিছু ক্যামিকেল ও খাদ্য উপাদান রক্তে ঢুকানো হয়; যেমন সূগার ও লবণ জাতীয় দ্রব্য।


ফতোয়া কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে ডায়ালেসিস এর করার পদ্ধতি অবগত হওয়ার পর ফতোয়া দিয়েছেন যে, উল্লেখিত ডায়ালেসিস এর মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ হবে।


আল্লাহই উত্তম তাওফিকদাতা।[সমাপ্ত]


শাইখ উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:


যে ব্যক্তির কিডনি ডায়ালেসিস করা হচ্ছে রক্ত বের হওয়ার কারণে তার ওজু কি ভঙ্গ হবে? ডায়ালেসিসকালে সে কিভাবে রোযা রাখবে, কিংবা নামাযের সময় হলে নামায পড়বে?


উত্তরে তিনি বলেন:


ওজু ভঙ্গ হবে না। আলেমদের মতামতগুলোর মধ্যে অগ্রগণ্য হচ্ছে- শুধু দুইটি পথ ব্যতিরেকে মানুষের দেহের অন্য কোন স্থান থেকে কিছু বের হলে ওজু ভাঙ্গে না। পায়ুপথ ও মুত্রপথ দিয়ে কিছু বের হলেই ওজু নষ্ট হবে। সেটা পেশাব হোক কিংবা মল হোক কিংবা বায়ু হোক। এ দুই পথ দিয়ে যেটাই বের হোক না কেন ওজু ভেঙ্গে যাবে।


এ দুই পথ ছাড়া অন্য কোন স্থান থেকে কোন কিছু বের হলে সেটা কম হোক কিংবা বেশি হোক যেমন- নাক দিয়ে রক্ত পড়া, ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরা, এতে ওজু ভাঙ্গবে না। এর ভিত্তিতে বলা যায় কিডনি ডায়ালেসিস এর কারণে ওজু ভাঙ্গবে না।


নামায আদায়ের ক্ষেত্রে অসুস্থ ব্যক্তি দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করতে পারেন; জোহর ও আছর একত্রে এবং মাগরিব ও এশা একত্রে। ডাক্তারের সাথে এভাবে সমন্বয় করে নিবেন যাতে করে, ডায়ালেসিস করতে অর্ধদিনের বেশি সময় না লাগে এবং ডায়ালেসিস এর কারণে ওয়াক্তমত জোহর ও আসরের নামায পড়া না যায়। যেমন তিনি ডাক্তারকে বলতে পারেন, মধ্যদুপুরের এতটুকু সময় পরে ডায়ালেসিস শুরু করবেন, যতটুকু সময়ের মধ্যে আমি যোহর ও আসরের নামাযদ্বয় পড়ে নিতে পারি। কিংবা বলবেন: আগেভাগেই ডায়ালেসিস শুরু করুন; যাতে করে আসরের ওয়াক্ত পার হয়ে যাওয়ার আগে আমি যোহর ও আসর নামায পড়ে নিতে পারি। অর্থাৎ তার জন্য দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়া জায়েয; তবে যথাসময়ে নামায আদায় করতে হবে। তাই, তাকে সরাসরি ডাক্তারের সাথে সমন্বয় করে নিতে হবে।


আর রোযা রাখার হুকুমেরর ব্যাপারে আমি দ্বিধাদ্বন্দে আছি। কখনো কখনো বলি: ডায়ালেসিস শিংগা লাগানোর মত নয়। শিংগার ক্ষেত্রে তো শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়, শরীরে কোন রক্ত প্রবেশ করানো হয় না; হাদিস অনুযায়ী যা রোযা ভঙ্গকারী। পক্ষান্তরে, ডায়ালেসিস এর ক্ষেত্রে শরীর থেকে রক্ত বের করে, পরিস্কার করে আবার শরীরে প্রবেশ করানো হয়। কিন্তু, আমার আশংকা হয় যে, ডায়ালেসিস এর মধ্যে এমন কিছু খাদ্যউপাদান থাকে যেগুলোর কারণে পাহাহারের প্রয়োজন হয় না। যদি আসলেই এমন কিছু উপাদান থেকে থাকে তাহলে ডায়ালেসিস এর কারণে রোজা ভঙ্গ হবে। যে ব্যক্তিকে জীবনভর ডায়ালেসিস করতে হয় সে ব্যক্তির হুকুম হবে ঐ রোগীর মত যার সুস্থ হওয়ার আশা নেই। এমন রোগী প্রতিদিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন। আর যদি ডায়ালেসিস কখনও লাগে কখনও লাগে না এমন হয় তাহলে এমন রোগী ডায়ালেসিস এর সময় রোযা ভাঙ্গবেন এবং পরবর্তীতে আদায় করে নিবেন।


আর যদি ডায়ালেসসি এর মধ্যে যে উপাদানগুলো দেয়া হয় এগলো খাদ্য উপাদান না হয়; শুধু রক্তকে পরিশোধিত করা হয় তাহলে এটি রোযা ভঙ্গ করবে না। এমন হলে রোযা রেখে ডায়ালেসিস করা যেতে পারে। এ বিষয়ে ডাক্তারদেরকে জিজ্ঞেস করতে হবে।]সমাপ্ত]


[মাজমু ফাতাওয়া ইবনে ঊছাইমীন (২০/১১৩)]


সারকথা হচ্ছে:


যে ব্যক্তি কিডনি ডায়ালেসিস করাতে বাধ্য আক্রান্ত সে ব্যক্তি তার ডায়ালেসিস এর দিনগুলোতে রোযা রাখবে না। পরবর্তীতে যদি এ ব্যক্তি এ রোযাগুলোর কাযা করতে পারে কাযা করবে। আর যদি কাযা করতে না পারে তাহলে সে ব্যক্তির হুকুম যে বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি রোযা রাখতে পারে না তার হুকুমের ন্যায়- রোযা না রেখে প্রতিদিন একজন মিসকীনকে খাওয়াবে।


সুত্রঃ islamqa
 
Similar threads Most view View more
Back
Top