- Joined
- Jan 3, 2023
- Threads
- 653
- Comments
- 796
- Reactions
- 6,947
- Thread Author
- #1
এক. নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে প্রমাণিত আছে, তিনি একদিন বসে ছিলেন। তাঁর আশেপাশে কিছু সাহাবী ছিলেন। তাদের সামনে ছিলেন আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ। বাতাস ইবন মাসউদের পায়ের নলাকে খুলে দেয়। ফলে সাহাবীগণ হেসে উঠেন। নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কী কারণে তোমরা হাসছো? তারা বলেন,বতার নলা চিকন হওয়ার কারণে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার জীবন! কিয়ামতের দিন তার দুটি নলা মীযা উহুদ পাহাড়ের তুলনায় বেশি ভারী হবে।” — মুসনাদে আহমাদ : ১/৪২০-৪২১; মুসনাদে আবী দাউদ তয়ালিসী : ৩৫৫; সহীহাহ : ২৭৫০
ইবন মাসউদের দুই নলার ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, কিয়ামতের দিন তার দুটি নলা মীযানে উহুদ পাহাড়ের তুলনায় বেশি ভারী হবে। কীসে দুটি নলাকে ভারী করেছে? সৎআমল।
দুই. আবু হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “কিয়ামতের দিন একজন খুব মোটা ব্যক্তি আসবে; কিন্তু সে আল্লাহর কাছে মশার পাখার চেয়েও কম ওজন হবে। তারপর তিনি বলেন, পাঠ করো, সুতরাং আমরা তাদের জন্য কিয়ামতের দিন কোনো ওজনের ব্যবস্থা রাখব না।” — বুখারী : ৪৭২৯
আয়াতটি হলো :
“আর সেদিন আমরা জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করব কাফিরদের কাছে, যাদের চোখ ছিল আমার নিদর্শনের প্রতি অন্ধ এবং যারা শুনতেও ছিল অক্ষম। যারা কুফরী করেছে তারা কি মনে করেছে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে? আমরা তো কাফিরদের আপ্যায়নের জন্য জাহান্নাম প্রকৃত রেখেছি। বলুন, আমরা কি তোমাদেরকে এমন লোকেদের কথা জানাব, যারা আমলের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওরই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পন্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎকাজই করছে। তারাই সেসব লোক, যারা তাদের রং-এর নিদর্শনাবলি ও তার সাথে তাদের সাক্ষাতের ব্যাপারে কুফরি করেছে। ফলে তাদের সকল আমল নিষ্ফল হয়ে গেছে। সুতরাং আমরা তাদের জন্য কিয়ামতের দিন কোনো ওজনের ব্যবস্থা রাখব না।” — সূরা কাহফ, আয়াত : ১০০-১০৫
মাসআলা : কীভাবে কাগজের টুকরোওয়ালা ব্যক্তি নাজাত পাবে?
প্রশ্ন : কীভাবে কাগজের টুকরোওয়ল ব্যক্তি নাজাত পাবে? অথচ প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির রয়েছে তার কাগজের টুকরোর মতো লা ইলাহা ইন্নাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রাসূলুল্লাহ-এর কাগজের টুকরো। প্রত্যেক মুসলিম তো এই সাক্ষ্য দেয়। তাহলে কীভাবে অনেক অবাধ্য ব্যক্তিকে জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে অথচ তারও এই কাগজের টুকরো থাকবে? যদি এমন কাগজের টুকরো না-দেওয়া হয়, তাহলে সে তো মুসলিম হবে না।
জবাব : উক্ত কালিমা সম্বলিত কাগজের টুকরোওয়ালা ব্যক্তি কালিমা পাঠ করেছে ইলাসের সাথে এবং সততা ও তাওবার সাথে। আবার হয়তো সে মৃত্যুর সময় বলেছে। ফলে উক্ত কালিমা তার মাঝে থাকা যাবতীয় সংশয়-সন্দেহ ও প্রবৃত্তিকে পুড়িয়ে ফেলেছে এবং তার পাপসমূহ জ্বালিয়ে দিয়েছে। অতঃপর তার অন্তর আল্লাহর ভালোবাসা ও ঈমানের বাস্তবতা দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে তা অমনোযোগী হয়ে ও অন্যমনস্ক হয়ে বলেনি। কিন্তু অন্যরা তা বলেছে দুর্বল ইখলাসের সাথে। একজন ব্যক্তি যখন ইখলাস, সততা এবং শক্তিশালী ইখলাস ও তাওহীদের সাথে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে, তখন তার পক্ষে অবাধ্যতার ওপর অটল থাকা সম্ভব হয় না। ফলে খাতাগুলোর পাল্লা হালকা হয়ে যায় এবং কাগজের টুকরোর পাল্লা ভারী হয়ে যায়। কিন্তু কেউ যদি তা দুর্বল ইখলাসের সাথে বলে, তাহলে তার তাওহীদী কালিমা হালকা হয়ে যায়। ফলে তার মাঝে সংশয়-সন্দেহ ও প্রবৃত্তি ভিড় জমায় এবং সে অবাধ্যতার ওপর অটল থাকে। আর সে তাওবা ছাড়াই বড়োগুনাহের ওপর মারা যায়। এ কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং সে আল্লাহর ইচ্ছাধীন থাকবে।
মাসআলা : আমল, বান্দা ও আমলের সহীফা কি ওজন করা হবে?
প্রশ্ন : এ ব্যাপারে উল্লেখ করা হয় যে, মীযানে তিনটি বস্তু ওজন করা হবে : ক. আমলসমূহ, খ. আমলকারী বান্দা, গ. আমলের সহীফা বা খাতা। আবার কেউ বলেন মীযানে দুটি বস্তু ওজন করা হবে : ক. আমলসমূহ, খ. আমলকারী বান্দা। এটা শব্দগত মতবিরোধ না-কি অর্থগত মতবিরোধ?
জবাব : স্পষ্ট যে, এটি কেবল শব্দগত মতবিরোধ। কারণ, আমল ও আমলের সহীফা একই বস্তু। আমলসমূহ লেখা হয় সহীফাতে। কাজেই তা একই বস্তু। অতএব, সহীফা হবে আমলের অনুগামী।
— শারহু উসূলিস সুন্নাহ (বিলিভার্স ভিশন পাবলিকেশন্স)
ইবন মাসউদের দুই নলার ক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, কিয়ামতের দিন তার দুটি নলা মীযানে উহুদ পাহাড়ের তুলনায় বেশি ভারী হবে। কীসে দুটি নলাকে ভারী করেছে? সৎআমল।
দুই. আবু হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “কিয়ামতের দিন একজন খুব মোটা ব্যক্তি আসবে; কিন্তু সে আল্লাহর কাছে মশার পাখার চেয়েও কম ওজন হবে। তারপর তিনি বলেন, পাঠ করো, সুতরাং আমরা তাদের জন্য কিয়ামতের দিন কোনো ওজনের ব্যবস্থা রাখব না।” — বুখারী : ৪৭২৯
আয়াতটি হলো :
“আর সেদিন আমরা জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করব কাফিরদের কাছে, যাদের চোখ ছিল আমার নিদর্শনের প্রতি অন্ধ এবং যারা শুনতেও ছিল অক্ষম। যারা কুফরী করেছে তারা কি মনে করেছে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে? আমরা তো কাফিরদের আপ্যায়নের জন্য জাহান্নাম প্রকৃত রেখেছি। বলুন, আমরা কি তোমাদেরকে এমন লোকেদের কথা জানাব, যারা আমলের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওরই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পন্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎকাজই করছে। তারাই সেসব লোক, যারা তাদের রং-এর নিদর্শনাবলি ও তার সাথে তাদের সাক্ষাতের ব্যাপারে কুফরি করেছে। ফলে তাদের সকল আমল নিষ্ফল হয়ে গেছে। সুতরাং আমরা তাদের জন্য কিয়ামতের দিন কোনো ওজনের ব্যবস্থা রাখব না।” — সূরা কাহফ, আয়াত : ১০০-১০৫
মাসআলা : কীভাবে কাগজের টুকরোওয়ালা ব্যক্তি নাজাত পাবে?
প্রশ্ন : কীভাবে কাগজের টুকরোওয়ল ব্যক্তি নাজাত পাবে? অথচ প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির রয়েছে তার কাগজের টুকরোর মতো লা ইলাহা ইন্নাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রাসূলুল্লাহ-এর কাগজের টুকরো। প্রত্যেক মুসলিম তো এই সাক্ষ্য দেয়। তাহলে কীভাবে অনেক অবাধ্য ব্যক্তিকে জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে অথচ তারও এই কাগজের টুকরো থাকবে? যদি এমন কাগজের টুকরো না-দেওয়া হয়, তাহলে সে তো মুসলিম হবে না।
জবাব : উক্ত কালিমা সম্বলিত কাগজের টুকরোওয়ালা ব্যক্তি কালিমা পাঠ করেছে ইলাসের সাথে এবং সততা ও তাওবার সাথে। আবার হয়তো সে মৃত্যুর সময় বলেছে। ফলে উক্ত কালিমা তার মাঝে থাকা যাবতীয় সংশয়-সন্দেহ ও প্রবৃত্তিকে পুড়িয়ে ফেলেছে এবং তার পাপসমূহ জ্বালিয়ে দিয়েছে। অতঃপর তার অন্তর আল্লাহর ভালোবাসা ও ঈমানের বাস্তবতা দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সে তা অমনোযোগী হয়ে ও অন্যমনস্ক হয়ে বলেনি। কিন্তু অন্যরা তা বলেছে দুর্বল ইখলাসের সাথে। একজন ব্যক্তি যখন ইখলাস, সততা এবং শক্তিশালী ইখলাস ও তাওহীদের সাথে 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' বলে, তখন তার পক্ষে অবাধ্যতার ওপর অটল থাকা সম্ভব হয় না। ফলে খাতাগুলোর পাল্লা হালকা হয়ে যায় এবং কাগজের টুকরোর পাল্লা ভারী হয়ে যায়। কিন্তু কেউ যদি তা দুর্বল ইখলাসের সাথে বলে, তাহলে তার তাওহীদী কালিমা হালকা হয়ে যায়। ফলে তার মাঝে সংশয়-সন্দেহ ও প্রবৃত্তি ভিড় জমায় এবং সে অবাধ্যতার ওপর অটল থাকে। আর সে তাওবা ছাড়াই বড়োগুনাহের ওপর মারা যায়। এ কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং সে আল্লাহর ইচ্ছাধীন থাকবে।
মাসআলা : আমল, বান্দা ও আমলের সহীফা কি ওজন করা হবে?
প্রশ্ন : এ ব্যাপারে উল্লেখ করা হয় যে, মীযানে তিনটি বস্তু ওজন করা হবে : ক. আমলসমূহ, খ. আমলকারী বান্দা, গ. আমলের সহীফা বা খাতা। আবার কেউ বলেন মীযানে দুটি বস্তু ওজন করা হবে : ক. আমলসমূহ, খ. আমলকারী বান্দা। এটা শব্দগত মতবিরোধ না-কি অর্থগত মতবিরোধ?
জবাব : স্পষ্ট যে, এটি কেবল শব্দগত মতবিরোধ। কারণ, আমল ও আমলের সহীফা একই বস্তু। আমলসমূহ লেখা হয় সহীফাতে। কাজেই তা একই বস্তু। অতএব, সহীফা হবে আমলের অনুগামী।
— শারহু উসূলিস সুন্নাহ (বিলিভার্স ভিশন পাবলিকেশন্স)