প্রশ্নোত্তর বিষাদগ্রস্থ হবেন না- কখনও আল্লাহ্‌র রহমত হতে নিরাশ হবেন না

Joined
Jun 29, 2025
Threads
4,862
Comments
0
Reactions
4,179

বিষাদগ্রস্থ হবেন না- কখনও আল্লাহ্‌র রহমত হতে নিরাশ হবেন না​

إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِن رَّوْحِ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ​

কাফির সম্প্রদায় ব্যতীত আল্লাহ রহমত হতে অন্য কেউ নিরাশ হয় না। (১২-সূরা ইউসুফ: আয়াত-৮৭) “অবশেষে রাসূলগণ যখন নিরাশ হয়ে গেল এবং ভাবল যে লোকেরা তাদেরকে মিথ্যুক ভাবছে বা লোকেরা ভাবল যে তাদেরকে মিথ্যা বলা হয়েছে তখন তাদের নিকট আমার সাহায্য আসল।” (১২-সূরা ইউসুফ: আয়াত-১১০) “এবং আমি তাকে দুশ্চিন্তা হতে নাজাত বা মুক্তি দিলাম; এভাবেই আমি মু’মিনদেরকে উদ্ধার করি।” (২১-সূরা আল আম্বিয়া: আয়াত-৮৮) “এবং তোমরা আল্লাহর সম্বন্ধে মনে মনে অনেক সন্দেহ পোষণ করছিলে। সেখানে মু'মিনদেরকে পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং ভীষণ কম্পনে প্রকম্পিত করা হয়েছিল।” (৩৩-সূরা আল আহযাব: আয়াত-১০-১১) অন্যেরা আপনাকে যে (মানসিক) আঘাত দিয়েছে তা নিয়ে দুঃখ করবেন না বরং যারা আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। হিংসা-বিদ্বেষের মূল্য বিরাট, অন্যের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষের বিনিময়ে প্রতিহিংসা পরায়ণ ব্যক্তিকে এ মূল্য পরিশোধ করতে হয়। সে তার মন ও রক্ত মাংসের বিনিময়ে এ মূল্য পরিশোধ করে। প্রতিশোধ গ্রহণের মজা পেতে চাওয়া এবং অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কারণে সে তার শান্তি, তার আরাম-আয়েশ ও তার সুখকে বিসর্জন দেয়। হিংসা-বিদ্বেষও এমন এক রোগ যার জন্য আল্লাহ্ তায়ালা চিকিৎসা ও ঔষধ দিয়েছেন- “এবং (তারাই মুক্তাকী) যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল।” (৩-সূরা আলে ইমরান: আয়াত-১৩৪) “ক্ষমা প্রদর্শন করুন, সৎকাজের আদেশ দিন এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চলুন।" (৭-সূরা আল আ'রাফ: আয়াত-১৯৯) “(মন্দকে) ভালো দ্বারা দূর করুন। তাহলেই আপনার ও যার মাঝে শক্রতা আছে (সে এমন হয়ে যাবে) যেন সে অন্তরঙ্গ বন্ধু।” (৪১-সূরা হা-মীম-আস-সাজদাহ: আয়াত-৩৪) এ আয়াতের মাধ্যমে বুঝানো হচ্ছে যে, আল্লাহ মু’মিনদেরকে ক্রোধের সময় ধৈর্য ধারণ করতে এবং তাদের সাথে যারা দুর্বব্যবহার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে আদেশ করেছেন। আপনার জীবনে যা অতীত হয়ে গেছে তা নিয়ে দুঃখ করবেন না; কেননা, প্রকৃতপক্ষে আপনি অনেক অনুগ্রহ-ধন্য। যে বহু অনুগ্রহ ও দানে আল্লাহ তা'আলা আপনাকে ভূষিত করেছেন সেগুলোর কথা গভীরভাবে ভেবে দেখুন এবং সেগুলোর জন্য মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। মহান আল্লাহর অসংখ্য করুণার কথা স্মরণ করুন; কেননা, সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেন-

وَإِن تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا إِنَّ اللَّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ​

“এবং যদি তোমরা আল্লাহর নেয়ামতকে গণনা করতে চাও, তবে কখনও তোমরা তা গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (১৬-সূরা নাহল: আয়াত-১৮) “আর তিনি তোমাদের প্রতি তার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নেয়ামত পূর্ণ করে দিয়েছেন। (৩১-সূরা লোকমান: আয়াত-২০) প্রকাশ্য নেয়ামত বলতে বুঝায় ইসলামী একত্ববাদ বা তাওহীদ এবং বৈধ আনন্দ যেমন ভালো স্বাস্থ্য, ভালো বই এবং বৈধ যৌন জীবন পরিচালনা ইত্যাদি, আর অপ্রকাশ্য নেয়ামত বলতে বুঝায় আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস বা তাওহীদের প্রতি ঈমান, ইলম বা জ্ঞান, প্রজ্ঞা বা হিকমত, নেক আমল করার জন্য হেদায়াত এবং আখেরাতে বেহেশতের আনন্দ ও পরমোল্লাস ইত্যাদি। “এবং তোমাদের নিকট যে নেয়ামত আছে তা (সবই) আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। অতঃপর তোমাদের যখন কোন ক্ষতি হয় তখন তোমরা তার নিকট সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাক।” (৩১-সূরা লোকমান: আয়াত-২০) আল্লাহ্‌ তার বান্দার প্রতি তার নেয়ামত প্রতিষ্ঠিত করার পর বলেছেন-

أَلَمْ نَجْعَل لَّهُ عَيْنَيْنِ - وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ - وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ​

“আমি কি তার জন্য দুখানি আঁখি, একটি জিহ্বা এবং দুখানি ঠোট বানিয়ে দেইনি? আর আমি কি তাকে (ভালো ও মন্দ এ) দুটি পথ দেখাইনি? (৯০-সূরা আল বালাদ: আয়াত-৮-১০) জীবন, স্বাস্থ্য, শ্রবণ ও দর্শন শক্তি, দু’হাত, দু’পা, পানি, বায়ু, খাদ্য- এগুলো হলো এ পৃথিবীর দর্শনসাধ্য ও দৃশ্যমান নেয়ামত। কিন্তু, সর্বোত্তম নেয়ামত হল ইসলাম ও হিদায়াত। যে ব্যক্তি আপনার আঁখিদ্বয়, কর্ণদ্বয়, পদদ্বয়, হস্তদ্বয় ও আপনার হৃদয়ের বদলে (আপনাকে) প্রচুর টাকা দিতে চায় তাকে আপনি কি বলবেন? বাস্তবে আপনার সম্পদের কতটা মাহাত্ম্য আছে কৃতজ্ঞ না হয়ে আপনি আল্লাহর অসংখ্য অনুগ্রহ, দান, করুণা ও নেয়ামতের প্রতি ন্যায়বিচার প্রদর্শন করছেন না।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top