সালাফী আকিদা ও মানহাজে

Salafi Forum হচ্ছে সালাফী ও সালাফদের আকিদা, মানহাজ শিক্ষায় নিবেদিত একটি সমৃদ্ধ অনলাইন কমিউনিটি ফোরাম। জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় নিযুক্ত হউন, সালাফী আলেমদের দিকনির্দেশনা অনুসন্ধান করুন। আপনার ইলম প্রসারিত করুন, আপনার ঈমানকে শক্তিশালী করুন এবং সালাফিদের সাথে দ্বীনি সম্পর্ক গড়ে তুলুন। বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের জ্ঞান অর্জন করতে, ও সালাফীদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করতে এবং ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের চেতনাকে আলিঙ্গন করতে আজই আমাদের সাথে যোগ দিন।

SignUp Now!

আকিদা বিশুদ্ধ আকিদা হতে বিচ্যুত হওয়ার বেশ কিছু কারণ

Habib Bin TofajjalVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
690
Comments
1,223
Solutions
17
Reactions
7,139
বিশুদ্ধ আকিদা হতে বিচ্যুত হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে যা থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো বরূপ:

১। সঠিক আকিদা সম্পর্কে অজ্ঞতা: তার শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বা তার প্রতি গুরুত্ব কম দেয়ার কারণে। এমনকি পরবর্তীতে এমন এক প্রজন্ম আসবে যারা বাপ-দাদার আকিদা এবং তার পরিপন্থী বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানে না। ফলে এরা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে বিশ্বাস করে বসে। যেমন- উমার ইবনে খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
যখন ইসলামে জাহিলিয়াত সম্পর্কে অজ্ঞ লোকদের আবির্ভাব ঘটবে তখন ইসলামের বন্ধন (রশি) একটা একটা করে ছিড়ে যাবে।

২। বাতিল জানার পরও বাপ দাদার ভ্রান্ত আকিদা বা মতামতকে গোঁড়ামী বশতঃ আঁকড়ে থাকা: ফলে বিপরীত বিষয়গুলো সত্য হলেও তা ত্যাগ করা। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে বিধানেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করেছেন। তখন তারা বলে- কক্ষনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। সূরা আল্ বাক্বারা ২: ১৭০।

৩। দলীল এবং বিশুদ্ধতা না জেনেই আকিদার ক্ষেত্রে অন্ধভাবে মানুষের কথা গ্রহণ করা: যেমন সহীহ আকিদা বিরোধী জাহমিয়া, মু'তাযিলা, আশা‘ইরা, সূফীয়া এবং অন্যান্য পথভ্রষ্ট দলের অবস্থা। তারা নিজেদের হৃদয়ে ভ্রষ্ট ইমামদেরকে স্থান করে দেয়ার ফলে নিজেরা ভ্রষ্ট হয়ে সঠিক আকিদা হতে বিচ্যুত হয়েছে।

৪। অলী এবং সৎ ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে বাড়া-বাড়ি করা: যোগ্যতার চেয়ে তাদেরকে অধিক সম্মান করা। এমনকি তাদের ক্ষেত্রে উপকার করা ও ক্ষতি প্রতিহত করার বিশ্বাস রাখা যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ করতে পারে না। প্রয়োজন পূরণ এবং দু‘আ কবুলের জন্য আল্লাহ তা‘আলা ও বান্দার মাঝে তাদেরকে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে গ্রহণ করা। এমনকি আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের ইবাদত এবং তাদের কবরের নিকটে জীব জন্তু জবাই করা, নযর-মানত করা, প্রার্থনা করা এবং সাহায্য সহযোগিতা চাওয়ার মাধ্যমে তাদের নৈকট্য লাভ করা শুরু হয়েছে। নূহ আলাইহিস সালাম এর কওমের সৎ ব্যক্তিগণের ক্ষেত্রে এমনটিই ঘটেছিল যখন তারা বলেছিল,
তারা বলল: তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ কর না এবং ত্যাগ কর না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে। সূরা নূহ্ ৭১: ২৩। বর্তমানে বিভিন্ন রাষ্ট্রে কবর পূজারিদেরও একই অবস্থা।

৫। আল্লাহর কুরআনে এবং সৃষ্টিজগতে ছড়িয়ে থাকা তার নিদর্শনগুলো সম্পর্কে চিন্তাভাবনা থেকে গাফিল বা উদাসীন থাকা: আল্লাহ প্রদত্ত অর্থ-সম্পদ নিয়ে গর্ব-অহংকার করা। এমনকি এ সমস্ত লোকেরা এ ধারণা পোষণ করে যে, অর্থের পিছনে একমাত্র মানুষের অবদান রয়েছে। ফলে তারা মানুষকে সম্মান করতঃ এ সকল নিয়ামতকে মানুষের দিকে সম্পর্কিত করতে শুরু করে। যেমন কারূন ইতিপূর্বে বলেছিল, সে বলল, আমি এগুলো আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি। সূরা আল্ ক্বাসাস ২৮: ৭৮।
যেমন মানুষ বলে, এটা আমার বা আমারই যোগ্যতা বলে পেয়েছি। সূরা ফুসসিলাত ৪১: ৫০।
মানুষ আরো বলে, মানুষ বলে আমি আমার জ্ঞান দ্বারা এ সম্পদ প্রাপ্ত হয়েছি। সূরা আয্ যুমার ৩৯: ৪৯।

অথচ মানুষ এসকল বস্তুর সৃষ্টি কর্তা, বিশেষ চাক-চিক্যদানকারী, মানুষের অস্তিত্ব দাতা, বিভিন্ন জিনিস তৈরীতে মানুষকে শক্তি দাতা এবং তার মাধ্যমে উপকার গ্রহণের তৌফীক্ব দাতার বড়ত্ব ও মহত্বের দিকে চিন্তা করে দেখে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আল্লাহ তোমাদিগকে এবং তোমরা যা কর তার সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন। সূরা সফ্ফাত ৩৭: ৯৬।

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ তা‘আলা বস্তু সামগ্রী থেকে। সূরা আল্ আ'রাফ ৭: ১৮৫।

তিনিই আল্লাহ, যিনি নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডল সৃজন করেছেন এবং আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে অতঃপর তা দ্বারা তোমাদের জন্যে ফলের রিযিক উৎপনড়ব করেছেন এবং নৌকাকে তোমাদের আজ্ঞাবহ করেছেন, যাতে তার আদেশে সমুদ্রে চলা ফেরা করে এবং নদ-নদীকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন। তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন সূর্যকে এবং চন্দ্রকে সর্বদা এক নিয়মে এবং রাত্রি ও দিবসকে তোমাদের কাজে লাগিয়েছেন। যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছো, তার প্রত্যেকটি থেকেই তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন। যদি আল্লাহর নিয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় মানুষ অত্যন্ত অন্যায়কারী, অকৃতজ্ঞ। সূরা ইবরাহীম ১৪:৩২-৩৪।

৬। অধিকাংশ পরিবারই আজ সঠিক দিক নির্দেশনা শূন্য: রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, প্রত্যেকটি সন্তান ইসলামী স্বভাবজাত ধর্মের উপর জন্ম গ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহূদী অথবা খ্রিষ্টান অথবা অগিড়বপূজক বানায়।(১)
অতএব, বুঝা গেল সন্তানদেরকে সঠিক পথে পরিচালনার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার বড় ভূমিকা রয়েছে।

৭। অধিকাংশ মুসলিম দেশসমূহে শিক্ষা এবং প্রচার মাধ্যমসমূহ তার যথাযথ দায়িত্ব পালন না করা: শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে ধর্মীয় দিককে বেশী বা একেবারেই গুরুত্ব দেয়া হয় না। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমগুলো (রেডিও, টেলিভিশন, পত্র পত্রিকা) বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে সমাজ ধ্বংস এবং পদস্খলনের কাজে ব্যাবহৃত হচ্ছে। অথবা প্রচার মাধ্যমগুলো অর্থনৈতিক ও বিনোদনমূলক বিষয়গুলোকেই বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। অপর দিকে চরিত্র ঠিক করা, বিশুদ্ধ আকিদা গঠন এবং বিপথগামী স্রোতধারা প্রতিরোধে কোন গুরুত্বই দেয় না। যাতে নিরস্ত্র ও অরক্ষিত এমন এক জাতি তৈরী হয়, নাস্তিক্যবাদী সৈন্যদের সামনে যাদের কোন শক্তিই থাকবে না।



১. সহীহ বুখারী হা/১৩৮৫।
 
Last edited:
Similar threads Most view View more
Back
Top