বিবাহ ও দাম্পত্য বিবাহের শর্ত ও রুকনসমূহ

Golam RabbyVerified member

Knowledge Sharer
ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
659
Comments
803
Reactions
7,044
প্রথম: বিবাহের শর্তসমূহ

১.
বর এবং কনেকে নির্দিষ্ট করা: অনির্দিষ্ট কনের উপর আকদে নিকাহ বা বিবাহের চুক্তি সহীহ হবে না। যেমন কোনো ব্যক্তির একাধিক মেয়ে আছে। সেই ব্যক্তি বলল, আমার মেয়েকে তোমার কাছে বিবাহ দিলাম। অথবা কোনো ব্যক্তির একাধিক ছেলে আছে সেই ব্যক্তি বলল, আমার ছেলেকে তার সাথে বিবাহ দিলাম। এভাবে আকদে নিকাহ সহীহ হবে না। বরং এক্ষেত্রে নাম নির্দিষ্ট করতে হবে। যেমন ফাতিমা, আলী। অথবা গুণ উল্লেখ করতে হবে। যেমন বড়ো মেয়ে, ছোটো মেয়ে অথবা বড়ো ছেলে, ছোটো ছেলে।

২. বর এবং কনে উভয়ে একে অপরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকতে হবে: সুতরাং জোড় করে বিবাহ দেওয়া বৈধ নয় । কারণ আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন:
“সম্মতি ব্যতীত বিধবা মহিলাকে বিবাহ দিবে না এবং অনুমতি ব্যতীত কুমারী নারীকে বিবাহ দিবে না।" (বুখারী, হা/৫১৩৬)

৩. বিবাহের অভিভাবকত্ব: একমাত্র অভিভাবক কনের পক্ষ হতে বিবাহের চুক্তি সম্পাদন করতে পারবে। অন্য কেউ তা করতে পারবে না। হাদীসে এসেছে-
“অভিভাবক ছাড়া কোনো বিবাহ নেই"(তিরমিজি, হা/১১০১; আবু দাউদ, হা/২০৮৫)

অভিভাবক হওয়ার জন্য শর্ত হলো অবশ্যই তাকে পুরুষ, বালেগ, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন এবং অন্তত বাহ্যিকভাবে নীতিবান লোক হতে হবে।

৪. আকদে নিকাহ বা বিবাহের চুক্তির সময় সাক্ষী উপস্থিত থাকা: সুতরাং দুজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ হবে না। সাক্ষী দুজনকে অবশ্যই মুসলিম এবং বালেগ হতে হবে। সেই সাথে অন্তত বাহ্যিকভাবে নীতিবান লোক হতে হবে। আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন:
“একজন অভিভাবক এবং দুইজন নীতিবান সাক্ষী ছাড়া বিবাহ হবে না। এ ছাড়া যত বিবাহ আছে
সব বিবাহ বাতিল ।”(ইবনু হিব্বান, হা/৪০৭৫; আল মুহাল্লা ৯/৩৪৬৫)
ইমাম তিরমিযী (রহ.) বলেন, আল্লাহর রাসূল এর সাহাবীদের মধ্য হতে যারা আহলুল ইলম ছিলেন তারা এর উপরই আমল করেছেন। তাদের পরে তাবেঈন এবং অন্যরাও এর উপর আমল করেছেন। তারা সকলেই বলেছেন, সাক্ষী ছাড়া বিবাহ হবে না। বিবাহের ক্ষেত্রে সাক্ষীকে শর্ত করা হয়েছে যেন বংশ সুরক্ষিত থাকে। পরবর্তীতে কেউ যেন বিবাহকে অস্বীকার করতে না পারে।

৫. বিবাহকে বাধা দেয় এমন বিষয় থেকে বর এবং কনে উভয়কে মুক্ত থাকতে হবে: যেমন: বংশগত, দুগ্ধগত এবং বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকা। কিছু প্রতিবন্ধকতা অন্যান্য কারণেও হয়ে থাকে। যেমনঃ ধর্মের ভিন্নতা থাকার কারণে, বর বা কনে উভয়ের কেউ হাজ্জ বা উমরার ইহরামে থাকার কারণে।

দ্বিতীয়: বিবাহের রুকন

যে বিষয়গুলোর মাধ্যমে বিবাহ সংঘটিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়, সেগুলোকে বিবাহের রুকন বলে।
সেগুলো হলো:

১. দুইজন চুক্তিকারী থাকা: একজন বর, একজন কনে, তারা ঐসকল প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্ত থাকবে যা বিবাহকে বাধা দিয়ে থাকে। কিছুক্ষণ আগেই এব্যাপারে ইশারা করা হয়েছে।
২. প্রস্তাব করা: এমন কিছু শব্দ যেগুলো অভিভাবক বা তার স্থানে থাকা উকিলের পক্ষ থেকে
প্রকাশ করা হবে । অর্থাৎ নিকাহ এবং তায়উইজ শব্দ দ্বারা হবে।
৩. প্রস্তাব কবুল করা: অর্থাৎ এমন কিছু শব্দ বর বা তার প্রতিনিধির কাছ থেকে প্রকাশ পাবে।
যেমনঃ সে বলবে, আমি এই বিবাহ কবুল করলাম অথবা বলবে, আমি এই বিবাহে খুশী হলাম। প্রস্তাব অবশ্যই কবুলের পূর্বে হতে হবে।


সূত্র: আল ফিকহুল মুয়াসসার (আত তাওহীদ প্রকাশনী), 'বিবাহ ও তালাক' অধ্যায়
 
Similar threads Most view View more
Back
Top