Student Of Knowledge
Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
সম্প্রতি আবু ত্বহা আদনান বান্দরবানের একটি মাহফিলে বলেছেন, “নতুন একটা পদ্ধতি এসেছে, পেট কাটা হবে, বাচ্চা বের করে ফেলা হবে। সুবহানাল্লাহ। মনে হয় গরু-ছাগল, হাস-মুরগির বাচ্চা হয়, মানুষের বাচ্চা সিজার ছাড়া হতে পারে না। এটা যে শেষ জামানার হাদিসে আছে, আপনাকে বললে আপনি বিশ্বাস করবেন? আখিরুজ্জামান, কেয়ামতের আলামতের যতগুলো হাদিস আছে, এরমধ্যে একটা এরকম হাদিস আমি পড়েছি যে, শেষ জামানায় মেয়েদেরকে ধরা হবে, ওদের পেট কেটে ফেলা হবে। আর কোন নিদর্শনের জন্য অপেক্ষা করছেন? শেষ জামানায় মেয়েদেরকে ধরা হবে। মেয়ে রাজি না থাকলেও বোঝানো হবে, সিজার না করলে বাচ্চা বাঁচবে না। মেয়ে রাজি না থাকলেও, পরিবার রাজি না থাকলেও বোঝানো হবে —বিজনেস— যে, সিজার না করলে আপনার মেয়েকে বাঁচানো যাবে না, সন্তানকে বাঁচানো যাবে না, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এমনভাবে ব্রেইনওয়াশ করা হবে, ভয়ে মা বলবে, হ্যাঁ, করেন, সিজার করেন।... শেষ জামানার হাদিসে এসেছে, মেয়েদেরকে ধরা হবে, মানে মেয়েরা ধরা দিবে না, তাদেরকে ধরা হবে, পেট কেটে ফেলা হবে, এর ভেতরে যা আছে ওকে বের করে ফেলা হবে। স্পষ্ট টাটকা হাদিস।” [দেখুন: https://youtu.be/zFvVz09_xHI (০:২৫ মিনিট থেকে ১:৪০ মিনিট); বিকল্প লিংক: https://youtu.be/NMhQOnIqBSU (৫৬ মিনিট থেকে)]
আরেক বক্তব্যে আদনান বলেছেন, “শেষ জামানায় মহিলাদেরকে ধরা হবে, আর তাদের পেট কেটে ফেলা হবে। সুবহানাল্লাহ। চিন্তা করতে পারেন? শেষ জামানায় মেয়েদেরকে ধরা হবে জোর করে এবং পেট কেটে ফেলা হবে? কী বুঝলেন? সিজার। আজকে থেকে ত্রিশ বছর আগে সিজার ছিল? এরপরেও কিছু মানুষের হজম হয় না যে, এটা শেষ জামানা।” [দেখুন: https://youtu.be/hOxQFFh1-rs]
বক্তা আদনান একটি স্পষ্ট হাদিসের বিকৃত ব্যাখ্যা করেছেন। হাদিসটি মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবাতে বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, لَتُؤْخَذَنَّ المَرْأةُ فَلْيُبْقَرَنَّ بَطْنُها ثُمَّ لَيُؤْخَذَنَّ ما فِي الرَّحِمِ فَلْيُنْبَذَنَّ مَخافَةَ الوَلَدِ “অবশ্যই মহিলাদের ধরে তাদের পেট কেটে ফেলা হবে, এরপর সন্তানলাভের ভয়ে গর্ভের মধ্যে যা আছে তা সংগ্রহ করে ফেলে দেওয়া হবে।” [মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবা, হা: ৪০০৮০; সৌদি আরবের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস, মুহাক্কিক, ফাকিহ ও উসুলবিদ আল্লামা সাদ আশ-শাসরি হাফিযাহুল্লাহ তাঁর তাহকিককৃত মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবায় হাদিসটিকে হাসান বলে অভিহিত করেছেন, দেখুন: তাঁর তাহকিককৃত মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবা, খণ্ড: ২১; পৃষ্ঠা: ২৫৫; দারু কুনিযি ইশবিলিয়া (রিয়াদ) কর্তৃক প্রকাশিত; প্রকাশকাল: ১৪৩৬ হি./২০১৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে মক্কার মুহাদ্দিস ইমাম হামুদ আত-তুওয়াইজিরি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ১৪১৩ হি.) বলেছেন, وقد ظهر مصداقه في زماننا، ولا سيما في العاهرات من النساء اللاتي ليس لهن أزواج؛ فقد ذكر لنا أن منهن من يأتين إلى الأطباء ليبقروا بطونهن وينبذوا ما في أرحامهن من الحمل؛ مخافة العار عليهن وعلى أهليهن “আমাদের যুগে এ হাদিসের সত্যতা প্রকাশিত হয়ে গেছে। বিশেষত পতিতা নারীদের মাঝে, যাদের কোনো স্বামী নেই। আমাদেরকে বলা হয়েছে, এসব মহিলাদের কেউ কেউ নিজেদের ও পরিবারের প্রতি আসন্ন লজ্জার ভয়ে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়, যাতে তারা তাদের পেট কেটে গর্ভস্থিত সন্তান বা ভ্রুণ ফেলে দিতে পারে।” [শাইখ হামুদ আত-তুওয়াইজিরি বিরচিত ইতহাফুল জামাআহ বিমা জাআ ফিল ফিতানি ওয়াল মালাহিমি ওয়া আশরাতিস সাআহ, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৪৩]
হাদিসে যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সন্তানলাভের ভয়ে গর্ভের সন্তান বা ভ্রুণ ফেলে দেওয়া হবে, সেখানে কীভাবে এটাকে সিজার দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, আমার বুঝে আসে না। সিজার করা হয় সন্তানলাভের জন্য, সন্তান ফেলে দেওয়ার জন্য না। সুতরাং আবু ত্বহা আদনানের এই ব্যাখ্যা হাদিসের বিকৃতি ও অপব্যাখ্যা হিসেবে পরিগণিত হবে। এর মানে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সিজার করানোর ট্রেন্ডকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি, তা ভাববেন না। ধোঁকা দিয়ে সিজার করানো হারাম। কারণ ধোঁকা দেওয়া আমাদের শরিয়তে কবিরা গুনাহ। কিন্তু সিজারের বিরুদ্ধে বলার জন্য হাদিসের অপব্যাখ্যা করা যায় না। বিনা দলিলে কুরআন-হাদিসের ভিন্ন ব্যাখ্যা করা না-জায়েজ। আল্লাহুল মুস্তাআন।
আরেক বক্তব্যে আদনান বলেছেন, “শেষ জামানায় মহিলাদেরকে ধরা হবে, আর তাদের পেট কেটে ফেলা হবে। সুবহানাল্লাহ। চিন্তা করতে পারেন? শেষ জামানায় মেয়েদেরকে ধরা হবে জোর করে এবং পেট কেটে ফেলা হবে? কী বুঝলেন? সিজার। আজকে থেকে ত্রিশ বছর আগে সিজার ছিল? এরপরেও কিছু মানুষের হজম হয় না যে, এটা শেষ জামানা।” [দেখুন: https://youtu.be/hOxQFFh1-rs]
বক্তা আদনান একটি স্পষ্ট হাদিসের বিকৃত ব্যাখ্যা করেছেন। হাদিসটি মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবাতে বর্ণিত হয়েছে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, لَتُؤْخَذَنَّ المَرْأةُ فَلْيُبْقَرَنَّ بَطْنُها ثُمَّ لَيُؤْخَذَنَّ ما فِي الرَّحِمِ فَلْيُنْبَذَنَّ مَخافَةَ الوَلَدِ “অবশ্যই মহিলাদের ধরে তাদের পেট কেটে ফেলা হবে, এরপর সন্তানলাভের ভয়ে গর্ভের মধ্যে যা আছে তা সংগ্রহ করে ফেলে দেওয়া হবে।” [মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবা, হা: ৪০০৮০; সৌদি আরবের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস, মুহাক্কিক, ফাকিহ ও উসুলবিদ আল্লামা সাদ আশ-শাসরি হাফিযাহুল্লাহ তাঁর তাহকিককৃত মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবায় হাদিসটিকে হাসান বলে অভিহিত করেছেন, দেখুন: তাঁর তাহকিককৃত মুসান্নাফ ইবনি আবি শাইবা, খণ্ড: ২১; পৃষ্ঠা: ২৫৫; দারু কুনিযি ইশবিলিয়া (রিয়াদ) কর্তৃক প্রকাশিত; প্রকাশকাল: ১৪৩৬ হি./২০১৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
উক্ত হাদিসটির ব্যাপারে মক্কার মুহাদ্দিস ইমাম হামুদ আত-তুওয়াইজিরি রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ১৪১৩ হি.) বলেছেন, وقد ظهر مصداقه في زماننا، ولا سيما في العاهرات من النساء اللاتي ليس لهن أزواج؛ فقد ذكر لنا أن منهن من يأتين إلى الأطباء ليبقروا بطونهن وينبذوا ما في أرحامهن من الحمل؛ مخافة العار عليهن وعلى أهليهن “আমাদের যুগে এ হাদিসের সত্যতা প্রকাশিত হয়ে গেছে। বিশেষত পতিতা নারীদের মাঝে, যাদের কোনো স্বামী নেই। আমাদেরকে বলা হয়েছে, এসব মহিলাদের কেউ কেউ নিজেদের ও পরিবারের প্রতি আসন্ন লজ্জার ভয়ে চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়, যাতে তারা তাদের পেট কেটে গর্ভস্থিত সন্তান বা ভ্রুণ ফেলে দিতে পারে।” [শাইখ হামুদ আত-তুওয়াইজিরি বিরচিত ইতহাফুল জামাআহ বিমা জাআ ফিল ফিতানি ওয়াল মালাহিমি ওয়া আশরাতিস সাআহ, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৪৩]
হাদিসে যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সন্তানলাভের ভয়ে গর্ভের সন্তান বা ভ্রুণ ফেলে দেওয়া হবে, সেখানে কীভাবে এটাকে সিজার দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, আমার বুঝে আসে না। সিজার করা হয় সন্তানলাভের জন্য, সন্তান ফেলে দেওয়ার জন্য না। সুতরাং আবু ত্বহা আদনানের এই ব্যাখ্যা হাদিসের বিকৃতি ও অপব্যাখ্যা হিসেবে পরিগণিত হবে। এর মানে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সিজার করানোর ট্রেন্ডকে আমি স্বাগত জানাচ্ছি, তা ভাববেন না। ধোঁকা দিয়ে সিজার করানো হারাম। কারণ ধোঁকা দেওয়া আমাদের শরিয়তে কবিরা গুনাহ। কিন্তু সিজারের বিরুদ্ধে বলার জন্য হাদিসের অপব্যাখ্যা করা যায় না। বিনা দলিলে কুরআন-হাদিসের ভিন্ন ব্যাখ্যা করা না-জায়েজ। আল্লাহুল মুস্তাআন।
লিখেছেন: মুহাম্মাদ আব্দুল্ললাহ মৃধা।