Student Of Knowledge
Forum Staff
Moderator
Uploader
Exposer
HistoryLover
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 343
- Comments
- 476
- Reactions
- 5,789
- Thread Author
- #1
·
আবু ত্বহা আদনান বলেছেন, “নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের রাতে যখন গিয়েছেন, একজন ফেরেশতা তাঁকে দেখে হাসেনি। তাঁর নাম মালেক। সুরা যুখরুফের মধ্যে তাঁর কথা আছে। তিনি জিবরাইলকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ও হাসছে না কেন? জিবরিল আমিন বলেছেন, তাঁকে আল্লাহ পাক জাহান্নামের প্রহরী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। যেদিন থেকে আল্লাহ তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন, ওইদিন থেকে মুখের হাসি উড়ে গেছে।” [দ্রষ্টব্য: https://youtu.be/OqgK5gxwR70 (৩৮:১৫ মিনিট থেকে ৩৮:৪৪ মিনিট)]
এই ঘটনা বক্তা আদনান আরও কয়েক জায়গায় বলেছেন। আমি সেসব বক্তব্যের ইউটিউব লিংক দিয়ে দিচ্ছি—
১. https://youtu.be/KHJMBUxuvp0 (১৫:২৯ মিনিট থেকে ১৭:০৯ মিনিট)।
২. https://youtu.be/U8d3G7lpjd4 (২:২২ মিনিট থেকে ৩:৩২ মিনিট)।
৩. https://youtu.be/wLSYsGvmbCI (১০:২৩ মিনিট থেকে ১০:৫২ মিনিট)।
ঘটনাটি ইবনু হিশাম রাহিমাহুল্লাহ তাঁর সিরাতগ্রন্থে বিখ্যাত সিরাতবিদ ইবনু ইসহাক রাহিমাহুল্লাহর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইবনু ইসহাক তাঁর সনদে একজন বর্ণনাকারীরও নাম উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ ইবনু ইসহাক থেকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত বর্ণনার এই পরম্পরায় একজন বর্ণনাকারীরও নাম নেই। অজ্ঞাতপরিচয় বর্ণনাকারীদের দরুন এ হাদিস বিচ্ছিন্নতার দোষে দুষ্ট। এ ধরনের হাদিস যে দুর্বল হাদিস তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হাদিসটির সারসংক্ষেপ আমি বলে দিচ্ছি। মূল হাদিসের আরবি টেক্সট দেখতে চাইলে আপনারা রেফারেন্স চেক করতে পারেন।
হাদিসটির ভাষ্য অনেকটা এরকম— নবিজি যখন মেরাজে যান, তখন সকল ফেরেশতা হাসিমুখ নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেন, ভালো কথা বলেন এবং দোয়া করেন। কিন্তু একজন ফেরেশতা ভালো কথা বলে দোয়া করে দিলেও তিনি হাসেননি। অন্য ফেরেশতাদের মতো তাঁর চেহারায় ঔজ্জল্য ছিল না। জিবরাইল আলাইহিস সালামকে নবিজি তাঁর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, যদি আপনার পূর্বে কিংবা পরে কাউকে দেখে সে হাসত, তাহলে আপনাকে দেখে অবশ্যই সে হাসত। কিন্তু সে কখনো হাসে না। সে হলো জাহান্নামের প্রহরী মালিক। [ইবনু হিশাম কৃত আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৪; বর্ণনা নং: ৪০১; বর্ণনার মান: গ্রন্থটির মুহাক্কিক বর্ণনাটিকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন; তাহকিক: মাজদি ফাতহি আস-সাইয়্যিদ; দারুস সাহাবা (তানতা) কর্তৃক প্রকাশিত; প্রকাশকাল: ১৪১৬ হি./১৯৯৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
ফেরেশতার বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত বিষয় গায়েবি বিষয়ের অন্তর্গত। এগুলো আকিদাগত বিষয়। এসব বিষয়ে কোনোভাবেই দুর্বল হাদিসের ওপর নির্ভর করা যাবে না। কিন্তু আবু ত্বহা আদনান সেই কাজটিই করেছেন। এজন্য এদের মতো মানুষ থেকে সতর্ক-সাবধান থাকা জরুরি। সাধারণ মানুষদের অনেকে এসব বক্তাকে আলিম মনে করে থাকেন। অথচ হাদিসের সহিহ-জইফ যাচাই করে বলতে পারার মতো ক্ষমতা যার নেই, আকিদাগত বিষয়ে যিনি দেদারসে দুর্বল হাদিস ও বানোয়াট কথা বলেন, তাকে কোনোভাবেই আলিম বলা যায় না।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ২৪১ হি.) ও ইমাম ইসহাক বিন রাহুওয়াইহ রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ২৩৮ হি.) বলেছেন, إنَّ العالِمَ إذا لَمْ يَعْرِفِ الصَّحِيحَ والسَّقِيمَ والنّاسِخَ والمَنسُوخَ مِنَ الحَدِيثِ لا يُسَمّى عالِمًا “আলিম হিসেবে কথিত কোনো ব্যক্তি যখন হাদিসের মধ্য থেকে সহিহ-জইফ ও নাসিখ-মানসুখ (রহিত ও রহিতকারী) নির্ণয় করতে পারে না, তখন তাকে আলিম হিসেবে অভিহিত করা যায় না।” [ইমাম হাকিম কৃত মারিফাতু উলুমিল হাদিস, পৃষ্ঠা: ৬০]
বলা বাহুল্য, যে বক্তা বা লেখকের হালহকিকত এরকম, তার থেকে শরিয়তের জ্ঞান নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে আমরা ইতঃপূর্বে যথেষ্ট আলোচনা করেছি, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
আবু ত্বহা আদনান বলেছেন, “নাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজের রাতে যখন গিয়েছেন, একজন ফেরেশতা তাঁকে দেখে হাসেনি। তাঁর নাম মালেক। সুরা যুখরুফের মধ্যে তাঁর কথা আছে। তিনি জিবরাইলকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ও হাসছে না কেন? জিবরিল আমিন বলেছেন, তাঁকে আল্লাহ পাক জাহান্নামের প্রহরী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। যেদিন থেকে আল্লাহ তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন, ওইদিন থেকে মুখের হাসি উড়ে গেছে।” [দ্রষ্টব্য: https://youtu.be/OqgK5gxwR70 (৩৮:১৫ মিনিট থেকে ৩৮:৪৪ মিনিট)]
এই ঘটনা বক্তা আদনান আরও কয়েক জায়গায় বলেছেন। আমি সেসব বক্তব্যের ইউটিউব লিংক দিয়ে দিচ্ছি—
১. https://youtu.be/KHJMBUxuvp0 (১৫:২৯ মিনিট থেকে ১৭:০৯ মিনিট)।
২. https://youtu.be/U8d3G7lpjd4 (২:২২ মিনিট থেকে ৩:৩২ মিনিট)।
৩. https://youtu.be/wLSYsGvmbCI (১০:২৩ মিনিট থেকে ১০:৫২ মিনিট)।
ঘটনাটি ইবনু হিশাম রাহিমাহুল্লাহ তাঁর সিরাতগ্রন্থে বিখ্যাত সিরাতবিদ ইবনু ইসহাক রাহিমাহুল্লাহর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইবনু ইসহাক তাঁর সনদে একজন বর্ণনাকারীরও নাম উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ ইবনু ইসহাক থেকে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত বর্ণনার এই পরম্পরায় একজন বর্ণনাকারীরও নাম নেই। অজ্ঞাতপরিচয় বর্ণনাকারীদের দরুন এ হাদিস বিচ্ছিন্নতার দোষে দুষ্ট। এ ধরনের হাদিস যে দুর্বল হাদিস তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হাদিসটির সারসংক্ষেপ আমি বলে দিচ্ছি। মূল হাদিসের আরবি টেক্সট দেখতে চাইলে আপনারা রেফারেন্স চেক করতে পারেন।
হাদিসটির ভাষ্য অনেকটা এরকম— নবিজি যখন মেরাজে যান, তখন সকল ফেরেশতা হাসিমুখ নিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেন, ভালো কথা বলেন এবং দোয়া করেন। কিন্তু একজন ফেরেশতা ভালো কথা বলে দোয়া করে দিলেও তিনি হাসেননি। অন্য ফেরেশতাদের মতো তাঁর চেহারায় ঔজ্জল্য ছিল না। জিবরাইল আলাইহিস সালামকে নবিজি তাঁর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, যদি আপনার পূর্বে কিংবা পরে কাউকে দেখে সে হাসত, তাহলে আপনাকে দেখে অবশ্যই সে হাসত। কিন্তু সে কখনো হাসে না। সে হলো জাহান্নামের প্রহরী মালিক। [ইবনু হিশাম কৃত আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ১৪; বর্ণনা নং: ৪০১; বর্ণনার মান: গ্রন্থটির মুহাক্কিক বর্ণনাটিকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন; তাহকিক: মাজদি ফাতহি আস-সাইয়্যিদ; দারুস সাহাবা (তানতা) কর্তৃক প্রকাশিত; প্রকাশকাল: ১৪১৬ হি./১৯৯৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]
ফেরেশতার বৈশিষ্ট্য সংক্রান্ত বিষয় গায়েবি বিষয়ের অন্তর্গত। এগুলো আকিদাগত বিষয়। এসব বিষয়ে কোনোভাবেই দুর্বল হাদিসের ওপর নির্ভর করা যাবে না। কিন্তু আবু ত্বহা আদনান সেই কাজটিই করেছেন। এজন্য এদের মতো মানুষ থেকে সতর্ক-সাবধান থাকা জরুরি। সাধারণ মানুষদের অনেকে এসব বক্তাকে আলিম মনে করে থাকেন। অথচ হাদিসের সহিহ-জইফ যাচাই করে বলতে পারার মতো ক্ষমতা যার নেই, আকিদাগত বিষয়ে যিনি দেদারসে দুর্বল হাদিস ও বানোয়াট কথা বলেন, তাকে কোনোভাবেই আলিম বলা যায় না।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ২৪১ হি.) ও ইমাম ইসহাক বিন রাহুওয়াইহ রাহিমাহুল্লাহ (মৃত: ২৩৮ হি.) বলেছেন, إنَّ العالِمَ إذا لَمْ يَعْرِفِ الصَّحِيحَ والسَّقِيمَ والنّاسِخَ والمَنسُوخَ مِنَ الحَدِيثِ لا يُسَمّى عالِمًا “আলিম হিসেবে কথিত কোনো ব্যক্তি যখন হাদিসের মধ্য থেকে সহিহ-জইফ ও নাসিখ-মানসুখ (রহিত ও রহিতকারী) নির্ণয় করতে পারে না, তখন তাকে আলিম হিসেবে অভিহিত করা যায় না।” [ইমাম হাকিম কৃত মারিফাতু উলুমিল হাদিস, পৃষ্ঠা: ৬০]
বলা বাহুল্য, যে বক্তা বা লেখকের হালহকিকত এরকম, তার থেকে শরিয়তের জ্ঞান নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে আমরা ইতঃপূর্বে যথেষ্ট আলোচনা করেছি, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।
লিখেছেন: মুহাম্মাদ আব্দুল্ললাহ মৃধা।