ফসিলতত্ত্ব ও বিবর্তনবাদ - বিবর্তনবাদের বিভ্রান্তি ৫

Habib Bin TofajjalVerified member

If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Nov 25, 2022
Threads
690
Comments
1,228
Solutions
17
Reactions
7,152
বিবর্তনবাদীরা তাদের নিজেদের স্বপক্ষে ফসিল তত্ত্ব পেশ করে থাকেন। যাপৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হ’ল, ফসিল দ্বারা সত্যই কি ক্রমবিকাশবাদ বা বিবর্তনবাদ প্রমাণ করা যায়? উক্ত বিষয়ে ডারউইন নিজেই তাঁর The origin of species বইয়ে বলেন, Why, if species have descended from other species by fine gradations, do we not everywhere see innumerable transitional forms? Why is not all nature in confusion, instead of the species being as we see them, well defined?

‘প্রজাতি সমূহ যদি অপর প্রজাতি সমূহ থেকে ধাপে ধাপে পরিবর্তিত হয় ক্রমোন্নতির মাধ্যমে, তাহ’লে কি আমরা যত্রতত্র অন্তর্বর্তীকালীন আকৃতি দেখতে পেতাম না? সমস্ত প্রকৃতি সংশয়পূর্ণ নয় কেন? তার পরিবর্তে প্রজাতি সমূহকে আমরা নির্ভুলভাবে বর্ণিত দেখছি কেন? (৮৫)।

Professor D. Arey Thompson তাঁর On Growth and Form নামক বইয়ে লিখেছেন, Eighty years study of Darwinian evolution has not taught us how birds descend from reptile mammals from earlier quadrupeds, quadrupeds from fishes, or vertebrates from the invertebrate stock. the invertebrates themselves involve in the same difficulties ... the breach between vertebrate and invertebrate worm... is so wide that we cannot see across the intervening gaps at all... We cross boundaries every time we pass from family to family, or group to group... A principle of discontinuity, then, is inherent in all our classifications... to seek for stepping stones across the gaps between is to seek in vain forever...

‘ডারউইনী বিবর্তনের ৮০ বছরকালীন অধ্যয়নও আমাদেরকে শেখাতে পারল না পাখি কি করে সরীসৃপের বংশধর হ’ল? স্তন্যপায়ী জীব বংশধর হ’ল প্রাথমিক কালের চতুষ্পদ জন্তু থেকে, চতুষ্পদ জন্তু হ’ল মাছ থেকে, বা মেরুদণ্ডী জীব অমেরুদণ্ডী কাণ্ড থেকে? অমেরুদণ্ডী জীব নিজেরাই একই অসুবিধার সম্মুখীন... মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডীর মধ্যকার ফাঁক...এত বিস্তীর্ণ যে মাঝখানের শূন্যতা অতিক্রম করার কোন উপায় আমরা পাই না।...প্রত্যেকটি সময় আমরা পরিবার থেকে পরিবার পর্যন্ত বা গোষ্ঠী থেকে গোষ্ঠী পর্যন্ত পরিক্রমা করে চলেছি।... ফলে সম্পর্কহীনতা ও অধারাবাহিকতা আমাদের সমস্ত শ্রেণী বিন্যাসে জন্মগত হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফাঁক অতিক্রম করার জন্য পা ফেলার ধাপের অন্বেষা সব সময়ের জন্যেই নিষ্ফল’ (৮৭)।...

Primates নামক জার্নালে বলা হয়েছে, Unfortunately, the fossil record which would enable us to trace the emergence of the apes is still hopelessly incomplete. We do not know either when or where distinctively apelike animals first began to diverge from monkey stock. (by Sarel Eimerl and irven De vore and the Editors Life (1965 P. 15)

‘দুর্ভাগ্যবশত ফসিল তথ্য যা আমাদেরকে বানরের আবির্ভাব আবিষ্কার করতে সক্ষম করবে, তা এখন পর্যন্ত নৈরাশ্যজনকভাবে অসম্পূর্ণ। আমরা এতটুকুও জানি না যে, কখন কোথায় সুস্পষ্টভাবে বানর সদৃশ পশু সর্বপ্রথম বানর স্তর থেকে বিভিন্ন অবস্থিতির দিকে যাত্রা শুরু করল’ (৮৯)।

প্রশ্ন হ’ল, বানর সদৃশ মানুষের ঐসব অংকন ও আকার-আকৃতি কি নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান সম্মত? কোন্ ফসিল কিভাবে দেখতে, কোন্টির চেহারার আকৃতি কিরূপ ছিল, চামড়া, চুল এবং গায়ের রং ইত্যাদি কি রকম ছিল তা কি ফসিল দেখে আন্দাজ করা চলে? (১২৯)।

একক জীবন বিধান

সমস্ত জীবন্ত প্রাণীর মধ্যে একটি বিধান বিরাজ করছে। কোন একটিও তা থেকে মুক্ত নয়। এ বিষয়ে ১৯৬৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত Scientific American পত্রিকা লিখেছে, Living things are enormously divers in form, but form is remarkably constant within any given line of descent. Pigs remain pigs and oak trees generation after generation. (P. 32) ‘জীবন্ত জিনিসগুলি বিশালভাবে বিভিন্ন আকার-আকৃতির। কিন্তু আকার-আকৃতি সমূহ লক্ষণীয়ভাবে ধারাবাহিক যেকোন সময়ের বংশধরদের মধ্যে। শুকর শুকরই থাকছে, ওক গাছ ওক গাছই থাকছে বংশের পর বংশ ধরে’ (৯২)।

দো-আঁশলা বীজ

বহু যুগ বহু শত বছর পর্যন্ত দো-আঁশলা বীজের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু উত্তরকালে তা কিছুমাত্র উন্নয়ন লাভে সমর্থ হয়নি। এটা তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার। কেননা এ বিশেষ চরিত্র উন্নয়নের সমস্ত কারণ ব্যবহার করা সত্ত্বেও তা সব সময় বীজ হয়েই থেকেছে, অঙ্কুরিত হ’তে পারেনি। তা অন্য কোন উদ্ভিদে রূপান্তরিত হয়নি, করা সম্ভবপরও হয়নি। আজ পর্যন্ত যত পরিবর্তনের অভিজ্ঞতাই অর্জিত হয়েছে, তা এর মৌল প্রজাতীয় সীমার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রাণী দো-আঁশলার ব্যাপারেও এ কথাই সত্য। তাদের পরিবর্তন সাধনের অশেষ চেষ্টা-যত্ন সব সময় ব্যর্থ ও নিরর্থক প্রমাণিত হ’তে বাধ্য। কেননা তা অনতিবিলম্বে বন্ধ্যা পর্যায়ে পৌঁছে যায় (৯৫)।

একটি বিড়াল ও একটি কুকুর একত্রিত হয়ে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে না। কেননা ওরা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতীয়। একটি ঘোড়া ও একটি গাধা দো-আঁশলা খচ্চর জন্মাতে পারে। কিন্তু খচ্চর বন্ধ্যা। তা তার ‘জাতির’ শেষ স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে (৯৩)।

ইংলিশ চড়–ই আমেরিকায় গিয়ে বৃহদাকার হয়ে কি প্রমাণ করেছে? প্রমাণ করেছে যে, নিজের মধ্যে পরিবর্তন সাধনের যোগ্যতা সদা বর্তমান। কিন্তু পরিবর্তন স্বীকার করেও সে চড়–ই সর্বাবস্থায় চড়–ইই থেকেছে, অন্য কিছু হয়ে যায়নি। খাপ খাওয়ানোর যোগ্যতাকে ক্রমবিকাশ বলে অভিহিত করা হ’লে মারাত্মক ভুল করা হবে’ (৯৬)। বর্তমান যুগে কিছু কিছু মানুষকে অস্বাভাবিকভাবে দীর্ঘদেহী ও স্থূলদেহী দেখা যাচ্ছে। আবার কাউকে একেবারে বেঁটে দেখা যায়। তার অর্থ এটা নয় যে, ওরা মানুষ ব্যতীত অন্য কোন জীবে পরিণত হয়েছে।

ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড) তত্ত্ব

DNA (Deoxyribo Nucleic Acid) হ’ল একটি রাসায়নিক সংমিশ্রণ। যা দিয়ে জীন (Gene) তৈরী হয়। যা জীবন্ত বস্তুগুলোর মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বিধান সর্বদা কার্যকর করে রাখে। বিজ্ঞান লেখক Rutherford Platt বলেছেন, ‘তোমার ব্যক্তিগত DNA তোমার সমগ্র দেহসত্তায় প্রায় ৬০ হাযার বিলিয়ন কণিকায় ছড়িয়ে রয়েছে। এটাই হ’ল একটি পূর্ণবয়স্ক মানবদেহের জীবন্ত কোষের গড় সংখ্যা (১১০)... এরাই কুকুরকে শূকর থেকে, পাখিকে বৃক্ষ থেকে এবং হাতিকে মশা থেকে পৃথক করে রাখে’ (১১১)। বিস্ময় উদ্রেককারী DNA বিভিন্ন প্রাণীর মৌল প্রজাতীয় সীমার মধ্যে একটি পার্থক্য সৃষ্টি করে। যা ওদের পরস্পরের মধ্যে একটা বিশাল দুর্লংঘ্য ব্যবধান রচনা করে। উল্লেখ্য যে, ১৯৫৩ সালে ডিএনএর কাঠামো আবিষ্কৃত হয় এবং ১৯৬১ সালে ভাঙ্গা হয় জেনেটিক কোড। এ দুইয়ের কারণে বিবর্তনবাদের সমস্যা ‘ধারাবাহিক দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে’ (বিবর্তন তত্ত্ব পৃ. ৪)।

দুর্লংঘ্য ব্যবধান

মানুষ ও অন্য প্রাণীর মধ্যে যে পার্থক্য এরূপ অন্য কোন ক্ষেত্রে নেই। বিশেষ করে মানস শক্তি (Mental abillity)-র ক্ষেত্রে এ ব্যবধান কল্পনাতীত এবং দুর্লংঘ্য (১১১)। পৃথিবীর বুকে অবস্থানরত প্রাণীকুলের মধ্যে একমাত্র মানুষই এমন সৃষ্টি, যারা স্বীয় জ্ঞানকে ক্রমাগতভাবে অধিক উন্নত ও ক্রমবিকশিত করে তুলতে সক্ষম। যা অন্যান্য প্রাণী খুব সামান্যই করতে পারে। তারা তাদের নির্দিষ্ট সীমাকে কখনোই অতিক্রম করতে পারে না। শিম্পাঞ্জীদের বা বানর পরিবারের অপর কোন সদস্যকে সুশিক্ষিত করে তুলবার সর্বাত্মক চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হ’তে বাধ্য। কোন নতুন জ্ঞান শিখবার ব্যাপারে ওদের যোগ্যতা অল্পতেই নিঃশেষ হয়ে যায়। ওদের স্বাভাবিক জ্ঞানের ঊর্ধ্বে ওরা কোনদিনই উঠতে পারে না। কেননা ওদের DNA ওদেরকে তার বেশী করতে দেয় না’ (১১২)। আল্লাহ বলেন, ‘যিনি প্রত্যেক বস্তুর বিশেষ আকৃতি দান করেছেন। অতঃপর তার উপযোগী হেদায়াত প্রদান করেছেন’ (ত্বোয়াহা ২০/৫০) এজন্যেই পশু-পক্ষী প্রত্যেকে আল্লাহ প্রদত্ত বোধশক্তি অনুযায়ী চলাফেরা করে। আদৌ সীমালংঘন করে না। বস্তুতঃ মানুষ আর পশুর মাঝে এক অনতিক্রম্য বিশাল ব্যবধান বিদ্যমান। (ডারউইনীয় ধরণের) ক্রমবিকাশ যদি সত্যই হ’ত, তাহ’লে এ দু’য়ের মাঝে এরূপ ব্যবধান ছিল অকল্পনীয়।

চলবে...


 
Back
Top