প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: নাসারাদেরকে ‘মাসীহী’ বলা কি ঠিক?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,859
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
66,717
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমণের পর, খৃষ্টানদেরকে মাসীহী বলা ঠিক নয়। তারা যদি সত্যিকার অর্থে মাসীহী হত, তাহলে অবশ্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনয়ন করত। কেননা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনয়ন এবং ঈসা আলাইহিস সালামের ওপর ঈমান আনয়ন একই কথা। আল্লাহ বলেন,
﴿وَإِذۡ قَالَ عِيسَى ٱبۡنُ مَرۡيَمَ يَٰبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُم مُّصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيَّ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَمُبَشِّرَۢا بِرَسُولٖ يَأۡتِي مِنۢ بَعۡدِي ٱسۡمُهُۥٓ أَحۡمَدُۖ فَلَمَّا جَآءَهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ قَالُواْ هَٰذَا سِحۡرٞ مُّبِينٞ ٦﴾ [الصف: ٦]

“স্মরণ কর সেই সময়ের কথা, যখন মারইয়ামতনয় ঈসা আলাইহিস সালাম বললেন, হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং আমি এমন রাসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমণ করবেন। তাঁর নাম হবে আহমাদ। অতঃপর যখন তিনি সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ আগমণ করেন, তখন তারা বলল, এ তো প্রকাশ্য এক জাদু।” [সূরা আস-সাফ, আয়াত: ৬] ঈসা আলাইহিস সালাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমণের সুসংবাদ এ জন্য দিয়েছেন, যাতে তারা তাঁর আনিত দীন গ্রহণ করে। কেননা কোনো বিষয়ের সুসংবাদ দেওয়ার অর্থই হলো তা গ্রহণ করা। ঈসা আলাইহিস সালাম বনী ইসরাঈলকে যার আগমণের সুসংবাদ দিয়েছেন, তিনি হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। -প্রমাণসহ আগমণ করলেন, তখন তারা তাঁর সাথে কুফুরী করল এবং জাদুকর বলে উড়িয়ে দিল। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কুফুরী করার মাধ্যমে তারা ঈসার সাথেও কুফুরী করল। কারণ, একজন নবীকে অস্বীকার করার অর্থ সকল নবীকে অস্বীকার করা। তাই খৃষ্টানদের জন্য কখনো ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী হওয়ার দাবী করা বৈধ নয়। তারা যদি সত্যিকার অর্থে ঈসা নবীর অনুসারী হত, তাহলে অবশ্যই তারা তাঁর প্রদত্ত সুসংবাদের প্রতি ঈমান আনয়ন করত। ঈসাসহ সকল নবীর নিকট থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনয়নের অঙ্গীকার নেওয়া হয়েছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ لَمَآ ءَاتَيۡتُكُم مِّن كِتَٰبٖ وَحِكۡمَةٖ ثُمَّ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مُّصَدِّقٞ لِّمَا مَعَكُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِهِۦ وَلَتَنصُرُنَّهُۥۚ قَالَ ءَأَقۡرَرۡتُمۡ وَأَخَذۡتُمۡ عَلَىٰ ذَٰلِكُمۡ إِصۡرِيۖ قَالُوٓاْ أَقۡرَرۡنَاۚ قَالَ فَٱشۡهَدُواْ وَأَنَا۠ مَعَكُم مِّنَ ٱلشَّٰهِدِينَ ٨١﴾ [ال عمران: ٨١]

“এবং আল্লাহ যখন নবীগণের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন যে, আমি যখন তোমাদেরকে কিতাব এবং জ্ঞান দান করব, অতঃপর যদি তোমাদের কাছে এমন একজন রাসূল আগমণ করেন, যিনি তোমাদের কিতাবকে সত্যায়ন করেন, তখন সে রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তাঁকে সাহায্য করবে। আল্লাহ বললেন, তোমরা কি অঙ্গীকার করলে এবং এ শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহণ করে নিলে? তখন তাঁরা বললেন, আমরা অঙ্গীকার করলাম। আল্লাহ বললেন, তাহলে তোমরা সাক্ষী থাক, আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী থাকলাম।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮১] যিনি তাদের কিতাবকে সত্যায়নকারী হিসেবে আগমণ করেছেন, তিনি হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
﴿وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ﴾ [المائ‍دة: ٤٨]

“আর আমরা এ কিতাবকে নাযিল করেছি, যা হকের সাথে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যতা প্রমাণবহনকারী এবং ঐসব কিতাবের সংরক্ষক। অতএব, তুমি তাদের পারস্পরিক বিষয়ে আল্লাহর অবতারিত এ কিতাব অনুযায়ী মীমাংসা কর। তুমি যা প্রাপ্ত হয়েছ তা থেকে বিরত হয়ে তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করো না”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৪৮] অত্র আয়াতে রাসূল বলতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বুঝানো হয়েছে। মোটকথা খৃষ্টানদের জন্য ঈসা আলাইহিস সালামের উম্মত হওয়ার দাবী করা ঠিক নয়। কারণ, তারা ঈসা আলাইহিস সালামএর সুসংবাদ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতকে অস্বীকার করেছে। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করার অর্থ ঈসা আলাইহিস সালামকে অস্বীকার করা।
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top