প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন: কৃত্রিমভাবে সন্তান নেওয়ার বিধান কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,849
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
71,894
প্রশ্নঃ কৃত্রিমভাবে সন্তান নেওয়ার বিধান কি?


উত্তরঃ আলহামদু লিল্লাহ।


কৃত্রিম উপায়ে সন্তান প্রজনন মূলতঃ দুইভাবে হয়ে থাকেঃ


(ক) অভ্যান্তরিক প্রজনন। আর তা এভাবে হয় যে, পুরুষের বীর্য সিরিঞ্জের সাহায্যে নারীর গর্ভাশয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে রাখা হয়।
(খ) বাহ্যিক প্রজনন। আর তা এইভাবে হয় যে, নারী পুরুষের বীর্য নির্দিষ্ট টেস্ট টিউবে নিয়ে মিলন ঘটানোর পর যথাসময়ে নারীর গর্ভাশয়ে রাখা হয়।


উক্ত দুই পদ্ধতির প্রজনন অনুসারে ছয় ভাবে সন্তান নেওয়া হয়ে থাকে। ইসলামী শরীয়তে তার কিছু বৈধ, কিছু অবৈধ।


প্রথমতঃ অভ্যান্তরিক প্রজননঃ
১। সঙ্গমের সময় স্বামীর বীর্য স্ত্রীর গর্ভাশয়ে কারণবশতঃ না পৌছলে তা নিয়ে সিরিঞ্জের সাহায্যে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
২। স্বামীর বীর্যে শুক্রকীট না থাকলে অন্য কোন পুরুষের বীর্য নিয়ে সিরিঞ্জের সাহায্যে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।


দ্বিতীয়তঃ বাহ্যিক প্রজননঃ
৩। স্বামী স্ত্রীর বীর্য নিয়ে টেস্ট টিউবে রেখে মিলন ঘটিয়ে যথাসময়ে তা স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
৪। স্ত্রীর গর্ভাশয় সুস্থ, কিন্তু ডিম্বাণু না থাকার ফলে স্বামীর বীর্য এবং অন্য কোন মহিলার ডিম্বাণু নিয়ে প্রজনন টেস্ট টিউবে মিলন ঘটিয়ে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
৫। স্বামীর বীর্যে শুক্রকীট না থাকলে এবং স্ত্রীর গর্ভাশয় সুস্থ, কিন্তু তার ডিম্বাণু না থাকার ফলে অন্য পুরুষের বীর্য এবং কোন মহিলার ডিম্বাণু নিয়ে প্রজনন টেস্ট টিউবে মিলন ঘটিয়ে স্ত্রীর গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া।
৬। স্ত্রীর গর্ভাশয় সন্তান ধারনে অক্ষম হলে অথবা গর্ভ ধারণের কষ্ট বরণ না করতে চাইলে স্বামী স্ত্রীর বীর্য নিয়ে টেস্ট টিউবে রেখে মিলন ঘটিয়ে যথা সময়ে তা অন্য কোন মহিলার গর্ভাশয়ে স্থাপন করে সন্তান নেওয়া যায়।


সরাসরি ব্যভিচার ছাড়া উক্ত ছয় উপায়ে সন্তান গ্রহণ প্রচলিত রয়েছে বিশ্বের বহু দেশে এবং সে জন্য বীর্য ব্যাংকও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


কিন্তু ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে এই শ্রেণীর সন্তান নেওয়ার বিধান নিম্নরূপঃ


কেবল বিলাসিতার জন্য কৃত্রিম পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়া ইসলামে বৈধ হতে পারে না। কারণ, পর্যাপ্ত কারণ ব্যতিরেকে স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের নিকট স্ত্রীর লজ্জাস্থান প্রকাশ করা বৈধ নয়। তাছাড়া চিকিৎসার জন্য প্রথমতঃ মুসলিম মহিলা ডাক্তারের সাহায্য গ্রহণ করা ওয়াজেব। তা না পাওয়া গেলে অমুসলিম মহিলা ডাক্তার। তা না পাওয়া গেলে অমুসলিম ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করানো বৈধ। তাতেও কোন পুরুষ ডাক্তারের সাথে কোন রুমে একাকিনী চিকিৎসা করানো বৈধ নয়। জরুরী হলে, সেই রুমে তার স্বামী অথবা অন্য মহিলা থাকবে।


বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণের উদ্দেশ্যে মুসলিম মহিলার ডাক্তারের কাছে যাওয়া বৈধ। তবে সন্তান গ্রহণের ছয়টি পদ্ধতির মধ্যে কেবল প্রথম ও তৃতীয় পদ্ধতি ব্যবহার করা বৈধ। আর উক্ত উভয় পদ্ধতিতে যে সন্তান হবে, তা হবে বৈধও সন্তান।


পরিশেষে সতর্কতার বিষয় এই যে, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যেন মুসলিম উক্ত দুটি বৈধ পদ্ধতিও অবলম্বন না করে, কারণ তাতেও টেস্ট টিউবের মাধ্যমে অজ্ঞাত পরিচয় শুক্রাণুর অনুপ্রবেশ ঘটার আশঙ্কা থাকে। ৫৮৫ (মাজলিসুল মাজমাইল ফিকহী)


সূত্র: দ্বীনি প্রশ্নোত্তর
লেখক: আব্দুল হামিদ ফাইযী আল মাদানী
 
Similar threads Most view View more
Back
Top