প্রশ্নোত্তর পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার হারাম হওয়ার হেকমত কি?

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,870
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
60,541
হে প্রশ্নকারী আপনি জেনে রাখুন! এবং যারাই এই প্রশ্নের উত্তর পাঠ করবে তাদেরও জেনে রাখা উচিৎ যে, প্রত্যেক মু’মিনের জন্য ইসলামী শরীয়তের বিধি-বিধান সমূহের হেকমত হচ্ছে, আল্লাহর নিম্ন লিখিত এই বাণীটিঃ ]وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمْ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ[ “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু‘মিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন কোন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না।” (সূরা আহযাব- ৩৬) কুরআন ও সুন্নাহ্‌ থেকে প্রমাণিত কোন বিষয় ওয়াজিব বা হারাম সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন উঠালেই আমরা তাকে বলবঃ এটা আপনার স্রষ্টা আল্লাহ্‌ তা’আলার নির্দেশ কিংবা আপনার রাসূল মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নির্দেশ। বিষয়টি মেনে নেয়ার জন্য এটুকু কথাই একজন মুমিনের জন্য যথেষ্ট। এই কারণে আয়েশা (রাঃ)কে যখন জিজ্ঞেস করা হল, ‘কি ব্যাপার, ঋতুবতী নারী রোযার কাযা আদায় করবে, অথচ নামাযের কাযা আদায় করবে না?’ তিনি জবাবে বললেন, ]كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلَا نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلَاةِ[ “আমরা ঋতুবতী হতাম, আমাদেরকে রোযা কাযা আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হত, কিন্তু নামায কাযা আদায় করতে নির্দেশ দেয়া হত না।” কুরআন ও সুন্নাহ্‌র উক্তি পাওয়া গেলে অন্য কোন হেকমত অনুসন্ধান করা উচিৎ নয়। বিনা দ্বিধায় মু’মিন সেটা মেনে নিবে এবং আমল করবে। কোন প্রশ্ন করবে না। অবশ্য উক্ত নির্দেশের হেতু ও হেকমত অনুসন্ধান করা নিষেধ নয়। কেননা তাতে ১) আন্তরিক প্রশান্তি বৃদ্ধি হয়, ২) বিষয়টির কারণ ও হিকমত জানা থাকলে ইসলামী শরীয়তের শ্রেষ্ঠত্ব প্রস্ফুটিত হয়। ৩) তাছাড়া বিষয়টির কারণ জানা থাকলে, একই কারণ বিশিষ্ট অন্য কোন বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন উক্তি না পাওয়া গেলে, সেখানে কেয়াস করা সম্ভব হবে। শরীয়তের বিষয়ে হেকমত জানা থাকলে উল্লেখিত তিনটি উপকার পাওয়া যায়। উল্লেখিত ভূমিকার পর উপরে বর্ণিত প্রশ্নের জবাবে আমরা বলবঃ নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত হয়েছে, পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম, নারীর জন্য হারাম নয়। এর কারণ হচ্ছে, মানুষের সৌন্দর্যের জন্য স্বর্ণ হচ্ছে সর্বাধিক মূল্যবান বস্ত। বস্তটি সৌন্দর্য ও গয়না হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। আর পুরুষের এটা দরকার নেই। অর্থাৎ পুরুষ এমন মানুষ নয় যে, তাকে অন্যের সাহায্য নিয়ে পরিপূর্ণ হতে হবে। বরং তার পৌরুষত্বের কারণে সে নিজেই পরিপূর্ণ মানুষ। তাছাড়া নিজের দিকে অন্য মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য পুরুষের সৌন্দর্য অবলম্বন করারও দরকার নেই। কিন্তু নারী এর বিপরীত। নারী অপূর্ণ, তার সৌন্দর্যকে পূর্ণতা দান করা দরকার। একারণে সর্বোচ্চ মূল্যে গয়না দিয়ে তাকে সৌন্দর্য মন্ডিত করার প্রয়োজন দেখা যায়। যাতে করে তার ঐ সৌন্দর্য স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সদ্ভাব সৃষ্টি করে, স্বামীর কাছে স্ত্রী হয়ে উঠে আবেগময়ী ও আকর্ষনীয়। আর একারণেই নারীর জন্য স্বর্ণ দ্বারা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা বৈধ করা হয়েছে, পুরুষের জন্য নয়। আল্লাহ তা’আলা নারী প্রকৃতির বিবরণ দিতে গিয়ে এরশাদ করেনঃ ]أَوَمَنْ يُنَشَّأُ فِي الْحِلْيَةِ وَهُوَ فِي الْخِصَامِ غَيْرُ مُبِينٍ[ “যে অলংকারে মন্ডিত হয়ে লালিত-পালিত হয় এবং তর্ক-বিতর্ককালে স্পষ্ট বক্তব্যে অসমর্থ?” (তাকে কি তোমরা আল্লাহর সন্তান হিসেবে সাব্যস্ত করবে?) (সূরা যুখরুফঃ ১৮) আর এভাবেই শরীয়তে পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার হারাম হওয়ার হেকমত সুস্পষ্ট হয়ে গেল। যে সমস্ত পুরুষ স্বর্ণ ব্যবহারে অভ্যস্ত, এ উপলক্ষ্যে আমি তাদেরকে নসীহত করে বলতে চাইঃ তারা এ কাজের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূলের নাফারমানী করেছে। নিজেদেরকে নারীদের কাতারে শামিল করেছে। নিজেদের হাতে বা গলায় জাহান্নামের আগুনের আঙ্গার পরিধান করেছে। যেমনটি নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তাদের উপর আবশ্যক হচ্ছে, আল্লাহ সুব্‌হানাহু ওয়া তা’আলার কাছে তওবা করা। তবে শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে পুরুষের জন্য রৌপ্য ব্যবহার বৈধ রয়েছে। অনুরূপভাবে অন্য পদার্থও ব্যবহার করা যাবে। যেমন আংটি বা ঘড়ি ইত্যাদিও ব্যবহারও করা যাবে। তবে কোন ক্রমেই যেন তা অপচয়ের পর্যায়ে না পড়ে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম। লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top