সালাত পুরুষদের জন্য জামাআতে সলাত পড়ার বিধান

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
1,103
Comments
1,294
Solutions
1
Reactions
12,185
জামাআতে সলাত আদায়ের ব্যাপারে আলিমগণ মতভেদ করেছেন। যাকে দুটি প্রধান মতামতে সংক্ষিপ্ত করা যেতে পারে:

প্রথম অভিমত: ওযর না থাকলে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য জামাআতে সলাত আদায় করা ওয়াজিব:
এ মতটি ইবনু মাসউদ ও আবু মুসা হতে হাদীস বর্ণিত রয়েছে। আত্বা, আওযায়ী এবং আবু সাওর [রহিমাহুল্লাহ] এ মত গ্রহণ করেছেন। এটাই ইমাম আহমাদ ও ইবনু হাযম [রহিমাহুল্লাহ]-এর অভিমত। শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ [রহিমাহুল্লাহ]-এর নির্বাচিত মত।

তবে তাদের মতানৈক্য রয়েছে, সলাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য জামাআত শর্ত কিনা?

১. মহান আল্লাহর বাণী, ﴿وَإِذَا كُنْتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلاَةَ﴾
“আপনি যখন মুসলিমদের মাঝে থাকবেন এবং (যুদ্ধাবস্থায়) তাদের (ইমামতির) জন্য সলাতে দাঁড়াবেন... ।”

তাঁরা বলেছেন, মহান আল্লাহ উক্ত আয়াতে ভয়ভীতির অবস্থায়ও জামাআতের আদেশ করেছেন। সুতরাং নিরাপদ অবস্থায় তা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অতি উত্তম।

এ ছাড়াও সলাতুল খওফে জামাআতের কারণে অনেক কর্ম কমানো হয়। যদি জামাআতে সলাত ওয়াজিব না হতো তাহলে তা ভয়ের সময়ে আদায় করা অনুমোদন দেওয়া হতো না।

২. মহান আল্লাহ আরও বলেছেন, ﴿وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِيْنَ﴾ “তোমরা রুকূকারীদের সাথে রুক‚ করো।” [সূরা বাক্বারাহ: ৪৩]

উক্ত আয়াত রুক‚কারীদের সাথে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সুতরাং এটি জামাআতে সলাত আদায়ের নির্দেশ এবং الأمر বা আদেশের সাধারণ অর্থ তা ওয়াজিব হওয়াকে নির্দেশ করে।

৩. আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল বলেছেন:
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُهُمْ، أَنَّهُ يَجِدُ عَرْقًا سَمِينًا، أَوْ مِرْمَاتَيْنِ حَسَنَتَيْنِ، لَشَهِدَ العِشَاءَ.

“যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমার ইচ্ছা হয় কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই। অতঃপর সলাতে আদায়ের আদেশ দেই, সলাতের আযান দেওয়া হবে। এরপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করা নির্দেশ দেই। আর আমি ওই পুরুষদের নিকট যাই এবং (যারা সলাতে শামিল হয়নি) তাদের ঘর জ্বালিয়ে দেই। যে মহান সত্তার হাতে আমর প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোস্তহীন মোটা হাড় বা দুটি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে ইশার জামাআতে হাযির হতো।”

তাঁরা বলেন, জামাআতে সলাত ফরযে আইন হওয়ার জন্য এটি একটি স্পষ্ট হাদীস। কেননা যদি শুধু সুন্নাত হতো, তবে জামাআত ত্যাগকারীর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো না। আর যদি তা ফরযে কিফায়া হতো তবে আল্লাহর রসূল ও তাঁর সাহাবীদের আদায়ই সবার জন্য যথেষ্ট হয়ে যেত।

এই হাদীস দ্বারা অবশ্য প্রত্যেক ব্যক্তির উপর জামাআতে সলাত ওয়াজিব হওয়ার দলীল প্রদানের বিপক্ষে কয়েকটি উত্তর দেওয়া হয়েছে। যেমন-এই হাদীস দ্বারা মুনাফিকরা উদ্দেশ্য, মুমনিগণ নয়। এখানে তিনি শুধু ইচ্ছা পোষণ করেছেন কিন্তু কাজে পরিণত করেননি। আর যদি তা ওয়াজিব হতো তাহলে তিনি তাদেরকে মাফ করতেন না। এই হাদীস দ্বারা জুমুআর সলাত উদ্দেশ্য। যেমন অন্য বর্ণনায় বর্ণিত হয়েছে ইত্যাদি।
ওয়াজিবপন্থীগণ এসবের প্রত্যেকটির উত্তর দিয়েছেন, যার বর্ণনা এখানে অনেক দীর্ঘ হবে।

৪. আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ أَعْمَى، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّهُ لَيْسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ، فَسَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ، فَيُصَلِّيَ فِي بَيْتِهِ، فَرَخَّصَ لَهُ، فَلَمَّا وَلَّى، دَعَاهُ، فَقَالَ: هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَأَجِبْ

“নাবী -এর কাছে একজন অন্ধ সাহাবী এসে বলেন, আল্লাহর রসূল! আমার এমন কেউ নেই, যে আমাকে মাসজিদে নিয়ে যাবে। তিনি আল্লাহর রসূলের নিকট অনুমতি চাইলেন যাতে ঘরে সলাত আদায়ের অবকাশ দেওয়া হয়। আল্লাহর রসূল তাকে অনুমতি দিলেন। সে ফিরে যাচ্ছিল; এরমধ্যে তিনি তাকে আবার ডাকলেন এবং বললেন: তুমি কি সলাতের আযান শুনতে পাও? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন: তবে অবশ্যই আযানের সাড়া দিবে।”

৫. মালিক বিন হুওয়াইরিস হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের গোত্রের লোকদের সাথে নাবী -এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন আল্লাহর রসূল আমাদেরকে বললেন:
إِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ، وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ.

“যখন সলাতের সময় উপস্থিত হবে তখন তোমাদের একজন যেন আযান দেয় এবং যে ব্যক্তি বয়সে বড়ো, সে যেন তোমাদের ইমামতি করে।”

৬. আবুদ দারদা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল বলেছেন:
مَا مِنْ ثَلَاثَةٍ فِي قَرْيَةٍ وَلَا بَدْو وَلَا تُقَامُ فِيهِمُ الصَّلَاةُ إِلَّا وَقَدِ اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَعَلَيْكَ بِالْجَمَاعَةِ فَإِنَّمَا يَأْكُلُ الذِّئْبُ الْقَاصِيَةَ.

“যে গ্রাম বা জঙ্গলে তিনজন মানুষও যদি বসবাস করেবে, সেখানে জামাআতে সলাত আদায় করা না হলে তাদের উপর শয়তান আধিপত্য বিস্তার করে। অতএব, তুমি জামাআতকে নিজের জন্য অপরিহার্য করে নাও। কার, দলচ্যুত ছাগলকে নেকড়ে ধরে খেয়ে ফেলে।

৭. ইবনু আব্বাস হতে বর্ণিত। নাবী বলেছেন:
مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يُجِبْ، فَلَا صَلَاةَ لَهُ إِلَّا مِنْ عُذْرٍ

“যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শোনা সত্তে¡ও কোনো ওযর ছাড়া জামাআতে সলাত আদায় থেকে বিরত থাকে, তার সলাত কবুল হবে না।” সঠিক কথা হলো হাদীসটি মাওফুক।

৮. আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ، وَقَالَ: ্রإِنْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنَ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.

“আমরা দেখেছি, স্পষ্ট মুনাফিক অথবা অসুস্থ ব্যক্তি ব্যতীত কেউ জামাআত থেকে অনুপস্থিত থাকত না। যদি অসুস্থ হতো দুজনের উপর ভয় করে মাসজিদে যেত এবং তাকে কাতারে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হতো। আর আল্লাহর রসূল আমাদেরকে হিদায়াতের রীতিনীতি শিখিয়ে দিয়েছেন। আর হিদায়াতের রীতিনীতির হলো, যে মাসজিদে আযান দেওয়া হয় সে মাসজিদে সলাত আদায় করা।”

প্রতিউত্তরে বলা হয়েছে যে, এটি একজন সাহাবীর বক্তব্য মাত্র। এতে শুধু জামাআতে নিয়মিত শরীক থাকা এবং পিছনে না থাকার কথা বর্ণিত হয়েছে। আর এ ধরনের হাদীস দ্বারা ওয়াজিব সাব্যস্ত হয় না। এতে তাদের জন্য দলীল রয়েছে যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার শাস্তিকে আবু হুরায়রা -এর হাদীসে মুনাফিকদের সাথে নির্দিষ্ট করেন।

দ্বিতীয় অভিমত: জামাআতে সলাত ওয়াজিব আইন বা আবশ্যকীয় ওয়াজিব নয়:
এটা অধিকাংশ বিদ্বান আলিমের মত। যাদের মধ্যে ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক ও ইমাম শাফিঈ [রহিমাহুল্লাহ] অন্যতম।

তবে তা কি সুন্নাত অথবা সুন্নাত মুয়াক্কাদাহ না কি ফরয কিফায়া? এ ব্যাপারে তাঁদের মাঝে মতানৈক্য বিদ্যমান রয়েছে। তাদের দলীলসমূহ রূপ:

১. নাবী (সা:) -এর বাণী: صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً “একাকী সলাত আদায়ের চেয়ে জামাআতে সলাত আদায় করলে সাতাশ গুণ মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।” এ ধরনের অর্থবোধক আরও অন্যান্য হাদীস রয়েছে।
তাঁরা বলেন, মর্যাদার এ তারতম্য মৌলিক ফযীলতের ক্ষেত্রে শরীক হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করে। আর এতে প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ফরয আইন প্রমাণ হয় না। কেননা একথা বলা হয় না যে, ওয়াজিব আদায় করা অতি উত্তম জামাআত ছেড়ে দেওয়ার চেয়ে। আর এ কথা বলা হয়নি যে, হাদীসের শব্দটি (افعل)-এর ওযনে ইসমে তাফযীলের শব্দ। যা দুই দিকের একটি গুণকে প্রমাণ করে ও অপরটিকে না-বোধক করে। অনুরূপভাবে ইসমে তাফযীল একক সলাত শব্দের দিকে মুযাফ হলেও এমনটি হবে। কেননা এটা সাধারণভাবে শুধু ইসমে তাফযীলের أفعل ক্ষেত্রে সঠিক হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এটা (من)-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত হবে না। এছাড়া সহীহ মুসলিমে ভিন্ন কতিপয় শব্দ ব্যবহার হয়েছে। যেমনتزيد عن صلاته وحده অর্থাৎ একাকী সলাত আদায়ের চেয়ে মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। আর এই হাদীস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণ হলো যে, একাকী সলাত আদায় করলে বিশুদ্ধ হওয়ার প্রমাণ রয়েছে।

প্রথমপক্ষ উত্তরে বলেছেন, মর্যাদা ও সাওয়াবের এই তারতম্য ওযরগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যার সলাত মাসজিদ ছাড়া অন্যত্র জায়েজ হবে। এটা জামাআতে সলাত আদায়ের ফযীলত প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদীস নয়।

২. ইয়াযিদ বিন আসওয়াদ -এর বর্ণিত হাদীসে ঐ দুই ব্যক্তির ঘটনা আলোচনা হয়েছে, যারা তাদের বাসস্থানে সলাত আদায় করেছিল আর মাসজিদে এসে জামাআতে সলাত পড়েনি। আল্লাহর রসূল তাদেরকে বললেন:
فَلَا تَفْعَلَا، إِذَا صَلَّيْتُمَا فِي رِحَالِكُمَا، ثُمَّ أَتَيْتُمَا مَسْجِدَ جَمَاعَةٍ فَصَلِّيَا مَعَهُمْ، فَإِنَّهَا لَكُمَا نَافِلَةٌ

“এরপর তোমরা এমন করো না। যখন তোমরা বাড়িতে সলাত আদায় করেছ, অতঃপর মাসজিদে এসে জামাআত পেলে তাদের সাথে সলাত পড়বে। তখন এটা তোমাদের জন্য নফল হিসেবে গণ্য হবে।”

তারা (অধিকাংশ) বলেন, তাদের বাড়িতে সলাত আদায়কে তিনি বাতিল করেননি।
প্রতিউত্তরে বলা হয়েছে, এটি একটা বিশেষ ঘটনা যেখানে তাদের জন্য জামাআত ত্যাগের ওযর রয়েছে।

৩. আবু মুসা -এর বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, নাবী বলেছেন:
قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَعْظَمُ النَّاسِ أَجْرًا فِي الصَّلاَةِ أَبْعَدُهُمْ، فَأَبْعَدُهُمْ مَمْشًى وَالَّذِي يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الإِمَامِ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنَ الَّذِي يُصَلِّي، ثُمَّ يَنَامُ وفي لفظ لمسلم: حتى يصليها مع الإمام في جماعة ...

“নাবী বলেন, (মাসজিদ হতে) যে যত অধিক দূর থেকে সলাতে আসে, তার তত বেশি সওয়াব। আর যে ব্যক্তি ইমামের সাথে সলাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার সওয়াব সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী সলাত পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে।”
মুসলিমের এক বর্ণনায় রয়েছে যে, ইমামের সাথে জামাআতে সলাত আদায় করা পর্যন্ত... ।
এটা স্পষ্ট বিবরণ যাতে প্রমাণিত হয়, একাকী সলাত আদায়কারী ও জামাআতে আদায়কারী উভয়েই মূল সাওয়াবে অংশ হবে।
আমি বলব, আমার মতে তাদের উল্লিখিত দলীলসমূহের মধ্যে এটা অধিক শক্তিশালী।

৪. ইবনু উমার -এর বর্ণিত হাদীস। তিনি বলেন, নাবী খায়বার যুদ্ধে বলেছেন:
مَنْ أَكَلَ مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ - يَعْنِي الثُّومَ - فَلاَ يَقْرَبَنَّ مَسْجِدَنَا

“যে ব্যক্তি এ গাছ তথা রসুন খায়, সে যেন আমাদের মাসজিদের নিকটবর্তী না হয়।”
আরও এ ধরনের অর্থবোধক হাদীসের প্রেক্ষিতে তারা বলেন, এ ক্ষেত্রে মুসল্লীর জন্য দুইটি কাজের যে-কোনো একটি করা আবশ্যক। হয় এ জিনিসগুলো খাওয়া বৈধ এবং জামাআতে সলাত আদায় করা সবার জন্য ফরয না। অথবা জামাআতে সলাত আদায় করা প্রত্যেকের জন্য ফরয এবং এ ধরনের কেনো কিছু খাওয়া বৈধ না।
অধিকাংশ আলিম খাওয়াকে বৈধ করেছেন (অর্থাৎ রসুন, পিঁয়াজ ইত্যাদি খাদ্য) । সুতরাং জামাআতে সলাত আদায় করা প্রত্যেকের জন্য ফরয না। কেননা এ জিনিস খেয়ে জামাআত ছেড়ে দেওয়া জায়েয।

এর উত্তরে বলা হয়েছে যে, জামাআতে সলাত ওয়াজিব। আর তা রসুন-পিঁয়াজ খাওয়া পরিহার করা ব্যতীত পরিপূর্ণ সম্ভবও না। তাই সলাতের সময়ে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব।

৫. ওই ব্যক্তির হাদীস দ্বারা প্রমাণ দেওয়া যেতে পারে-
اَلرَّجُلُ الَّذِيْ صَلَّى خَلْفَ مُعَاذٍ فَأَطَالَ الْقِرَاءَةَ فَتَنَحَّى وَصَلَّى مُنْفَرِدًا ثُمَّ شَكَا إِلَى النَّبِيَّ صَلى الله عَليْه وَسَلَّم وَلَمْ يُنْكِرْ عَلَيْهِ

“এক ব্যক্তি মুয়ায -এর পিছনে সলাত আদায় করছিল। তিনি (মুয়ায) সে সলাতে কিরাআত দীর্ঘ করলেন, ফলে উক্ত সাহাবী জামাআত বর্জন করে একাকী সলাত আদায় করে। বিষয়টি নাবী -এর নিকটে উপস্থাপন করলে তিনি তার এ বিষয়টাকে অপছন্দ মনে করেননি।”

এর উত্তরে বলা হয়েছে যে, ইমামের দীর্ঘ কিরাআতে সলাত আদায় করাটাও জামাআত পরিত্যাগ করার একটি ওযর।

এ মাসআলায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মত:

পূর্বে বর্ণিত হাদীসসমূহের মধ্যে যথাসম্ভব সমন্বয় করাই অপরিহার্য। আমার দৃষ্টিতে সকল দলীল একত্রিত করে একথা নিশ্চিতভাবে প্রতীয়মান হয় যে, জামাআতে সলাত আদায় করা ফরয কিফায়া। যেমনটি ইমাম শাফিঈ [রহিমাহুল্লাহ] বলেছেন। এটাই ন্যায়সঙ্গত ও সঠিক মত । এছাড়াও জেনে রাখা উচিত যে, বিনা ওযরে জামাআত পরিত্যাগ করা এবং জামাআতের প্রতি অবিচল না থাকলে দুর্ভাগা ও বঞ্চিত হতে হবে। মহান আল্লাহ এ বিষয়ে অধিক জানেন।

[প্রকশিতব্য বই: সহীহ ফিকহুস সুন্নাহ ২য় খন্ড
অনুবাদ, সম্পাদনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে: শাইখ খলীলুর রহমান শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র]
 
Similar threads Most view View more
Back
Top