সালাত জানাযার সালাতে প্রথম তাকবীরের পর সানা বা সালাত শুরুর দোআ কি পড়বে?

    Nobody is reading this thread right now.

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
776
Comments
930
Reactions
8,192
এ ব্যাপারে দু'টি মত রয়েছে,

এক. (নীরবে সানা পড়বে)। হানাফী মাযহাবের আলেমগণ সানা পড়ার কথা বলে থাকেন, তা সরাসরি কোনো হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। যদিও তারা এ ব্যাপারে একটি ব্যাপক দলীল দিয়ে প্রমাণ দিতে চেষ্টা করেন, আর তা হচ্ছে

(১) ফাদ্বালাহ ইবন উবায়েদ রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “যখন তোমাদের কেউ সালাত পড়ে, তখন সে যেন আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে সালাত শুরু করে আর তার ওপর সানা পড়ে। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরূদ পড়ে। এরপর যা ইচ্ছে দো'আ করে।” [আবু দাউদ: ১৪৮১; মুসনাদে আহমাদ: ২৩৯৩৭; তিরমিযী, হাদীস নং-৪৭৭; সহীহ ইবন খুজাইমা: ৭১০]

তারা বলেন, হাদীসটি যদিও তাশাহহুদের ক্ষেত্রে, তবুও এর দ্বারা সকল সালাতে সানা থাকার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণিত হচ্ছে। সুতরাং জানাযার সালাতের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে।

অবশ্য এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের আমল রয়েছে। যেমন,

(২) আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি যখন কোনো মাইয়্যেতের জানাযার সালাত পড়তেন তখন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করতেন তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ পড়তেন অতঃপর বলে দো'আ করতেন। [মুসান্নাফে ইবন আবী শাইবাহ, হাদীস ১১৪৯৪]

(৩) আবু সাঈদ মাকবুরী থেকে বর্ণিত, তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহুকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কীভাবে জানাযার সালাত পড়েন? আবু হুরায়রা রাখিয়াপ্পার আন
বললেন, আল্লাহর কসম অবশ্যই আমি তোমাকে বলব। আমি মাইয়্যেতের (ঘর থেকে) পরিবারের সাথে আসি। অতঃপর যখন মাইয়োতকে রাখা হয় আমি তাকবীর দেই এবং আল্লাহর প্রশংসা করি। তারপর নবীর ওপর দুরূদ পড়ি। অতঃপর এই দোআ করি। [মুওয়াত্তা মালিক, হাদীস ৫২১; মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৬৪২৫; মুসান্নাফে ইবন আবি শাইবাহ, হাদীস ১১৪৯৫]

(৪) আবদুল্লাহ ইবন 'আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা থেকে যে সালাতুল জানাযার নিয়ম বর্ণিত হয়েছে সেখানে এসেছে, তাবেয়ী আবু হামযা রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি তাঁকে (ইবনে আব্বাসকে) জিজ্ঞাসা করলাম, কা'বার ভিতরে সালাত কীভাবে পড়ব? তিনি উত্তরে বললেন, "যেভাবে সালাতুল জানাযা পড়; তাসবীহ পড়বে, তাকবীর দিবে, তবে রুকু-সাজদাহ করবে না। এরপর আল্লাহর ঘরের কোণগুলোর কাছে তাসবীহ করবে, তাকবীর দিবে, রোনাজারি করবে ও ইস্তিগফার করবে। তবে রুকূ ও সাজদাহ করবে না। [ফতহুল বারী শরহু সহীহিল বুখারী ৩/৫৪৮]

তাছাড়া তাবেয়ীগণের আমলও আছে, যেমন,

(৫) প্রখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহিমাহুল্লাহ থেকে এসেছে, তিনি বলেন, প্রথম: আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা করা (সানা পড়া)। দ্বিতীয়: রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ পড়া। তৃতীয়: মাইয়্যেতের জন্য দো'আ করা। চতুর্থ: সালাম (ফিরিয়ে শেষ করা)। ইমাম মুহাম্মাদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, আমরা এটাই গ্রহণ করি। আর এটাই ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ'র মত। [ইমাম মুহাম্মাদ রাহিমাহুল্লাহ, আল-আছার, ২৩৮]

(৬) ইমাম তিরমিযী বলেন, “আর কতক আহলে ইলম বলেন, 'জানাযার সালাতে পড়া হবে না, এ তো শুধু আল্লাহর প্রশংসা, নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ এবং মাইয়্যেতের জন্য দো'আ। এটি সুফিয়ান সাওরী রাহিমাহুল্লাহ ও কূফার একাধিক মনীষীর অভিমত। [জামে তিরমিযী, ১০১১ নং হাদীসের অধীনে]

দুই. এ ব্যাপারে শাফেয়ী ও হাম্বলীদের মত হচ্ছে, তাকবীরের পরে 'সানা' নেই।আউযুবিল্লাহ পড়েই সূরা ফাতিহা শুরু করবে। তাদের মতের সপক্ষে দলীল হচ্ছে,

(১) আবু উমামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জানাযার সালাতের সুন্নাত হচ্ছে, ইমাম তাকবীর দিবে, তারপর প্রথম তাকবীরের পর নিঃশব্দে সূরা ফাতিহা পড়বে......[ইবনুল জারূদ, আল-মুনতাকা, ২৬৫; বাইহাকী, আল-কুবরা (৪/৩৯); শাফেয়ী, আল-উম্ম (১/২৩৯-২৪০)]

(২) যারাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের জানাযার সালাত বর্ণনা করেছেন তারা কেউ স্পষ্ট করে 'সানা'র কথা বর্ণনা করেননি, সুতরাং না পড়াই হচ্ছে যুক্তিযুক্ত।

প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত: বস্তুত সানা পড়াই প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত। কারণ সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে অনেকেই পড়েছেন। আর এর বিপরীত কিছু সাহাবায়ে কেরাম থেকে সরাসরি বর্ণিত হয়নি। হতে পারে, যারা তা উল্লেখ করেননি তারা এটাকে যেকোনো সালাতের শুরুর অংশ মনে করেই বলেননি।

– উমদাতুল আহকাম, ১ম খন্ড
অনুবাদক ও ব্যখ্যাকার: প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া
সবুজপত্র পাবলিকেশন্স
 
আমি সানা পড়া মুস্তাহাব মনে করি এবং ছেড়ে দেওয়া ঘারতি। আপনি কি মুস্তাহাব মনে করেন নাকি শুধু পোস্ট করেছেন। যাইহোক, আমি আপনার পোস্ট কে আরো সৌন্দর্য মণ্ডিত করছি :-
أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْكُتُ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَبَيْنَ الْقِرَاءَةِ إِسْكَاتَةً ـ قَالَ أَحْسِبُهُ قَالَ هُنَيَّةً ـ فَقُلْتُ بِأَبِي وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِسْكَاتُكَ بَيْنَ التَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةِ مَا تَقُولُ قَالَ ‏ "‏ أَقُولُ اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَاىَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَاىَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ ‏"‏‏
"আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরে তাহরীমা ও কিরাআতের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মাতাপিতা আপনার উপর কুরবান হোক, তাকবীর ও কিরাআত এর মধ্যে চুপ থাকার সময় আপনি কী পাঠ করে থাকেন? তিনি বললেনঃ এ সময় আমি বলি-

‘‘হে আল্লাহ! আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন ব্যবধান করে দাও যেমন ব্যবধান করেছ পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ আমাকে আমার গুনাহ হতে এমনভাবে পবিত্র কর যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়। হে আল্লাহ আমার গোনাহকে বরফ, পানি ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।’’

এই হাদীসটি
لَا صَلَاةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَأْ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করে না তার ছালাত হয় না’। "'' এর অনুরূপ গুরুত্বপূর্ণ ও আম হাদীস।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top