মৃত্যু ও পরবর্তী ক্বানত্বারাহ

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Top Active User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
936
Comments
1,116
Solutions
1
Reactions
10,160
পুলছিরাতে একটি অংশের নাম ক্বানত্বারাহ (قَنْطَرَة)। ইমাম কুরতুবী এটাকে দ্বিতীয় পুলছিরাত হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।[1] পুলছিরাত পার হওয়ার পরে এখানে সেই সকল বান্দাকে থামিয়ে দেওয়া হবে যারা পরস্পরের উপর যুলুম করেছিল। অতঃপর তাদের ক্বিছাছ বা বদলা নেওয়া হবে এই ক্বানত্বারাহ নামক পুলের উপর। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মু’মিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ক্বানত্বারাহর ওপর তাদের দাঁড় করানো হবে, যা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যস্থলে অবস্থিত। দুনিয়ায় যারা একে অপরের উপর যুলুম করেছিল তাদের প্রতিশোধ গ্রহণ করানো হবে। তারা যখন পাক-সাফ হয়ে যাবে, তখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে’। [2]

ইমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন, ক্বানত্বারাহ হ’ল আখেরাতের দ্বিতীয় পুলছিরাত, যা জাহান্নাম ও জান্নাতের মাঝে অবস্থিত। প্রথম পুলছিরাত পার হওয়ার পরে এই পুলছিরাত আসবে। আমল ওযন করার সময় যাদের নেকীর পাল্লা হালকা হবে, তারা প্রথম পুলছিরাতে ক্ষত-বিক্ষত হবে অথবা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। কিন্তু মুমিনরা প্রথম পুলছিরাত পার হয়ে যাবে এবং ক্বানত্বারাহ্তে তাদেরকে থামানো হবে। তবে ক্বানত্বারাহ থেকে আর কেউ জাহান্নামে ফিরে যাবে না। আর এখানকার ক্বিছাছ হাশরের মাঠের ক্বিছাছের মত নয়; বরং এটা বিশেষ ধরনের ক্বিছাছ, যার মাধ্যমে মুমিনদের অন্তরগুলোকে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে পরিচ্ছন্ন করা হবে। [3] হাফেয ইবনে কাছীর (রহঃ) ইমাম কুরতুবীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ক্বানত্বারাহ হ’ল দ্বিতীয় পুলছিরাত, যেটা কেবল মুমিনদের জন্য খাছ। এখান থেকে কেউ জাহান্নামে পতিত হবে না। কেননা জাহান্নামের আগুন পার হয়ে যাওয়ার পর ক্বানত্বারাহ আসবে। এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আল্লাহই সর্বাধিক অবগত। [4]

শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, ‘ক্বানত্বারাহও একটি সেতু। তবে এটা পুলছিরাতের চেয়ে ছোট সেতু, যা (জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি) কোন নদীর পানি বা তৎসদৃশ কোন কিছুর উপরে নির্মিত। তবে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে ইখতেলাফ রয়েছে যে, ক্বানত্বারাহ কি পুলছিরাতের একটি অংশ না-কি স্বতন্ত্র কোন সেতু। আমি বলব, এ ব্যাপারে আল্লাহ্ই সবচেয়ে ভালো জানেন। আমাদের শুধু এতটুকু বিশ্বাস থাকতে হবে যে, ক্বানত্বারাহর উপরে বান্দাদেরকে থামানো হবে’। [5]

রেফারেন্স:
[1]. ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাৎহুল ক্বাদীর, ১১/৩৯৯

[2]. বুখারী হা/৬৫৩৫; মিশকাত হা/৫৫৮৯

[3]. কুরতুবী, আত-তাযকিরাহ, ২/৩৬

[4]. ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ২০/১০১

[5]. ওছায়মীন, শারহুল আক্বীদাহ আল-ওয়াসিত্বিইয়াহ, পৃ. ৫২০

--- মাসিক আত তাহরীক
 
Back
Top