কুপ্রবৃত্তির ছোবল থেকে মুক্তির উপায়

Golam Rabby

Knowledge Sharer

ilm Seeker
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
Joined
Jan 3, 2023
Threads
1,103
Comments
1,294
Solutions
1
Reactions
12,186
আল্লামা ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) অনেকগুলো বিষয় উল্লেখ করেছেন যা অবলম্বন করলে আল্লাহর মর্যিতে যে কোন ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তির ছোবল থেকে মুক্তি পাবে। তিনি বলেছেন, ‘যদি প্রশ্ন তোলা হয়- যে কুপ্রবৃত্তির মাঝে ডুবে আছে সে কীভাবে তা থেকে মুক্তি পেতে পারে? উত্তরে বলা যায়, আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তায় নিম্নের কাজগুলো তাকে মুক্তি দিতে পারে।-

প্রথম : কুপ্রবৃত্তি বা খেয়ালখুশির অনুসরণ না করতে মন থেকে পাকাপোক্ত সঙ্কল্প করা।

দ্বিতীয় : ধৈর্য-সহিষ্ণুতা অবলম্বন করা। যখন মনের মধ্যে খেয়ালখুশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে, তখনই ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতির মুকাবিলা করতে হবে। ধৈর্য হারানো চলবে না।

তৃতীয় : যাতে এক্ষেত্রে ধৈর্য অবলম্বন করা যায় সেজন্য মানসিক শক্তি বাড়াতে হবে। বলবীর্যতা তো আসলে সময়মত ধৈর্যের সাথে টিকে থাকার নাম। আর বান্দা ধৈর্যের মাধ্যমে যে জীবন-জীবিকা লাভ করে তাই উত্তম।

চতুর্থ : কামনা-বাসনার অনুসরণ না করলে ভবিষ্যতে যে শুভ পরিণতি অপেক্ষা করছে তা ভেবে দেখা এবং ধৈর্যের দাওয়া দ্বারা আরোগ্য লাভ করা।

পঞ্চম : খেয়ালখুশির আনুগত্য করলে তাৎক্ষণিক স্বাদ হয়তো মিলবে। কিন্তু সেজন্য কী পরিমাণ খেসারত ও যন্ত্রণা পোহাতে হবে তা লক্ষ্য করা।

ষষ্ঠ : আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার অবস্থান আর মানুষের মনে তার যে জায়গা আছে তা বহাল রাখতে সচেষ্ট হওয়া। খেয়ালখুশিমত চলা থেকে এটা তার জন্য অনেক উত্তম ও উপকারী।

সপ্তম : পাপের স্বাদ থেকে চারিত্রিক নিষ্কলুষতা ও পাপ থেকে দূরে থাকার স্বাদকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

অষ্টম : সে যে তার খেয়ালখুশি নামক শত্রুকে পরাস্ত ও তাকে পদানত করতে পেরেছে সেজন্য আনন্দিত হওয়া। এজন্যও আনন্দিত হওয়া যে তার শত্রু নিজের ব্যর্থতার জন্য ক্রোধ ও দুঃখ-বেদনায় জর্জরিত হয়ে ফিরে গেছে। তার থেকে সে তার আশা পূরণ করতে পারেনি। আল্লাহ তা‘আলাও চান বান্দা যেন তার শত্রুকে ক্ষুব্ধ ও রাগান্বিত করার মত আমল করে। আল্লাহ কুরআনুল কারীমে বলেছেন, وَلَا يَطَئُوْنَ مَوْطِئًا يَغِيْظُ الْكُفَّارَ وَلاَ يَنَالُوْنَ مِنْ عَدُوٍّ نَيْلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ بِهِ عَمَلٌ صَالِحٌ ‘এমন কোন স্থানে তারা যাবে, যেখানে যাওয়ায় কাফিরদের তাদের উপর ক্রোধ সৃষ্টি হবে এবং শত্রুদের কাছ থেকেও যুদ্ধলব্ধ গণীমত হিসাবে তারা কিছু লাভ করবে। মূলতঃ এর প্রতিটি কাজের বদলে তাদের জন্য নেক আমল লেখা হবে’ (তওবা ৯/১২০)। প্রিয়জনের শত্রুকুলকে ক্ষেপিয়ে তোলা ও ক্ষুব্ধ করে তোলা সত্যিকারের মহববতের লক্ষণ।

নবম : খেয়ালখুশির বিরোধিতা করলে দুনিয়াতেও সম্মান মিলবে, আখিরাতেও সম্মান মিলবে, প্রকাশ্যেও ইযযত লাভ হবে, গোপনেও ইযযত লাভ হবে। পক্ষান্তরে খেয়ালখুশির অনুসরণ করলে সর্বত্রই ধ্বংস ডেকে আনবে, প্রকাশ্যেও সে অপদস্থ হবে অপ্রকাশ্যেও অপদস্থ হবে। এসব কথা মনে করে এবং জেনে বুঝে সকলকে খেয়ালখুশির অনুসরণ না করে বরং বিরোধিতায় সচেষ্ট হ’তে হবে।

[রাওযাতুল মুহিববীন, পৃঃ ৪৭১-৪৭২]
[খেয়াল-খুশির অনুসরণ (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক]
 
Back
Top