প্রশ্নোত্তর কীভাবে তোমার রবকে চিনবে?

Joined
Jul 2, 2024
Threads
7
Comments
7
Reactions
163
আল-কুরআনে মহান রব দু’টি উপায়ে তাঁকে চেনার জন্য বান্দাদেরকে আহ্বান করেছেন। সে পদ্ধতি দু’টি হলো:

প্রথমত: তাঁর সৃষ্টিকর্মের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া ও গভীরভাবে তাকানো।

দ্বিতীয়ত: তাঁর আয়াতসমূহে চিন্তা ও সেগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা; তন্মধ্যে প্রথম প্রকার হলো তাঁর দৃশ্যমান আয়াত বা নিদর্শন আর দ্বিতীয় প্রকার হলো বিবেকগ্রাহ্য শ্রবণযোগ্য আয়াত বা নিদর্শন।

প্রথম প্রকারের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ وَٱلۡفُلۡكِ ٱلَّتِي تَجۡرِي فِي ٱلۡبَحۡرِ بِمَا يَنفَعُ ٱلنَّاسَ١٦٤﴾ [البقرة: ١٦٤]

“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে, সে নৌকায় যা সমুদ্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর বস্তু নিয়ে চলে (রয়েছে নিদর্শনসমূহ এমন জাতির জন্য, যারা বিবেকবান)।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৬৪] এ আয়াতের শেষ পর্যন্ত।

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,

﴿إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ١٩٠﴾ [ال عمران: ١٩٠]

“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নিদর্শন।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০] এ জাতীয় আয়াত আল-কুরআনে অনেক রয়েছে।

দ্বিতীয় প্রকারের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَ٢٤﴾ [محمد : ٢٤]

“তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা- ভাবনা করে না?” [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,

﴿ أَفَلَمۡ يَدَّبَّرُواْ ٱلۡقَوۡلَ٦٨﴾ [المؤمنون : ٦٨]

“তারা কি এ বাণী সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে না?” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ৬৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,

﴿كِتَٰبٌ أَنزَلۡنَٰهُ إِلَيۡكَ مُبَٰرَكٞ لِّيَدَّبَّرُوٓاْ ءَايَٰتِهِ٢٩﴾ [ص : ٢٩]

“আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে।” [সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯] এ ধরণের অনেক আয়াত রয়েছে।

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,

﴿سَنُرِيهِمۡ ءَايَٰتِنَا فِي ٱلۡأٓفَاقِ وَفِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُ ٱلۡحَقُّ٥٣﴾ [فصلت: ٥٣]

“বিশ্বজগতে ও তাদের নিজদের মধ্যে আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয় যে, এটি (কুরআন) সত্য।” [সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৫৩] অর্থাৎ আল-কুরআন সত্য। এ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে তার দৃশ্যমান সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দেখাবেন যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয় যে, তিলাওয়াতকৃত এ কুরআন সত্য।

তারপর তিনি তাঁর দেওয়া সাক্ষ্যকেই তার পক্ষ থেকে আগত সকল সংবাদের সত্যতার জন্য যথেষ্ট বলে ঘোষণা করেছেন, কারণ; তিনি তাঁর রাসূলগণের সত্যতার ওপর যাবতীয় দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

অতএব, আল্লাহ তা‘আলার আয়াতসমূহ তাঁর সত্যতার প্রমাণ, আর আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তাঁর রাসূলগণের আয়াতসমূহের সত্যতার ওপর প্রমাণ। তিনি নিজেই সাক্ষী ও সাক্ষ্য সাব্যস্তকৃত (সত্তা)। আর তিনি নিজেই প্রমাণ ও নিজের ওপর প্রমাণবহ। তিনি নিজেই নিজের জন্য দলীল। যেমন কোনো এক বিজ্ঞলোক বলেছেন, ‘কীভাবে আমি তাঁর (আল্লাহর) প্রমাণ তালাশ করবো যিনি নিজেই আমার কাছে সব কিছুর জন্য প্রমাণ? তাঁর ব্যাপারে যে দলীলই তালাশ করি, তাঁর অস্তিত্ব সে গুলোর চেয়ে অধিক স্পষ্ট।’

এ কারণেই রাসূলগণ তাদের জাতির কাছে বলেছিলেন,

﴿أَفِي ٱللَّهِ شَكّٞ﴾ [ابراهيم: ١٠]

“(তাদের রাসূলগণ বলেছিল), আল্লাহর ব্যাপারেও কি সন্দেহ?” [সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ১০] তিনি তো সব জ্ঞাত বিষয়ের চেয়ে অধিক জ্ঞাত, সব দলিলের চেয়ে অধিক স্পষ্ট। প্রকৃতপক্ষে সব বস্তু তাঁর (আল্লাহর) দ্বারাই চেনা যায়, যদিও তাঁর কাজসমূহ ও হুকুমের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা ও দলীল-প্রমাণ তালাশের মধ্যেও তাঁকে চেনা যায়।

~মুখতাসারুল ফাওয়ায়েদ (ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এর আল-ফাওয়ায়েদ অবলম্বনে)
 
Similar threads Most view View more
Back
Top