Salafi
Salafi User
- Joined
- Jun 16, 2023
- Threads
- 70
- Comments
- 97
- Reactions
- 1,066
- Thread Author
- #1
সম্মুখে প্রশংসা করা সমন্ধে রাসূল ﷺ এর নিষেধাজ্ঞামূলক হাদিসটির ব্যাখ্যা:
আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, নবী (ﷺ)-এর সামনে এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করল। তখন রসূল (ﷺ) বললেন, তোমার জন্য আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে, তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে। তিনি এ কথা কয়েকবার বললেন, অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যদি তার ভাইয়ের প্রশংসা করতেই চায় তাহলে তার বলা উচিত, অমুককে আমি এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহই তার সম্পর্কে অধিক জানেন। আর আল্লাহর প্রতি সোর্পদ না করে আমি কারো সাফাই পেশ করি না। তার সম্পর্কে ভালো কিছু জানা থাকলে বলবে, আমি তাকে এরূপ এরূপ মনে করি।
সহিহ বুখারী ২৬৬২, ৬০৬১ (আন্তর্জাতিক নম্বর)
আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে, প্রশংসা করতে হলে যেন উক্ত ব্যক্তি বলে যে আমি তাকে এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহর নিকট তাকে নির্দোষ মনে করি না।
(সুনানে আবু দাউদ ৪৮০৫; আন্তঃ নম্বর)
এছাড়া সাহাবী উসমান (রাঃ) এর সামনে তার প্রশংসা করায় মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রাঃ) প্রশংসাকারীর মুখে কাঁদা নিক্ষেপ করেন:
সুনানে আবু দাউদ, ৪৮০৪ (আন্তঃ নম্বর)
ইমাম নববী এই প্রসঙ্গে বলেন,
অর্থাৎ, সম্মুখে প্রশংসা করা জায়েজ যদি সে প্রশংসার জন্য এবং অন্যান্য কারণবশত তা ফিতনাহ থেকে নিরাপদ হয়।
(ال منهاج)
এই ব্যাপারে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম ফকিহ শায়েখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন رحمه الله বলেন,
প্রথম অবস্থা: উক্ত ব্যক্তিকে প্রশংসার মাঝে কল্যাণ নিহিত , তাকে উৎসাহিত করার জন্য তা করা হচ্ছে এবং তাকে প্রশংসনীয় চরিত্র ও গুণাবলি অর্জনে উৎসাহিত করতে করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় এটা করাতে কোনো সমস্যা নেই কারণ এটা আপনার সঙ্গীকে উৎসাহিত করবে। আপনি তার মধ্যে উদারতা, অন্যের প্রতি সদাচরণ, সাহসিকতা এবং ত্যাগী মনোভব প্রত্যক্ষ করলে তাকে উৎসাহিত করতে এবং তাকে এই মনোভবে অটল রাখতে এটা করে থাকলে এটা ভালো কাজ এবং আল্লাহ তা'আলা একে ইঙ্গিত করে বলেছেন,
অর্থাৎ, সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। [সূরা আল মায়েদা, আয়াত ২]
দ্বিতীয় পরিস্থিতি: উক্ত ব্যক্তির চারিত্রিক উৎকর্ষতা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার জন্য এটা করলেন, যাতে মানুষের মাঝে তার প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে; যেমনটা রসূল ﷺ আবু বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ) এর ক্ষেত্রে করেছেন।
আবু বকরের (রাঃ) ক্ষেত্রে,
একদিন সাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের কে আজ সওম রেখেছ? আবূ বকর (রাঃ) উত্তর দিলেন, আমি। তিনি বললেন, আজ কে জানাযার সাথে গিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, তোমাদের কে আজ মিসকীনকে খাবার দিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) জবাবে বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের কে অসুস্থকে দেখতে গিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (শুনে রাখো) যে ব্যক্তির মধ্যে এতো গুণের সমাহার, সে জান্নাতে প্রবেশ করবেই।
(মুসলিমের বর্ণনা)
(হাদিসটি পাবেন: মিশকাতুল মাসাবিহ ১৮৯১ (আন্তঃ নম্বর. মুসলিম ১০২৮)
তাছাড়া রসূল (ﷺ) একদা বলছিলেন, যে ব্যক্তি গর্বের সঙ্গে পরনের কাপড় টাখনুর নিম্নভাগে ঝুলিয়ে চলাফিরা করে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টি দিবেন না। এ শুনে আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমার অজ্ঞাতে কাপড়ের একপাশ কোন কোন সময় নীচে নেমে যায়। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, তুমি তো ফখরের সঙ্গে তা করছ না।
(হাদিস খুঁজে পেতে: সহিহ বুখারী ৩৬৬৫ , ৫৭৮৩, ৫৭৮৪, ৫৭৯১, ৬০৬২। মুসলিম ২০৮৫, তিরমিযী ১৭৩০, ১৭৩১, নাসায়ী ৫৩২৭, ৫৩২৮, ৫৩৩৫, ৫৩৩৬, আবূ দাউদ ৪০৮৫, ইবনু মাজাহ ৩৫৬৯। রিয়াদুস সলেহীন ৭৯৫)
রসূল ﷺ উমর (রাঃ) কে বলেছিলেন, তুমি যে পথে চল শয়তান কখনও সে পথে চলে না বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।’
(হাদিসটি পাবেন: সহিহ বুখারী আন্তর্জাতিক ৩২৯৪, সহিহ বুখারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩০৬৪)
এগুলো হচ্ছে উমর (রাঃ) ও আবু বকর (রাঃ) এর চারিত্রিক উৎকর্ষতার ব্যাপারে রসূল ﷺ এর প্রশংসা এবং এতে কোনো ক্ষতি নেই।
তৃতীয় অবস্থা: কারো প্রশংসা করতে গিয়ে সেটাকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং এমনভাবে প্রশংসা করা যার যোগ্য সে নয়। এটা নাজায়েজ এবং মিথ্যা ও প্রতারণার শামিল। উদাহরণস্বরূপ, কোনো নেতা বা মন্ত্রীর বা এমন উচ্চপদস্থ কারো উচ্চপ্রশংসা করা এবং তার ব্যাপারে এমনসব চারিত্রিক গুণাবলি বর্ণনা করা যা তার মধ্যে নেই। এটা হারাম এবং যার প্রতি এমনটা আরোপ করা হচ্ছে তার জন্যেও ক্ষতিকর।
চতুর্থ অবস্থা: কেউ কারো ব্যাপারে এমন প্রশংসা করলো যা তার মধ্যে আছে কিন্তু সে আশঙ্কা করছে যে এর ফলে উক্ত ব্যক্তি ফিতনাহ তে নিপতিত হয়ে মোহগ্রস্থ হবে, নিজেকে নিয়ে অহংকার করবে এবং নিজেকে অন্যদের চেয়ে বড় মনে করবে। এটিও হারাম এবং এমনটা করা জায়েজ নেই।
কারো উপস্থিতিতে তার প্রশংসার ব্যাপারে যে হাদিসটি উল্লেখ্য করেছেন, "আফসোস তোমার জন্য! তুমি তো তোমার সঙ্গীর গলা কেটে ফেললে।" এর মানে হচ্ছে যে, তোমার প্রশংসার ফলে তুমি যেন তাকে হত্যা করলে, অর্থাৎ তোমার প্রশংসার ফলে সে দাম্ভিক হয়ে উঠলো। এজন্য রসূল ﷺ কাঁদা ছুড়তে বলেছেন তাদের প্রতি যারা কোনো ব্যক্তির উপস্থিতিতে তার প্রশংসা করে।
যদি এমন কাউকে জানা থাকে যে ব্যক্তি কোনো মহৎ বা আদর্শবান লোক নয়, তা সত্ত্বেও এক ব্যক্তি তার প্রশংসা করছে এবং সে যাকে তাকে প্রশংসা করে না বরং বেছে বেছে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের তোষামোদ করে। আরেক ব্যক্তিকে বারংবার ভালো হোক বা মন্দ সবারই প্রশংসা করতে দেখা যায় এবং পূর্বোক্ত ব্যক্তিটি শুধু উচ্চপদের ব্যক্তি, বিচারক বা আলেমদের প্রশংসা করে। তাহলে এক্ষেত্রে এদের মুখে কাঁদা ছুড়ে মারা যাবে কারণ এক ব্যক্তি উসমান রাঃ এর প্রশংসা করে তাই আল মিক্বদাদ (রাঃ) ছোট ছোট কঙ্কর নিয়ে সেই ব্যক্তির মুখে নিক্ষেপ করেন। উসমান (রাঃ) জিজ্ঞেস করেন, 'তুমি এমনটা কেন করলে?' জবাবে তিনি বলেন, 'রসূল ﷺ সম্মুখ প্রশংসাকারীর মুখে কাঁদা ছুড়ে মারতে বলেছেন।'
এ থেকে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে সবার উপর দায়িত্ব হলো শুধু ভালো কথা বলা কারণ রসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে, নচেৎ চুপ থাকে।’’
(হাদিসটি পাবেন: সহীহুল বুখারী ৬১৩৮, ৩৩৩১, ৫১৮৪, ৫১৮৬, ৬০১৮, ৬১৩৬, ৬৪৭৫, মুসলিম ৪৭, ১৪৬৮, তিরমিযী ১১৮৮, রিয়াদুস সলেহিন ৩১৯)
আল্লাহ সহায় হোন।
[শায়েখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রচিত শারহু রিয়াযুস স্বলেহীন থেকে গৃহীত, ৬ষ্ঠ খন্ড পৃষ্ঠা নং ৫৬২-৫৬৫]
অনুবাদ ও লেখা: সাফিন চৌধুরী
জয়েন টেলিগ্রাম: ideology of salaf
আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, নবী (ﷺ)-এর সামনে এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করল। তখন রসূল (ﷺ) বললেন, তোমার জন্য আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে, তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে। তিনি এ কথা কয়েকবার বললেন, অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যদি তার ভাইয়ের প্রশংসা করতেই চায় তাহলে তার বলা উচিত, অমুককে আমি এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহই তার সম্পর্কে অধিক জানেন। আর আল্লাহর প্রতি সোর্পদ না করে আমি কারো সাফাই পেশ করি না। তার সম্পর্কে ভালো কিছু জানা থাকলে বলবে, আমি তাকে এরূপ এরূপ মনে করি।
حدثنا محمد بن سلام أخبرنا عبد الوهاب حدثنا خالد الحذاء عن عبد الرحمن بن أبي بكرة عن أبيه قال أثنى رجل على رجل عند النبي صلى الله عليه وسلم فقال ويلك قطعت عنق صاحبك قطعت عنق صاحبك مرارا ثم قال من كان منكم مادحا أخاه لا محالة فليقل أحسب فلانا والله حسيبه ولا أزكي على الله أحدا أحسبه كذا وكذا إن كان يعلم ذلك منه
সহিহ বুখারী ২৬৬২, ৬০৬১ (আন্তর্জাতিক নম্বর)
আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে, প্রশংসা করতে হলে যেন উক্ত ব্যক্তি বলে যে আমি তাকে এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহর নিকট তাকে নির্দোষ মনে করি না।
حدثنا أحمد بن يونس، حدثنا أبو شهاب، عن خالد الحذاء، عن عبد الرحمن بن أبي بكرة، عن أبيه، أن رجلا، أثنى على رجل عند النبي صلى الله عليه وسلم فقال له " قطعت عنق صاحبك " . ثلاث مرات ثم قال " إذا مدح أحدكم صاحبه لا محالة فليقل إني أحسبه كما يريد أن يقول ولا أزكيه على الله " .
(সুনানে আবু দাউদ ৪৮০৫; আন্তঃ নম্বর)
এছাড়া সাহাবী উসমান (রাঃ) এর সামনে তার প্রশংসা করায় মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রাঃ) প্রশংসাকারীর মুখে কাঁদা নিক্ষেপ করেন:
حدثنا أبو بكر بن أبي شيبة، حدثنا وكيع، حدثنا سفيان، عن منصور، عن إبراهيم، عن همام، قال جاء رجل فأثنى على عثمان في وجهه فأخذ المقداد بن الأسود ترابا فحثا في وجهه وقال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم " إذا لقيتم المداحين فاحثوا في وجوههم التراب " .
সুনানে আবু দাউদ, ৪৮০৪ (আন্তঃ নম্বর)
ইমাম নববী এই প্রসঙ্গে বলেন,
وفيه جوار مدح الانسا في وجهه إذا ٱمن عليه الا عجاب وعيره من اسباب
অর্থাৎ, সম্মুখে প্রশংসা করা জায়েজ যদি সে প্রশংসার জন্য এবং অন্যান্য কারণবশত তা ফিতনাহ থেকে নিরাপদ হয়।
(ال منهاج)
এই ব্যাপারে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম ফকিহ শায়েখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন رحمه الله বলেন,
প্রথম অবস্থা: উক্ত ব্যক্তিকে প্রশংসার মাঝে কল্যাণ নিহিত , তাকে উৎসাহিত করার জন্য তা করা হচ্ছে এবং তাকে প্রশংসনীয় চরিত্র ও গুণাবলি অর্জনে উৎসাহিত করতে করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় এটা করাতে কোনো সমস্যা নেই কারণ এটা আপনার সঙ্গীকে উৎসাহিত করবে। আপনি তার মধ্যে উদারতা, অন্যের প্রতি সদাচরণ, সাহসিকতা এবং ত্যাগী মনোভব প্রত্যক্ষ করলে তাকে উৎসাহিত করতে এবং তাকে এই মনোভবে অটল রাখতে এটা করে থাকলে এটা ভালো কাজ এবং আল্লাহ তা'আলা একে ইঙ্গিত করে বলেছেন,
وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰ
আল বির (ال بر) ও আত-তাকওয়া (التقو) তে তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা করো।অর্থাৎ, সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। [সূরা আল মায়েদা, আয়াত ২]
দ্বিতীয় পরিস্থিতি: উক্ত ব্যক্তির চারিত্রিক উৎকর্ষতা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার জন্য এটা করলেন, যাতে মানুষের মাঝে তার প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে; যেমনটা রসূল ﷺ আবু বকর (রাঃ) এবং উমর (রাঃ) এর ক্ষেত্রে করেছেন।
আবু বকরের (রাঃ) ক্ষেত্রে,
একদিন সাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের কে আজ সওম রেখেছ? আবূ বকর (রাঃ) উত্তর দিলেন, আমি। তিনি বললেন, আজ কে জানাযার সাথে গিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি। তিনি বললেন, তোমাদের কে আজ মিসকীনকে খাবার দিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) জবাবে বললেন, আমি। তিনি বললেন, আজ তোমাদের কে অসুস্থকে দেখতে গিয়েছ? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (শুনে রাখো) যে ব্যক্তির মধ্যে এতো গুণের সমাহার, সে জান্নাতে প্রবেশ করবেই।
(মুসলিমের বর্ণনা)
(হাদিসটি পাবেন: মিশকাতুল মাসাবিহ ১৮৯১ (আন্তঃ নম্বর. মুসলিম ১০২৮)
তাছাড়া রসূল (ﷺ) একদা বলছিলেন, যে ব্যক্তি গর্বের সঙ্গে পরনের কাপড় টাখনুর নিম্নভাগে ঝুলিয়ে চলাফিরা করে, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টি দিবেন না। এ শুনে আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমার অজ্ঞাতে কাপড়ের একপাশ কোন কোন সময় নীচে নেমে যায়। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, তুমি তো ফখরের সঙ্গে তা করছ না।
(হাদিস খুঁজে পেতে: সহিহ বুখারী ৩৬৬৫ , ৫৭৮৩, ৫৭৮৪, ৫৭৯১, ৬০৬২। মুসলিম ২০৮৫, তিরমিযী ১৭৩০, ১৭৩১, নাসায়ী ৫৩২৭, ৫৩২৮, ৫৩৩৫, ৫৩৩৬, আবূ দাউদ ৪০৮৫, ইবনু মাজাহ ৩৫৬৯। রিয়াদুস সলেহীন ৭৯৫)
রসূল ﷺ উমর (রাঃ) কে বলেছিলেন, তুমি যে পথে চল শয়তান কখনও সে পথে চলে না বরং সে তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথে চলে।’
(হাদিসটি পাবেন: সহিহ বুখারী আন্তর্জাতিক ৩২৯৪, সহিহ বুখারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৩০৬৪)
এগুলো হচ্ছে উমর (রাঃ) ও আবু বকর (রাঃ) এর চারিত্রিক উৎকর্ষতার ব্যাপারে রসূল ﷺ এর প্রশংসা এবং এতে কোনো ক্ষতি নেই।
তৃতীয় অবস্থা: কারো প্রশংসা করতে গিয়ে সেটাকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং এমনভাবে প্রশংসা করা যার যোগ্য সে নয়। এটা নাজায়েজ এবং মিথ্যা ও প্রতারণার শামিল। উদাহরণস্বরূপ, কোনো নেতা বা মন্ত্রীর বা এমন উচ্চপদস্থ কারো উচ্চপ্রশংসা করা এবং তার ব্যাপারে এমনসব চারিত্রিক গুণাবলি বর্ণনা করা যা তার মধ্যে নেই। এটা হারাম এবং যার প্রতি এমনটা আরোপ করা হচ্ছে তার জন্যেও ক্ষতিকর।
চতুর্থ অবস্থা: কেউ কারো ব্যাপারে এমন প্রশংসা করলো যা তার মধ্যে আছে কিন্তু সে আশঙ্কা করছে যে এর ফলে উক্ত ব্যক্তি ফিতনাহ তে নিপতিত হয়ে মোহগ্রস্থ হবে, নিজেকে নিয়ে অহংকার করবে এবং নিজেকে অন্যদের চেয়ে বড় মনে করবে। এটিও হারাম এবং এমনটা করা জায়েজ নেই।
কারো উপস্থিতিতে তার প্রশংসার ব্যাপারে যে হাদিসটি উল্লেখ্য করেছেন, "আফসোস তোমার জন্য! তুমি তো তোমার সঙ্গীর গলা কেটে ফেললে।" এর মানে হচ্ছে যে, তোমার প্রশংসার ফলে তুমি যেন তাকে হত্যা করলে, অর্থাৎ তোমার প্রশংসার ফলে সে দাম্ভিক হয়ে উঠলো। এজন্য রসূল ﷺ কাঁদা ছুড়তে বলেছেন তাদের প্রতি যারা কোনো ব্যক্তির উপস্থিতিতে তার প্রশংসা করে।
যদি এমন কাউকে জানা থাকে যে ব্যক্তি কোনো মহৎ বা আদর্শবান লোক নয়, তা সত্ত্বেও এক ব্যক্তি তার প্রশংসা করছে এবং সে যাকে তাকে প্রশংসা করে না বরং বেছে বেছে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের তোষামোদ করে। আরেক ব্যক্তিকে বারংবার ভালো হোক বা মন্দ সবারই প্রশংসা করতে দেখা যায় এবং পূর্বোক্ত ব্যক্তিটি শুধু উচ্চপদের ব্যক্তি, বিচারক বা আলেমদের প্রশংসা করে। তাহলে এক্ষেত্রে এদের মুখে কাঁদা ছুড়ে মারা যাবে কারণ এক ব্যক্তি উসমান রাঃ এর প্রশংসা করে তাই আল মিক্বদাদ (রাঃ) ছোট ছোট কঙ্কর নিয়ে সেই ব্যক্তির মুখে নিক্ষেপ করেন। উসমান (রাঃ) জিজ্ঞেস করেন, 'তুমি এমনটা কেন করলে?' জবাবে তিনি বলেন, 'রসূল ﷺ সম্মুখ প্রশংসাকারীর মুখে কাঁদা ছুড়ে মারতে বলেছেন।'
এ থেকে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে সবার উপর দায়িত্ব হলো শুধু ভালো কথা বলা কারণ রসূল ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে, নচেৎ চুপ থাকে।’’
(হাদিসটি পাবেন: সহীহুল বুখারী ৬১৩৮, ৩৩৩১, ৫১৮৪, ৫১৮৬, ৬০১৮, ৬১৩৬, ৬৪৭৫, মুসলিম ৪৭, ১৪৬৮, তিরমিযী ১১৮৮, রিয়াদুস সলেহিন ৩১৯)
আল্লাহ সহায় হোন।
[শায়েখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমীন রচিত শারহু রিয়াযুস স্বলেহীন থেকে গৃহীত, ৬ষ্ঠ খন্ড পৃষ্ঠা নং ৫৬২-৫৬৫]
অনুবাদ ও লেখা: সাফিন চৌধুরী
জয়েন টেলিগ্রাম: ideology of salaf
Attachments