প্রশ্নোত্তর ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত নারী যিনি রোযার ব্যাপারে সন্দিহান

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,841
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
66,148
প্রশ্নঃ ২৪ বছর বয়সী মেয়ে। আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন আমি OCD (বাধ্যগত শুচিবায়ু বা ওয়াসওয়াসা) রোগে আক্রান্ত ছিলাম। কিছু সময় পর আমি এর চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু এখনও আমার সমস্যাটি আছে এবং আমাকে অনেক কষ্ট দেয়।


ইদানিং কখনও কখনও কিছু চিন্তার উদ্রেক হচ্ছে যে: 'আমি যখন সেকেন্ডারি স্কুলের সেকেন্ড ইয়ারে ছিলাম তখন আমি ইচ্ছা করে রোযা রাখতাম না এবং এখনও আমি ইচ্ছা করে রোযা রাখছি না'। অথচ আমার স্মরণ পড়ছে না যে, আমি রোযা রাখিনি। এ রোগের কারণে আমি অনেক কিছু ভুলে যাই; স্মরণ করতে পারি না। এটা কি ঠিক যে, হতে পারে আমি রোযা রাখিনি?


উত্তর:আলহামদু লিল্লাহ।


যেহেতু আপনি স্মরণ করতে পারছেন না যে, আপনি রমযানের রোযা রাখেননি সুতরাং এ ধরণের সন্দেহ শয়তানের ওয়াসওয়াসা (কুমন্ত্রণা)। আপনার উপর কোন কিছু আবশ্যক নয়। আলেমগণ এ সংক্রান্ত একটি নীতি উল্লেখ করেছেন: কোন মুসলিম কোন একটি ইবাদত সমাপ্ত করার পর যদি সন্দেহের উদ্রেক হয় তার ইবাদত কি সহিহ; নাকি নয়? এ সন্দেহের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না এবং ইবাদত পালন সহিহ।


শাইখ বিন উছাইমীন (রহঃ) বলেন:


এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি নীতি। ইবাদত সমাপ্ত করার পর সন্দেহ হলে ইবাদতের উপর সেটার কোন প্রভাব নেই। কিছু মানুষ নামায শেষ করে সালাম ফিরিয়ে ফেলার পর শয়তান এসে বলে: তুমি সূরা ফাতিহা পড়নি। তুমি একবারের বেশি সেজদা দাওনি। সে ব্যক্তিকে এ ধরণের সন্দেহ ছুড়ে মারতে হবে। কেননা ইবাদত সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর সন্দেহের কোন প্রভাব নেই।


অনেক মানুষ আছে খুবই সন্দেহপ্রবণ। সন্দেহ ছাড়া কোন ইবাদত পালন করতে পারে না। এ ব্যক্তিও সন্দেহকে ছুড়ে মারবেন; সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না। কেননা এটাই হচ্ছে কুমন্ত্রণা।[সমাপ্ত][দুরুস ওয়া ফাতাওয়াল হারাম আল-মাদানী (পৃষ্ঠা-১৫৩)]


এই আলোচনার ভিত্তিতে আপনার কাছে কোন শয়তান এসে যদি আপনাকে কুমন্ত্রণা দেয় যে, 'আপনি রোযা রাখতেন না' আপনি এ সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না এবং এটা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত করবেন না।


এ সংক্রান্ত একটি মজার ঘটনা ইবনুল জাওযি (রহঃ) উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেন:


"আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, এক লোক আবু হাযেম এর কাছে এসে তাকে বলল: আমার কাছে শয়তান এসে বলে যে, তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ফেলেছ। এভাবে সে আমার মাঝে সন্দেহ তৈরী করে। তখন তিনি তাকে বললেন: তুমি কি তাকে তালাক দাওনি? সে বলল: না। তিনি বললেন: তুমি কি গতকাল আমার কাছে এসে তাকে তালাক দাওনি? সে বলল: আল্লাহ্‌র কসম আমি আজকের আগে আপনার কাছে আসি নাই এবং কোনভাবেই তাকে তালাক দিই নাই। তখন তিনি তাকে বললেন: যখন শয়তান তোমার কাছে আসবে তখন আমার কাছে যেভাবে কসম করেছ ঠিক শয়তানকেও সেভাবে কসম করে বলবে। এভাবে তুমি নিরাপদ থাকতে পারবে।"[আল-আযকিয়া (পৃষ্ঠা-৩১) থেকে সমাপ্ত]


এ ধরণের কুমন্ত্রণার সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা হল— আল্লাহ্‌র যিকির, আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করা ও শয়তান থেকে আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এরপর এসব কুমন্ত্রণাকে এড়িয়ে যাওয়া, এগুলোর প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করা। তাই এ চিন্তাগুলোকে অপনোদন করতে হবে। এ চিন্তাগুলোকে বাড়তে দেওয়া ও চলতে দেওয়া যাবে না। যদিও মানুষের মনের জন্য এটা করা কঠিন; কিন্তু এটাই হল এর চিকিৎসা।


আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।


সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
 
Similar threads Most view View more
Back
Top