অন্যান্য একজন ইমামের যোগ্যতা ও গুণাবলী

Md Rahul Khan

Active member
Joined
Apr 13, 2024
Threads
13
Comments
37
Reactions
176
নিঃসন্দেহে তওহিদের পরে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত হল সালাত। সুতরাং এই সালাতের ইমামতির দায়িত্বও অতি মর্যাদাপূর্ণ। সে কারণে স্বভাবতই একজন ইমামের মধ্যে কিছু যোগ্যতা ও গুণাবলী থাকা জরুরি।

নিম্নে সেগুলো কতিপয় তুলে ধরা হল:

যে ইমামতি করবে তার মধ্যে যে সকল আবশ্যকীয় যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন সেগুলো হল:

১. বিশুদ্ধ আকিদা ও মানহাজের অনুসারী হওয়া।

২. ইখলাস তথা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত থাকা।

৩. বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত করতে সক্ষম হওয়া।

ইসলামের দৃষ্টিতে ইমাম হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ওই ব্যক্তি যে কুরআন তিলাওয়াতে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ​

"কওমের মধ্যে যে সবচেয়ে বেশি ভালো আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করতে পারে (যে শুদ্ধ উচ্চারণে তারতিলের সাথে সুন্দরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে অথবা যার অধিক পরিমাণে কুরআন মুখস্থ রয়েছে) সেই ইমামতি করবে।" [সহীহ মুসলিম]

সুতরাং যার তিলাওয়াত শুদ্ধ নয় বা যার তিলাওয়াতে মারাত্মক ভুল (لحن جلي) রয়েছে তাকে ইমামতি বা খতিব হিসেবে কোথাও নিয়োগ দেওয়া উচিত নয় যদিও তার আকিদা-মানহাজ সঠিক হয়, যদিও সে নামিদামি বক্তা, লেখক গবেষক বা ওয়ায়েজ হয়।

বরং আকিদা মানহাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি যে তিলাওয়াতে অধিক পারদর্শী কিংবা কুরআন মজবুতভাবে মুখস্থ রাখে সেই মসজিদের ইমাম হওয়ার সর্বাধিক উপযুক্ত ব্যক্তি।

৪. সুন্নাহ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখা। কমপক্ষে সালাতের মৌলিক বিধিবিধানগুলো সম্পর্কে জানা যেন সুন্নাহ ভিত্তিক সঠিক নিয়মে সালাত পড়াতে সক্ষম হয়।

তার মধ্যে আরও যে সকল গুণাবলী থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: (১০টি)

১. বিনয়, নম্রতা, ভদ্রতা ও মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার।

২. অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ও মিষ্টভাষী হওয়া।

৩. ইসলাম সম্পর্কে মৌলিক ও বিশুদ্ধ জ্ঞান থাকা।

৪. তার ব্যক্তিগত জীবনে কথা ও কাজের মিল থাকা।

৫. পাপাচার থেকে দূরে থাকা।

৬. একজন ইমামের জন্য সময়ানুবর্তীতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সালাত নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত।

৭. আত্ম মর্যাদা সম্পন্ন হওয়া। অর্থাৎ তার থেকে এমন কোন নীচ ও হীন আচরণ প্রকাশিত না হওয়া যা এই দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির জন্য শোভনীয় নয়।

৮. মানুষের প্রতি কল্যাণকামী মনোভাব এবং মুসল্লিদের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি সচেতন থাকা।

৯. ধৈর্য ও সহনশীলতা।

১০. মানুষের সম্পদের প্রতি লোভ সংবরণ করা...ইত্যাদি।

উল্লেখ্য যে, এ সকল গুণাবলী প্রত্যেক মুসলিমের মধ্যেই থাকা উচিৎ। তবে বিশেষভাবে ইমাম, দাঈ, আলেম প্রমুখ ব্যক্তিগণ- যাদের নিকট মানুষ দ্বীন ও চরিত্র শিখবে-তাদের মধ্যে থাকাটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে এ সকল সুন্দর গুণাবলীর অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।



উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
 
Back
Top