Susceptible
Exposer
Q&A Master
Reporter
Salafi User
- Joined
- Jun 12, 2024
- Threads
- 198
- Comments
- 283
- Solutions
- 1
- Reactions
- 2,044
- Thread Author
- #1
আবু হানিফা হতে বর্ণিত হাদীস:
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُبَشِّرٍ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ الْوَاسِطِيُّ ، ثَنَا إِسْحَاقُ الْأَزْرَقُ ، عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادٍ ، عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - : " مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ ، فَقِرَاءَةُ الْإِمَامِ لَهُ قِرَاءَةٌ " .
আলী ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুবাশশির (রহঃ)... জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায পড়ে ইমামের কিরাআতই তার কিরাআত। [ সুনানে দারাকুতনী ১২০৬ ]
ইমাম দারাকুতনী রহিমাহুল্লাহ বলেন:
لَمْ يُسْنِدْهُ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ غَيْرُ أَبِي حَنِيفَةَ ، وَالْحَسَنُ بْنُ عُمَارَةَ ، وَهُمَا ضَعِيفَانِ
মূসা ইবনে আবু আয়েশা (রহঃ) থেকে আবু হানীফা (রহঃ) এবং আল-হুসাইন ইবনে উমারা (রহঃ) ব্যতীত অন্য কেউ মারফুরূপে বর্ণনা করেননি। তারা উভয়ে হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। [ সুনানে দারাকুতনী ১২০৬ নং হাদীসের সংশ্লিষ্ট আলোচনা ]
আবু হানিফা হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল ছিল।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ৬৫ (১৬৪-২৪১ হি.)
حدثنا عبد الله بن أحمد قال سمعت أبي يقول حديث أبي حنيفة ضعيف ورأيه ضعيف.
আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: আমার পিতাকে (আহমাদ বিন হাম্বল) বলতে শুনেছি: আবূ হানীফার হাদীস যঈফ ও তাঁর বর্ণনা যঈফ।
[ এর সনদ সহীহ-কিতাবুয যুআফাইল কাবরি ৪/২৮৫ পৃ ]
সনদের তাহক্বীক:
ক) আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল শায়বানি-সিক্কাহ।[ তাকরীবুত তাহযীব ১৬৭ পৃষ্ঠা]
حدثنا سليمان بن داود العقيلي قال سمعت أحمد بن الحسن الترمذي قال سمعت أحمد بن حنبل يقول أبو حنيفة يكذب
সুলায়মান বিন দাউদ উক্কায়লি বলেন, আমি আহমাদ ইবনুল হাসান তিরমিযী থেকে শুনেছি, তিনি বলেন: আমি আহমাদ বিন হাম্বলকে বলতে শুনেছি: আবু হানীফা কাযযাব (মিথ্যুক)। [ এর সনদ সহীহ-কিতাবুয যুআফাইল কাবরি ৪/২৮৪ পৃ. ]
সনদের তাহক্বীক্ব:
ক) সুলায়মান বিন দাউদ উক্কায়লি-সিক্কাহ সদুক্ক।
[ আল-জারাহ ওয়াত তা'দিল ৪/১১৫ ]
খ) আহমাদ ইবনুল হাসান জুনায়েদ তিরমিযী-সিক্কাহ হাফেয।" [ তাকরীবুত তাহযীব পৃষ্ঠা ১২ ]
ইমাম আবু ইসহাক ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযাযানি (মৃত: ২৫১ হি.)
قال جوزجاني أبو حنيفة لا يقنع بحديثه ولا برأيه .
ইমাম জাওযাযানি বলেন ইমাম আবু হানীফা-এর হাদীস ও রায় গ্রহণযোগ্য নয়।
[ কিতাবু আহওয়ালুর রিজাল পৃ. ৭৫, ইবনু আদির 'আল-কামিল' ৭/২৪৭৪, তারীখে বাগদাদ ১৩/৪৫১-শব্দগুলো আহওয়ালুর রিজালের ]
৯) ইমাম আবু কত্তান আমর বিন হায়সান (মৃত: ১৯৮ হি.)
حدثنا عبد الله بن أحمد قال حدثنا سريج بن يونس قال حدثنا أبو قطن عن أبي حنيفة وكان زمنا في الحديث.
"আবূ ক্বত্তান ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে বলেন: তিনি হাদীসে অক্ষম (চিররোগী) ছিলেন। [ কিতাবুয যআফাইল কাবির ৪/২৮৫ পৃ., তারিগে বাগদাদ ১৩/১৪৪০ ]
সনদের তাহক্বীক্ব:
ক) আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল শায়বানি-সিক্কাহ। [তাকরীবুত তাহযীব ১৬৭ পৃষ্ঠা]
খ) সুরায়জ বিন ইউনুস বিন ইবরাহীম বাগদাদী মারুযী-সিক্কাহ, ইবাদতগুজার। [ তাকরীবুত তাহযীব ১১৭ পৃষ্ঠা ]
ইমাম আবু হাতিম বিন হিব্বান আত-তায়মি (২৭৪-৩৫৩ হি.)
النعمان بن ثابت أبو حنيفة الكوفي صاحب الرأي يروي عن عطاء ونافع كان مولده سنة ثمانين ... ومات أبو حنيفة سنة خمسين ومائة ببغداد وقبره في مقبرة الخيزران وكان رجلا جدلا ظاهر الورع لم يكن الحديث صناعته حدث بمائة وثلاثين حديثا مسانيد ما له حديث في الدنيا غيره أخطأ منها في مائة وعشرين حديثا إما أن يكون أقلب إسناده أو غير متنه من حيث لا يعلم فلما غلب خطؤه على صوابه استحق ترك الاحتجاج به في الأخبار ومن جهة أخرى لا يجوز الاحتجاج به لأنه كان داعيا إلى الإرجاء والداعية إلى البدع لا يجوز أن يحتج به عند أئمتنا قاطبة لا أعلم بينهم فيه خلافا على أن أئمة المسلمين وأهل الورع في الدين في جميع الأمصار وسائر الأقطار جرحوه وأطلقوا عليه القدح الا الواحد بعد الواحد قد ذكرنا ما روى فيه من ذلك في كتاب التنبيه على التمويه فأغنى ذلك عن تكرارها في هذا الكتاب .....
ইমাম ইবনু হিব্বান বলেছেন: নু'মান বিন সাবিত আবূ হানীফা কুফি রায়পন্থি ছিলেন। তিনি আতা ও নাফে থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাঁর জন্ম ৮০ হিজরীতে... এবং মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে বাগদাদে। তাঁর কবর হয়েছে খিযরানের কবরস্থানে। তিনি ঝগড়াটে ব্যক্তি ছিলেন ও বাহ্যিকভাবে মুত্তাক্বি। কিন্তু হাদীসে গভীরতা ছিল না। তিনি একশ' ত্রিশটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যা সনদসহ বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া দুনিয়াতে তাঁর আর কোন হাদীস নেই। এর মধ্যে ১২০টি হাদীস ভুলভাবে বর্ণিত বা সেগুলোর সনদগুলো উল্টা-পাল্টা করে মতন বিকৃত করা হয়েছে। যার কোন ভিত্তিই নেই। যখন তার মর্যাদার ক্ষেত্রে ত্রুটি বিজয় লাভ করেছে এ কারণে তার থেকে দলীল নেওয়াটা সহীহ নয়। তা ছাড়া তিনি মুরজিয়াদের দিকে দাওয়াতদাতা এবং তিনি বিদআতের দিকে দাওয়াত দিতেন। তাঁর থেকে হাদীস বর্ণনা করা ঐকমত্যে নাজায়েয। এ ব্যাপারে আমাদের ইমামদের মধ্যে কোন ইখতিলাফ নেই। এমনকি মুসলিমদের ইমামগণ ও দ্বীনদারগণ প্রত্যেক দেশে তার প্রতি জারাহ করেছেন। আমি এ সমস্ত জারাহ আমার কিতাব كتاب التنبيه على التمويه উল্লেখ করেছি। এ কারণে আমি দ্বিতীয়বার এই কিতাবে উল্লেখ করার জরুরত দেখছি না। [ কিতাবুল মাজরুহিন ৩/৬১, ৬৪ ]
ইমাম বুখারী ইমাম আবূ হানীফা সম্পর্কে বলেছেন:
كان مرجنا سكتوا عنه
ইমাম আবূ হানীফা মুরজিয়া ছিলেন, তার রায় ও হাদীসের ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণ নিরব سكتوا عنه থেকেছেন।"[ তারিখুল কাবীর ৮/৮১ পৃষ্ঠা]
[সংযোজন: ইমাম ইবনু কাসীর 'মুখতাসার উলূমুল হাদীসে' (পৃ. ১১৮) বলেছেন:
اذا قال البخاري في الرجال سكتوا عنه وفيه نظر، فإنه في ادنى المنازل واردئها عنده
যখন ইমাম বুখারী কারও সম্পর্কে বলেন: سكتوا عنه وفيه نظر 'তার ব্যাপারে নিরব থাকা হয়েছে, তার প্রতি নযর আছে'-এর দ্বারা তার কাছে সে সর্বনিম্ন স্তরের...।
তাদরিবে سكتوا عنه সম্পর্কে বলা হয়েছে: هذه اللفظة عند البخاري تعني تركوا حديثه 'এই শব্দটির ইমাম বুখারীর নিকট অর্থ হলো: তার হাদীস পরিত্যাজ্য।[ সংকলক: মুহাম্মাদ সিদ্দিক, কামুসুল মুসতালাহুল হাদীস, কায়রো: দারুল ফাযিলাহ পৃ. ৬৬) অনুবাদক]
ইমাম ইবনু আদি বলেন: ইমাম আবু হানীফা, তাঁর পুত্র হাম্মাদ ও পোতাছেলে ইসমাঈল-তিনজনই যঈফ। [ মিযানুল ই'তিদাল ১/২২৬ ]
ইমাম আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র (১১৮-১৯৯)
حدثنا محمد بن أيوب حدثنا محمد بن عبد الله بن نمير قال سمعت أبي قال أدركت الناس وما يكتبون الحديث عن أبي حنيفة فكيف الرأي
ইমাম আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র বলেছেন: আমি লোকদেরকে (আলেমদেরকে) পেয়েছি, তারা আবূ হানীফা থেকে হাদীস লিখতেন না। তাহলে তিনি কিভাবে রায় রায়পন্থি (ফক্বীহ) হলেন?
[ এর সনদ সহীহ, কিতাবু যুআফাইল কাবির ৪/২৮৩, তারীখে বাগদাদ ১৩/৪৪৪ ]
সনদের তাহক্বীক:
ক) মুহাম্মাদ বিন আইয়ুব বিন ইয়াহইয়া-খলিলি তাকে তাওসীক্ক করেছেন। [ তাযকিরাতুল হুফফায ১/৪৫৩ ]
খ) মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র-নাসাঈ তাকে সিক্কাহ মামুন বলেছেন। [ তাকরীবুত তাহযীব ৩০৬ পৃষ্ঠা ]
ইমাম মুসলিম (২০৪-২৬১ হি.)
ইমাম মুসলিম ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে লিখেছেন:
مضطرب الحديث ليس له كبير حديث صحيح
তিনি মুযতারাবুল হাদীস। তার কাছে সহীহ হাদীসের তেমন কিছুই ছিল না। [۳۱ الكني والاسماء ص ]
ইমাম নাসাঈ (২১৫-৩০৩ হি.)
نعمان بن ثابت أبو حنيفة ليس بالقوي في الحديث كوفي؟
আবূ হানীফা, হাদীসে শক্তিশালী ছিলেন না, "নু'মান বিন সাবিত কুফাবাসী ছিলেন। [ কিতাবুয যুআফা ওয়াল মাতরুকিন ৩১০ পৃষ্ঠা ]
ليس بالقوي في الحديث وهوا كثير الغلط على قلة روايته :
তিনি হাদীসে শক্তিশালী ছিলেন না। তিনি খুব কম বর্ণনা করা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভুল করেছেন।
[ মাজমুআহ রাসায়েল লিননাসাঈ পৃ. ৭১, আয-যুআফা লি ইবনুল জাওযী ১১৪৩,মানহাজ ইমাম আবি আব্দুর রহমান আন-নাসাঈ ফিল জারাহ ওয়াত তা'দিল পৃ. ২২৭৫, নং: ৪৫০ ]
[ মূল: মহাদ্দিসগণের শর্ত সাক্ষের আলোকে ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ ব্যক্তিত্ব মাযহাব ]
ইমাম নাদ্বর ইবনে শুমাইল (রহ.) হলেন ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.) এর উস্তাদ।
ইমাম নাদ্বর ইবনে শুমাইল (রহ.) বলেন,
ثنا أحمد بن حفص، ثنا أحمد بن سعيد الدارمي قال : سمعت النضر بن شميل يقول : كان أبو حنيفة متروك الحديث ليس بثقة
“আবু হানিফা হাদিসের ক্ষেত্রে মাতরূক (পরিত্যক্ত), অনির্ভরযোগ্য ছিলেন।[ আল কামিল ফি দ্বু'আফা লি ইবনু আ'দী: ৮/২৩৮ পৃষ্ঠা, সনদ হাসান ]
أحمد بن حفص- أحمد بن حفص بن عبد الله بن راشد
তিনি সাদুক হাসানুল হাদিস
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ سليمان، حَدَّثَنا ابن أبي مريم، قالَ: سَألتُ يَحْيى بْنَ مَعِين، عَن أبي حنيفة؟ قَال: لاَ يكتب حديثه.
ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন (রহ.) এর নিকট আবু হানিফার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জবাবে বলেন,“আবু হানিফার হাদিস লিখা যাবে না। [ আল কামিল ফি দ্বু'আফা লি ইবনু আ'দী: ৮/২৩৬ পৃষ্ঠা, সনদ সহিহ ]
خبرنا البرقاني، قال: أخبرنا محمد بن العباس بن حيويه، قال: أخبرنا محمد بن مخلد، قال: حدثنا صالح بن أحمد بن حنبل، قال : حدثنا علي يعني ابن المديني، قال: سمعت يحيى، هو ابن سعيد القطان، وذكر عنده أبو حنيفة؛ قالوا : كيف كان حديثه؟ قال : لم يكن صاحب حدیث
আলি ইবনুল মাদীনি রাহিঃ বলেন আমি শুনেছি ইয়াহিয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান রাহিঃ বলেন আবু হানিফা হাদিসের অনুসারী ছিলেন না। [তারিখে বাগদাদ ১৫/৫৭৫ পৃষ্ঠা, সানাদ : সহিহ ]
সুতরাং আবু হানিফা হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল ছিল। প্রমাণিত। সুতরাং তার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُبَشِّرٍ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ الْوَاسِطِيُّ ، ثَنَا إِسْحَاقُ الْأَزْرَقُ ، عَنْ أَبِي حَنِيفَةَ ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادٍ ، عَنْ جَابِرٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - : " مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ ، فَقِرَاءَةُ الْإِمَامِ لَهُ قِرَاءَةٌ " .
আলী ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে মুবাশশির (রহঃ)... জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায পড়ে ইমামের কিরাআতই তার কিরাআত। [ সুনানে দারাকুতনী ১২০৬ ]
ইমাম দারাকুতনী রহিমাহুল্লাহ বলেন:
لَمْ يُسْنِدْهُ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ غَيْرُ أَبِي حَنِيفَةَ ، وَالْحَسَنُ بْنُ عُمَارَةَ ، وَهُمَا ضَعِيفَانِ
মূসা ইবনে আবু আয়েশা (রহঃ) থেকে আবু হানীফা (রহঃ) এবং আল-হুসাইন ইবনে উমারা (রহঃ) ব্যতীত অন্য কেউ মারফুরূপে বর্ণনা করেননি। তারা উভয়ে হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। [ সুনানে দারাকুতনী ১২০৬ নং হাদীসের সংশ্লিষ্ট আলোচনা ]
আবু হানিফা হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল ছিল।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ৬৫ (১৬৪-২৪১ হি.)
حدثنا عبد الله بن أحمد قال سمعت أبي يقول حديث أبي حنيفة ضعيف ورأيه ضعيف.
আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: আমার পিতাকে (আহমাদ বিন হাম্বল) বলতে শুনেছি: আবূ হানীফার হাদীস যঈফ ও তাঁর বর্ণনা যঈফ।
[ এর সনদ সহীহ-কিতাবুয যুআফাইল কাবরি ৪/২৮৫ পৃ ]
সনদের তাহক্বীক:
ক) আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল শায়বানি-সিক্কাহ।[ তাকরীবুত তাহযীব ১৬৭ পৃষ্ঠা]
حدثنا سليمان بن داود العقيلي قال سمعت أحمد بن الحسن الترمذي قال سمعت أحمد بن حنبل يقول أبو حنيفة يكذب
সুলায়মান বিন দাউদ উক্কায়লি বলেন, আমি আহমাদ ইবনুল হাসান তিরমিযী থেকে শুনেছি, তিনি বলেন: আমি আহমাদ বিন হাম্বলকে বলতে শুনেছি: আবু হানীফা কাযযাব (মিথ্যুক)। [ এর সনদ সহীহ-কিতাবুয যুআফাইল কাবরি ৪/২৮৪ পৃ. ]
সনদের তাহক্বীক্ব:
ক) সুলায়মান বিন দাউদ উক্কায়লি-সিক্কাহ সদুক্ক।
[ আল-জারাহ ওয়াত তা'দিল ৪/১১৫ ]
খ) আহমাদ ইবনুল হাসান জুনায়েদ তিরমিযী-সিক্কাহ হাফেয।" [ তাকরীবুত তাহযীব পৃষ্ঠা ১২ ]
ইমাম আবু ইসহাক ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযাযানি (মৃত: ২৫১ হি.)
قال جوزجاني أبو حنيفة لا يقنع بحديثه ولا برأيه .
ইমাম জাওযাযানি বলেন ইমাম আবু হানীফা-এর হাদীস ও রায় গ্রহণযোগ্য নয়।
[ কিতাবু আহওয়ালুর রিজাল পৃ. ৭৫, ইবনু আদির 'আল-কামিল' ৭/২৪৭৪, তারীখে বাগদাদ ১৩/৪৫১-শব্দগুলো আহওয়ালুর রিজালের ]
৯) ইমাম আবু কত্তান আমর বিন হায়সান (মৃত: ১৯৮ হি.)
حدثنا عبد الله بن أحمد قال حدثنا سريج بن يونس قال حدثنا أبو قطن عن أبي حنيفة وكان زمنا في الحديث.
"আবূ ক্বত্তান ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে বলেন: তিনি হাদীসে অক্ষম (চিররোগী) ছিলেন। [ কিতাবুয যআফাইল কাবির ৪/২৮৫ পৃ., তারিগে বাগদাদ ১৩/১৪৪০ ]
সনদের তাহক্বীক্ব:
ক) আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল শায়বানি-সিক্কাহ। [তাকরীবুত তাহযীব ১৬৭ পৃষ্ঠা]
খ) সুরায়জ বিন ইউনুস বিন ইবরাহীম বাগদাদী মারুযী-সিক্কাহ, ইবাদতগুজার। [ তাকরীবুত তাহযীব ১১৭ পৃষ্ঠা ]
ইমাম আবু হাতিম বিন হিব্বান আত-তায়মি (২৭৪-৩৫৩ হি.)
النعمان بن ثابت أبو حنيفة الكوفي صاحب الرأي يروي عن عطاء ونافع كان مولده سنة ثمانين ... ومات أبو حنيفة سنة خمسين ومائة ببغداد وقبره في مقبرة الخيزران وكان رجلا جدلا ظاهر الورع لم يكن الحديث صناعته حدث بمائة وثلاثين حديثا مسانيد ما له حديث في الدنيا غيره أخطأ منها في مائة وعشرين حديثا إما أن يكون أقلب إسناده أو غير متنه من حيث لا يعلم فلما غلب خطؤه على صوابه استحق ترك الاحتجاج به في الأخبار ومن جهة أخرى لا يجوز الاحتجاج به لأنه كان داعيا إلى الإرجاء والداعية إلى البدع لا يجوز أن يحتج به عند أئمتنا قاطبة لا أعلم بينهم فيه خلافا على أن أئمة المسلمين وأهل الورع في الدين في جميع الأمصار وسائر الأقطار جرحوه وأطلقوا عليه القدح الا الواحد بعد الواحد قد ذكرنا ما روى فيه من ذلك في كتاب التنبيه على التمويه فأغنى ذلك عن تكرارها في هذا الكتاب .....
ইমাম ইবনু হিব্বান বলেছেন: নু'মান বিন সাবিত আবূ হানীফা কুফি রায়পন্থি ছিলেন। তিনি আতা ও নাফে থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাঁর জন্ম ৮০ হিজরীতে... এবং মৃত্যু ১৫০ হিজরীতে বাগদাদে। তাঁর কবর হয়েছে খিযরানের কবরস্থানে। তিনি ঝগড়াটে ব্যক্তি ছিলেন ও বাহ্যিকভাবে মুত্তাক্বি। কিন্তু হাদীসে গভীরতা ছিল না। তিনি একশ' ত্রিশটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যা সনদসহ বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া দুনিয়াতে তাঁর আর কোন হাদীস নেই। এর মধ্যে ১২০টি হাদীস ভুলভাবে বর্ণিত বা সেগুলোর সনদগুলো উল্টা-পাল্টা করে মতন বিকৃত করা হয়েছে। যার কোন ভিত্তিই নেই। যখন তার মর্যাদার ক্ষেত্রে ত্রুটি বিজয় লাভ করেছে এ কারণে তার থেকে দলীল নেওয়াটা সহীহ নয়। তা ছাড়া তিনি মুরজিয়াদের দিকে দাওয়াতদাতা এবং তিনি বিদআতের দিকে দাওয়াত দিতেন। তাঁর থেকে হাদীস বর্ণনা করা ঐকমত্যে নাজায়েয। এ ব্যাপারে আমাদের ইমামদের মধ্যে কোন ইখতিলাফ নেই। এমনকি মুসলিমদের ইমামগণ ও দ্বীনদারগণ প্রত্যেক দেশে তার প্রতি জারাহ করেছেন। আমি এ সমস্ত জারাহ আমার কিতাব كتاب التنبيه على التمويه উল্লেখ করেছি। এ কারণে আমি দ্বিতীয়বার এই কিতাবে উল্লেখ করার জরুরত দেখছি না। [ কিতাবুল মাজরুহিন ৩/৬১, ৬৪ ]
ইমাম বুখারী ইমাম আবূ হানীফা সম্পর্কে বলেছেন:
كان مرجنا سكتوا عنه
ইমাম আবূ হানীফা মুরজিয়া ছিলেন, তার রায় ও হাদীসের ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণ নিরব سكتوا عنه থেকেছেন।"[ তারিখুল কাবীর ৮/৮১ পৃষ্ঠা]
[সংযোজন: ইমাম ইবনু কাসীর 'মুখতাসার উলূমুল হাদীসে' (পৃ. ১১৮) বলেছেন:
اذا قال البخاري في الرجال سكتوا عنه وفيه نظر، فإنه في ادنى المنازل واردئها عنده
যখন ইমাম বুখারী কারও সম্পর্কে বলেন: سكتوا عنه وفيه نظر 'তার ব্যাপারে নিরব থাকা হয়েছে, তার প্রতি নযর আছে'-এর দ্বারা তার কাছে সে সর্বনিম্ন স্তরের...।
তাদরিবে سكتوا عنه সম্পর্কে বলা হয়েছে: هذه اللفظة عند البخاري تعني تركوا حديثه 'এই শব্দটির ইমাম বুখারীর নিকট অর্থ হলো: তার হাদীস পরিত্যাজ্য।[ সংকলক: মুহাম্মাদ সিদ্দিক, কামুসুল মুসতালাহুল হাদীস, কায়রো: দারুল ফাযিলাহ পৃ. ৬৬) অনুবাদক]
ইমাম ইবনু আদি বলেন: ইমাম আবু হানীফা, তাঁর পুত্র হাম্মাদ ও পোতাছেলে ইসমাঈল-তিনজনই যঈফ। [ মিযানুল ই'তিদাল ১/২২৬ ]
ইমাম আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র (১১৮-১৯৯)
حدثنا محمد بن أيوب حدثنا محمد بن عبد الله بن نمير قال سمعت أبي قال أدركت الناس وما يكتبون الحديث عن أبي حنيفة فكيف الرأي
ইমাম আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র বলেছেন: আমি লোকদেরকে (আলেমদেরকে) পেয়েছি, তারা আবূ হানীফা থেকে হাদীস লিখতেন না। তাহলে তিনি কিভাবে রায় রায়পন্থি (ফক্বীহ) হলেন?
[ এর সনদ সহীহ, কিতাবু যুআফাইল কাবির ৪/২৮৩, তারীখে বাগদাদ ১৩/৪৪৪ ]
সনদের তাহক্বীক:
ক) মুহাম্মাদ বিন আইয়ুব বিন ইয়াহইয়া-খলিলি তাকে তাওসীক্ক করেছেন। [ তাযকিরাতুল হুফফায ১/৪৫৩ ]
খ) মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন নুমায়র-নাসাঈ তাকে সিক্কাহ মামুন বলেছেন। [ তাকরীবুত তাহযীব ৩০৬ পৃষ্ঠা ]
ইমাম মুসলিম (২০৪-২৬১ হি.)
ইমাম মুসলিম ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে লিখেছেন:
مضطرب الحديث ليس له كبير حديث صحيح
তিনি মুযতারাবুল হাদীস। তার কাছে সহীহ হাদীসের তেমন কিছুই ছিল না। [۳۱ الكني والاسماء ص ]
ইমাম নাসাঈ (২১৫-৩০৩ হি.)
نعمان بن ثابت أبو حنيفة ليس بالقوي في الحديث كوفي؟
আবূ হানীফা, হাদীসে শক্তিশালী ছিলেন না, "নু'মান বিন সাবিত কুফাবাসী ছিলেন। [ কিতাবুয যুআফা ওয়াল মাতরুকিন ৩১০ পৃষ্ঠা ]
ليس بالقوي في الحديث وهوا كثير الغلط على قلة روايته :
তিনি হাদীসে শক্তিশালী ছিলেন না। তিনি খুব কম বর্ণনা করা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভুল করেছেন।
[ মাজমুআহ রাসায়েল লিননাসাঈ পৃ. ৭১, আয-যুআফা লি ইবনুল জাওযী ১১৪৩,মানহাজ ইমাম আবি আব্দুর রহমান আন-নাসাঈ ফিল জারাহ ওয়াত তা'দিল পৃ. ২২৭৫, নং: ৪৫০ ]
[ মূল: মহাদ্দিসগণের শর্ত সাক্ষের আলোকে ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ ব্যক্তিত্ব মাযহাব ]
ইমাম নাদ্বর ইবনে শুমাইল (রহ.) হলেন ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন (রহ.) এর উস্তাদ।
ইমাম নাদ্বর ইবনে শুমাইল (রহ.) বলেন,
ثنا أحمد بن حفص، ثنا أحمد بن سعيد الدارمي قال : سمعت النضر بن شميل يقول : كان أبو حنيفة متروك الحديث ليس بثقة
“আবু হানিফা হাদিসের ক্ষেত্রে মাতরূক (পরিত্যক্ত), অনির্ভরযোগ্য ছিলেন।[ আল কামিল ফি দ্বু'আফা লি ইবনু আ'দী: ৮/২৩৮ পৃষ্ঠা, সনদ হাসান ]
أحمد بن حفص- أحمد بن حفص بن عبد الله بن راشد
তিনি সাদুক হাসানুল হাদিস
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ سليمان، حَدَّثَنا ابن أبي مريم، قالَ: سَألتُ يَحْيى بْنَ مَعِين، عَن أبي حنيفة؟ قَال: لاَ يكتب حديثه.
ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মা'ঈন (রহ.) এর নিকট আবু হানিফার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জবাবে বলেন,“আবু হানিফার হাদিস লিখা যাবে না। [ আল কামিল ফি দ্বু'আফা লি ইবনু আ'দী: ৮/২৩৬ পৃষ্ঠা, সনদ সহিহ ]
خبرنا البرقاني، قال: أخبرنا محمد بن العباس بن حيويه، قال: أخبرنا محمد بن مخلد، قال: حدثنا صالح بن أحمد بن حنبل، قال : حدثنا علي يعني ابن المديني، قال: سمعت يحيى، هو ابن سعيد القطان، وذكر عنده أبو حنيفة؛ قالوا : كيف كان حديثه؟ قال : لم يكن صاحب حدیث
আলি ইবনুল মাদীনি রাহিঃ বলেন আমি শুনেছি ইয়াহিয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান রাহিঃ বলেন আবু হানিফা হাদিসের অনুসারী ছিলেন না। [তারিখে বাগদাদ ১৫/৫৭৫ পৃষ্ঠা, সানাদ : সহিহ ]
সুতরাং আবু হানিফা হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল ছিল। প্রমাণিত। সুতরাং তার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়।