If you're in doubt ask الله.
Forum Staff
Moderator
Generous
ilm Seeker
Uploader
Exposer
HistoryLover
Q&A Master
Salafi User
- Joined
- Nov 25, 2022
- Threads
- 665
- Comments
- 1,233
- Solutions
- 17
- Reactions
- 7,659
- Thread Author
- #1
الحمد الله، والصلاة والسلام على رسول الله، وعلى آله وصحبه ومن والاه ،،، أما بعد
আমাদের মাঝে একের পর এক ইবাদত ও কল্যাণের মৌসুম আগমণ করতেই থাকে, আর বারবার সুযোগ ও উপলক্ষও আসতে থাকে। বিচক্ষণ ব্যক্তি এ সময়ে তার প্রচেষ্টাকে আরো ক্ষিপ করে, আকাঙ্খাকে অনুপ্রাণিত করে ও শ্রেষ্ঠত্বের সোপানে আরোহণ করে। সে নিজেকে উচ্চ মর্যাদায় নিয়ে যায়, ঈমানের খোরাক যোগায় ও তার ভান্ডারকে আরো শক্তিশালী করে; বিগত দিনে যা ছুটে গেছে তা প্রতিবিধান করে, আগত বিষয়ের জন্য পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করে, যা ভুলে গেছে ও এড়িয়ে চলেছে তা পূরণ করে এবং যা ত্রুটিময় ছিল তা সংশোধন করে নেয়।
এ মৌসুমগুলো যখন অতিবাহিত হয়ে যায় তখন আমাদের অনেকের অবস্থাই চেঞ্জ হয়ে যায়; আমলের তৎপরতা দুর্বল হয়ে আসে, উদ্যমতা কমে যায়, উচ্চাকাঙ্খা দমে যায়। রাসূল সাঃ বলেছেন: ((প্রত্যেক কর্মের উদ্যমতা আছে এবং প্রত্যেক উদ্যমতার সাথে আছে নিরুদ্যমতা। সুতরাং যার নিরুদ্যমতা আমার সুন্নাহর গণ্ডির ভিতরেই থাকে, সে হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় এবং যার নিরুদ্যমতা এ ছাড়া অন্য কিছুতে (সুন্নত বর্জনে) অতিক্রম করে, সে ধ্বংস হয়ে যায় ।)) মুসনাদে আহমাদ।
হাদিসটি আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করে আমরা যেন বছরব্যাপী আমলের জন্য নিরাপদ পন্থা ও সুদৃঢ় নির্দেশিকা সম্পর্কে পরস্পরকে জিজ্ঞেস করি। এ ক্ষেত্রে আমরা স্বস্তিদায়ক জবাব ও পরিপূর্ণ জ্ঞান পেতে পারি নবী সাঃ-এর আদর্শ থেকে যা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাঃ প্রকাশ করেছেন। যখন আলকামা রহঃ তাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, নবী সাঃ-এর আমল কেমন ছিল? তিনি কি কোন দিনকে কোন আমলের জন্য নির্দিষ্ট করে নিতেন? উত্তরে আয়েশা রাঃ বললেন: ((না, বরং তার আমল স্থায়ী হতো।))সহীহ বুখারী ও মুসলিম। অর্থাৎ তিনি সর্বদাই আমল করতেন, ছেড়ে দিতেন না। তাছাড়া রাসূল সাঃ বলেছেন: ((আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় আমল তাই যা সদাসর্বদা নিয়মিত করা হয় যদিও তা অল্প হয়।)) সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
নববী এ আদর্শ এবং ইবাদতের এ নীতি স্রষ্টার সাথে ব্যক্তির স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি করে এবং তাকে স্বীয় রবের অভিমুখী করে। অল্প আমল হওয়া সত্ত্বেও তা নিয়মিত পালন করা একটি সরল পথ ও মধ্যপন্থা। এটা অন্তরের জন্য মানানসই; তাতে আপনি কষ্ট অনুভব করবেন না। বরং এ অল্প আমল ভিন্নভিন্ন হওয়ার কারণে তার প্রতি হৃদয় আরো উদগ্রীব ও অগ্রসর হয়। নিয়মিতভাবে স্বল্প আমলও অনেক; তা বিশুদ্ধ নিয়তের সাথে বহুগুণ বর্ধিত হয় এবং হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। জেনে রাখুন, আপনার দৃষ্টিতে যে সময়টিকে আপনি নগণ্য মনে করছেন, সেটাকে যদি স্থায়ী আমল দ্বারা সদ্ব্যবহার করেন; তাহলে যেন আপনি জীবনের এ সময়টিতে অনেক কিছুই সম্পাদন করলেন। হাদিসটি এদিকে দৃষ্টি আবদ্ধ করে যে, শুধু আমলের চেয়ে আমলের উপর অবিচল হওয়া অধিক গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত আসল বিষয় হল : আমল শুরু করুন ও তা চালিয়ে যান। যে ব্যক্তি নিয়মিত আমল করে যায় সে সম্মান ও মর্যাদার শিখরে উন্নীত হয়। যা সদাসর্বদা নিয়মিত পালন করা হয় যদিও তা অল্প হয়।
নববী এ উচ্চ মূলনীতিটি মেনে চলেছেন রাসূল সাঃ-এর সাহাবীগণ। তারা শ্রেষ্ঠ গুণাবলীর ঝর্ণা থেকে সুধা পান করেছেন; ফলে এর দ্বারা তারা এমন ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন যারা অনুসরণীয় এবং তারা এমন আদর্শ হয়েছেন যাদের পদাঙ্ক অনুকরণীয়। তাদের প্রত্যেকেই নফল আদায়ের সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে তার প্রতি পরিমাণ সালাত আদায় করা আমার তাকদীরে লেখা ছিল। আমার কাছে এর চাইতে অধিক আশাব্যঞ্জক হয়, এমন কোন বিশেষ আমল আমি করিনি ।
আর আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একদিন রাসুলুল্লাহ সাঃ-এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। লোকদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠল: الله أكبر كبيرا والحمدُ للهِ كَثِيرًا وَسُبْحانَ اللهِ بُكْرَةً وأصيلاً : অতঃপর রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন: কে এই বাক্যগুলো বলেছে? লোকদের মধ্য থেকে একজন বলল, আমি বলেছি ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেন, আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম, ঐ গুলোর জন্য আকাশের সব দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। ইবনে উমর রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ-এর নিকট এই কথা শোনার পর থেকে আমি কোনও দিন এই বাক্য গুলো পড়া বাদ দেইনি।)) সহীহ মুসলিম।
সুতরাং আপনি কখনো আপনার আশপাশের সফল লোকদের কর্ম প্রক্রিয়া থেকে এবং আপনার স্বগোত্রের বিশিষ্টজনদের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিবেন না; যারা অল্প সময়ের আমলে সাধনা ও অবিচলতার দ্বারা তাদের পার্থিব জীবনের ক্যারিয়ারে উচ্চ লক্ষ্য ও বিশাল অর্জন সুনিশ্চিত করেছে।
যদি কোন ব্যক্তি কুরআন মুখস্ত করা, জ্ঞানার্জন করা বা নবী সাঃ-এর জীবনী বা উপকারী বই পাঠ অথবা সন্তানদের শিক্ষাদান বা নফল আমল আদায় করা অথবা আল্লাহর জন্য কোন সৎকর্ম করা অথবা পার্থিব উপকারী কোন কাজে নিয়মিত অল্প সময় নির্ধারণ করে; সে অচিরেই স্বীয় লক্ষ্যে পৌঁছবে ও তার আশা পূর্ণ হবে। অচিরেই সে এর সুফল পাবে জীবনের উন্নতীতে, চিন্তার বিকাশে ও অন্তর্দৃষ্টির অগ্রগতিতে। এটা তাকে একটি গঠনমূলক উপাদানে পরিণত করবে যা তার সমাজকে বিকশিত করে ও দেশকে উন্নত করে।
এতটুকু জেনে রাখুন যে, যে ব্যক্তি কোন সৎ আমলে অভ্যস্ত হয়, তারপর সে যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে বা সফরে যায়; তাহলে এমতবস্থায় সে যেন ঐ আমলটিই করল। যেমনটি রাসূল সাঃ-এর এ বাণীতে এসেছে: ((যখন বান্দা রোগাক্রান্ত হয় কিংবা সফর করে, তখন তার জন্য তা-ই লিখিত হয়, যা সে মুকীম অবস্থায় বা সুস্থ অবস্থায় আমল করত।)) সহীহ বুখারী।
بارك الله لي ولكم في القرآن العظيم ....
দ্বিতীয় খুতবাঃ
প্রত্যেকের আমলে ও অবস্থায় ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। কেননা ইবাদতে কৃত্রিমতা অবলম্বন ও নিজের নফসের উপর কঠোরতা করা; অপারগতা ও ছেড়ে দেয়ার দিকে ধাবিত করে এবং এটা অনিহা, বিরক্তি ও ক্লান্তি তৈরি করে। কখনো এটা আমল বিনাশকারী অধঃপতন ও ধ্বংসাত্মক সীমালঙ্ঘনের দিকে নিয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে নবী সাঃ-এর নির্দেশনা এসেছে, যাতে এমন অবস্থার ব্যক্তি নিজেকে সুন্দরভাবে নববী নির্দেশনার দিকে ফিরিয়ে আনতে পারে। এ মর্মে সহীহ বুখারীতে এসেছে, আনাস বিন মালিক রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিন জনের একটি দল নবী সাঃ এর ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য নবী সাঃ-এর স্ত্রীদের বাড়িতে আসল। যখন তাদেরকে এ সম্পর্কে জানানো হলো, তখন তারা ইবাদতের পরিমাণকে কম মনে করল এবং বলল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে আমাদের তুলনা হতে পারে না। তার আগের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। এমন সময় তাদের একজন বলল, আমি সারা জীবন রাতভর সালাত আদায় করতে থাকব। আরেকজন বলল, আমি সব সময় সপ্তম পালন করব এবং কখনো বাদ দিব না। অপরজন বলল, আমি নারী সংসর্গ ত্যাগ করব, কখনও বিয়ে করব না। এরপর রাসূল সাঃ তাদের নিকট এলেন এবং বললেন, “তোমরাই কি এমন এমন কথাবার্তা বলেছ? জেনে রাখ, আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি এবং তোমাদের চেয়ে তাঁর প্রতি বেশি অনুগত; অথচ আমি সওম পালন করি আবার তা থেকে বিরতও থাকি, সালাত আদায় করি আবার নিদ্রা যাই এবং মেয়েদেরকে বিয়েও করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাত থেকে বিমূখ হবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়।))
হে আল্লাহ আমরা আপনার নিকট জান্নাত প্রার্থনা করছি এবং ঐ সব কথা ও আমল যা জান্নাতের নিকটবর্তী করে দেয়। আপনার নিকট জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং ঐ সব কথা ও আমল থেকে যা জাহান্নামের নিকটবর্তী করে দেয়।
হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট যাবতীয় কল্যাণ কামনা করছি যা তাড়াতাড়ি আসে, যা দেরিতে আসে, যা জানা আছে ও জানা নেই। আর আমরা যাবতীয় মন্দ হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি যা দ্রুত আগমণকারী যা দেরিতে আগমণকারী, যা আমরা জানি আর যা জানি না।
হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট প্রার্থনা করছি কল্যাণের উৎস, সমষ্টি, পরিসমাপ্তি, সূচনা, শেষ, প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য। আর জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রার্থনা করছি।
হে আল্লাহ! আমাদেরকে সাহায্য করুন, আমাদের বিরুদ্ধে নয়। আমাদেরকে সম্মানিত করুন, অপদস্ত নয়। আমাদের পক্ষে কৌশল অবলম্বন করুন, বিপক্ষে নয়। আমাদেরকে সঠিক পথ দেখান এবং এটাকে আমাদের জন্য সহজ করে দিন। আর যারা আমাদের উপর সীমালঙ্ঘন করে তাদের উপর আমাদেরকে বিজয়ী করুন।
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের তওবা কবুল করুন, আমাদের পঙ্কিলতা ধুয়ে পরিস্কার করে দিন, আমাদের হুজ্জতকে সুদৃঢ় করুন, আমাদের ভাষাকে সঠিক করে দিন এবং আমাদের অন্তরের হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন; তাই আমাদেরকে ক্ষমা করুন।
হে আল্লাহ! আমরা আশ্রয় চাই আপনার নেয়ামত সরে যাওয়া, আপনার প্রদত্ত সুস্থ্যতার পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, আপনার আকস্মাৎ শাস্তি এবং আপনার সকল প্রকার অসন্তুষ্টি থেকে। আমরা আশ্রয় চাই অপারগতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, চরম বার্ধক্য ও ঋণের বোঝা এবং শত্রুর প্রভাব বিস্তার হতে। হে চিরঞ্জীব, সর্বসত্ত্বার ধারক! আপনার নিকটই সাহায্য কামনা করছি; আপনি আমাদের সকল অবস্থাকে সংশোধন করে দিন এবং এক পলকের জন্যও কোন কিছু আমাদের উপর ন্যস্ত করবেন না।
হে আল্লাহ! হারামাইন শরীফাইনের খাদেমকে সেসব কাজের তাওফীক দান করুন যা আপনি পছন্দ করেন ও ভালবাসেন। তার নায়েবকে সকল কল্যাণকর কাজের তাওফীক দান করুন।
হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার কল্যাণ দিন, আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
মসজিদে নববীর জুমার খুতবার বঙ্গানুবাদ
খতীব: সম্মানিত শায়খ ড. আব্দুল বারী বিন আওয়ায আছ ছুবাইতী
খুতবা প্রদানের তারিখ: ১২/১২/১৪৪৪ হিজরী
খতীব: সম্মানিত শায়খ ড. আব্দুল বারী বিন আওয়ায আছ ছুবাইতী
খুতবা প্রদানের তারিখ: ১২/১২/১৪৪৪ হিজরী