প্রশ্নোত্তর ইবাদতে রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা)-র অনুপ্রবেশ

FORUM BOT

Doing Automated Jobs

Joined
Nov 1, 2022
Threads
4,853
Comments
4,360
Solutions
1
Reactions
62,881

প্রশ্ন​


কোন মানুষ কি এমন কোন আমলের জন্য সওয়াব পাবেন যাতে রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা) রয়েছে; কিন্তু আমলকালীন সময়ে নিয়ত পরিবর্তন হয়ে সেটা আল্লাহ্‌র জন্য হয়ে গেল। উদাহরণতঃ আমি তেলাওয়াত সমাপ্ত করার পর আমাকে রিয়া পেয়ে বসল।


যদি আমি এই চিন্তাকে আল্লাহ্‌র প্রতি চিন্তা দিয়ে মোকাবিলা করি আমি কি এই তেলাওয়াতের সওয়াব পাব? নাকি রিয়ার কারণে আমার সওয়াব নষ্ট হয়ে যাবে? এমনকি রিয়া যদি আমল শেষ হওয়ার পরে আসে তবুও?


উত্তর


আলহামদু লিল্লাহ।


শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:


রিয়া (প্রদর্শনেচ্ছা)-র সাথে ইবাদতের তিনটি অবস্থা:


এক. ইবাদতটি সম্পাদন করার মূল প্রেরণা হওয়া— মানুষকে প্রদর্শন। যেমন- কেউ মানুষকে দেখানোর জন্য নামায পড়ল; যাতে করে মানুষ তার নামাযের প্রশংসা করে— এমন রিয়া ইবাদতকে বাতিল করে দেয়।


দুই. ইবাদত পালনকালীন সময়ে রিয়া। অর্থাৎ শুরুতে ইবাদতের উদ্দীপনা ছিল আল্লাহ্‌র জন্য একনিষ্ঠতা; কিন্তু ইবাদতের মাঝখানে রিয়ার উদ্রেক ঘটল। এ ইবাদতের দুটো অবস্থা হতে পারে:


(১) ইবাদতের প্রথমাংশ শেষাংশের সাথে সম্পৃক্ত না থাকা (বিভাজ্য ইবাদত)। তাহলে এর প্রথমাংশ সহিহ; আর শেষাংশ বাতিল। এর উদাহরণ হল— এক ব্যক্তির কাছে ১০০ রিয়াল আছে। তিনি এই রিয়াল সদকা করতে চান। তিনি ৫০ রিয়াল সদকা করেছেন খালিস নিয়তে। আর বাকী ৫০ রিয়ালে রিয়া ঢুকেছে। তার প্রথম সদকা সহিহ ও মাকবুল। আর পরবর্তী ৫০ রিয়ালের সদকা বাতিল; যেহেতু সেটাতে ইখলাসের সাথে রিয়ার সংমিশ্রণ ঘটেছে।


(২) ইবাদতের প্রথমাংশের সাথে শেষাংশ সম্পৃক্ত থাকা (অবিভাজ্য ইবাদত)। এমন ইবাদত পালনকালে মানুষ দুটো অবস্থার কোন একটি থেকে মুক্ত হবে না: (ক) রিয়াকে প্রতিরোধ করা ও স্থিতিশীল হতে না দেওয়া। বরং রিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া ও রিয়াকে অপছন্দ করা। এমন হলে রিয়া ইবাদতের কোন ক্ষতি করবে না। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "আমার উম্মত মনে মনে যা চিন্তা করে নিশ্চয় আল্লাহ্‌সেটা ক্ষমা করে দিয়েছেন; যতক্ষণ না সে আমল করে কিংবা কথা বলে।"


(খ) রিয়ার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা এবং রিয়াকে প্রতিহত না করা। সেক্ষেত্রে তার গোটা ইবাদত বাতিল হয়ে যাবে। কেননা এই ইবাদতের প্রথমাংশ শেষাংশের সাথে সম্পৃক্ত (অবিভাজ্য)। এর উদাহরণ হল: কোন ব্যক্তি আল্লাহ্‌র প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে নামায শুরু করল। এরপর দ্বিতীয় রাকাতে রিয়ার উদ্রেক হল। তখন গোটা নামাযই বাতিল হয়ে যাবে। যেহেতু গোটা নামায প্রথমাংশ শেষাংশের সাথে সম্পৃক্ত।


তিন. ইবাদতটি পালন সমাপ্ত হওয়ার পর রিয়ার উদ্রেক ঘটা। এটি ইবাদতের উপর কোন প্রভাব বিস্তার করবে না এবং ইবাদতকে বাতিল করবে না। কেননা ইবাদতটি সঠিকভাবে সমাপ্ত হয়েছে। সুতরাং ইবাদত সমাপ্ত হওয়ার পর রিয়া ঘটলে ইবাদত নষ্ট হবে না।


অন্য মানুষ তার ইবাদতের কথা জেনে যাওয়ার প্রেক্ষিতে মনে যে আনন্দ লাভ হয় সেটি রিয়া নয়। কেননা তা ইবাদত সম্পাদিত হওয়ার পর ঘটেছে। অনুরূপভাবে কোন ইবাদত করতে পেরে নিজে আনন্দিত হওয়াটাও রিয়া নয়। কেননা সেটা তার ঈমানের আলামত।


যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তিকে তার নেক আমল আনন্দিত করে এবং বদ আমল ভারাক্রান্ত করে সেই-ই মুমিন।" নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: "এটা হচ্ছে মুমিনের জন্য তাৎক্ষণিক সুসংবাদ।"


[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন উছাইমীন (২/২৯, ৩০)]


সূত্রঃ ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
 
Similar threads Most view View more
Back
Top