মানহাজ আহলুস সুন্নাহ ও আহলুল বিদআহ এর সাথে বিতর্কের আচরণগত পার্থক্য

[shafinchowdhury]

আহলুস সুন্নাহর সাথে যখন বিতর্ক হবে তখন এবং যখন আহলুল বিদআহ এর সাথে বিতর্ক হবে তখন একই আচরণ থাকবে না। বিদআতীদের ক্ষেত্রে বিতর্কের সময় ক্ষেত্রবিশেষে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। এ সংক্রান্ত শায়েখ আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর ফতোয়া -

প্রশ্ন: আহলুস সুন্নাহর ব্যক্তিদের মধ্যে যখন বিতর্ক হয় এবং যখন কোনো সুন্নী কোনো বিদআতীর সাথে কথা বলে - এ দুই অবস্থার মধ্যে কোনো পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকবে কি? যদি থাকে, তাহলে তা কী?

শায়েখ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) এর উত্তর:

নিঃসন্দেহে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে নাও থাকতে পারে। আহলে সুন্নাতের নিজেদের মধ্যে যে আলোচনা বা বিতর্ক হয় এবং আহলে সুন্নাত ও বিদআতীদের মধ্যে যে আলোচনা হয় - এ দুইয়ের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট ও সুবিদিত। কারণ, আহলুস সুন্নাহর পারস্পরিক আলোচনা, বিতর্ক এবং রদ্দ হওয়া উচিত মহান আল্লাহর বাণী “আল-আসর” সূরার নির্দেশনার আলোতে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
“এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দান করা ও ধৈর্য ধারণের উপদেশ দান করা” (সূরা আল-আসর: ৩)।

সুতরাং আহলে সুন্নাতের মধ্যে কোনো বিতর্ক বা আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত এই আয়াতের নির্দেশনার অনুসারী।

অন্যদিকে, আহলে সুন্নাত ও তাদের বিরোধীতাকারী তথা বিদআতীদের মধ্যে কথোপকথনের ক্ষেত্রেও একই নীতির প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। তবে এখানে পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতে পারে। আহলে সুন্নাতের পারস্পরিক আলোচনায় মহান আল্লাহর বাণী “رحماء بينهم” (সূরা আল-ফাতহ: ২৯) -এর আদর্শে নম্রতা ও দয়া প্রাধান্য পাবে। পক্ষান্তরে, বিদআতীদের সাথে আলোচনায় তাদের বিদআতের মাত্রা অনুযায়ী কঠোরতা বা স্পষ্ট ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে। এটিই আহলে সুন্নাতের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ আলোচনার মধ্যে প্রধান পার্থক্য।

তবে উভয় ক্ষেত্রেই একটি মূলনীতি অবশ্যই সমানভাবে প্রযোজ্য: আল্লাহর নির্দেশ “ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ” (সূরা আন-নাহল: ১২৫) অর্থাৎ “প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে তোমার রবের পথে ডাকো”। অথচ বাস্তবে দেখা যায়, আহলে সুন্নাহর মধ্যে যখন কেউ কারো ভুলের প্রতিবাদ করেন, তখন অনেক সময় হিকমত (প্রজ্ঞা) ও ন্যায়পরায়ণতার পরিবর্তে আক্রমণাত্মক ভাষা বা অমার্জিত আচরণ প্রকাশ পায়। এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। আল্লাহ তাআলা সূরা আল-মায়িদায় স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন:
وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَانُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا
“কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে কখনো ন্যায়বিচার থেকে দূরে না ঠেলে দেয়”* (৫:৮)।

দুঃখের বিষয়, বর্তমান সময়ে আহলে সুন্নাত বা সালাফি সমাজের মধ্যেও এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ পরিলক্ষিত হয়, যা সংশোধনীয়। এটিই এ প্রশ্নের প্রাসঙ্গিক জবাব।

السؤال ٥٤: هل هناك فروق بين الحوار الذي يدور بين أهل السنة وبين الخطاب الذي يوجه من سني إلى مبتدع؟ وما هي؟

الجواب : لا شك أنَّ الفروق قد تكون تارةً قائمة، وقد لا تكون؛

ودائرة الفرق بين ما يجري بين أهل السنة أنفسهم من حوار أو نقاش، وما يجري بين أهل السنة من جهة والمبتدعة من جهة أخرى واضحة بينة؛ ذلك أن المفروض أن ما يجري من نقاش وحوار وردود بين أهل السنة أنفسهم إنما يكون من باب قوله تَبَارَكَ وَتَعَالَى : وَالْعَصْرِ ... [العصر: ١-٣) فأي نقاش أو حوار يدور بين أهل السنة فلا بد أن يكون منطلقه نابعا من مثل هذه الآية: ﴿وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ ﴾ [العصر: ١-٣] فأي نقاش أو حوار يدور بين أهل السنة، فلا بد أن يكون منطلقه نابعا من مثل هذه الآية: ﴿وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [العصر: ٣].

وكذلك ينبغي أن يكون الأمر بين أهل السنة من جهة وبين المخالفين لهم في السنة - وهم المبتدعة من جهة أخرى، ولكن قد يختلف الأسلوب بين أهل السنة أنفسهم وبين أهل السنة والمبتدعة من جهة أخرى؛ فالمفروض حينما يجري النقاش بين أهل السنة أنفسهم أن يلاحظوا في ذلك قوله تعالى الذي طبع به المسلمين عامة رحماء بينهم [الفتح: ٢٩]، أما حينما يجري النقاش بين هؤلاء المسلمين من أهل السنة وبين أهل البدعة، فقد يكون هناك شيء من الشدة والقسوة في الأسلوب يتلاءم مع هذه البدعة على بدعتهم، هذا فارق بين أهل السنة مع بعضهم البعض من جهة، وأهل السنة حينما يناقشون أو يردُّون على أهل البدعة من جهة أخرى.

ولكن ينبغي أن نلاحظ في كل هؤلاء وهؤلاء أمرا لا نزكي به طائفة دون أخرى أو نطعن في طائفة دون أخرى بسبب الإخلال بمبدأ قوله تعالى : ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ [النحل : ١٢٥]، فكثيرا ما يقع حينما يرد سني على سني أن الرد لم يلتزم فيه الحكمة، بل يلتزم فيه ما هو أهم من ذلك مما أشار إليه ربنا لك في مثل قوله تعالى : ﴿وَلَا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَانُ قَوْمٍ عَلَى أَلَّا تَعْدِلُوا أَعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى [المائدة: ٨]، فيقع في كثير من الأحيان أولا سوء الأسلوب في الرد على بعضهم البعض، فهذا مع الأسف يتجلى الآن في العصر الحاضر حديثا بصورة كنا نود ألا نراها واقعة في المجتمع السني الذي نسميه نحن بالمجتمع السلفي، هذا ما يبدو لي جوابا على هذا السؤال.

মাসাঈলু ওয়া আজউইবাতুহা লিল আল্লামাহ আল মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আল আলবানী, পৃষ্ঠা ৭৩-৭৪

অনুবাদ ও লেখা: সাফিন চৌধুরী
জয়েন টেলিগ্রাম: ideology of salaf