প্রবন্ধ আল-হামীদ নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা

Joined
Jan 12, 2023
Threads
827
Comments
1,075
Solutions
19
Reactions
11,881
আল-হামীদ (সকল প্রশংসার দাবীদার, মহা প্রশংসনীয়)[1]:

আল্লাহ তাঁর যাতগত, নামগত, সিফাতগত ও কর্মগত সব দিক থেকেই আল-হামীদ তথা মহা প্রশংসনীয়। তাঁর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নামসমূহ, পরিপূর্ণ সিফাতসমূহ ও পূর্ণাঙ্গ কর্মসমূহ। কেননা আল্লাহর কর্মসমূহ দয়া ও ন্যায়পরায়নতার মধ্যে ঘূর্ণায়মান।[2]

অত:এব, হামদ তথা প্রশংসা হলো অগণিত গুণাবলী ও কল্যাণের সমাহার।[3] আল্লাহ তাঁর প্রশংসনীয় গুণাবলীর কারণে হামীদ তথা মহা প্রশংসীত। তিনি দু’দিক বিবেচনায় হামীদ। তাহলো:

প্রথমত: সমস্ত সৃষ্টি তাঁর প্রশংসা ও গুণগান করে। সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পযর্ন্ত আকাশ ও জমিন বাসীদের সমস্ত প্রশংসা, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের যাবতীয় প্রশংসা, যেসব প্রশংসা এখনও তাদের দ্বারা হয় নি; বরং সময় যতোই গড়িয়ে আসুক তাদের সমস্ত আশু-প্রশংসা যা ঊর্ধ্বজগত ও নিম্নজগতের সকলের প্রশংসা, অস্তিত্বশীল ও অনস্তিত্বশীল সকলের অপরিসীম ও অগণিত প্রশংসা সবকিছু্‌ই নিম্নোক্ত কারণে একমাত্র মহান আল্লাহই প্রাপ্য ও হকদার:

১- আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদেরকে রিযিক দান করেন, তাদেরকে তিনি দীন ও দুনিয়ার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নানা নি‘আমত দান করে ঢেকে রেখেছেন, তাদের থেকে তিনি শাস্তি, বালা-মুসিবত ও অপছন্দনীয় জিনিস দূর করে দেন। বান্দা যে নি‘আমতই প্রাপ্ত হোক না কেন তা সবই আল্লাহর দান। তিনি ব্যতীত কেউ তাদের অকল্যাণ দূর করতে পারেন না। অত:এব, তিনি সব সময়ই প্রতিটি শ্বাস-নিশ্বাসে তাদের অগণিত প্রশংসা পাওয়ার অধিকারী।

২- যেহেতু তাঁর রয়েছে সুন্দর নামসমূহ, সুউচ্চ পরিপূর্ণ সিফাতসমূহ, সুন্দর ও মহান প্রশংসাসমূহ। সমস্ত পূর্ণাঙ্গ গুণাবলী একমাত্র তাঁরই, আর সেসব গুণাবলী সবগুলোই পরিপূর্ণ ও মহান। অত:এব, প্রত্যেকটি গুণের জন্যই তিনি পরিপূর্ণ প্রশংসা ও গুণকীর্তনের দাবীদার। তাহলে যার রয়েছে পবিত্রতম সব গুণের সমাহার, তিনি কত প্রশংসার অধিকারী? তাঁর যাতের জন্য প্রশংসা, তাঁর সিফাতের জন্য প্রশংসা, তাঁর কর্মের জন্য প্রশংসা, কেননা তাঁর যাবতীয় কাজই দয়া, ইহসান, ন্যায়পরায়নতা ও হিকমতে ভরপূর, যা তাকে পূর্ণ প্রশংসার দাবীদার করে। তাঁর সৃষ্টি করা, বিধান দান, তাকদীর ও শর‘ঈ আহকাম নাযিল, দুনিয়া ও আখিরাতে প্রতিদান প্রদান ইত্যাদির জন্য তাঁর জন্য রয়েছে প্রশংসা। তাঁর প্রশংসার বিস্তারিত এবং তাঁর যেসব প্রশংসা করা হয় তা মানুষ গননা করতে পারবে না এবং কলমও লিপিবদ্ধ করে শেষ করতে পারবে না।[4]



[1] এ নামের দলিল হলো আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلۡفُقَرَآءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡغَنِيُّ ٱلۡحَمِيدُ١٥﴾ [فاطر: ١٥]​

“হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী আর আল্লাহ অমুখাপেক্ষী ও প্রশংসিত।” [সূরা ফাতির, আয়াত: ১৫]
[2] আত-তাফসীর, পৃ. ৫/৬২৪।
[3] তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১১৮।
[4] তাওদীহুল ওয়াদিহুল মুবীন, পৃ. ৩৯-৪০।
 
Similar threads Most view View more
Back
Top